ঝিনাইদহের কাঁচা বাজারে আগুন বাজার নিয়ন্ত্রনে ভোক্তার পাশে কেউ নেই

আতিকুর রহমান, ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
ঝিনাইদহের হাটে বাজারে নিত্যপন্যের জিনিসে এখন আগুন। কাঁচা তরিতরকারীর দাম কোন লক্ষন নেই। বাজারে সরবরাহ প্রচুর থাকলেও দাম আকাশ চুম্বি। ফলে দামের এই আগুনে পুড়ে খাক হচ্ছে সাধারণ মানুষ। প্রতিদিন তাদের বাজার করতে গিয়ে পকেট ফাঁকা হচ্ছে। আয়ের সঙ্গে ব্যায়ের হিসাব মেলাতে পারছে না। বৃহস্পতিবার ঝিনাইদহের সপ্তাহীক হাট পরিদর্শন করে পাইকারী ও খুচরা বাজারে কাচা তরকারীর দাম হেরফের করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। রসুনের কেজি পাইকারী বাজারে ২০০ টাকা হলেও খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকায়। প্রতি কেজিতে ৪০ টাকা লাখ করা হচ্ছে। একই ভাবে পাইকারী বাজারে ৭৫ টাকার টমেটো খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ১১০ টাকায়। প্রতি কেজি টমেটো ৩৫ টাকা লাভে খুচরা ব্যবসায়ীরা বিক্রি করছে। এছাড়া পাইকারী বাজারে ২৮ টাকার পটল ৫০ টাকায়, ৩৫ টাকার বেগুন ৬০ টাকায়, ১৫ টাকার পেঁপে ২৫ টাকায়, ৫৬ টাকার কচু ৯০ টাকায়, ৩০ টাকার ঢেঁড়শ ৬০ টাকায়, ৮৫ টাকার উছতে ৯০ টাকায়, ৯০ টাকার সিম ১২০ টাকায়, ৫২ টাকার আলু ৬০ টাকায়, ৯৩ টাকার পেঁয়াজ ১০০ টাকায়, ১৯০ টাকার আদা ২২০ টাকায়, ১০০ টাকার কাচা মরিচ ১৩০ টাকায়, ১৫ টাকার কলা ২০ টাকায়, ১১০ টাকার গাজর ১৪০ টাকায়, ৪০ টাকার মিষ্টি কুমড়া ৫০ টাকায়, ৬০ টাকার ওল ৭০ টাকায়, ৩৫ টাকার ঝিঙে ৪০ টাকায়, ১৮ টাকার শষা ৩০ টাকায়, ১২ টাকা আঁটি পালং, ৩০ টাকা আঁটি পুইশাক, ২৪ টাকার কদু ৪০ টাকায়, ৩৫ টাকার ফুল কপি ৫০ টাকায়, ২৫ টাকার বাঁধা কপি ৪০ টাকায় ও ২২ টাকার চিচিংগা ৩০ টাকা কেজি বিক্রি হতে দেখা গেছে। বৃহস্পতিবার বিকালে ঝিনাইদহের নতুন হাটখোলায় বাজার করতে এসিছিলেন কোরাপাড়া গ্রামের রিক্সা চালক খোকন। তিনি আলু আর বেগুন কিনে ফতুর হয়েছেন। সংসারের আর কোন জিনিস তিনি কিনতে পারেননি। কারণ সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত তিনি রিক্সা চালিয়ে ২০০ টাকা আয় করেন। কাঞ্চননগরের শরিফুল ইসলাম জানান, বজারে কাচা তরিতরকারীর যে দাম তাতে সাধরণ মানুষের বেঁচে থাকার কোন উপায় নেই। বাজার নিয়ন্ত্রনে স্থানীয় প্রশাসনের ব্যার্থতায় শরিফুলের মতো অনেকেই ফুসছেন। ভুটিয়ারগাতি গ্রামের রবিউল ইসলাম জানান, গরিব ও মধ্যবিত্ত মানুষের কাছে আলু তরকারী সবচে বেশি সস্তা ছিল। কিন্তু সেই আলু এখন কিনতে হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। ঝিনাইদহ কাঁচা বাজার কমিটির সভাপতি ও খাজা ভান্ডারের স্বত্বাধিকারী আব্দুল গফুর জানান, পাইকারী বাজারে কাচা পন্যের দাম কিছুটা নাগালের মধ্যে থাকলেও খুচরা বাজারে কিছুটা সহনীয় দরকার ছিল। এখন বাজার নিয়ন্ত্রন সংস্থা যদি ব্যবস্থা গ্রহন না করে তবে সাধারণ মানুষ কোথায় বিচার পাবে। আক্কাচ আলী নামে এক ক্রেতা অভিযোগ করেন, পাইকারী বাজারে ৩৫ টাকার বেগুন যদি খুচরা বাজারে ৬০ টাকায় বিক্রি হয় তবে ক্রেতারা তো ক্ষুদ্ধ হবেনই। তিনি বলেন আড়ৎ থেকে হামদহ ও আরাপুর বাজারে হয়তো কিছুটা দাম বৃদ্ধি হতে পারে তাই বলে তো প্রায় অর্ধেক লাভ করা অন্যায়। এ বিষয়ে ঝিনাইদহের মার্কেটিং অফিসার শরিফুল ইসলামের বক্তব্য জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, মুক্ত বাজার অর্থনীতিতে এ ভাবে দাম নিয়ন্ত্রন করা সম্ভব হয় না। তবে সরকার চাইলে পেঁয়াজ ও আলুর মতো দাম বেঁধে দিতে পারে। ফলে কাঁচা বাজার স্থানীয় ভাবে নিয়ন্তন করা সম্ভব হয় না।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *