নাগেশ্বরীতে হিন্দু থেকে মুসলিম বনে বিয়ে, পরে স্ত্রীকে অস্বীকার

এম এস সাগর,
কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:

কুড়িগ্রামের নাগেশ্বরীতে এক ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধি বাদল চন্দ্র রায় অবৈধ প্রেমে অন্ধ হয়ে এফিডেভিটের মাধ্যমে হিন্দু থেকে মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করে ফেরদৌসী খাতুন নামে এক অসহায় মুসলিম মেয়ে কে বিবাহ করে সংসার চলছিল বাদল থেকে আব্দুল্লাহ আল-মামুনের। অবশেষে স্ত্রীকে অস্বীকার করাসহ নানা অভিযোগ উঠেছে প্রতারক বাদল থেকে আব্দুল্লাহ আল-মামুনের বিরুদ্ধে।

অভিযোগ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার কাশীপুর ইউনিয়নের গংগারহাট (শ্যামপুর) গ্রামের হরিকান্ত রায় ও কল্পনা রাণীর পুত্র ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধি বাদল চন্দ্র রায় ওরফে (আব্দুল্লাহ আল-মামুন) এবং নাগেশ্বরী উপজেলার বালাটারী গ্রামের আব্দুল কুদ্দুস ও ফরিদা বেগমের কন্যা মোছাঃ ফেরদৌসী খাতুনের সাথে বাদলের দীর্ঘ দুই বছর থেকে অবৈধ প্রেমের সম্পর্ক চলে আসছিল। প্রেমে অন্ধ হয়ে বাদল চন্দ্র রায় গত ৫জুন ২০২২সালে লালমনিরহাট নোটারি পাবলিক কার্যাল‌য় থেকে ২৬৮৫নং এফিডেভিট মূলে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে তার নাম রাখেন আব্দুল্লাহ আল-মামুন (৩২)। গত ৮জুন ২০২২সালে মোছাঃ ফেরদৌসী খাতুন ও আব্দুল্লাহ আল-মামুন (বাদল চন্দ্র রায়) যৌথভাবে রংপুর মিঠাপুকুর কাজী অফিসে ৫লাখ টাকা দেনমোহর ধার্য করে বিবাহ রেজিস্ট্রারী হয়। এরপর থেকে মোছাঃ ফেরদৌসী খাতুন ও আব্দুল্লাহ আল-মামুন (বাদল চন্দ্র রায়) সংসার ভালোই চলে আসছিল। এদিকে গত এক থেকে বাদল চন্দ্র রায় তার পূর্বের স্ত্রীর পরামর্শে সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে নাই এমনকি মোছাঃ ফেরদৌসী খাতুন কে বিবাহ করে নাই মর্মে মোছাঃ ফেরদৌসী খাতুন ও তার পরিবারকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করাসহ প্রাণনাশের হুমকি প্রদান করে আসছেন।

ভুক্তভোগী মোছাঃ ফেরদৌসী খাতুন বলেন, আমি নাগেশ্বরীতে এক ক্লিনিকে চাকরী করা এবং বাদল চন্দ্র রায় একটি ঔষধ কোম্পানিতে চাকরি করার সুবাদে তার সাথে পরিচয়। এক পর্যায়ে আমার সম্পর্কে জেনে তিনি আমাকে প্রেমের প্রস্তাব দেন। পরে তিনি নিজে থেকেই লালমনিরহাট নোটারি পাবলিকে এফিডেভিটের মাধ্যমে আব্দুল্লাহ আল-মামুন নাম ধারণ করে ইসলাম গ্রহণ করেন। এরপরই আমাকে বিয়ে করে ঘর-সংসার করতে থাকেন। গত এক থেকে আব্দুল্লাহ আল-মামুন (বাদল চন্দ্র রায়) তার পূর্বের প্রথম স্ত্রীর পরামর্শে সে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে নাই এমনকি আমাকেও বিবাহ করেন নাই মর্মে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার সহ আমাকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি ও প্রাণনাশের হুমকি প্রদান দিয়ে আসছেন। ফেরদৌসী খাতুন আরো বলেন, বিয়ের নামে এহেন প্রতারণার উপযুক্ত বিচার চেয়ে আদালতে মামলা করবো। এভাবে প্রতারণার মাধ্যমে আমার জীবন নষ্ট করার জন্য প্রশাসনের কাছে আইনি সহযোগিতা ও সংবাদকর্মীদের কাছে মিডিয়ার মাধ্যমে বিষয়টি তুলে ধরার জন্য সহায়তা চান।

আব্দুল্লাহ আল-মামুন (বাদল চন্দ্র রায়) বলেন, প্রেমের মোহে অন্ধ হয়ে এফিডেভিটের মাধ্যমে মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করি ও ফেরদৌসী খাতুন কে রেজিষ্ট্ররীর মাধ্যমেও বিবাহ করি। আমার প্রথম স্ত্রীর সন্তান রয়েছে। আমি আবারো হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছি। আমার ভুল হয়েছে। ক্ষমা করবেন। আমি ফেরদৌসী কে চিনি না।

স্থানীয় রবিউল ইসলাম, আঙ্গুর হোসেনসহ অনেকে বলেন, আব্দুল্লাহ আল-মামুন (বাদল চন্দ্র রায়) এফিডেভিটের মাধ্যমে মুসলিম ধর্ম গ্রহণ করে ও ফেরদৌসী খাতুন কে রেজিষ্ট্ররীর মাধ্যমেও বিবাহ করে ঘর সংসার চলে আসছিল। বিষয়টি সমাধানের জন্য অনেক চেষ্টা করেছি। সমাধান হচ্ছে না।

লালমনিরহাট কোর্টের এডভোকেট মোঃ আবু সাঈদ লিংকন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, এফিডেভিট করে বাদল চন্দ্র রায় নিজেই হিন্দু ধর্মত্যাগ, বিয়ে করেও এখন তা অস্বীকার করার মাধ্যমে আদালত-ধর্ম-সমাজকে অবজ্ঞা করে বাদল অন্যায় করছেন।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *