সুন্দরগঞ্জে সিকিউরিটি গার্ডের স্ত্রীকে গোপনে তালাক দিয়ে বাড়ি থেকে বের করে দেয়ার অভিযোগ

গাইবান্ধা জেলা প্রতিনিধিঃ
গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জ উপজেলায় পল্লীবিদ্যুত সিকিউরিটি গার্ড সংসার করা অবস্থায় স্ত্রীকে গোপনে তালাক দিয়ে বেধড়ক মারধর করে বাড়ি থেকে তাড়িয়ে দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে।

জানা গেছে, উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের মনিরাম কাজী গ্রামের আমিন ইজারাদারের মেয়ে
মোছাঃ আইরিন আক্তার রিক্তা(২৪) এর ২০১৩ সালের জুলাই মাসে একই গ্রামের মজিবুর রহমানের ছেলে আরিফুল ইসলাম(৩৫) এর সাথে পারিবারিক ভাবে বিবাহ সম্পন্ন হয়। এই বিয়ে আরিফুলের সম্মতিতে না হয়ে পারিবারিক ভাবে হওয়ায় বিয়ের পর থেকে রিক্তাকে নির্যাতন চালিয়ে আসে আরিফুল। এরইমধ্যে প্রথম মেয়ে সন্তানের জন্মের পর এই অত্যাচারের মাত্রা আরও বেড়ে যায়। পরবতীতে আরও একজন মেয়ে সন্তান তাদের পরিবারে আসে। প্রায় আরিফুল চাকরি নেয়াসহ বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন কৌশলে মোটা অংকের টাকা দাবী করে। উপায়ন্তর না পেয়ে রিক্তা তার বাবার বাড়ি হতে ৬ হতে ৭ লক্ষ টাকা নিয়ে গিয়ে আরিফুলকে দেন। চাকরির সুবাদে আরিফুল সবসময় রিক্তাকে সাথে নিয়ে কর্মস্থলে অবস্থান করেন। এরই একপর্যায়ে চলতি বছরের ১৯ জুলাই আরিফুল বাইক সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আহত হয়ে রংপুর লাইফ লাইন হাসপাতালে ভর্তি হন। ১০দিন হাসপাতালে চিকিৎসা সহায়তা নেয়ার পর সুস্থ হয়ে ২৮ জুলাই গ্রামের বাড়িতে সপরিবারে চলে আসেন। আসার ৩ দিন পর হঠাৎ সে নিখোঁজ হয়ে যায়। পরে খোঁজ নিয়ে জানা যায় সে মীরগঞ্জ বাজারে বোনের বাড়িতে গা ঢাকা দিয়ে আছেন। পহেলা আগস্ট বোনের বাড়ি গিয়ে আরিফুলের বোন মারফত রিক্তা জানতে পারেন যে চলতি বছরের ২০২৩ সালের ১৯ মে তাকে ডির্ভোস দেয়া হয়েছে। তখন হঠাৎ ডির্ভোসের কথা শুনে আইরিন আক্তার রিক্তার মাথায় যেন বাজ পড়ে যায়। তখন সে দ্রুত স্বামী আরিফুলের বাড়িতে চলে যান। পরে চলতি মাসের ১৮ সেপ্টেম্বরে সালিসি সিদ্ধান্তের মাধ্যমে আরিফুলের রিক্তাকে নিয়ে পূর্বের ন্যায় সংসার করার কথা থাকলেও তার ভাই ও বোন মিলে তাকে মীরগঞ্জ বাজারের বাড়িতে সড়িয়ে রাখে। মাঝে মাঝে আরিফুল এসে তার পরিবারের লোকজনকে সাথে নিয়ে রিক্তার অবস্থান করা রুমের কারেন্ট ও পানির লাইন বন্ধ করে দেন। তারপরও রিক্তা অতিকষ্ট করে বাচ্চাদের নিয়ে বাসায় থাকেন। বারবার তাকে বাড়ি থেকে বের করে দিতে ব্যর্থ হয় আরিফুল। এমতাবস্থায় গতকাল রবিবার ২৪/০৯/২৩ইং তারিখ সন্ধ্যায় গ্রিল কাটা মিস্ত্রি নিয়ে এসে আরিফুল জোর করে দরজা জানালা কেটে রিক্তাকে বেধড়ক মারপীট করতে থাকে। তার চিৎকার শুনে আশেপাশের লোকজন ছুটে এসে তাকে উদ্ধার করে সুন্দরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ কমপ্লেক্সে ভর্তি করান। বর্তমানে সে সেখানে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। বর্তমানে আরিফুল কুড়িগ্রাম জেলার ফুলবাড়ি উপজেলায় পল্লীবিদ্যুত সমিতির সিকিউরিটি গার্ডে কর্মরত আছেন।

এব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল জব্বারের সাথে কথা হলে তিনি ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে জানান, আমি এনিয়ে একাধিকবার সালিস করেছি, মেয়ের সংসার করার ইচ্ছে থাকলেও ছেলের কোন সংসার করার ইচ্ছে নেই। আমি খুব চেষ্টা করেছি যেহেতু তাদের সংসারে ২টি বাচ্চা আছে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *