নড়াইলে কদর বেড়েছে কাঠের গুঁড়ির

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি:
নড়াইলে ঈদুল আজহায় কোরবানির পশুর মাংস কাটার জন্য গাছের গুঁড়ির চাহিদা
বেড়েছে। হাটে-বাজারে বিক্রি হচ্ছে মাংস কাটার অন্যতম এই সরঞ্জাম।
বর্তমানে প্রকারভেদে ৪শ থেকে ৬শ টাকায় বিক্রি হচ্ছে এই গুঁড়ি।
কোরবানি ঈদে আলাদা কদর বেড়ে যায় এই গাছের গুঁড়ির। এটি তৈরিতে তেঁতুল
গাছের কাঠকে প্রাধান্য দেওয়া হয়। কারণ অন্য কাঠের তুলনায় তেঁতুল কাঠের
গুঁড়ি দা-ছুরির আঘাতে নষ্ট হয় না। তাই তেঁতুল গাছের গুঁড়ির চাহিদা
ব্যাপক।
গুঁড়ি সব কাঠ দিয়ে তৈরি করা যায় না। এটি তৈরি করতে হয় এমন কাঠ দিয়ে, যাতে
চাপাতির (মাংস কাটার যন্ত্র) কোপে কাঠের গুঁড়া না ওঠে। কোরবানির মাংস
কাটার জন্য তৈরি করা এসব গুঁড়ি অধিকাংশই তেঁতুল গাছের কাঠ দিয়ে তৈরি।
তেতুল গাছের কাঠ দিয়ে গুঁড়ি বানানোর কারণ হিসেবে ব্যবসায়ীরা জানান, তেতুল
কাঠে সহজে চাপাতির কোপ বসবে না। তাই কাঠের গুঁড়াও উঠবে না। ফলে মাংস নষ্ট
হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই।
নড়াইল জেলা সদরের বিভিন্ন জায়গায় লোহাগড়া বাজার, এড়েন্দা বাসস্ট্যান্ড,
কালিয়া উপজেলার বিভিন্ন হাটসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় ২/৩ দিনের জন্য এই কাঠের
গুঁড়ি বিক্রি হয়। অন্যান্য দিন সচরাচর দেখা যায় না।
কাঠের গুড়ি ক্রেতা ঈমাম হোসাইন বলেন, ঈদের নামাজ পড়ে পশু কোরবানি দেওয়ার
পর গোস্ত ও হাড় কাটতে এসব কাঠের গুড়ি লাগে। তখন খোঁজাখুঁজি করা বা অন্যের
কাছ থেকে নেওয়া অনেকটা বিড়ম্বনা হয়ে দাঁড়ায়। তাই কিনতে এসেছি।
কাঠের গুড়ি ব্যবসায়ী লিটন জানান, সব জিনিষের দাম বাড়ায় কাঠের দামও
বেড়েছে। বিশেষ করে কোরবানি ঈদ এলে তেতুল ও বেলের গাছের কাঠের দাম বাড়ে।
যার কারণে এবারে বেল ও তেতুল গাছের কাঠের গুঁড়ির দাম বেড়েছে। গতবার যে
গুঁড়ি ২০০ টাকায় বিক্রি করেছি সেটা এবারে ৪০০ টাকায় বিক্রি করছি। উপায়
নাই, কেনা বেশি বিক্রিও বেশি দামে। কোরবানির ঈদ উপলক্ষে তিনি প্রতি বছর
গুঁড়ি বিক্রি করেন। প্রতিটি গুঁড়ি আকার ভেদে ৫০-১০০ টাকা পর্যন্ত লাভ হয়
তার।
লোহাগড়া এলাকার বাসিন্দা সালমান মুন্সি জানান, কোরবানির ঈদের আগে পশু
জবাই ও মাংস তৈরির উপকরণ হিসেবে দেশীয় ধারালো অস্ত্র ও গাছের গুঁড়ি কিনতে
হয়। চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় মৌসুমি এসব পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেন বিক্রেতার।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *