নাগেশ্বরীতে আদালতে মামলা ও অভিযোগের পরেও নিয়োগ পরীক্ষা

এম এস সাগর,
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:

নাগেশ্বরীতে তেলিয়ানীর পাড় জান্নাতুন ফাতেহা দাখিল মাদ্রাসার মঞ্জুরী না থাকাসহ কুড়িগ্রাম কোর্টে মামলা চলমান ও স্থানীয়দের অভিযোগ উপেক্ষা করে নাটকিয়ভাবে গত (৪নভেম্বর) শনিবার সকালে নিরাপত্তা কর্মী ও আয়া পদের নিয়োগ পরীক্ষা বিধিমালা অমান্য করে ব্যাপক অনিয়মের মাঝে অনুষ্ঠিত হয়েছে। স্থানীয়দের দাবি সাজানো ও গোপন নিয়োগ পরীক্ষা স্থগিত করার।

অভিযোগ ও সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরী উপজেলার তেলিয়ানীর পাড় জান্নাতুন ফাতেহা দাখিল মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার বাহের আলী ও সভাপতি আব্দুল হাই অতি-গোপনে পত্রিকায় নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে ‘নিয়োগ মাস্টারমাইন্ড’ ও নাগেশ্বরী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কামরুল ইসলামের মাধ্যমে মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে ডিজির প্রতিনিধি হানিফ উদ্দিন কে ঢাকা গত শুক্রবার এয়ারল্যান্স যোগে সৈয়দপুর এয়ারপোর্টে নিয়ে এসে কুড়িগ্রাম সার্কিট হাউস রেখে পুলিশি নিরাপত্তায় পরদিন শনিবার গত (৪নভেম্বর) শনিবার সকালে ভিআইপি কার যোগে প্রতিষ্ঠানে এনে সকাল ৯টা ৩০মিনিট থেকে ১০টা ৩০মিনিট পর্যন্ত উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কামরুল ইসলামের মাধ্যমে অত্র প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা কর্মী পদে তিন জন এ কে এম আহসানুল হক প্রধান, এ কে এম আহমাদুল, চাঁন মিয়া ও আয়া পদে তিন জন হাফিজা খাতুন, রেহেনা পারভীন, আনজুমান আরা খাতুন মোট ৬ জন প্রার্থীর মধ্যে প্রক্সি প্রার্থী ৪জন দিয়ে দ্রুত সাজানো নিয়োগ পরীক্ষা শেষ করে ভিআইপি কার যোগে প্রতিষ্ঠান ত্যাগ করেন। স্থানীয় নুর আমিন প্রধান, আমজাদ হোসেনসহ অনেকের অভিযোগ ভারপ্রাপ্ত সুপার বাহের আলী ৪বছর থেকে মাদ্রাসার দায়িত্ব থেকে নাগেশ্বরী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কামরুল ইসলামের মাধ্যমে ডিজির প্রতিনিধি হানিফ উদ্দিন কে মোটা অঙ্কের অর্থ দিয়ে ভারপ্রাপ্ত সুপার ও সভাপতির মনোনীত চুক্তিভিত্তিক প্রার্থী নিরাপত্তা কর্মী পদে সুপার বাহের আলীর শ্যালক এ কে এম আহসানুল হক প্রধান এবং হযরত আলীর স্ত্রী হাফিজা বেগম কে বিধিমালা অমান্য করে নিয়োগ প্রদান করে। পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে রিপোর্টারের উপস্থিতি পেয়ে ভারপ্রাপ্ত সুপার বাহের আলী রিপোর্টারদের তথ্য নিতে বাঁধা প্রদান করে এবং স্বল্প সময়ে পরীক্ষা শেষ করে। এ নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে।

আদালতে মামলার বাদী নুর আমিন প্রধান বলেন, মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার আমার পরিবারের আয়া পদে চাকরী দেয়ার নামে আমার নিকট থেকে মাদ্রাসার নামে ৬শতক জমি লিখে নেয়। পরবর্তীতে আমি গোপন নিয়োগের বিষয় বুঝতে পেরে কুড়িগ্রাম কোর্টে বাদী হয়ে ভারপ্রাপ্ত সুপার বাহের আলী ও সভাপতি আব্দুল হাই এর বিরুদ্ধে মামলা করার পরেও অতি গোপনে পুলিশি নিরাপত্তায় শনিবার মাদ্রাসায় আয়া ও নিরাপত্তা কর্মী দুই পদে সাজানোভাবে নাগেশ্বরী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কামরুল ইসলামের মাধ্যমে ডিজির প্রতিনিধি হানিফ উদ্দিন কে দিয়ে নিয়োগ পরীক্ষা দ্রুতভাবে শেষ করেন।

তেলিয়ানীর পাড় এলাকার নুর আমজাদ হোসেন, সিরাজুল ইসলামসহ অনেক বলেন, মাদ্রাসার ভারপ্রাপ্ত সুপার মোঃ বাহের আলী এবং ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি আব্দুস হাই যোগসাজশ ও প্রভাব খাটিয়ে অবৈধভাবে সাজানো দুই পদে তাদের মনোনীত প্রার্থীর কাছে ৪০লাখ টাকা নিয়ে নিয়োগ দেয়। নিয়োগ পরীক্ষা বিষয়ে আমরা এলাকাবাসীর কিছুই জানি। এই অবৈধ নিয়োগ স্থগিত করতে সংশ্লিষ্ট উধ্বতর্ন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছি।

পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে রিপোর্টারের উপস্থিতি পেয়ে ভারপ্রাপ্ত সুপার বাহের আলী রিপোর্টারদের তথ্য নিতে বাঁধা প্রদান করে বলেন, প্রতিটি মাদ্রাসায় এভাবে নিয়োগ হয় আর নিয়োগ করতে অনেক জায়গাতেই টাকা দিতে হয়েছে। সংবাদ করলে কিছুই হবে না।

নাগেশ্বরী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার কামরুল ইসলাম বলেন, সুপার পদ শূন্য থাকায় মাদ্রাসা মঞ্জুরী পায়নি। আপনার সাথে সভাপতি কথা বলার কথা। নিউজ তো করেছেন। বিষয়টি দেখছি।

মাদ্রাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক ও ডিজির প্রতিনিধি হানিফ উদ্দিন বলেন, নিয়োগ পরীক্ষা সুন্দরভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে। অভিযোগ পাইনি।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *