ঝিনাইদহে গৃহবধু ওজেলা হত্যার অভিযোগ স্বামী ও ছেলেসহ তিনজন গ্রেফতার

আতিকুর রহমান, ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
পরকীয়ার জের ধরে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার রাজাপুর গ্রামের গৃহবধু জামিলা খাতুন ওরফে ওজেলা (৪০) কে হত্যা করা হয়। এই হত্যাকান্ডের সঙ্গে তার স্বামী শরিফুল ইসলাম, ছেলে সাইদুল ইসলাম মান্নান ও প্রতিবেশি জাকির হোসেন জড়িত বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানতে পেরেছে। পুলিশ তাদের গ্রেফতার করেছে। মঙ্গলবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি (তদন্ত) আক্তারুজ্জামান লিটন এ সব তথ্য জানান। জিজ্ঞাসাবাদে ওজেলা খাতুনের ছেলে মান্নান পুলিশকে জানায় প্রতিবেশি চাচা রাজাপুর গ্রামের রুস্তম বিশ^াসের ছেলে আব্দুল করিমের সঙ্গে তার মায়ের অবৈধ সম্পর্ক ছিল। ঘটনার দিন শনিবার (২১ অক্টোবর) সকালে নিজেদের গোসলখানায় আব্দুল করিমের সঙ্গে তার মায়ের আপত্তিকর দৃশ্য দেখে প্রথমে মা ওজেলা খাতুনকে হত্যা করে। পরে আব্দুল করিমকেও কুপিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। আব্দুল করিম গুরুতর আঘাতপ্রপ্ত হয়ে ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার শ^াসনালী কেটে গেছে। তদন্ত সংশ্লিষ্ট সুত্রগুলো জানায়, নিহত ওজেলার স্বামী বাড়িবাথান গ্রামের ইউসুফ মন্ডলের ছেলে জাকির হোসেনের জমি বর্গা করে। জাকির হোসেনও বিভিন্ন সময় ওজেলার সঙ্গে সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা করে। কিন্তু প্রতিবেশি আব্দুল করিমের কারণে পেরে ওঠে না। ফলে স্বামী শরিফুল ও তার ছেলে মান্নানের সঙ্গে পরামর্শ করে করিমকে শায়েস্তা করার ছক কষে। ঘটনার দিন সকালে সেই সুযোগ পেয়ে যায়। ওজেলার গোসলখানায় দুইজনকে আপত্তিকর অবস্থায় ধরে ফেলে। ফরিদপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আব্দুল করিম জানিয়েছেন নিহত জামিলার স্বামী শরিফুল ইসলাম ও প্রতিবেশী জাকির হোসেন ওজেলাকে হত্যা করে তাকেও হত্যার চেষ্টা করে। নিহতের স্বামী শরিফুল ইসলাম গ্রেফতার হওয়ার আগে সাংবাদিকদের কাছে অভিযোগ করেছিলেন করিম তার স্ত্রীকে উত্যক্ত করতো। তাকে কু-প্রস্তাব দিত। রাজি না হওয়ায় তার স্ত্রীকে হত্যা করেছে। পরে করিম নিজেই আত্বহত্যার চেষ্টা করে। ওজেলার স্কুল পড়–য়া কন্যা মায়া খাতুন জানান, প্রতিবেশি চাচা আব্দুল করিম তার মাকে উত্যক্ত করতো। ঘরের জিনিসপত্র চুরি করে নিয়ে যেত। প্রতিবেশি সুজনের স্ত্রী রুপা খাতুন জানান, এক সময় করিম ওজেলাকে বিয়ে করতে চেয়েছিল। সেখান থেকেই মুলত বিরোধের সুত্রপাত। মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ঝিনাইদহ সদর থানার ওসি (তদন্ত) আক্তারুজ্জামান লিটন জানান, এঘটনায় নিহত’র বড় ভাই সদর উপজেলার লেবুতলা গ্রামের কামাল আহম্মেদ অজ্ঞাতনামা ব্যক্তিদের আসামী করে মামলা করেছেন। পুলিশ তিনজনকে গ্রেফতার দেখিয়ে তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। তিনি বলেন মামলাটির আসল রহস্য উদ্ঘটনে আরো নিবিড় তদন্ত দরকার। প্রাথমিক ভাবে পুলিশ মনে করছে নিহত’র স্বামী, ছেলে ও জাকির হোসেন এই নৃশংস হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *