স্টাফ রিপোর্টার, গোপালগঞ্জ : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় একাত্তর হলের ছাদ থেকে ঝাপ দিয়ে নিচে পড়ে নিহত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ফিরোজ কাজীর দাফন সম্পন্ন।
ঢাবি শিক্ষার্থী ফিরোজ কাজীর মৃত্যুতে তার গ্রামের বাড়িতে চলছে শোকের মাতম। ছেলের এমন মৃত্যুতে শোকে কাতর ফিরোজের মা। এদিকে ছেলেকে হারিয়ে নির্বাক দিনমজুর বাবা।
আজ বুধবার বিকাল সাড়ে তিনটার দিকে ঢাকা থেকে একটি লাশবাহী গাড়িতে করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আধুনিক ভাষাবিজ্ঞান বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী ফিরোজ কাজী মরদেহ তাঁর গ্রামের বাড়ি গোপালগঞ্জ সদর উপজেলার পাইককান্দি ইউনিয়নের পুখুরিয়া গ্রামে নিয়ে আসা হয়। নিজ ছেলের মরদেহ সামনে নিয়ে দাঁড়িয়ে ছিলেন বাবা চুন্নু কাজী, বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া ছেলেকে হারিয়ে শোকে কাতর ফিরোজের মা।
নিহত ফিরোজ কাজীর মরদেহ বাড়ীতে আনা হলে স্বজন, সহপাঠি ও এলাকাবাসী কান্নায় ভেঙ্গে পড়েন। শেষ বারের মত এক নজর দেখার জন্য ফিরোজের বাড়ীতে ভীড় করেন প্রতিবেশিরা। দাফনে অংশ নিতে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শিক্ষক, শিক্ষার্থীসহ ৬৩ বিশিষ্ট সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল আসে ফিরোজের বাড়িতে। শিক্ষার্থী ও সহপাঠী কে হারিয়ে নির্বাক তারাও। ফিরোজের এমন মৃত্যু মেনে নিতে পারছে না সহপাঠীরা।
পরে বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ওই গ্রামের মোল্লাপাড়া ঈদগাহে নামাজের জানাযা শেষে কবরস্থানে দাফন করা হয়। জানাযা ও দাফনকালে নিহতের স্বজন, সহপাঠী, এলাকাবাসী, স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
নিহত ফিরোজ কাজী ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী। নিজ গ্রামের একটি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে জিপিএ ৪.৯১ ও গোপালগঞ্জ শহরের একটি কলেজ থেকে মানবিক বিভাগ থেকে ৪.৩৩ পেয়ে উর্ত্তীর্ণ হয়ে ২০১৯-২০ বর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন ফিরোজ।
গত মঙ্গলবার রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজয় ৭১ হল থেকে পড়ে আত্মহত্যা করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের চাইনিজ ল্যাঙ্গুয়েজ এন্ড কালচারাল বিভাগের শিক্ষার্থী ফিরোজ কাজী।সে বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়াউর রহমান হলের ২০৩ নম্বর কক্ষে থাকতেন।
ফিরোজ কাজী পরিবার ও সহপাঠিরা মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে তদন্তের দাবি জানান।
প্রতিবেশী সোহেল রানা বলেন, চুন্নু কাজী এলাকায় কৃষি কাজ করেন। অনেক কষ্ট করে ছেলেদের লেখাপড়ার খরচ যোগান। মা বাবার স্বপ্ন ছিলো ছেলে লেখা পড়া শেষ করে ভালো চাকরি করবে। সেদিন হয়তো তাদের কষ্ট ঘুচবে। লেখা পড়া শেষ করার আগে লাশ হয়ে ফিরলো।
ফিরোজ কাজী মা আন্না বেগম বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর স্বপ্ন দেখতাম আমার ছেলে অফিসার হবে। সেই ছেলে আমার লাশ হয়ে বাড়ি ফিরল। আমার বুকের ধন চলে গেল। আর কারও সন্তানের যেন এমন মৃত্যু না হয়।
ফিরোজ কাজীর বাবা চুন্নু কাজী বলেন, ছেলের এমন মৃত্যুর খবর মেনে নিতে পারছিনা । প্রায়ই বাড়িতে কথা বলত। বাড়ির আমাদের খোঁজ নিতো। আমি আমার ছেলেন মৃত্যুর প্রকৃত কারণ জানতে তদন্তের দাবি জানাই #
Leave a Reply