গোপালগঞ্জ বশেমুরবিপ্রবিতে প্রশাসনিক ভবন ও উপাচার্যের বাসভবনে তালা দিয়ে আমরন অনশন

স্টাফ রিপোর্টার, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বশেমুরবিপ্রবি) শিক্ষক নিয়োগের দাবীতে প্রশাসনিক ভবনের প্রধান ফটক ও উপাচার্যের বাসভবনে তালা দিয়ে আমরন অনশন শুরু করেছে ফাইন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

এসময় অনশনে থাকা সাত শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। অসুস্থ ওই সাত শিক্ষার্থীকে গোপালগঞ্জ ২৫০-শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

অসুস্থ ওই সাত শিক্ষার্থীরা হলো, ফাইন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের চতুর্থ বর্ষের কবির হোসেন ও মাহাবুব জামান, তৃতীয় বর্ষের আব্দুল আল মামুন, আতিকুজ্জামান, শান্ত সাহা, সুমন আলী ও তানভীর হোসেন।

অনশনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, ফাইন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের দাবীতে সোমবার (৭ আগস্ট) বেলা ১১ টা থেকে উপাচার্যে কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। ওই দিন শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দলকে ডেকে নেন উপাচার্য এবং শিক্ষক দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে বলেন, “ইউজিসি থেকে শিক্ষক নিয়োগের একটা প্রক্রিয়ায় আছে সেগুলা মেইনটেইন করে শিক্ষক পেতে অন্তত দেড় মাস সময় প্রয়োজন। এই সময়টা আমাকে দিতে হবে।” কিন্তু শিক্ষার্থীরা তা না মেনে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। পুনরায় বেলা চারটায় উপাচার্য আন্দোলনস্থলে আসেন এবং শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন। ওই সময় উপাচার্য শিক্ষার্থীদের বলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি ইউজিসির সাথে বৈঠক করবেন এবং শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত দিবেন। ফলে আমরা গতকাল মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে সময় বেঁধে দিয়েছিলাম।

তবে গতকাল (বুধবার) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি দলের সাথে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) বৈঠক হয়। কিন্তু ওই বৈঠকে ফাইন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপরে কোন সিদ্ধান্ত না হওয়ায় ওই বিভাগের শিক্ষার্থীরা বুধবার রাত আটটায় প্রশাসনিক ও একাডেমিক ভবনের মুল ফটকে এবং উপাচার্যের বাসভবনের গেটে তালা ঝুলিয়ে আমরন অনশনে বসে। এসময় অনশনে থাকা সাত শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়ে পড়ে। অসুস্থ ওই সাত শিক্ষার্থীকে গোপালগঞ্জ ২৫০-শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

আন্দোলনরত চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী মোহাম্মাদ আলি তোহা বলেন, আমরা গতকাল রাত থেকে আমরন অনশনে বসেছি, সাতজন শিক্ষার্থী অসুস্থ হয়েছে। আমাদের কাছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত আসেনি। বার বার কল করে বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্বুলেন্স এনে অসুস্থ ওই সাত শিক্ষার্থীকে গোপালগঞ্জ ২৫০-শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। আমাদের একটাই দাবি আমাদের বিভাগে শিক্ষক চাই। কর্তৃপক্ষ তাদের দেওয়া কোন কথা রাখেনি। এবার বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ না দেওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। আমরা বলতে চাই ফাইন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের কোনো শিক্ষার্থী ক্ষতি হলে বা কারো জীবন বিপন্ন হয়ে গেলে এর দায়ভার প্রশাসনকেই নিতে হবে।

এ বিষয়ে জানতে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলে তিনি তা রিসিভ করেননি।

এবিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্টার দলিলুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশন (ইউজিসি) প্রতিনিধিদের সঙ্গে গতকাল আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। কিন্তু গতকাল ফাইন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষক নিয়োগের ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত হয়নি। আজ বৃহস্পতিবার ইউজিসির প্রতিনিধিদের সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি দলের দ্বিতীয় দিনের বৈঠক চলছে। হয়তো ভালো কোন একটা সিদ্ধান্ত আসবে।

তিনি আরো বলেন, অনিবার্য কারণবসত আজ বিশ্ববিদ্যালয় এক দিনের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। শুধু ভর্তি কার্যক্রম চলবে। #

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *