রিপন ওঝা,খাগড়াছড়ি

বাংলাদেশ কৃষকলীগ খাগড়াছড়ি জেলা শাখার ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে আজ ১১মার্চ রোজ শনিবার সভাপতি পদে পিন্টু ভট্টাচার্য ও সাধারণ সম্পাদক পদে খোকন চাকমা মনোনীত হয়েছেন।

খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু ও সকল উপজেলা কৃষকলীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের সাথে নিয়ে পায়রা ও বেলুন উড়িয়ে সম্মেলনের উদ্বোধন করেন।

খাগড়াছড়ি সরকারি কলেজ মাঠে বাংলাদেশ কৃষকলীগ খাগড়াছড়ি জেলা শাখার ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাসান মাহমুদ বলেছেন, জিয়াউর রহমান পার্বত্য চট্টগ্রামে পাহাড়ি- বাঙালিদের মধ্যে বিভেদ সৃষ্টি করেছেন। আর শেখ হাসিনা “পার্বত্য শান্তি চুক্তি” সম্পাদনের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয় ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড প্রতিষ্ঠা করে পাহাড়ে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির বন্ধন এবং স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছেন। এখন আর পাহাড়ি-বাঙালিদের মধ্যে আস্থার সংকট নেই, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি স্থিতি রয়েছে। কিছু কিছু বিচ্ছিন্ন যেসব ঘটনা ঘটছে তা শুধু চাঁদাবাজির জন্য।

কৃষকলীগ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমারে হাতে গড়া সংগঠন, দেশের প্রায় সত্তর ভাগ মানুষ কৃষির সাথে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ভাবে জড়িত, কৃষক এবং কৃষি দেশ ও অর্থনীতির প্রাণ উল্ল্যেখ করে বিএনপিকে উদ্দেশ্য করে মন্ত্রী বলেন, শেখ হাসিনা সরকারের দৃশ্যমান উন্নয়ন আর দেশের পরিবর্তন বিএনপির পালাতক নেতা তারেক রহমানের সহ্য হচ্ছে না। খালেদা জিয়ার অন্তর জ্বলছে আর মির্জা ফখরুল বকবক করছে। ১০ ডিসেম্বর মির্জা ফকরুল হুঙ্কার দিয়ে সরকারকে দড়ি ধরে টান দিতে গিয়ে তারা চিৎপটাং হয়ে গেছেন। এরপর দড়ি ধরে টান দিতে গেলে দড়ি ছিঁড়ে হামাগুড়ি দিতে হবে। বর্তমান সরকারের ভিত অনেক গভীরে উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগ গণমানুষের দল। আওয়ামীলীগ কৃষক-শ্রমিকের দল। আওয়ামীলীগ রাজপথ থেকে গড়ে ওঠা দল। আমরা রাজপথ কাউকে ইজারা দেইনি। আমরা রাজপথে আছি, রাজপথে থাকবো’।

বিশেষ অতিথি সাংসদ কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা বলেন বর্তমান সরকার আওয়ামী লীগ সরকার,ডিজিটাল বাংলাদেশ আসলে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সোনার বাংলার আধুনিক রূপ, যার বাস্তবায়ন শুরু হয় ২০০৯ সালে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উন্নয়ন দর্শনের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা দেশের সব মানুষের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়ে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির সম্প্রসারণ ও বিকাশ, অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন, দক্ষ মানবসম্পদ উন্নয়ন ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি, ডিজিটাল অর্থনীতি ও ক্যাশলেস সোসাইটি গড়ে তোলার ব্যাপক কার্যক্রম গ্রহণ করা হয়। এসব কর্মযজ্ঞ বাস্তবায়নের জন্য আইন, নীতিমালা প্রণয়ন থেকে শুরু করে সামগ্রিক কার্যক্রমের পরামর্শ ও তদারকি করছেন ডিজিটাল বাংলাদেশের আর্কিটেক্ট প্রধানমন্ত্রীর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিবিষয়ক মাননীয় উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়।জনগণের দোরগোড়ায় সহজে, দ্রুত ও স্বল্প ব্যয়ে সরকারি সেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ২০১০ সালের ১১ নভেম্বর মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের ৪ হাজার ৫০১টি ইউনিয়নে একযোগে ইউনিয়ন তথ্য ও সেবাকেন্দ্র উদ্বোধন করেন, যা বর্তমানে ইউনিয়ন ডিজিটাল সেন্টার (ইউডিসি) নামে সুপরিচিত। এই সেন্টার থেকে গ্রামীণ জনপদের মানুষ খুব সহজেই তাঁদের বাড়ির কাছে পরিচিত পরিবেশে জীবন ও জীবিকাভিত্তিক তথ্য ও প্রয়োজনীয় সেবা পাচ্ছেন।তাই তিনি বলেন আওয়ামীলীগ সরকার উন্নয়নের সরকার।

প্রথমে কেবল ইউনিয়ন পরিষদকেন্দ্রিক এর কার্যক্রম চালু হলেও বর্তমানে পৌরসভা, সিটি করপোরেশন, গার্মেন্টসকর্মী এবং প্রবাসী নাগরিকদের জন্য আলাদা ডিজিটাল সেন্টার চালু হয়েছে। বর্তমানে সারা দেশে ৮ হাজার ২৮০টি ডিজিটাল সেন্টারের মাধ্যমে ৩০০–এর অধিক ধরনের সরকারি-বেসরকারি সেবা জনগণ গ্রহণ করতে পারছেন। ডিজিটাল সেন্টার সাধারণ মানুষের জীবনমান সহজ করার পাশাপাশি দৃষ্টিভঙ্গিও বদলে দিয়েছে। মানুষ এখন বিশ্বাস করে, ঘরের কাছেই সব ধরনের সেবা পাওয়া সম্ভব। মানুষের এই বিশ্বাস অর্জন ডিজিটাল বাংলাদেশের পথচলায় সবচেয়ে বড় পাওয়া।

খাগড়াছড়ি জেলা কৃষকলীগের আহবায়ক পিন্টু ভট্টচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে প্রধান বক্তা হিসেবে বক্তব্য রাখেন, কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ বিশ্বনাথ সরকার বিটু।

বিশেষ অতিথি হিসেবে ভারত প্রত্যাগত শরনার্থী বিষয়ক টাস্কফোর্সের চেয়ারম্যান কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপি, সংরক্ষিত নারী সাংসদ বাসন্তী চাকমা, কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আকবর আলী চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র নির্মলেন্দু চৌধুরী, যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ও খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মংসুইপ্রু চৌধুরী অপু, সাংগঠনিক সম্পাদক দিদারুল আলম দিদার, কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় দপ্তর সম্পাদক রেজাউল করিম রেজা, আইন বিষয়ক সম্পাদক অ্যাডভোকেট রাবেয়া হক ও জাতীয় কমিটির সদস্য মোতাহার হোসেন বাবুর ছাড়াও খাগড়াছড়ি জেলা আওয়ামীলীগ, কৃষকলীগ ও বিভিন্ন অঙ্গ সংগঠনের নেতৃবৃন্দ বক্তব্য রাখেন।

১ম অধিবেশন শেষে ২য় অধিবেশনে পিন্টু ভট্টচার্য্যকে সভাপতি এবং খোকন চাকমাকে সাধারণ সম্পাদক করে কৃষকলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক কৃষিবিদ বিশ্বনাথ সরকার বিটু খাগড়াছড়ি জেলা কৃষক লীগের আংশিক কমিটি ঘোষণা করেন।

উক্ত সম্মেলনে জেলা আওয়ামী লীগ উপদপ্তর বিষয়ক সম্পাদক মোঃ নুরুল আযম সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন খোকন চাকমা।