July 1, 2025, 2:37 am
হারুন অর রশিদ,
দোয়ারাবাজার প্রতিনিধিঃ
সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজারে ঈদুল ফিতরের দিন দু”পক্ষের সংঘর্ষের ঘটনায় মারা গেছেন মাইজখলা গ্রামের মৃত ইদ্রিস মিয়ার পুত্র আবুল কাশেম (৩০)। হত্যা মামলাকে প্রতিহত করতে লুটপাটের অভিযোগ করেন আসামী পক্ষ।
বৃহস্পতিবার সরেজমিনে মাইজ খলা গ্রামে উপস্থিত হয়ে আসামি পক্ষের বাড়ি-ঘর ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, হত্যা পরবর্তী মাইজ খলা গ্রামে আসামিদের বাড়িতে লুটপাটের মতো কোন ঘটনা এখন পর্যন্ত ঘটেনি।
গত ২২ এপ্রিল সকালে পূর্ব পরিকল্পিত অনুযায়ী সংঘর্ষের প্রস্তুতি নেওয়ার কারণেই ঈদুল ফিতরের জামাত পড়তে কচুদাইর গ্রামের লোকজন মাইজখলা মসজিদে আসে। ঈদের জামাত পড়া শেষ হওয়ার সাথে সাথে মামলার প্রধান আসামী সাবেক ইউপি সদস্য রহমত আলী তার আত্বীয় স্বজন ছাতক উপজেলার নোয়ারাই ইউনিয়নের কচুদাইর গ্রামের লোকজন মাইজখলা গ্রামে পৌঁছামাত্র রহমত আলী হুকুম দিলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাদে। সংঘর্ষে গুরুতর আহত আবুল কাশেমকে সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিক্যালেই মৃত্যু বরণ করে। মসজিদে জুতা বদল করাকে কেন্দ্র করে মাইজখলা গ্রামে সংঘর্ষ হলেও মুলতঃ ঘটনাটি ছিল পূর্ব পরিকল্পিত।
মাইজখলা গ্রামের হত্যা মামলার প্রধান আসামী রহমত আলীর ছোট ভাই প্রবাসী নুরুজ্জামানের স্ত্রী জুবেদা আক্তার বলেন, আমার ও আমাদের বাড়ির কারু মালামাল লুটপাট হয়নি। এমনকি অন্য কোন আসামীর বাড়ি ঘর, ধান ও মালামাল লুটপাটের কথা আমি শুনি নাই।
রংপুর গ্রামের খাতুন বানু বলেন, আমার বাবার বাড়ি পার্শবর্তী মাইজখলা গ্রামে হওয়ায়, আমার বাড়িতে বাবার বাড়ির মাল সাম্পুর্ণ নিয়ে এসেছি। তবে আমার জানামতে গ্রামের কারু বাড়িতে লুটপাট হয়নি।
মাইজখলা গ্রামের আব্দুল্লাহ স্ত্রী নুরুন নাহার বেগম বলেন, আমার বাড়ির মালামাল কেউ নেয়নি। আমি কারো জন্য মিথ্যে বলতে পারবনা লুটপাটের ঘটনা আমার জানা নেই।
আব্দুল সমাদের মেয়ের জামাই কচুদাইর গ্রামের আহমদ আলীর পুত্র ফরিদ মিয়া বলেন, সংঘর্ষের পর থেকে আমি শশুর বাড়ি মাইজখলা গ্রামে আছি কোন প্রকার লুটপাট হওয়ার মতো ঘটনা এখন পর্যন্ত শুনি নাই। এমনকি আমার শশুরের ঘরের মালামাল সহ বোর ক্ষেতের ধান সব আমার বাড়িতে নিয়াগেছি।
এব্যাপারে নিহত আবুল কাশেমের ভাই হানিফ মিয়া বলেন, আমার ভাই আবুল কাশেম হত্যা মামলাকে বানচাল করার জন্য আসামীরা বাড়িঘর লুটপাট করার কথা বিভিন্ন অনলাইন মিডিয়ায় প্রচার করছে। আমরা অসহায় হওয়ার কারণেই প্রভাবশালীরা আমার পরিবারের উপর আক্রমণ চালিয়ে আমার ভাইকে হত্যা করেছে। এখন পর্যন্ত প্রধান আসামী রহমত আলী সহ অনেক আসামী ধরা চুয়ার বাহিরে রয়েগেছে। প্রশাসনের কাছে আমার জোর দাবি জানাচ্ছি আসামীদের দ্রুত গ্রেফতারের জন্য।
এব্যাপারে দোয়ারাবাজার থানার অফিসার ইনচার্জ দেব দুলাল ধর বলেন, প্রথমদিনে এ মামলার ৯ জন আসামি গ্রেফতার করে জেল হাজতে প্রেরণ করা হয়েছে। অন্যান্য আসামিরা গ্রাম ছেড়ে পালিয়েছে। আসামিদের দ্রুত গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে। ঘটনার পর থেকেই গ্রামে তিনদিন পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। লুটপাটের একটা লিখিত অভিযোগ পেয়েছি তদন্তপুর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।