কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে পৌর বাস টার্মিনাল মাদকসেবী আর বখাটের আড্ডা খানা

রতন দে, মাদারীপুর প্রতিনিধিঃ
মাদারীপুরের ডাসার ও কালকিনি উপজেলার সিমান্তে কোটি কোটি টাকা ব্যয়ে পৌর বাস টার্মিনাল নির্মাণ করা হলেও তিন বছরেও চালু করা সম্ভব হয়নি। পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় ঢাকা বরিশাল মহাসড়ক একটি ব্যস্ততম সড়কের পরিণত হয়েছে। ফলে ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কের ভূরঘাটা বাসস্টান্ডে যাত্রী ওঠা-নামা করায় যানজটের সৃষ্টি হচ্ছে ও বাড়ছে ঝুঁকি। অল্প কিছুদিনের মধ্যে এটি চালুর আশ্বাস দিয়েছেন পৌরসভার মেয়র। এদিকে চালু না হওয়ার কারণ অনুসন্ধানে এরই মধ্যে কাজ শুরু করেছেন মাদারীপুর জেলা প্রশাসন।
কালকিনি পৌর কর্তৃপক্ষ জানায়, মাদারীপুরের ডাসার উপজেলার সিমান্তে কালকিনি পৌরসভার ৪২ নম্বর মজিদবাড়ি(ভুরঘাটা) মৌজার ১ একর ৩০ শতাংশ জায়গার উপর ২০১৮ সালের মে মাসে পৌর বাস টার্মিনাল নির্মাণ কাজ শুরু করে মিজান এন্টারপ্রাইজ নামের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। পরের বছর (২০১৯ সালের) ডিসেম্বরে কাজ সমাপ্ত দেখিয়ে চুরান্তবিল তুলে নেওয়া হয়। ডাসার ও কালকিনি উপজেলার সমস্ত লোকজন এই মহাসড়কটি ধরেই দেশের বিভিন্ন বিভাগ,জেলা ও উপজেলায় যাতায়াত করেন। দীর্ঘদিন পড়ে থাকার ফলে বর্তমানে বাস টার্মিনালটি মাদকসেবী আর বখাটেদের আড্ডাখানায় পরিণত হয়েছে।
সংশিলিষ্ট তথ্য সূত্রে জানা যায়,পৌরসভার অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্পের অধীনে ২ কোটি ৫৫ লাখ ব্যয়ে এই বাস টার্মিনালটি নির্মাণ করা হয়। পদ্মা সেতু চালুর পর ঢাকা-বরিশাল মহাসড়কে যানবাহনের চাপ বেড়েছে কয়েকগুণ। কিন্তুু বাস টার্মিনালটি চালু না হওয়ায় মহাসড়কের উপরেই যাত্রী ওঠা-নামা করাতে বাড়ছে ঝুঁকি। যাত্রীদের মানসম্মত সেবা দেওয়ার লক্ষ্যে নির্মাণ করা হয় এই পৌর বাস টার্মিনালটি। এটি কি কারণে চালু করা যাচ্ছে না, এর রহস্য খুঁজে বের করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি যাত্রী ও পরিবহন চালকদের।
বাসের যাত্রী মোঃ নজরুল মোল্লা বলেন, এতো সুন্দর বাস টার্মিনাল নির্মাণ করা হলেও এটি চালু করা হচ্ছে না। এটি চালু হলে স্বা”ছন্দে গাড়িতে ওঠানামা করা যাবে। কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি দ্রুত এটি চালু করা হোক।
স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন, এখানে মাদকসেবী ও বখাটেদের আড্ডা খানা হয়েছে। সন্ধ্যা হলেই শুরু তাদের অপরাধ মুলক কর্মকান্ড। অনেক সময় নেশা করে এরা বিভিন্ন খারাব ভাষায় একজন আরেক জনকে গালাগাল করে। এটা চালু হলে যুবসমাজ থেকে শুরু করে সবারই ভাল হবে।

মাহিন্দ্র চালক তোফাজ্জেল সরদার বলেন, কোটি টাকা খরচ করে টার্মিনাল নির্মাণ করলেও কোন লাভ হচ্ছেনা। ফলে মহাসড়কে যানজটের সৃষ্টি হয়। এটি চালু হলে যানজট ও দুর্ঘটনা রোধ হবে।
বাসের চালক জব্বার শেখ বলেন, মহাসড়কে গাড়ির চাপ বেড়েই চলছে। দ্রুত এটি চালু করা দরকার। আমাদের দাবি বাস টার্মিনালটি চালু করা হোক। এতে সরকার রাজস্ব আয় পাবে।
মাদারীপুরের কালকিনি পৌরসভার মেয়র এসএম হানিফ বলেন, বাস টার্মিনালটি চালুর প্রধান বাধা সড়কের ওপর বড় বড় গাছ। এই গাছ সড়ক বিভাগের। এটি অপসারণের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও পৌরসভা কর্তৃপক্ষ সড়ক বিভাগকে চিঠি দিয়েছে। তারা বলছে শিগগিরই গাছগুলো কেটে নিয়ে যাবে। আশা করছি অল্প কিছুদিনের মধ্যে বাস টার্মিনালটি চালু করা সম্ভব হবে।
মাদারীপুরের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মারুফুর রশিদ বলেন,আমি এ জেলায় নতুন যোগদান করেছি। বাস টার্মিনালটি কেন চালু হচ্ছে না তা খতিয়ে দেখে জনগণের জন্য নির্মিত কালকিনি পৌর টার্মিনালটি অতি দ্রুত চালুর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *