September 19, 2025, 5:44 am

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
সবার স-হযোগিতায় শা-ন্তিপূর্ণভাবে শারদীয় দুর্গোৎসব উদযাপন করা হবে- ইউএনও আরিফুল ইসলাম প্রিন্স ময়মনসিংহে ডিসির বিরু-দ্ধে অপপ্রচারের প্র-তিবাদ শিক্ষা অফিসারের ছিলারচর সরকারি ডিগ্রি কলেজে উৎসবমুখর পরিবেশে শিক্ষক পরিষদ নির্বাচন স-ম্পন্ন ভাবখালী ইউনিয়নের সফল ও জনবান্ধব প্রশাসক আসমা উল হুসনা ফাতেমা জান্নাতুল ফেরদৌস সুজানগরে কৃষক-কৃষাণীদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ ও সার বি-তরণ কার্যক্রমের উ-দ্বোধন নড়াইলের রূপগঞ্জ বাজারে লক্ষ্মী ভাণ্ডরে সেনা অ-ভিযান – দুইজন গ্রে-প্তার ঝিনাইদহ প্রেসক্লাবের প্রয়াত সদস্যদের রুহের মা-গফেরাত কাম-নায় দোয়ার মাহফিল বানারীপাড়ায় শারদীয় দূর্গ উৎসব উৎযা-পন উপলক্ষে প্রস্তু-তি সভা অনুষ্ঠিত রাজশাহী কেন্দ্রীয় কা-রাগারে মা-দকবিরোধী শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত মোরেলগঞ্জ লতিফিয়া কামিল মাদ্রাসায় অভিভাবক সদস্য নির্বাচন সম্পন্ন: বিপুল ভো-টে জয়ী মো. রেজাউল করিম
দীর্ঘ , ২১ বছর পর ছেলেকে ফিরে পেলেন বাবা-মা

দীর্ঘ , ২১ বছর পর ছেলেকে ফিরে পেলেন বাবা-মা

মোঃ বাবুল হোসেন প্রতিনিধি:
বাবা-মার বুক খালি করে ২১ বছর আগে হারিয়ে যান মতিউর রহমান (৩৬)। অনেক খোঁজাখুঁজি করেও তার সন্ধান পাননি পরিবার। তবে ছেলেকে ফিরে পাবার অপেক্ষা থেকে বিচ্যুতি হননি তারা। অবশেষে সেই অপেক্ষার অবসান হয়েছে। মতিউর ফিরে এসেছে পরিবারের কাছে।
শুক্রবার বিকেলে ভারত থেকে দেশে ফিরেন মতিউর। পঞ্চগড়ের বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর হয়ে দেশে আসলে তাকে আইনি প্রক্রিয়া শেষে পরিবারের কাছে তুলে দেন পুলিশ। এ সময় সৃষ্টি হয় এক আবেগঘণ মুহূর্ত। সন্তানকে জড়িয়ে আনন্দের কান্না শুরু করেন বাবা-মা। স্বজনদের চোখেও তখন আনন্দ অশ্রু।
মতিউর রহমানের বাড়ি ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার আখানগর ইউনিয়নের দক্ষিণ দেবীডাঙ্গা গ্রামে। তিনি সেখানকার সহিদুল ইসলাম ও মর্জিনা বেগম দম্পতির বড় ছেলে। তিনি কখন, কীভাবে সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে গিয়েছিলেন তা এখনো জানা যায়নি। এসব মনে করতেও পারছেননা মতিউর।
মতিউর রহমান ২০০২ সালে ১৫ বছর বয়সে মানসিক ভারসাম্যহীন হয়ে হারিয়ে যান। সেসময় ঠাকুরগাঁও সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছিলেন তার বাবা সহিদুল ইসলাম। এরপর সারা দেশে খুঁজেও তাঁর সন্ধান পাওয়া যায়নি। ২১ বছর পর হারানো ছেলেকে ফিরে পেয়ে আনন্দে ভাসছে বাবা-মা।
মতিউরকে হস্তান্তরের সময় উপস্থিত ছিলেন- বাবা সহিদুল ইসলাম, মা মর্জিনা বেগম, ছোট বোন সাইফুন্নাহার, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত মানুষ ও ভবঘুরেদের নিয়ে কাজ করা ভারতীয় সংগঠণ ‘শ্রদ্ধা পুনর্বাসন ফাউন্ডেশনের’ প্রতিনিধি নিতিশ শর্মা, ডা. শ্বারালি কে উইনডিলকার, আখানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রোমান বাদশা, ইউপি সদস্য হুমায়ুন কবির প্রমূখ।
এর আগে, ২৭ জুন মতিউরের দেশে ফেরার কথা ছিল। মা-বাবা তাকে নিতে এই স্থলবন্দরে এসেছিলেন, গিয়েছিলেন দিনাজপুরের হিলি স্থলবন্দরেও। কিন্তু কাগজপত্রের জটিলতায় সেদিন তিনি দেশে ফিরতে পারেননি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ২০১৯ সালের জুনে ভারতের মহারাষ্ট্রের কারজাত এলাকার রাস্তা থেকে মতিউরকে উদ্ধার করেন ‘শ্রদ্ধা পুনর্বাসন ফাউন্ডেশনের’ সমাজকর্মীরা। তখন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত ছিলেন মতিউর। এরপর তার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য পরীক্ষার পর শ্রদ্ধা পুনর্বাসন ফাউন্ডেশনের চিকিৎসকেরা তাঁকে চিকিৎসা দেন। মতিউরকে সম্ভাব্য সিজোফ্রেনিয়ার রোগী হিসেবে শনাক্ত করা হয়। একসময় জানা যায়, তাঁর বাড়ি বাংলাদেশে। এরপর করোনা মহামারি শুরু হলে মতিউরের পরিবার সন্ধানের বিষয়টি স্থবির হয়ে পড়ে। শ্রদ্ধা পুনর্বাসন ফাউন্ডেশন মানসিকভাবে বিপর্যস্ত মানুষ, বিশেষ করে যাঁরা রাস্তায় থাকেন, তাঁদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনে কাজ করে।
এদিকে, ছেলেকে ফিরে পেয়ে শ্রদ্ধা শ্রদ্ধা পুনর্বাসন ফাউন্ডেশনকে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান মতিউরের বাবা সহিদুল ইসলাম। তিনি বলেন, দুই ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে মতিউর বড়। বড় ছেলেকে নিয়ে স্বপ্ন ছিলো অনেক। আমি সেনাবাহিনীর কর্মকর্তা ছিলাম, ছেলেকেও ভালো যায়গায় পৌঁছাতে চেয়েছি। কিন্তু আমার সেই স্বপ্ন পূরণ হয়নি। ছেলেকে হারিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়েছিলাম, এভাবে ফিরে পাবো ভাবিনি। আজকে ফিরে পেয়েছি অনুভুতি বুঝাতে পারবোনা।
স্মৃতিচারণ করতে গিয়ে ছোট বোন সাইফুন্নাহার বলেন, আমার বয়স তখন ৯ বছর। একদিন স্কুলে কক্ষ ঝাড়ু দিচ্ছিলাম, এটা আমার ভাই দেখে খুব বকেছিলো। এরপর ভাই হারিয়ে যান। দীর্ঘদিন পর ভাইকে পেয়ে যে আনন্দিত আমি এটার জন্য প্রস্তুত ছিলামনা।
ঠাকুরগাঁওয়ের আখানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান রোমান বাদশা বলেন, আমরা সকাল থেকেই মতিউরের অপেক্ষায় ছিলাম। দীর্ঘ অপেক্ষা পর তাকে পেয়েছি। তার জন্য বাড়িতে শতশত মানুষ অপেক্ষা করছেন। গ্রামের লোকজনও আনন্দে ভাসছেন।
শ্রদ্ধা পুনর্বাসন ফাউন্ডেশনের কর্মী নিতিশ শর্মা বলেন, মানসিকভাবে বিপর্যস্ত মানুষ, বিশেষ করে যাঁরা রাস্তায় থাকেন, তাদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনে কাজ করি। ২০১৯ সালের আমরা মতিউরকে উদ্ধার করি। সে সুস্থ্য হলে তার দেয়া তথ্যমতে তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করি, তাকে ভিডিও কল কথা বলিয়ে দেই। সবশেষে আজকে পরিবারের কাছে ফিরিয়ে দিলাম।
বাংলাবান্ধা ইমিগ্রেশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা খয়রুল ইসলাম বলেন, দুই দেশের হাই কমিশনের সিদ্ধান্তে মতিউরকে ভারতের ফুলবাড়ি ইমিগ্রেশন থেকে আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়। আমরাও আইনি প্রক্রিয়া শেষে তার পরিবারের কাছে তাকে হস্তান্তর করেছি।।

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD