January 15, 2025, 1:32 pm

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
পটিয়ায় এ, জে,ফাউন্ডেশনের উদ্যােগে কম্বল বিতরণ বাহুবলে শাহজালাল হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক আইয়ুব আলী বহাল তবিয়তে ময়মনসিংহ সদর উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে দিনব্যাপী তারুণ্য উৎসব উদযাপন এ্যাডহক কমিটির বিরুদ্ধে মিছিল, মানববন্ধন, পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে তালা, অধ্যক্ষের সংবাদ সম্মেলন আলোচিত সেই ক্যাডেট এসআই ব্যাচের প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত  সুজানগর শ্রমিক কল্যাণ ফেডারেশনের উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ উন্নত দেশ গড়ে তুলতে শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানমনস্ক করে গড়ে তুলতে হবে- ইউএনও রাশেদুজ্জামান ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুরে কাঠ রিফাইন কারখানার বয়লার বিস্ফো-রণে দুইজন তানোরে জামায়াতের রাজনীতিতে প্রাণচাঞ্চল্য শীতার্ত মানুষের মাঝে কম্বল বিতরণ করেন নজির হোসেন ফাউন্ডেশন
সাঁওতালি ভাষায় শিক্ষা চালু ও শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে খাগড়াছড়ি ডিসির নিকট স্মারকলিপি দিলেন সাঁওতাল নেতৃবৃন্দ

সাঁওতালি ভাষায় শিক্ষা চালু ও শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে খাগড়াছড়ি ডিসির নিকট স্মারকলিপি দিলেন সাঁওতাল নেতৃবৃন্দ

মিঠুন সাহা, খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি

সাঁওতাল শিশুদের জন্য সাঁওতালদের নিজস্ব বর্ণমালা (অলচিকি) দিয়ে বই প্রকাশ, সাঁওতালি ভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা চালু ও সাঁওতালি ভাষার শিক্ষক নিয়োগের দাবিতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিকট স্মারকলিপি প্রদান করেন সাঁওতাল স্টুডেন্টস্ ফোরাম ও সাঁওতাল উন্নয়ন সংসদ।

বৃহস্পতিবার ( ৯ মার্চ ) সকাল ১১টার সময় জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে জেলা প্রশাসক মোঃ সহিদুজ্জামান এর মাধ্যমে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বরাবর এই স্মারকলিপি দেন সাঁওতাল স্টুডেন্টস্ ফোরাম ও সাঁওতাল উন্নয়ন সংসদ এর নেতৃবৃন্দ।

স্মারকলিপিতে যে দাবিগুলো নিয়ে উল্লেখ্য করা হয়েছে তার বিস্তারিত নিচে তুলে ধরা হলো:

ঝরে পড়া আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফিরিয়ে আনতে এবং তাদের মাতৃভাষায় শিক্ষা দেওয়ার কথা চিন্তা করে ২০১০ সালের প্রণীত শিক্ষানীতিতে সরকারিভাবে আদিবাসীদের মাতৃভাষায় প্রাথমিক শিক্ষার কথা বলা হয়। ২০১৩ সালের শুরুতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় উদ্যোগী হয়ে প্রাক-প্রাথমিক পর্যায়ে জনসংখ্যার দিক থেকে বেশি প্রচলিত ছয়টি ভাষায় পাঠ্যপুস্তক তৈরি, শিক্ষক প্রশিক্ষণসহ নানা কর্মসূচি হাতে নেয়। এটি আদিবাসীদের ভাষা ও শিশুদের জন্য সরকারের একটি মহৎ উদ্যোগ। আমরা এ জন্য সরকারকে ধন্যবাদ জানাই।

কিন্তু চাকমা, মারমা, ককবরক, মান্দি ও সাদরি ভাষায় পাঠ্যবই তৈরি হলেও বর্ণমালা বিতর্কের কারণে আটকে যায় সাঁওতালি ভাষার বই। এখনও এর সমাধান হয়নি। এটা সাঁওতালি ভাষা ও সাঁওতাল শিশুদের জন্য দুঃখজনক। বর্ণমালা বিতর্কের কারণ হলো সাঁওতালরা নিজস্ব বর্ণমালা (অলচিকি) দিয়ে সাঁওতালি ভাষার বই প্রকাশের দাবি করলেও খ্রিস্টান মিশনারিরা রোমান বর্ণমালায় বই প্রকাশের দাবি জানায় এবং আর একটি পক্ষ বাংলা বর্ণমালায় বই প্রকাশের দাবি জানায়।

আপনি জানেন সাঁওতালদের নিজস্ব বর্ণমালা আছে। সাঁওতালদের নিজস্ব বর্ণমালা বা সাঁওতালি বর্ণমালার সাঁওতালি নাম হলো ‘অলচিকি’। ‘অল’ শব্দের বাংলা মানে হলো ‘লেখা’ এবং ‘চিকি’ শব্দের বাংলা মানে হলো ‘বর্ণ’। অর্থাৎ ‘অলচিকি’ শব্দের বাংলা মানে দাড়ায় ‘লেখার বর্ণ’। সাঁওতালদের সমাজ ও সংস্কৃতির সাথে মিল রেখে ১৯২৫ সালে ভারতের উড়িষ্যা রাজ্যের সাঁওতাল সাহিত্যিক ও সাঁওতালি ভাষাবিদ পণ্ডিত রঘুনাথ মুর্মু সাঁওতালি বর্ণমালা বা অলচিকি আবিষ্কার করেন। সাঁওতালদের সমাজ ও সংস্কৃতির সাথে মিল

থাকার কারণে সাঁওতাল শিশুরা খুব সহজে এই বর্ণমালা শিখতে পারে। অলচিকিকে ২০০৮ সালে ইউনিকোড অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ২০১৮ সালে সাঁওতালি ভাষার উইকিপিডিয়া প্রকাশিত হয় অলচিকি দিয়ে।

আপনি জানেন সাঁওতালদের বসবাস বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালে। তার মধ্যে সাঁওতালদের বৃহৎ অংশ (প্রায় এক কোটি অধিক) বসবাস করে ভারতে। ২০০৩ সালে ভারতের সংবিধানে সাঁওতালি ভাষাকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে ভারতে বিভিন্ন রাজ্যে সাঁওতালি ভাষায় প্রাথমিক শিক্ষা থেকে শুরু করে উচ্চ শিক্ষা লাভের সুযোগ রয়েছে। সেখানেও অলচিকি তথা সাঁওতালি বর্ণমালা দিয়ে লেখা-পড়া চলছে। উল্লেখ্য যে, ২০২২ সাল পর্যন্ত পরিসংখ্যান অনুযায়ী নিম্নোক্ত উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের অধীন বহু শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অলচিকি দিয়ে সাঁওতালি ভাষায় লেখা-পড়া চলছে।

ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী বিশ্ববিদ্যালয় (ঝাড়খণ্ড)
,রাঁচি বিশ্ববিদ্যালয় (ঝাড়খণ্ড) কোলহান বিশ্ববিদ্যালয় (ঝাড়খণ্ড),নীলাম্বর পীতাম্বর বিশ্ববিদ্যালয় (ঝাড়খণ্ড) সিধু কানু বিশ্ববিদ্যালয় (ঝাড়খণ্ড),বিনোবা ভাবে বিশ্ববিদ্যালয় (ঝাড়খণ্ড) বিদ্যাসাগর বিশ্ববিদ্যালয় (ঝাড়খণ্ড),সিধু-কানু বিরসা বিশ্ববিদ্যালয় (পশ্চিমবঙ্গ),বাঁকুড়া বিশ্ববিদ্যালয় (পশ্চিমবঙ্গ),বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয় (পশ্চিমবঙ্গ),কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয় (পশ্চিমবঙ্গ),
বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় (পশ্চিমবঙ্গ),রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় (পশ্চিমবঙ্গ) মুর্শিদাবাদ বিশ্ববিদ্যালয় (পশ্চিমবঙ্গ),সাধু রামচাঁদ মুর্মু বিশ্ববিদ্যালয় (পশ্চিমবঙ্গ), নর্থ উড়িষ্যা বিশ্ববিদ্যালয় (উড়িষ্যা)।

ফলে ভারতে অলচিকি তথা সাঁওতালি বর্ণমালা দিয়ে ব্যাপকভাবে সাঁওতালি সাহিত্য ও গবেষণা সমৃদ্ধি লাভ করছে। এমতাবস্থায় বাংলাদেশে যদি সাঁওতালি ভাষার জন্য অলচিকি বাদে ভিন্ন বর্ণমালায় বই প্রকাশ করা হয়, তাহলে এখানকার সাঁওতাল ভারতে গড়ে ওঠা সাঁওতালি সাহিত্য ও গবেষণা থেকে বঞ্চিত হবে। তাছাড়া বাংলাদেশে গড়ে ওঠা সাঁওতালি সাহিত্য ও গবেষণা থেকেও ভারতের সাঁওতাল বঞ্চিত হবে। বাংলাদেশ ও ভারতের সাঁওতালি ভাষা ও সাহিত্যে বিছিন্নতা সৃষ্টি হবে। সাঁওতালি ভাষার জন্য এটা ক্ষতিকর। এক্ষেত্রে বাংলা ভাষার উদাহরণ দেওয়া যেতে পারে। ভারত ও বাংলাদেশ দুটি ভিন্ন দেশ হলেও বাংলা ভাষার জন্য ভিন্ন ভিন্ন বর্ণমালা ব্যবহার হয় না। দুই দেশের বাংলা ভাষার জন্য বাংলা বর্ণমালাই ব্যবহার করা হয়।

তাই আমরা মনে করি যেহেতু আমাদের (সাঁওতালদের) একটি ভাষা রয়েছে এবং নিজস্ব বর্ণমালা রয়েছে, সেহেতু অন্য বর্ণমালায় সাঁওতালি ভাষার বই প্রকাশ করা বা অন্য বর্ণমালা বাংলাদেশের সাঁওতালদের উপর চাপিয়ে দেওয়া মানে উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সাঁওতালি ভাষা ও সাহিত্যের ক্ষতি করা। আমরা আশা করি আপনি সাঁওতালি ভাষা ও সাহিত্যের এই ক্ষতি হতে দিবেন না। আমরা চাই পৃথিবীর সকল সাঁওতাল তাদের মাতৃভাষা তাদের নিজস্ব বর্ণমালা (অলচিকি) দিয়ে চর্চা করুন। সমৃদ্ধ হোক সাঁওতালি ভাষা ও সাহিত্য।

তাই আপনার নিকট আমাদের দাবি বাংলাদেশ সরকার আদিবাসী শিশুদের মাতৃভাষায় শিক্ষা লাভের যে সুযোগ সৃষ্টি করেছে, সেখানে সাঁওতাল শিশুরা যেন সাঁওতালদের নিজস্ব বর্ণমালা (অলচিকি) দিয়ে লেখা-পড়ার সুযোগ পায়। সাঁওতাল শিশুদের বই যেন সাঁওতালি বর্ণমালা (অলচিকি) দিয়ে প্রকাশিত হয়। সেই সাথে সাঁওতাল শিশুদের পড়ানোর জন্য সাঁওতালি ভাষার শিক্ষক নিয়োগের দাবিও জানাই।

বাংলাদেরশের সাঁওতালদের পক্ষে যারা দাবীগুলো তুলে ধরেছেন তারা হলেন: মানিক মুরমু, আহ্বায়ক সাঁওতাল স্টুডেন্টস্ ফোরাম ও সাঁওতাল উন্নয়ন সংসদ,মিন্টু কিস্কু যুগ্ম আহ্বায়ক সাঁওতাল স্টুডেন্টস্ ফোরাম ও সাঁওতাল উন্নয়ন সংসদ,আকাশ মুরমু যুগ্ম আহ্বায়ক সাঁওতাল স্টুডেন্টস ফোরাম ও সাঁওতাল আয়ন সংসদ,ফাল্গুনী সরেন প্রচারক সম্পাদক সাঁওতাল স্টুডেন্টস্ ফোরাম ও সাঁওতাল উন্নয়ন সংসদ।

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD