খাবারের প্রলোভন দেখিয়ে ছয় বছরের ছেলে শিশু ধ*র্ষনের ঘটনায় থানায় মামলা

নেছারাবাদ(পিরোজপুর)প্রতিনিধি:

নেছারাবাদ উপজেলার সমেদয়কাঠিতে ছয় বছরের ছেলে শিশুকে খাবারের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষনের ঘটনায় থানায় মামলা করেছেন শিশুটির মা মোসাৎ: শারমিন বেগম। বৃহস্পতিবার(৯ নভেম্বর) সকালে শিশুটির মা শারমিন বেগম বাদী হয়ে গ্রামের আলী হোসেন হাওলাদার এর ছেলে রাসেল হাওলাদার(২৩)-কে আসামী করে মামলাটি দায়ের করেন। মামলার আসামী রাসেল হাওলাদার পলাতক থাকায় তার পিতা আবুল হোসেন হাওলাদার-কে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় নিয়ে আসা হয়েছে। নেছারাবাদ থানার ওসি(তদন্ত) এইচ,এম শাহীন এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।

গত রোববার রাতে উপজেলার সমেদয়কাঠি ইউনিয়নের শেহাংগল গ্রামের জোড়া ব্রীজ এলাকায় এ ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার পরে শিশুটির মা শারমিন বেগম থানায় মামলা করতে চাইলে স্থানীয় প্রভাবশালী মাসুদ,নাসির নামে দুইজন লোকসহ তাদের সাঙ্গপাঙ্গদের বাধায় প্রথমে থানায় যেতে পারেননি। তারা জোড়পূর্বক শালিস করে অপরাধি পরিবারের কাছ থেকে সাত হাজার টাকা জরিমানা করেন ভুক্তভোগী পরিবারকে মাত্র দুই হাজার টাকা দেন। এ ঘটনা প্রকাশ হলে পুলিশ খবর পেয়ে বৃহস্পতিবার ভুক্তভোগি পরিবারকে থানায় ডেকে মামলা নিয়েছেন।

জানাগেছে, গত ৫ নভেম্বর(রোববার) রাতে ওই ইউনিয়নের শেহাংগলের আশ্রয়ন প্রকল্পে বসবাসরত স্বামী পরিত্যাক্তা এক গৃহবধূ শারমিনের ছোট ছেলে শিশুকে খাবারের প্রলোভন দেখিয়ে একই গ্রামের রাসেল হাওলাদার ধর্ষন করে। ঘটনার তিনদিন অতিবাহিত হলেও স্থানীয় শালিসদারের বাধায় থানায় অভিযোগ দিতে পারেননি শিশুটির মা শারমিন। শালিসদাররা জোড়পূর্বক শালিস করে অপরাধি পরিবারের কাছ থেকে সাত হাজার টাকা জরিমানা করে ভুক্তভোগিদের দুই হাজার টাকা দিয়ে থানায় যেতে নিষেধ করেন।

ওই শিশুটির মা অভিযোগ করেন, ঘটনার দিন রাত আটটার সময় আমি বাসার সামনে বসা ছিলাম। এসময় রাশেদুল বলে আপনার ছেলে আমার কাছে থাকুক। আমি ছেলেকে তার কাছে রেখে পাশের ঘরে যাই। এসময় রাশেদ আমার শিশু ছেলেকে খাবারের প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষন করে। কিছু সময় পর ছেলেকে খুজে না পেয়ে রাস্তার পাশে ব্রীজের জঙ্গলের পাশে তাকে অচেতন অবস্থায় পাই। কোলে করে বাসায় নিয়ে জানতে পারি ছেলেকে রাশেদুল ধর্ষন করেছে। ছেলেটি এখনও ব্যাথায় কাতরাচ্ছে।

শিশুটির আপন নানি হালিমা খাতুন অভিযোগ করে বলেন, আমার নাতীকে ফুসলিয়ে রাশেদুল ধর্ষন করেছে। এ ঘটনায় আমরা থানায় যেতে চেয়েছিলাম। গ্রামের প্রভাবশালিরা যেতে দেয়নি। তাদের পক্ষের কিছু লোক আমাদের মোবাইল পর্যন্ত আটকে রেখেছে। স্থানীয় নাসির,মাসুদ নামে দুইজন লোক এর শালিস করে আমার নাতীর চিকিৎসার জন্য দুই হাজার টাকা দিয়েছে।

অভিযুক্ত রাশেদুল ইসলামের মা রেহানা বেগম বলেন, আমার ছেলে নির্দোষ। ছেলেকে ষড়যন্ত্র করে অযথা ফাসিয়ে সাত হাজার টাকা নিয়েছে। তাছাড়া এ ঘটনাতো মিমাংস হয়ে গেছে। এখন জিজ্ঞেস করেন কেন।

ইউপি চেয়ারম্যান মো: হুমাউন কবির বলেন, ঘটনা শুনে আমি স্থানীয় মাসুদ এবং নাসিরকে শালিসের ভার দিয়ে ছিলাম। তারা অপরাধির অভিভাবকের কাছ থেকে সাত হাজার টাকা জরিমানা করেছে। এখন শুনলাম সেই টাকা থেকে নাকি ভুক্তভোগী পরিবারকে মাত্র দুই হাজার টাকা দিয়েছে। চেয়ারম্যান বলেন এর যথাযথ বিচার হওয়া উচিত।

নেছারাবাদ থানার অফিসার চার্জ (ওসি) মো: গোলাম সরোয়ার জানান, এ ঘটনায় রাসেল হাওলাদার নামে একজনকে আসামী করে থানায় মামলা হয়েছে। আসামী ধরার চেষ্টা চলছে।

আনোয়ার হোসেন
নেছারাবাদ পিরোজপুর ।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *