ছদ্মবেশে ধারণ করে বহুমুখী প্রতারক রানা আটক

মোঃ বাবুল হোসেন পঞ্চগড় :
অবশেষে অপহরণ, ধর্ষণ মামলায় ও বহুমুখী প্রতারক শাহজাহান বাদশা শাওন ওরফে রানাকে (৩৩) গ্রেফতার করেছে পুলিশ। আদালতের মাধ্যমে তাকে জেলহাজতে প্রেরণ করা হয়। তিনি রংপুরের কাউনিয়া থানার সাব্দী এলাকার মোবারক আলীর ছেলে।

পঞ্চগড়ে তেঁতুলিয়ায় থানায় অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগে ভুক্তভোগীর মামলায় পুলিশ তাকে আটক করেন।তিনি এলাকায় একাধীক ছদ্ম নাম ব্যবহার করতেন।
শাহজাহান বাদশা শাওন ওরফে রানা (৩৩) নামের এক রংঙ্গা চুরা এ বহুমুখী প্রতারকে।

পুলিশ জানায়, গত ৮ তারিখ মেয়ে অপহরণ ও ধর্ষণের অভিযোগ করে তেঁতুলিয়া মডেল থানায় ৩নং সদর তেতুলিয়া বুড়িমুক্তি গ্রামের এক ভুক্তভোগী বাবা। ভুক্তভোগী থানায় মামলা করলে তার অভিযোগের প্রেক্ষিতে এসআই তপনের নেতৃত্বে অভিযানে নামে পুলিশ।গত টানা ১২ দিন ধরে বিভিন্ন প্রযুক্তি পর্যালোচনা ও তথ্য সংগ্রহ করে ১০টি জেলা অতিক্রম করে ফরিদপুরের নগরকান্দা এলাকা থেকে ভুক্তভোগীর মেয়ে উদ্ধার ও এই বহুমুখী প্রতারক শাহজাহান বাদশা শাওন ওরফে রানাকে গ্রেফতার করে তেঁতুলিয়া থানায় নিয়ে আসা হয়।

ভুক্তভোগী দায়েরকৃত এজাহারে জানান, গত ২৮ এপ্রিল সকালে নবম শ্রেণির স্কুল পড়–য়া আমার মেয়ে স্কুলে যাওয়ার উদ্দেশে বাড়ি থেকে বের হয়। সেদিন বিকেলে বাড়ি না ফেরায় আমরা খুব দু:শ্চিন্তায় পড়ে যাই। অনেক খুঁজাখুজির পর জানতে পারি বুড়িমুটকির হাইওয়ে সড়কের কাজী নজরুল স্মরণীর স্থানে শাহজাহান বাদশ শাওনের সাথে মেয়ের দেখা হয়। পরে আর সন্ধান না পেয়ে থানায় জিডি করি। পরে পুলিশের সহায়তায় গত ১০ মে ফরিদপুরের নগরকান্দা থানার মাসাউজান গ্রামে সবুজ সরদারের বাড়ি থেকে মেয়েকে উদ্ধার করা হয়। মেয়ে জানায়, গত ২৮ এপ্রিল সকালে স্কুলে যাওয়ার পথে নজরুল স্মরণী থেকে জোরপূর্বক মুখ বেধে একটি অ্যাম্বুলেন্সে উঠিয়ে নেয়। ভয়ভীতি দেখিয়ে বিভিন্ন বাসে উঠিয়ে ফরিদপুরের তালমা এলাকায় নিয়ে যায়। ২৯ এপ্রিল শাওন আমার কন্যাকে ফুসলিয়ে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে তালমা এলাকার এক মসজিদে নিয়ে মেয়েকে বিয়ে করেছে বলে জানায়। তখন থেকে তালমা মোড়স্থ আলহাজ্ব মজিদ ফিলিং স্টেশনের কোয়ার্টারে মেয়েকে গোপন করে রাখে। গত ৮ মে রাত ১১টার দিকে বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে ধর্ষণ তাকে করে এই শাহজাহান বাদশা শাওন। পুলিশের দক্ষ অভিযানে অবশেষে আসামীকে ধরতে সক্ষম হয়।

পুলিশের এসআই তপন কুমার জানান, অভিযুক্ত শাহজাহান বাদশা শাওন ওরফে রানা এই অপহরণ মামলার আসামী ছাড়াও সে একজন বহুমুখী স্মার্ট প্রতারক। একটি মোবাইল ব্যাংকিং কোম্পানীর ময়মনসিংহের এরিয়া ম্যানেজার হিসেবে চাকরি করে ৮০ হাজার টাকার উপরে বেতন পেত। কোম্পানীর ২৫ লাখ টাকার আত্মসাতের মামলা খেয়ে গা ঢাকা দিতে পঞ্চগড়ে তেঁতুলিয়ায় এসে পাথর শ্রমিকের কাজ শুরু করে। এখানেও এসে এখানকার বিভিন্ন সহজ-সরল মানুষদের ছেলে-মেয়েদের চাকরি দেয়ার নাম করে হাতিয়ে নেয় ১৪/১৫ লাখ টাকা। এ ঘটনায় সে পালিয়ে যায়। দেড় মাস পর আবার তেঁতুলিয়ায় ফিরে এসে কৌশলে এই ভুক্তভোগীর মেয়েকে নিয়ে পালিয়ে যায়। টানা ১২ দিন সিডিয়ার পর্যালোচনা ও তথ্য সংগ্রহ করে বুধবার দিনগত রাতে অভিযান চালিয়ে গভীর রাতে তাকে ফরিদপুরের নগরকান্দা এলাকা থেকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হই।

তেঁতুলিয়া মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ আবু সাঈদ চৌধুরী জানান, মেয়ে অপহরণের একটি জিডি পেলে আমার থানার পুলিশের চৌকষ দল অভিযানে নামে। অভিযানে ১২ দিন পর ফরিদপুর থেকে শাহজাহান বাদশা শাওন ওরফে রানাকে গ্রেফতার করা হয়েছে। সে একজন বহুমুখী প্রতারক। আদালতের মাধ্যমে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *