মুরাদনগরে থামছেনা অবৈধ ড্রেজার, উজাড় করা হচ্ছে তিনশতাধিক একর কৃষি জমি

মোঃতরিকুল ইসলাম তরুন,কুমিল্লা থেকে,

মুরাদনগর উপজেলার দুটি থানায় বাইশটি ইউনিয়ন, প্রতি ইউনিয়নে ভুমি খেকুরা প্রতিনিয়ত কৃষি জমি কেটে বিনষ্ট করছে। স্থানীয় সূত্র জানায় ভুমি খেকু কামাল্লা ইউনিয়নের আহসানপুরের গনি,কামাল্লার হোসেন,কামারচরের হিমেল,রগুরামপুরের রুবেল, বোতাইলের কমলসহ অর্ধশতাধিক ড্রেজার মালিক কৃষি জমি কেটে বিনষ্ট করছে। প্রশাসন শত চেষ্টা করেও বন্ধ করতে ব্যার্থ।এব্যাপারে

যাত্রাপুর ইউনিয়ন যুবলীগ সভাপতি ইউপি সদস্য সেলিম মুন্সী বলেন, আমাদের এমপি ইউসুফ আব্দুল্লাহ হারুন সম্প্রতি মোচাগড়া হাইস্কুল মাঠের এক জনসভায় বলেছিল ‘কিছু অসাধু লোক কৃষি জমিতে ড্রেজিং করছে। যারা ড্রেজিং করছেন তারা এলাকার তথা দেশের শত্রু। এই ড্রেজিং যে ভবিষ্যতে কি ভয়াবহ হবে, তা ১০ বছর পর উপলব্ধি করতে পারবেন। একটা কৃষি জমি তৈরী করতে শত শত বছর সময় লাগে। যারা ড্রেজিং করে মাটি বিক্রি করেন, তারা পুলিশ, রাজনৈতিক নেতা, সাংবাদিক এবং প্রশাসনকে অল্পসল্প টাকা দিয়ে ম্যানেজ করে কৃষকদের বিরাট ক্ষতি করছে। তাদের খপ্পড়ে পা দিবেন না। তিনি আরোও বলেন, মাটি আমাদের মা, আপনারা আপনাদের মাকে বিক্রি করবেন না। আমরা এখন যে ফসল ফলাচ্ছি, ড্রেজিং করার কারণে ৫ বছর পরে তার অর্ধেক ফসলও পাবো না। এমপির এ ধরণের বক্তব্যের পরও ড্রেজার ব্যবসায়ীরা অদৃশ্য কারণে আরো বেপরোয়া হয়ে ওঠেছে।

এ বিষয়ে অভিযুক্ত ড্রেজার মালিক রাকিবুল হাসান নয়ন আরোও বলেন, টাকা খায় না কে? কত টাকা খায়না। আমরা সকল সেক্টরকে ফুট হিসেবে টাকা দিয়ে ড্রেজার চালাই। টাকা নেওয়ার পরও প্রশাসন ড্রেজার ভেঙ্গে দিয়ে আমাদের বিরাট ক্ষতি করছে। গত ৮/১০ বছর ধরে বিভিন্ন সেক্টরে কোটি কোটি টাকা ভাগ করে দিয়েছি।

উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা পাভেল খান পাপ্পু বলেন, এ উপজেলার মতো এত ড্রেজার কোথাও চলতে দেখি নাই। অবৈধ ড্রেজার চালানো অব্যাহত থাকলে ভবিষ্যতে এই উপজেলায় কৃষি ফসল ফলানো ব্যাপক হারে হ্রাস পাবে। কৃষি প্রধান এ দেশকে বাঁচাতে অবৈধ ড্রেজারের লাগাম টেনে ধরতে হবে। না হলে ভবিষ্যত কৃষি জমির পরিনতি আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করবে।

উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) নাসরিন সুলতানা নিপা বলেন, কোন ড্রেজার ব্যবসায়ী ও দালালদের সাথে আমাদের কোন যোগসাজস নেই। কৃষি জমি রক্ষার্থে আমাদের অভিযান অব্যাহত আছে।

মুরাদনগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. আলাউদ্দীন ভূঞা জনি বলেন, আমি আর এসিল্যান্ড কয়েকবার ওই মাঠে অভিযান করেছি। সহসাই বড় ধরনের অভিযান পরিচালনা করা হবে।

কুমিল্লার জেলা প্রশাসক মু. খন্দকার মুশফিকুর রহমান বলেন, কৃষি জমি ধ্বংসকারী ড্রেজার বন্ধ করার জন্য ইউএনও, এসিল্যান্ড ও পুলিশকে নির্দেশ দেওয়া আছে। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *