ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
ঠিকাদারের নামে চেক ইস্যু করে জালিয়াতির মাধ্যমে এডিবি ও বিশেষ বরাদ্দের টাকা আত্মসাতের দায়ে দর্শনা পৌরসভার ক্যাশিয়ার সৈয়দ মোঃ রুমি আলম ও সাবেক উপসহকারী প্রকৌশলী এসএম আব্দুস সামাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলা হয়েছে। ঝিনাইদহ দুর্নীতি দমন কমিশনের সহকারী পরিচালক মোঃ বজলুর রহমান বাদী হয়ে বুধবার দুপুরে এই মামলা করেন। মামলার আসামী ক্যাশিয়ার সৈয়দ মোঃ রুমি আলম চুয়াডাঙ্গার দর্শনা পৌর এলাকার ইসলাম পাড়ার সৈয়দ কামরুল আলমের ছেলে। অন্যদিকে সাবেক উপসহকারী প্রকৌশলী এসএম আব্দুস সামাদ চুয়াডাঙ্গার বুজরুক গড়গড়ি এলাকার সিএন্ডবি পাড়ার এস.এম আব্দুল হামিদের ছেলে। তিনি বর্তমানে মুন্সিগঞ্জের মীরকাদিম পৌরসভায় কর্মরত আছেন। মামলার এজাহার সুত্রে জানা গেছে, ২০১৭ সালে দর্শনা পৌরসভা এলাকার চারটি রাস্তা সংস্কারের জন্য টেন্ডার আহবান করা হয়। দাখিলকৃত দরপত্রের মধ্যে সর্বনি¤œ দরদাতা হিসেবে দর্শনার দক্ষিন চাঁদপুর গ্রামের মেসার্স জয়নাল আবেদীন ও কলেজ পাড়ার নাজমুল হুদাকে কার্যাদেশ প্রদান করা হয়। মামলার এজাহারে বলা হয় টেন্ডারকৃত রাস্তার মধ্যে দুইটি রাস্তা এলজিইডির আইডি ভুক্ত রাস্তা ছিল, যা ডিঙ্গেদহ-শংকরচন্দ্র ইউপি-মাখালডাঙ্গা-দোস্তেরহাট-কোটালিপাড়া-দর্শনা রাস্তা হিসেবে পরিচিত। ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে ওই রাস্তা দুইটি চুয়াডাঙ্গা এলজিইডি বন্যা ও দুর্যোগ ক্ষতিগ্রস্থ পল্লীসড়ক অবকাঠামো প্রকল্পের আওতায় নির্মিত হয়। ঠিকাদাররা ওই রাস্তার কাজ না করা সত্তে¡ও প্রকল্প দুইটির বাস্তবায়ন দেখিয়ে ক্যাশিয়ার সৈয়দ মোঃ রুমি আলম ও সাবেক উপসহকারী প্রকৌশলী এসএম আব্দুস সামাদ ভুয়া বিল ভাউচার তৈরী করে নিজেরাই চারটি চেকের মাধ্যমে ১৭ লাখ ৫২ হাজার টাকা তুলে নেন। তারা এই টাকা দামুড়হুদা সোনালী ব্যাংক শাখা থেকে বেয়ারার চেকের মাধ্যমে উত্তোলন করেন। ফলে পরস্পর যোগসাজসে অসৎ উদ্দেশ্যে জালিয়াতি, প্রতারণা, বিশ^াসভঙ্গ ও ক্ষমতার অপব্যাবহার করায় তাদের বিরুদ্ধে ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলা করা হয়। বিষয়টি নিয়ে দুর্নীতি দমন কমিশনের ঝিনাইদহ জেলা সমন্বিত অফিসের সহকারী পরিচালক মোঃ বজলুর রহমান খবরের সত্যতা স্বীকার করে বলেন, সরজমিন তদন্ত ও দপ্তরের কাগজপত্রে জালিয়াতির তথ্য মিলেছে। তারা এডিবি সাধারণ ও বিশেষ বরাদ্দের (জিওবি) টাকা আত্মসাৎ করে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে প্রতিয়মান হয়।
এক লাখ সুদের টাকা নিয়েছিলেন ৫ লাখ পরিশোধ করেও সুদখোরের পাওয়ানা মেটেনি
ঝিনাইদহ প্রতিনিধিঃ
সুদ কারবারীর কাছ থেকে নিয়েছিলেন এক লাখ টাকা। এ পর্যন্ত দিয়েছেন ৫ লাখ টাকা। তারপরও সুদের টাকা শোধ হয়নি। এরপর নিজের কাছে রাখা বøাঙ্ক চেকে ১৪ লাখ টাকা বসিয়ে মামলা করে এক সুদখোর ব্যবসায়ী। সেই মামলায় ১০ মাস ধরে জেল খাটছেন এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। ঘটনাটি ঘটেছে ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলার নিত্যানন্দনপুর ইউনিয়নের কাকুড়িয়াডাংগা গ্রামে। গ্রামবাসি জানায়, অভাব অনটনের সংসার হলেও দুই ছেলে মেয়ে, স্ত্রী ও মাকে নিয়ে সুখের সংসার ছিল কাকুড়িয়াডাংগা গ্রামের আলউদ্দিন বিশ^াসের ছেলে শহিদুলের। ব্যবসা বড় করার জন্য শহিদুল স্থানীয় সুদখোর ওলিয়ার রহমানের কাছ থেকে বøাঙ্ক চেক দিয়ে এক লাখ টাকা নেন। সুদাসলসহ এ পর্যন্ত শহিদুল পরিশোধ করেছেন ৫ লাখ টাকা। কিন্তু খাতায় তার জের থেকেই যায়। এদিকে টাকা দিতে দিতে চক্রবৃদ্ধি হারে বাড়তে থাকা সুদের টাকা বকেয়া পড়ে যায়। সময়মতো পরিশোধ করতে না পারায় সুদখোর ওলিয়ার সেই বøাঙ্ক চেকে ১৪ লাখ টাকা বসিয়ে ঠুকে দেয় মামলা। সেই মামলায় এখন তিনি জেলের ঘানি টানছেন। সুদখোর ওলিয়ার রহমান শৈলকুপা উপজেলার পাচপাখিয়া গ্রামের মৃত ফজলুর রহমানের ছেলে। ব্যবসায়ী শহিদুল জেলে থাকায় তার কলেজ পড়–য়া দুই ছেলে মেয়ে বাড়ি ছেড়ে এক আত্মীয়ের বাড়িতে উঠেছে। সুদখোরের কাছ থেকে টাকা নিয়ে একটি পরিবার ছিন্নভিন্ন হয়ে গেছে। এদিকে ওলিউর রহমান দাবি করছেন তার কাছে সুদে টাকা নয়, জমি বিক্রির টাকা নিয়ে অন্য লোকের কাছে বিক্রি করেছে শহিদুল। এ জন্য তিনি মামলা করেছেন। কারাগারে থাকা শহিদুলের স্ত্রী সীমা ইসলাম জানান, “পাচপাখিয়া গ্রামের ওলিয়ারের কাছ থেকে দুই বছর আগে আমার স্বামী দুটি ফাঁকা চেক দিয়ে এক লাখ টাকা নেন। পরবর্তীতে আসল টাকাসহ লভ্যাংশের ৫ লক্ষ টাকা পরিশোধও করেন। কিছুদিন পর ওলিয়ার আরো ৫ লাখ টাকা দাবী করেন। আমার স্বামী টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ফাঁকা চেকের উপর ১৪ লাখ টাকা বসিয়ে ঝিনাইদহের আদালতে চেকের মামলা করেন। আদালতের আদেশে আমার স্বামীকে গ্রেফতার করে ১০ মাস আটকে রাখা হয়েছে”। সীমা ইসলাম অভিযোগ করেন, বিভিন্ন সময় সুদখোর ওলিয়ার হুমকি দিচ্ছেন। ফলে আমিসহ আমার পরিবার চরম নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। ভয়ে আমার কলেজ পড়–য়া ছেলে মেয়ে অন্যের বাড়িতে আছে। বিষয়টি নিয়ে ওলিউর রহমান বলেন, আমার কাছে সে জমি বিক্রি করার জন্য টাকা নিয়েছিল। এখন সে জমি না দিয়ে তালবাহানা শুরু করেছে। আমি কোন সুদে কারবারী না। এলাকায় আমি একজন সৎ মানুষ, আমি এ বছর হজে¦ যাব। এ ব্যাপারে শৈলকুপা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, এব্যাপারে আমার কাছে একটা অভিযোগ এসেছে। বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ঝিনাইদহ
আতিকুর রহমান

Leave a Reply