গোপালগঞ্জে ২০০ বছরে ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত

স্টাফ রিপোর্টার, গোপালগঞ্জ : শারদীয় দূর্গাপূঁজার বিজয়া দশমী উপলক্ষে গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার মাদারীপুর বিলরুট চ্যানেলে ২০০ বছরে ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়েছে। বুধবার বিকালে ননক্ষীর ইউনিয়ন পরিষদ এ প্রতিযোগীতার আয়োজন করে। এ নৌকা বাইচ দেখতে মাদারীপুর বিলরুট চ্যানেলের দুই পাড়ে ভীড় করে লক্ষাধিক দর্শনার্থী। এ উপলক্ষে বসে লোকজ মেলা।

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, দূর্গাপূঁজাসহ বিভিন্ন সামাজিক অনুষ্ঠানে নৌকাবাইচ প্রতিযোগীতা অন্যতম। গোপালগঞ্জের মুকসুদপুর উপজেলার মাদারীপুর বিলরুট চ্যানেলে প্রায় ২০০ বছর ধরে এ ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ প্রতিযোগীতা অনুষ্ঠিত হয়ে আসছে। প্রচীন বাংলার ঐতিহ্যে লালিত আকর্ষনীয় এ নৌকাবাইচে গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ফরিদপুর জেলার প্রত্যন্ত গ্রামের ১৪টি সরেঙ্গা, ছিপ, কোষা, বাছারী নৌকা অংশ নেয়। বিকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নানা বর্ণে ও বিচিত্র সাজে সজ্জিত দৃষ্টি নন্দন এসব নৌকা তুমুল বাইচ শুরু করে। চলে একের পর এক কুচ। ঠিকারী ও কাশির বাদ্যে শব্দে এক অনবদ্য আবহ সৃষ্টি হয় চারিদেকে।

এই নৌকাবাইচকে কেন্দ্র করে মাদারীপুর বিলরুট চ্যানেলের দুই তীর পরিপূর্ণ হয়ে ওঠে। গোপালগঞ্জ, মাদারীপুর, ফরিদপুর, নড়াইলসহ বিভিন্ন জেলার লক্ষাধিক দর্শনার্থী নৌকা বাইচ উপভোগ করেন। বিশেষ করে ট্রালারে ট্রালারে ও নৌকা করে এ বাইচ দেখতে আসেন তারা। এ প্রতিযোগীতায় প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় স্থান না থাকলেও অংশগ্রহনকারী সকল নৌকার মালিকের হাতে তুলে দেয়া হয় পুরষ্কার।

নৌকা বাইচকে কেন্দ্র করে নদীর পাড়ে বসে গ্রামীন মেলা। এ মেলায় খেলনা, মিষ্টি, আসবাবপত্রসহ বিভিন্ন গ্রামীন পণ্যের পসরা সাজিয়ে বসে দোকানীরা। নৌকাবাউচ দেখতে আসা দর্শনার্থীরা তাদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনে নেন এ মেলা থেকে।

নৌকা বাইচ দেখতে আসা শিক্ষার্থী সোমা হালদার বলেন, আমি মা বাবার সাথে নৌকা বাইচ দেখতে এসেছি। এই প্রথম নৌকা বাইচ দেখলাম, দেখে খুব ভাল লাগছে।

কলেজ শিক্ষার্থী সম্পা মন্ডল বলেন, দূর্গাপূঁজার বিজয়া দশমী উপলক্ষে প্রতিবছর এখানে নৌকা বাইচ অনুষ্ঠিত হয়। আমরা পরিবার-পরিজন ও বন্ধুদের নিয়ে নৌকা বাইচ দেখতে আছি। সাথে মেলা বসেছে। এখানে এসে খুব ভাল লাগছে।

দর্শনার্থী সবুজ বিশ্বাস বলেন, এটি আমাদের এলাকার ঐতিহ্যবাহী নৌকাবাইচ। এটা আমাদের সাংস্কৃতির একটি অংশ। প্রতিবছর বিজয়া দশমী উপলক্ষে নৌকাবাইচ অনুষ্ঠিত হয়। এতিহ্যবাহী এ নৌকা বাইচ ধরে রাখতে আগামীতেও আয়োজন কারার দাবী জানাই।

মুকসুদপুর উপজেলার ননীক্ষীর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ও আয়োজক শেখ রনি আহমেদ বলেন, ২০০ বছরের এ ঐহিত্য ধরে রাখতে নৌকা বাইচের আয়োজন করা হয়েছে। তবে করোনার কারনে দুই বছর বন্ধ ছিল। এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হওয়ায় আয়োজন করা হয়েছে। নৌকাবাইচ হওয়ায় এ এলাকার মানুষ চিত্ত বিনোদনের একটু সুযোগ পেয়েছে। সাধারন মানুষকে নির্মল বিনোদন দিতে আগামীতেও এমন আয়োজন থাকবে। #

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *