রাঙ্গাবল্লীর চরমোন্তাজে গৃহবধূর ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার

রফিকুল ইসলাম ঃ
পটুয়াখালী জেলার গলাচিপা উপজেলার মেয়ে পপি আক্তার শ্বশুর বাড়ি থেকে জীবিত ফিরতে পারেনি, ফিরলেন তবে লাশ হয়ে। জানা যায় ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরি করতেন পপি আক্তার (২০)। সেখানেই পরিচয় হয় রিমন মোল্লা নামের আরেক গার্মেন্টস কর্মীর সঙ্গে। প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের ৪-৫ মাস হলেও শ্বশুরবাড়িতে আসা হয়নি পপির। কিন্তু যখন নববধূ হয়ে আসলেন, তখনই তার শেষ আসা হলো তার জীবনে। বুধবার (২ আগস্ট) দুপুরে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরমার্গারেট গ্রামে অবস্থিত পপির শ্বশুরবাড়ি থেকে তার ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে পুলিশ। তার এই মুত্যুতে ধুম্রজাল সৃষ্টি হয়েছে। পপির পরিবারের দাবি, পপির মুত্যুর জন্য দায়ী তার স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির লোক। এদিকে পপির মুত্যুর ঘটনায় সম্পৃক্ত থাকা সন্দেহে স্বামী রিমন মোল্লা (২৮) ও শাশুড়ি শিল্পী আক্তারকে (৪২) আটক করেছে পুলিশ। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, পপি আক্তার গলাচিপা উপজেলার ডাকুয়া ইউনিয়নের পুর্ব আটখালী গ্রামের নাসির খানের মেয়ে। রিমন রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরমার্গারেট গ্রামের মিলন মোল্লার ছেলে। তারা ঢাকায় গার্মেন্টসে চাকরির সুবাদে পরিচয় হয়। এক পর্যায়ে তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্কে গড়ে ওঠে। ৪-৫ মাস আগে একসঙ্গে ঘুরতে গিয়ে লোকজনের তোপের মুখে তাদের বিয়ে হয়। কিন্তু এই বিয়ে মন থেকে মেনে নিতে পারেনি রিমন। তাই পপির সঙ্গে কিছুদিন একসঙ্গে থেকে বাড়িতে চলে আসে রিমন। যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করেন। অবশেষে পপি তিন দিন আগে ঢাকা থেকে বাবার বাড়ি গলাচিপা উপজেলার ডাকুয়ায় আসে। সেখান থেকে পপি শ্বশুরবাড়ি রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ যান। কিন্তু স্বামী এবং শাশুড়ি পপিকে গ্রহণ করবে না বলে বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। ঘটনার দিন মঙ্গলবার রাতে স্বামী ও শাশুড়ি বাড়িতে ফিরে এসে পপির সঙ্গে কথা কাটাকাটি হয়। এ সময় পপির বাবার সঙ্গেও তাদের ঝগড়া হয়। পরে বুধবার সকালে ওই বাড়ি থেকে পপির ফাঁস দেওয়া ঝুলন্ত মরদেহ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে পপির বাবা নাসির খান বলেন, ছেলে-মেয়ে একজন আরেকজনকে পছন্দ করত। ৫ মাস আগে তাদের বিয়ে হয়। দাদি শাশুড়ি অসুস্থতার খবর শুনে আমার মেয়ে প্রথম শ্বশুরবাড়িতে যায় রোববার। আমার মেয়ে শ্বশুরবাড়িতে যাওয়ায় তারা মারধর করে। এ খবর পেয়ে আমি মঙ্গলবার চরমোন্তাজ গেলে রাতে আমার সামনেও মারধর করে। আমাকেও মারধর করতে চায়। পরে আমি আরেক বাড়িতে গিয়ে রাতে ছিলাম। এ সময় আমার মেয়েকে মেরে (হত্যা) ঝুলাইয়া রাখছে তারা। এ ব্যাপারে রাঙ্গাবালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম মজুমদার বলেন, পপির বাবার দাবি- মেয়েকে তার সামনেই মারধর করছে। এ ঘটনায় স্বামী-শাশুড়িকে আটক করা হয়েছে। পপির ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এখন মামলা প্রক্রিয়াধীন। তিনি আরও বলেন, কিভাবে মৃত্যু হয়েছে তা জানতে লাশ ময়নাতদন্তের জন্য পটুয়াখালী মর্গে পাঠানো হয়েছে। রিপোর্ট পেলে বিস্তারিত বলা যাবে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *