চাকরী জীবনের রেশারেশি থেকে ব্যক্তিগত দ্বন্দে জড়ালেন তিন নির্বাচন কর্মকর্তা

আতিকুর রহমান, ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
চাকরী জীবনের রেশারেশি থেকে ব্যক্তিগত দ্বন্দে জড়িয়ে পড়েছেন ঝিনাইদহের সাবেক ও বর্তমান তিন নির্বাচন কর্মকর্তা। জীবনহানীর আশংকা থেকে এ নিয়ে হয়েছে থানায় জিডি। নির্বাচন কর্মকর্তাদের এই দ্বন্দে অফিস পাড়া ও নির্বাচন কমিশনে রীতিমত হৈচৈ পড়ে গেছে। ঝিনাইদহ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান এ ঘটনায় জেলার সাবেক নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ আঃ ছালেক ও কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেনের বিরুদ্ধে মঙ্গলবার রাতে ঝিনাইদহ সদর থানায় জিডি করেছেন। জিডি সুত্রে জানা গেছে, ঝিনাইদহ সিনিয়র জেলা নির্বাচন অফিসার মোঃ রোকনুজ্জামান গত ২১ সেপ্টম্ব ঝিনাইদহে যেগদান করে শহরের কাঞ্চননগর পাড়ায় নতুন বাড়ি নির্মান কাজে হাত দেন। তিনি এর আগেও ঝিনাইদহ জেলার দায়িত্বে ছিলেন এবং তখন এই জমি ক্রয় করেন। বাড়ির কাজ শুরুর পর থেকে প্রতিবেশি ও কুমারখালী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মোঃ আলমগীর হোসেন এবং আরেক প্রতিবেশি আব্দুল কুদ্দুস জোয়রদার পেশি শক্তি খাটিয়ে কাজ বন্ধ করে দেন। এ সময় ঝিনাইদহ জেলা নির্বাচন অফিসার রোকনুজ্জামান মুঠোফোনে খুলনা রেঞ্জ ডিআইজি মোঃ নিজামুদ্দীন মোল্ল্যা ও অতিরিক্ত ডিআইজি মোঃ ইকবাল হোসেনের সাহায্য প্রার্থনা করলে ঝিনাইদহ সদর থানা পুলিশ নির্মান কাজ চালু রাখতে সহায়তা করেন। জিডিতে উল্লেখ করা হয় পুলিশী হস্তক্ষেপের বিষয়টি আলমগীর ও কুদ্দুস জোয়ার্দ্দার ভালভাবে না নিয়ে তারা হেনস্থা করার জন্য একের পর এক ঝিনাইদহ পৌরসভায় অভিযোগ করতে থাকেন। ফলে একই জমি সার্ভেয়ার দিয়ে পাঁচবার মাপজোখ করা হয়। গত ৭ নভেম্বর নির্মান শ্রমিকরা লাইট জ¦ালিয়ে ছাদে কাজ করার সময় বৈদুৎতিক লাইনের তারে স্পর্শ করে দুইজন শ্রমিক আহত হন। দুই শ্রমিক আহত নিয়ে আলমগীর হোসেন, আব্দুল কুদ্দুস জোয়াদ্দার ও তার মেয়ে সুলতানা উপস্থিত জনতাকে উস্কে দেন এবং প্রচার করেন দুইজন শ্রমিক মারা গেছেন। এ সময় ঝিনাইদহ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রোকনুজ্জামানকে অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করেন। জিডিতে দাবী করা হয় দুই নির্মান শ্রমিক আহত ও পরিবর্তিত পরিস্থিতি উস্কে দিতে এ ঘটনার সঙ্গে যোগ দেন ঝিনাইদহ থেকে মদ্য বদলী হওয়া জেলা নির্বাচন অফিসার মোঃ আঃ ছালেক। ঝিনাইদহ জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রোকনুজ্জামান বলেন, গত দেড় মাস আগে কর্তৃপক্ষ আমাকে উপযুক্ত বিবেচনা করে এই জেলায় পদায়ন করেছেন। কিন্তু আঃ ছালেক কোনভাবেই মানতে পারছে না। তাই তিনি ক্রমাগত ভাবে নির্বাচন কমিশনসহ একাধিক স্থানে আমাকে নিয়ে কুৎসা রুটনাসহ ঝিনাইদহ থেকে তাড়ানোর অন্যায় চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি আরো বলেন, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য অফিসে প্রতিদিনই রাত ৮/৯ টা পর্যন্ত কাজ করতে হচ্ছে। এ কারণে তিনি চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। কুমারখালী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন, ঝালকাঠি জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আঃ ছালেক, প্রতিবেশি কুদ্দুস জোয়ার্দ্দার ও তার মেয়ের মিলে তাকে প্রাণনাশসহ যে কোন ধরনের ক্ষতি সাধন করতে পারে। এঘটনায় তিনি ঝিনাইদহ সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি করেছেন, যার নং ৫১১। বিষয়টি নিয়ে বুধবার বিকালে ঝালকাঠি জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আঃ ছালেকের বক্তব্য জানতে তার মুঠোফোনে ফোন করা হলে তিনি রিসিভ করেননি। তবে কুমারখালী উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আলমগীর হোসেন বুধবার বিকালে মুঠোফোনে জানান, জিডির বিষয়ে আমি তো কিছুই জানি না। তাছাড়া ঘটনার সঙ্গে আমি নুন্যতম জড়িত নয়। তাই আমার বিরুদ্ধে জিডি করা চরম অন্যায় হয়েছে। এ ব্যাপারে ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি শাহিন উদ্দীন জানান, বিষয়টি নিয়ে একটি জিডি হয়েছে। ঘটনা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।
ঝিনাইদহে নেশার টাকা না পেয়ে স্কুল শিক্ষককে পিটিয়েছে দুই মাদকসেবী
আতিকুর রহমান, ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
ঝিনাইদহ শহরে পুরাতন ধোপাঘাটা এলাকায় নেশার টাকা না পেয়ে এক স্কুল শিক্ষককে মারধর করেছে দুই মাদকসেবী। এ নিয়ে ঝিনাইদহ সদর থানায় অভিযোগ দিয়েছেন ভুক্তভোগী শিক্ষক সাদ্দাম হোসেন। অভিযোগ থেকে জানা যায়, ধোপাঘাটা পুরাতন ব্রীজ এলাকায় অবস্থিত ইউকে ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের সহকারী শিক্ষক সাদ্দাম হোসেনের কাছে প্রায় সময় মাদকসেবী কাঞ্চননগর এলাকার মৃত মোহাম্মদ মোল্লার ছেলে আব্দুল মজিদ ও নাদের মালিথার ছেলে রাজু হোসেন নেশা টাকার দাবী করে আসছিলো। সম্মানের ভয়ে মাঝেমধ্যে তিনি কিছু টাকা দিয়ে রেহায় পেতেন। এবার তার কাছে মোটা অংকের টাকা দাবী করে বসে মাদকসেবী মজিদ ও রাজু। টাকা দিতে অস্বীকার করলে মঙ্গলবার বিকেলে বিদ্যালয়ের সামনে তাকে বেধড়ক মারপিট করা হয়। আহত অবস্থায় শিক্ষক সাদ্দামকে উদ্ধার করে ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হযৈছৈ। এ ঘটনায় মঙ্গলবার রাতে সদর থানায় একটি মামলা করা হয়ছে। থানায় মামলার করার পরও মজিদ ও রাজু তাকে হুমকি দিচ্ছেন বলে শিক্ষক সাদ্দাম হোসেন জানান। ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শাহীন উদ্দিন বলেন, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। তদন্ত শেষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
ঝিনাইদহে প্রবাসী স্বামীর নির্দেশে দ্বিতীয় স্ত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগ
আতিকুর রহমান, ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
ঝিনাইদহে প্রবাসী স্বামীর নির্দেশে সতীনের মেয়ে জামাই দিয়ে নির্যাতনের অভিযোগ করেছে রুপালী খাতুন (৩৮) নামে এক নারী। রুপালী খাতুন শৈলকুপা উপজেলার ধর্মপাড়া গ্রামের রুস্তম আলী মোল্লার মেয়ে। তার স্বামী শহিদুল ইসলাম কুয়েত প্রবাসি। অভিযোগে সতীনের মেয়ে শারমিন আক্তার ও তার জামাই ইষ্টিফিননগর গ্রামের আজগার আলী ছেলে আমিরুল ইসলামকে বিবাদী করা হয়েছে। ঝিনাইদহ সদর থানায় দায়ের করা লিখিত অভিযোগ উল্লেখ করা হয়েছে, রুপালী খাতুনের সতীনের মেয়ে ও জামাইয়ের মাধ্যমে তাদের বিয়ে হয় ২০২১ সালের ২২ অক্টোবর। রুপালী খাতুন সৌদি আরবে থাকা অবস্থায় শহিদুলের সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সে কারণে মোবাইলে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের সময় সময় যৌতুকের কোন কথা না থাকলেও বিয়ের পর স্বামী শহিদুল যৌতুকের দাবীতে নির্যাতন শুরু করে। নিরপায় হলে রুপালী খাতুন দেড় লাখ টাকার আসবাবপত্র ও নগদ ৮ লক্ষ টাকা প্রদান করেন। যৌতুক প্রদান করার পরও এক সময়ের সৌদি প্রবাসী রুপালী খাতুনের উপর তার কুয়েত প্রবাসী স্বামী, সতিনের মেয়ে ও জামাই আরো টাকা দাবী করে মানসিক নির্যাতন চালাতে থাকে। গত ২৬ অক্টোবর টাকার দাবীতে সতিনের বড় মেয়ে শারমিন, ছোট মেয়ে শাপলা, বড় জামাই আমিরুল ও ছোট জামাই রূদয় আহমেদ অভি একত্রিত হয়ে শারীরিক নির্যাতন করে এবং বাড়ি থেকে বের করে দেয়। রুপালী খাতুন জানান, আমার স্বামীর নির্দেশে সতীনের মেয়ে জামাইরা আমাকে বাড়ী থেকে বের করে দিয়েছে। তারা আমার একটি গরু জোর করে নিয়ে গেছে। এখন প্রতিনিয়ত আমাকে গালিগালাজ করছে ও জীবননাশের হুমকী দিচ্ছে। এ বিষয়ে রুপালীর সতীনের মেয়ে শারমিন আক্তারের সাথে মোবাইলফোনে যোগাযোগ করা হলে ফোন রিসিভ করেননি। ঝিনাইদহ সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোঃ শাহীন উদ্দীন জানান, এবিষয়ে একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। উভয় পক্ষের সাথে আলোচনা ও তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।

ঝিনাইদহ
আতিকুর রহমান

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *