December 21, 2024, 3:09 pm
স্টাফ রিপোর্টার, গোপালগঞ্জ : প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের সামনে দিকে এগিয়ে যেতে হবে। আগামী নির্বাচনও আছে। নির্বাচন নিয়ে আমাদের চিন্তা নেই। জনগনের ভোট আমাদের আছে। তবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক কিছু চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র সব সময় থাকে। তবে ওটা ভয় পাই না। গ্রেনেড, গুলি, বোমা, সেই বিশাল সাইজের বোমা, সবই তো মোবাবেলা করে এই পযর্ন্ত চলে এসেছি। আমি বিশ্বাস করি আল্লাহ একটা মানুষকে কাজ দেয়, সেই কাজ সম্পন্ন না হওয়া পযর্ন্ত আল্লাহই রক্ষা করেন। উপরে আল্লাহ, নিচে আমার দলের লোক। যখনই জীবনে আঘাত এসেছে আমার দলের মানুষই আমাকে মানব ঢাল রচনা করে নিজেদের জীবন দিয়ে রক্ষা করেছে। কাজেই দেশের মানুষের জন্য কাজ করার যে সুযোগ পেয়েছি সেটাই সবচেয়ে বড় পাওয়া।
আজ বুধবার (১১ অক্টোবর) বেলা ১১টায় গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় উপজেলা আওয়ামী লীগ কায্যালয়ে গোপালগঞ্জ, কোটালীপাড়া ও টুঙ্গিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দের সাথে মতবিনিময়কালে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো বলেন, উপরে আল্লাহ নীচে আমার দলের লোক। যখনি আঘাত এসেছে আমার দলের মানুষই আমাকে মানব ঢাল রচনা করে নিজেদের জীবন দিয়ে রক্ষা করেছে। মুদ্রা স্ফীতি, অর্থনৈতিক মন্দা আমরা তার থেকে দূরে না, আমাদের উপরও ধাক্কা আসে। সব জিনিস তো আমরা করতে পারি না। সেজন্য আমি সকলকে আহবান করেছিলাম, নিজেও শুর করেছি কখনো এক ইঞ্চি জমিও অনাবাদি থাকবে না। যে যা কিছু পারেন উৎপাদন করবেন। আমাদের খাদ্য উৎপাদন আমরা নিজেরা করবো। ফসল চাষ, তরিতরকারী, পাট, ধান যা কিছু পারা যায়, মাছ-মুরগী, গরু, ছাগল, ভেড়া যে যা পারেন পালন করবেন। বিভিন্নভাবে উৎপাদনমুখী হতে হবে সবাইকে।
জিনিসপত্রের দাম বৃদ্ধি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা বিশ্বে জিনিসের দাম, খাবার জিনিসের দাম অতিরিক্ত বেশি। ইতিমধ্যে আপনারা জানেন সাউথ আফ্রিকা, আমেরিকা, লন্ডনসহ বিভিন্ন জায়গায় আমরা ঘুরেছি। দেখেছি সেখানে কি পরিমান জিনিসের দাম। আমাদের মানূষ অত্যান্ত দক্ষ। আমরা যদি চেষ্টা করি, আমাদের খাদ্য আমরা উৎপাদন করি তাহলে নিজেদের চাহিদা মিটিয়ে বিদেশেও দিতে পারি, ইতিমধ্যে বিদেশেও যাচ্ছে।
শেখ হাসিনা আরো বলেন, খাদ্যগুলি সংরক্ষণ করা, অথবা সেগুলিকে বিকল্পভাবে কিভাবে সংরক্ষণ করতে পারি সে ব্যাপারে যথাযথ ব্যবস্থা, হিমাগার তৈরী করা, ফসলগুলি রাখা সেই চেষ্টা আমরা করে যাচ্ছি। সেই ভাবেই দেশের উন্নয়নে আমরা নিশ্চিয়তা দিচ্ছি। শিক্ষা, দীক্ষা, লেখাপড়া সব দিকে ব্যবস্থা নিচ্ছি। কমিউনিটি ক্লিনিক থেকে ঔষধ দিচ্ছি। মানুষের কল্যাণে যা যা করার আমরা করে যাচ্ছি।
কোটালীপাড়া-টুঙ্গিপাড়াবাসীকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আরো বলেন, অমি কৃতজ্ঞাতা জানাই প্রথমে আমার কোটালীপাড়া-টুঙ্গিপাড়াবাসীর কাছে। সেখান থেকে আমি বারবার নির্বাচিত হই। সব এমপিরা ছোটে তাদের এলাকার জন্য, আর আমাকে দেখতে হয় তিন’শ এলাকা, ১৭ কোটি মানুষকে। আমার সৌভাগ্য এটাই কোটালীপাড়া-টুঙ্গিপাড়াবাসী আমাকে দেখে। আমার জন্য কাজ করে এবং আমাকে দু:চিন্তা থেকে মুক্ত দেয়। যে কারনে আমি একেবারে নিবেদিত প্রাণ হয়ে দেশের মানুষের জন্য কাজ করতে পারি। কাজের আমার দায়িত্বটাতো আপনাদেরই হাতে, আপনারই নিয়েছেন, সেটাই তো আমার সবচেয়ে বড় সৌভাগ্য।
সরকার প্রধান আরো বলেন, আমার মা নেই, বাবা নেই, ভাই নেই, কেউ নেই, আমি পেয়েছে বিশাল আওয়ামী লীগ সংগঠন। সবচেয়ে বড় কথা আমার টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়ার মানুষ সেই সাথে সাথে পেয়েছি সারা বাংলাদেশের মানুষ। এরাই আমার পরিবার, এরাই আমার আপনজন। কাজেই আপনজন পাশে না থাকলে কোন কাজে সফলতা অর্জন করা যায় না। আজকে যতটুকু সাফল্য অর্জন করেছি তার অবদানটুকু টুঙ্গিপাড়া-কোটালীপাড়াবাসীর যারা আমাকে সব সময় পাশে থেকে সমর্থন দেন, আপনাদেরই দান। কাজেই সেই কৃতজ্ঞতা সবার কাছে জানাচ্ছি। ভবিষ্যতে আবার আসাবো, প্রত্যেকবাই এই অফিসে আসবো।
এর আগে বেলা এগারোটার দিকে টুঙ্গিপাড়ার নিজ বাড়ি থেকে পায়ে হেটে উপজেলা আওয়ামী লীগ কার্যলয়ে যান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। সেখানে পৌঁছানোর পর স্থানীয় নেতাকর্মীরা স্লোগানে স্লোগানে প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করে নেয়।
দুই দিনের সফরের প্রথম দিনে ভাঙ্গা ডা. আবু ইউসুফ স্টেডিয়ামে ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত এক জনসমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য শেষে মঙ্গলবার বিকেলে সাড়ে তিনটার দিকে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় নিজ বাড়ির উদ্দেশ্যে রওনা হন। বেলা ৪টা ৫৫ মিনিটের দিকে টুঙ্গিপাড়া পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। এসময় স্থানীয় নেতাকর্মীরা বিভিন্ন স্লোগানে স্লোগানে প্রধানমন্ত্রীকে বরণ করে নেয়।
পরে বিকাল ৫ টা ১০ মিনিটে বঙ্গবন্ধুর সমাধি সৌধ বেদিতে পুষ্পমাল্য অর্পণ করে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এসময় কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন তিনি। পরে ছোটবোন শেখ রেহানাকে সাথে নিয়ে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্য এবং ৩০ লক্ষ শহীদদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে পবিত্র ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ দোয়া এবং মোনাজাত করেন। শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে বোন শেখ রেহানাকে সাথে নিয়ে নিজ বাড়িতে যান। সেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছোটবোন শেখ রেহানা ও তার পরিবারের সদস্যরা রাত্রী যাপন করেন। #