December 21, 2024, 5:04 pm
খলিলুর রহমান খলিল, নিজস্ব প্রতিনিধি
তারাগঞ্জ উপজেলার দুই গ্রাম জদ্দিপাড়া ও ডাঙ্গাপাড়া। সদর ঘেঁষা গ্রাম দুটিতে প্রায় ১ হাজার পরিবারের বাস। এখানকার অধিকাংশ মানুষ দিনমজুর। তাঁদের বেশির ভাগের শুধু বসতভিটাই সম্বল। শহরের পাশের এ গ্রামগুলোর মানুষের ভাতের অভাব না থাকলেও মৃতদেহ নিয়ে রয়েছে দুশ্চিন্তা। লাশ কবর দেওয়া নিয়ে খুবই সমস্যায় পড়তে হয় বাসিন্দাদের।
গ্রামবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, তাঁদের এখান থেকে দক্ষিণে আড়াই কিলোমিটার দূরে আদর্শপাড়া কবরস্থান ও পূর্বে দুই কিলোমিটার দূরে শিয়ালডাঙ্গা কবরস্থান অবস্থিত। এই দুই কবরস্থানে এলাকার লোকজন ছাড়া অন্য এলাকার বাসিন্দাদের মরদেহ দাফন করতে গেলে অনেকেই আপত্তি করে।
ডাঙ্গাপাড়া ও জদ্দিপাড়া গ্রামে কেউ মারা গেলে বাড়ির উঠান, আঙিনায় কবর দেওয়া হয়। যাঁদের উঠানও নেই তাঁরা স্বজনের লাশ নিয়ে পড়ে যান বিপাকে। অনুরোধ করে ওই দুই কবরস্থানে দাফন করতে হয় তাঁদের।
দুই গ্রামের আশপাশে কয়েকটি সরকারি খাস জমি আছে। সেগুলোর একটিকে কবরস্থান করার জন্য এলাকার লোকজন কয়েকবার আবেদন করেছেন, কিন্তু কোনো কাজ হয়নি।
কুর্শা ইউনিয়ন ভূমি অফিস সূত্রে জানা গেছে, খাসজমিতে কবরস্থান করার জন্য দুই গ্রামের বাসিন্দারা রংপুরের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে আবেদন করেন। আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইউনিয়ন ভূমি অফিস জমি ঘুরে একটি প্রতিবেদন উপজেলা ভূমি অফিসে দাখিল করেছে।
ডাঙ্গাপাড়া গ্রামের সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘চেয়ারম্যান প্রত্যেকবারে কয় ভোট দেও, এবার তোমার কবরস্থানের ব্যবস্থা করি দিমো। ভোট দেই, চেয়ারম্যান হয়, কিন্তু কবরস্থানের ব্যবস্থা করে না। আমরা রিলিফের চাল চাই না, মরার পর যেন সাড়ে তিন হাত মাটিতে শরীরটা ঢাকতে পারি এমন একটা জায়গা চাই।’
সরজমিনে ওই গ্রাম ঘুরে দেখা গেছে, ঘনবসতি এলাকা। গলি ধরে যেতে হয় বিভিন্ন বাড়িতে। কেউ বাড়ির সামনে, কারও ঘরের পাশে, কেউ আঙিনায়, কেউ রাস্তার ধারে স্বজনদের কবর দিয়েছেন। প্রতিটি বাড়িই যেন একেকটি কবরস্থান।
কাপড় ব্যবসায়ী লিমন হোসেন বলেন , মানুষ মরণশীল কার কখন মৃত্যু হবে কেউ জানে না কিন্তু বারবার যে মৃতদেহ নিয়ে টানা হাচড়ায় পড়তে হয় এটা খুব দুঃখজনক আমাদের খাওয়া দাওয়া ঘুমানোর কোন চিন্তা নেই চিন্তায় পড়ে যাই কেউ মরলে তার মরা দেহ নিয়ে চিন্তা করি আমি মরলে কোথায় আমার লাশ দাফন হবে?
কবরস্থান নিয়ে প্রশ্ন এখন জনমনে বারবার কবরস্থান হওয়ার কথা থাকলেও কার ইঙ্গিতে কেনই বা আটকে থাকছে কবরস্থানের কাজ, তাহলে কি নেতারা কবরস্থানের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট ব্যবসা করছেন ? নাকি কবরস্থান করে দেয়ার কথা বলে প্রতারণা করছেন স্বজনের লাশ কাঁধে নিয়ে অসহায় হয়ে যাওয়া এই মানুষদের সাথে।
এ বিষয়ে সদ্য যোগদান কৃত নির্বাহী কর্মকর্তা রুবেল রানার সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি নতুন জয়েন করেছি বিষয়টা আমার জানা ছিল না খাস জমি থাকলে সরজমিনে দেখে ওখানে কবরস্থানের ব্যবস্থা করা হবে।