মোঃ মনিরুল ইসলাম,নাচোল, চাঁপাইনবাবগঞ্জ প্রতিনিধিঃ
চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার নেজামপুর শাখার গ্রাহকদের জমাকৃত লক্ষ লক্ষ টাকা নিয়ে উধাও হয়েছে এনজিও বিসিফ পল্লী উন্নয়ন প্রকল্প।
যার সনদ নং-সঃসেঃঅঃ নবাব-৪২৮, জেঃএসঃসিঃ রাজঃ এসঃ-৩৫৪, শাখা কোড- ০৪।
জানা গেছে নেজামপুর বাজারে প্রথম অফিস চালু করে। পরে জায়গা চেঞ্জ করে নাচোল সদর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের জোনাকি পাড়ার আব্দুস সালামের বাসাবাড়িতে ভাড়া নিয়ে তাদের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছিলেন।
কামাল জগদইল গ্রামের সোহরাবের ছেলে ভুক্তভোগী আব্দুল মান্নান জানান ৫বছর পূর্বে গরু বিক্রি করে ২লক্ষ টাকা জমা রেখে ছিলাম। তাকে বলেছিল যখন দরকার হবে দুইএকদিন আগে জানাবেন আমরা টাকা দিয়ে দেব। তিনি আরো জানান, আমার আব্বার একটা পাঁ দুর্ঘটনায় কাটা পরেছিল। ওই পাঁয়ে সেফটি হয়ে গেলে, অপারেশনের জন্য টাকা তুলতে গেলে আজকাল করে ঘুরাতে থাকে। আমি গ্রামে বাজারে মানুষের দ্বারস্থ হয়ে টাকা তুলে আব্বার পাঁয়ের অপারেশন করেছি। বর্তমান মাসকয়েক পূর্বে ৫০হাজার টাকা দিয়েছে। বাঁকি দেড়লক্ষ টাকা না দিয়ে অফিস বন্ধ করে পালিয়ে গেছে। ওই গ্রামের আব্দুল ওহাব ১লক্ষ, সেফালী বেগম ১লক্ষ, কামাল উদ্দিন ১লক্ষ, মোসাঃ রকিয়া বেগম ১লক্ষ ২০হাজার, মোসাঃ জুলেখা বেগম ১লক্ষ ৫০হাজার, নাহিদা খাতুন ২২হাজার, মামুন আলী ২০হাজার, কৃষ্ণপুর গ্রামের সমির আলী ৫০হাজার, গুয়াবাড়ি গ্রামের মনিরুল ৩লক্ষ ও কৃষ্ণপুর গ্রামের চেনু মন্ডলের মেয়ে তাসনারা গার্মেন্টসে কাজ করে ৫০হাজার টাকা জমা রেখেছেন।
তারা টাকা তোলার জন্য ঘুরে ঘুরে এখন পর্যন্ত কেউ টাকা পায়নি বলে জানান।
এইরকম শতশত অসহায় ভুক্তভোগীরা টাকার সোগে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন।
শুরুলা গুচ্ছু গ্রামের আয়েসার ১২হাজার টাকা জমা আছে, ওই টাকা চাইতে গেলে, মাঠ কর্মী, আয়েসার বাড়িতে হাঁস রান্না করতে বলে। বলে তুমি বাড়ি চলে যাও। আমি টাকা নিয়ে তোমার বাড়ি আসছি। এই ভাবে দুইদিন হাঁস রান্না করেও টাকা দিতে যায়নি। এমকি মাঠকর্মী হুমকি দিয়ে আয়েসাকে বলে, সাংবাদিককে বলেছো। ওর কি এমন ক্ষমতা আছে যে, তোমার টাকা তুলে দেবে কিংবা আমাদের কিছু করতে পরবে।
ওই এনজিওর কর্তৃপক্ষ আবার নেজামপুর বাজারের পাশেই নিজস্ব নতুন বিল্ডিং বানাতে শুরু করেছেন। ছাদ ঢালাই পর্যন্ত কাজ করে, প্রায় এক দেড়মাস পূর্বে কাজ বন্ধ করে পালাতক রয়েছে।
বিল্ডিং এর ঠিকাদার জোনাকি পাড়া গ্রামের মোস্তফার সাথে কথা বলে জানা যায়, তিনিও কাজ করতে গিয়ে ফেঁসে গেছেন।
তিনি জানান আমার মারফত রড সিমেন্টের দোকানে ১লক্ষ টাকার মালামাল বাঁকি তুলে দিয়েছি। ৪-৫ মাস হয়ে গেলেও টাকা পরিশোধ করছেনা। দোকানদার টাকার জন্য আমাকে চাপ দিচ্ছে।
এমনকি আমার পরিবার থেকেও প্রায় ৬লক্ষ টাকা জমা রাখা আছে।
আমি দুশ্চিন্তায় ঘুমাতে পারিনা।
এবিষয়ে নেজামপুর শাখার ম্যানেজার রুবেলের সাথে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তার মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলার নির্বাহী পরিচালক জহরুল ইসলামের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান কিছু দিনের মধ্যেই অফিস চালু করব। তারপর সবার টাকা পর্যায়ক্রমে পরিশোধ করে দেব।
নেজামপুর ইউপি চেয়ারম্যান আমিনুল হকের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান বিষয়টি আমার জানা আছে। আমাকে দোগাছী গ্রামের রুস্তম আলী মাষ্টার ফোনে জানিয়েছেন যে, তারও ৮লক্ষ টাকা জমা রেখেছেন।
জমাকৃত টাকা দিচ্ছে না। অনেক টালবাহানা করে দিনক্ষেপণ করতে করতে পালিয়ে গেছে।
এবিষয়ে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাইমেনা শারমিনের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি জানান বিষয়টি আমার জানা নেই। তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

Leave a Reply