January 15, 2025, 6:35 am
মিজানুর রহমান মিলন :
সাংবাদিক পেশাকে আমি ব্যাক্তিগত ভাবে সন্মান করি । আমাদের বাড়িতে (ফুলকোট -মন্ডলপাড়া) ২০০২ সাল থেকে নিয়মিত পএিকা নেই। স্হানীয়, জাতীয়, সাপ্তাহিক, পাক্ষিক, মাসিক, সালতামামি সহ এমন কোন পএিকা নাই যে আমি পড়িনি, সকাল হলেই সেই দিনের পএিকা না পড়লে ভালো লাগতো না, পএিকা পড়া নিয়েও আমরা দুই ভাই পএিকা নিয়ে কারাকারি করেছি কে আগে পএিকা পড়বে এই নিয়ে, তখন পএিকা পড়ার একটা আনন্দ ছিলো, এখন সবার হাতে হাতে স্মার্টফোনের কারণে পত্রিকার ওপর মানুষের আগ্রহ কমে গেছে । আমাদের বাড়িতে আমাদের পাড়ার অনেকেই পএিকা পড়ার জন্য আসতো । তার মধ্যে আমার বড় আব্বা মরহুম আলহাজ্ব মনছুর আলী মন্ডল, মরহুম ইনসাফ আলী মন্ডল, মরহুম মাহমুদ আলী মন্ডল, আজ তারা কেউ বেঁচে নেই । মহান আল্লাহ তায়ালা যেন তাদেরকে জান্নাতুল ফেরদৌস নসিব করেন । পএিকা পড়া আমাদের একটা নেশা ছিলো। এক সময় বই পড়াও আমার নেশা ছিলো,সেটা সব ধরনের বই, বোখারী শরীফ, মেশকাত শরীফ , তাজকেরাতুল আউলিয়া, তাজকেরাতুল আম্বিয়া সহ নাম না জানা প্রায় ৮ /১০ হাজার টাকা মুল্যের বই এখনো আমাদের বাড়িতে আছে । আমার এখন আগের মতো বই পড়ার অত সময় হয়না, আমার আব্বু পড়ে । আমি ছোট বেলায় দৈনিক করতোয়া পত্রিকায় শনিবারের ছোটদের বিশেষ পাতা সবুজ আসরের সদস্য ছিলাম, এছাড়াও ডাকযোগে শিক্ষা কার্যক্রম, শিক্ষা কল্যান ট্রাষ্টের সদস্য ছিলাম, পরিবেশ ও নৈতিকতা বিষয়ক সার্টিফিকেট আছে আমার । আমাদের বাড়িতে
ছোট বেলা থেকে সাংবাদিকদের কার্যক্রম আমার ভালো লাগতো। আমার ফুফাতো ভাই জাতীয় দৈনিক “যায় যায় দিন ” ও “মানব কন্ঠ” পএিকার বগুড়ার শেরপুর উপজেলা প্রতিনিধি , সেই সুবাদে সাংবাদিকদের সাথে চলাফেরা আমার ছোট বেলা থেকেই । যত বড় হয়েছি বিভিন্ন ভাবে বিভিন্ন সময়ে সাংবাদিকদের কার্যক্রম সত্য কথা বলার সাহস অন্যায়ের প্রতিবাদ মূলক নিউজ ইত্যাদি দেখে অনুপ্রানিত হতাম।তখন থেকেই মনে হতো আমি জীবনে কোন এক সময় সম্ভব হলে এই পেশায় কাজ করবো। ইনশাআল্লাহ অবশেষে সেই পেশায় আজ আমি জড়িত ।
কিন্তু আজ আফসোসের সাথে বলতে হচ্ছে যে,এই পেশাকে না জেনে যত সন্মান করতাম আজ অনেকটাই ঘৃণা করতে ইচ্ছে করে।
না সাংবাদিক পেশাকে নয়,সাংবাদিক পেশার সাথে জড়িত কিছু নামধারী সাংবাদিক দের জন্য।আজ এই পেশাকে মোটামুটি জানার পর সংখ্যা লঘু কিছু সাংবাদিক দের তেলবাজি,অসৎ উপার্জন,অন্যকে বিপদে ফেলে ফায়দা লুটে নেয়া ইত্যাদি দেখে সন্মান টা হাড়িয়ে যাচ্ছে ।
হ্যাঁ অনেকেই বলতে পারেন আমিও তো হলুদ সাংবাদিক দের মাঝে একজন হতে পারি
কিন্তু আমি গর্ব করে বলতে পারি,সাংবাদিক পেশায় এসে কোনদিন কারোর উপকারে না আসলেও কারোর ক্ষতি করিনি এখনো।
আমি এই পেশাকে ধরে না রাখলেও আমার কোন সমস্যা নাই। কারণ আমি সাংবাদিক পেশাকে অর্থ-উপার্জনের মাধ্যেম হিসেবে বেছে নেই নাই,আমি এই পেশাকে বেছে নিয়েছিলাম সত্যি কথা বলতে গেলেও একটা প্লাটফর্ম প্রয়োজন তাই ।
এক কথায় সাংবাদিকতা আমার পেশা নয় নেশা ।
আমি সকল সাংবাদিক ভাই-বোনদের কে করজোড় করে অনুরোধ করছি,সামান্য কিছু অর্থ উপার্জনের জন্য এতো সন্মানিত একটা পেশাকে আপনারা প্রশ্নবিদ্ধ করবেন না ।
অনেক মানুষ আছে যারা মুখে কিছু বলেনা
কিন্তু সাংবাদিক নামটা শুনলেই ভ্রু-কুচকিয়ে ঘৃণার চোখে দেখে ।
তাই এই পেশাকে পুনরায় সন্মানিত আসনে রাখতে সকল সাংবাদিক কে সঠিক নিয়মে লোভ লালসা ছেড়ে দিয়ে মানুষের ভালোবাসা নিয়ে কাজ করতে হবে ।