গাইনী ডাক্তার ছাড়াই অপারেশন- পটিয়ায় প্রসূতির মৃত্যু ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা

মহিউদ্দীন চৌধুরী।
নিজস্ব প্রতিনিধিঃ
পটিয়ায় গাইনী ডাক্তার ছাড়াই অপারেশন করতে গিয়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষণ হয়ে এক
প্রসূতির মৃত্যু হয়েছে। ওই প্রসূতির নাম জয়নাব বেগম ঝর্না (২০)। সে
উপজেলার জঙ্গলখাইন ইউনিয়নের উজিরপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলীর পুত্র
ব্যাংকার ছৈয়দ নুরের স্ত্রী। পৌর সদরের বেসরকারি পটিয়া জেনারেল হসপিটালে
প্রসূতি ঝর্ণার গত ১ ফেব্রুয়ারি (বুধবার) রাত ৩টার দিকে ডেলিভারীর সময়
ভুল চিকিৎসা হয়। এতে অতিরিক্ত রক্তকরন ও খিচুনি শুরু হলে পরে ২
ফেব্রুয়ারি (বৃহস্পতিবার) ঝর্নাকে চট্টগ্রাম ন্যাশনাল হসপিটালে ভর্তি করা
হয়। সেখানেই আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়।
জানা গেছে, পটিয়া পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের কাগজীপাড়া গ্রামের বাসিন্দা
মোহাম্মদ রফিকের কন্যার সঙ্গে উপজেলার উজিরপুর গ্রামের মোহাম্মদ আলীর
পুত্র ব্যাংকার ছৈয়দ নুরের সঙ্গে ১ বছর আগে বিয়ে হয়। বিয়ের এক বছরের
মাথায় প্রসূতির প্রসবদেনা দেখা দিলে বুধবার সকালে স্থানীয় একটি বেসরকারি
হসপিটালে ভর্তি করে। সকাল থেকে বেলা ৩টা পর্যন্ত ডেলিভারী না হওয়ায় পৌর
সদরের পটিয়া জেনারেল হসপিটালে পরবর্তী ভর্তি করে। গাইনী চিকিৎসক ফারহানা
নূর ডেলিভারী করার কথা থাকলেও ডেলিভারীর সময় তিনি ছিলেন না। ফলে ওই
হসপিটালের এমবিবিএস ডাক্তার মিজানুর রশিদ আলমদার জুয়েল ও সার্জারি
বিশেষজ্ঞ ডাক্তার এমদাদুল হাসান গাইনী ডাক্তার ছাড়াই প্রসূতির সিজার করান
রাত ৩টায়। এসময় নিহত ঝর্না কন্যার সন্তান জন্ম দিলেও অতিরিক্ত রক্তক্ষণের
কারণে প্রসূতির মৃত্যু হয়। প্রসূতির চাচাতো ভাই মো. আসিফ জানিয়েছেন,
গাইনী ডাক্তার ছাড়াই ডেলিভারী করার সময় ভুল চিকিৎসায় তার চাচাতো বোনের
মর্মান্তিক মৃত্যু হয়েছে। এ মৃত্যুর জন্য হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ দায়ী।
আল ইমরান নামের একজন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ফেইসবুকে লিখেছেন- গাইনী
ডাক্তারের কথা বলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ সময়ক্ষেপন করেছে। সিজার করার পর মা
ও মেয়ে সুস্থ আছে, প্রসূতিকে বেডে স্থাস্তান্তর করা হবে। প্রসূতির মা
থেকে গোপনে স্বাক্ষর নেওয়ার চেষ্টাও করেন। ওই সময় মা অতিরিক্ত রক্তক্ষরন,
খিচুনির বিষয়টি দেখে ফেলায় স্বাক্ষর না করে তিনি চিৎকার করে ফিরে আসেন।
পরবর্তীতে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আইসিইউতে ভর্তির পরামর্শ দেন।
পটিয়া জেনারেল হসপিটালের প্রশাসনিক কর্মকর্তা বাহাদুর খাদেমী জানিয়েছেন,
ভুল চিকিৎসায় প্রসূতির মৃত্যুর বিষয়টি সঠিক নয়। প্রসূতির প্রসবদেনা দেখা
দিলে জেনারেল হসপিটালে আনলে তারা গাইনী ডাক্তারের পরামর্শে চিকিৎসা শুরু
করেন এবং অপারেশনের মাধ্যমে ডেলিভারীও করা হয়েছে। তাদের হসপিটালে
প্রসূতির মৃত্যু হয়নি।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *