পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়ায় নিয়োগ বাণিজ্য- মাদ্রাসা’র অফিসে ভুক্তভোগীর তালা

মুহম্মদ তরিকুল ইসলাম,তেতুলিয়া প্রতিনিধিঃ তেঁতুলিয়া উপজেলায় প্রতিষ্ঠানের সুপার ও সভাপতির নেযা নিয়োগের ঘুষের টাকা আদায় করতে মাদ্রাসায় তালা লাগিয়ে দিয়েছে ভুক্তভোগী পরিবারসহ স্থানীয়রা। রোববার (২৭ নভেম্বর) সকালে উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়নের শিলাইকুঠি বালাবাড়ী দাখিল মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে।
সকালের দিকে মাদ্রাসায় গিয়ে শিক্ষক শিক্ষার্থীরা অফিস কক্ষে একাধিক তালাবদ্ধ দেখতে পায়। এতে বিপাকে পড়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও অভিবাবকরা। বিষয়টি কর্তৃপক্ষ জানলেও সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত কেউ কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি।
স্থানীয়রা জানায়, নিরাপত্তা প্রহরী নিয়োগ দেয়ার কথা বলে স্থানীয় সুয়েল রানা নামের এক চাকুরি প্রার্থীর কাছ থেকে দফায় দফায় সাড়ে ৫ লাখ টাকা নেয় মাদ্রাসাটির সুপারিন্টেন্ডেন্ট বদিরুল আলম সরকার ও মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি আমিন আলী (আর্মি)। শনিবার ২৬ নভেম্বর বিকালে শূন্য নৈশ প্রহরী পদে সুয়েল রানাকে নিয়োগ না দিয়ে সভাপতির ভাতিজাকে নিয়োগ দেয়ায় পরের দিন রোববার সকালে ঘুষের টাকা আদায়ের জন্য মাদ্রাসাটির অফিস কক্ষে তালা লাগিয়ে দিয়েছে ভুক্তভোগীরা। এতে বিপাকে পড়েছেন মাদ্রাসাটির শিক্ষক শিক্ষার্থীরা। যদিও দ্বি-বার্ষিক পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা সকাল ১০ টায় কিন্তু দুপুর হয়ে গেলেও দায় সারানোর লক্ষ্যে আড়াইটার দিকে কর্তৃপক্ষ পরীক্ষা নেই শিক্ষার্থীদের। জানা যায়, প্রতিতিষ্ঠানটি ওই এলাকায় ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়।
ভুক্তভোগী তোফাজ্জল হোসেন জানান, করোনাকালীন সময়ে সুপার বদিরুল আলম সরকার আমার ছেলেকে চাকুরি দিবে মর্মে ছেলেকে বিয়ে দিয়ে যৌতুকসহ এ পর্যন্ত সাড়ে ৫ লাখ নিয়েছেন। গতকালকে ১২ লাখ টাকার বিনিময়ে সভাপতির ভাইয়ের ছেলেকে নিয়োগ দিয়েছেন। এবিষয়ে সুয়েল রানা বাদী হয়ে রোববার উপজেলা নির্বাহী অফিসারের বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।
সহ-সুপারিন্টেন্ডন্ট ওসমান গণি জানান, মাদ্রাসায় আলোচনা হয়েছে নিয়োগ দিয়ে যা ডোনেশন আসবে সেটা দিয়ে মাদ্রাসার উন্নয়ন কাজে ব্যবহার করা হবে। এখন শুনছি নিয়োগের টাকা সুপার-সভাপতিসহ ভাগবাটোয়ারা করে নিয়েছেন।
প্রথমে গণমাধ্যমের নিকট সুপারিন্টেন্ডেন্ট বদিরুল আলম সরকারের নিকট মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে ছুটিতে থাকায় মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি কিছুই জানেন না বলে জানান। পরে তিনি ফোনে কথা বলতে অস্বীকৃতি প্রকাশ করেন এবং ফোন কেটে দেন নতুবা ফোন বন্ধ করে রাখেন। এসময় সভাপতি আমিন আলীর মুঠোফোনটিও বন্ধ পাওয়া যায়। এতকিছু হওয়ার পরেও দু’জনের কেউই প্রতিষ্ঠানে আসেননি। স্থানীয়দের ধারণা তাঁরা দু’জনই ভাগবাটোয়ারা করে ঘুষের টাকা আত্মসাৎ করাই ভয়ে প্রতিষ্ঠানে আসছেননা।
এ বিষয়ে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোঃ শওকত আলী জানান, তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সোহাগ চন্দ্র সাহার নির্দেশে ঘটনাস্থলে আসেন। সুপার কোনো ছুট নিয়েছেন কিনা জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, আমার নিকট হতে কোনো ছুটি নেইনি। তিনি আরোও বলেন, সরাসরি ঘটনাস্থলে এসেছি অফিসে কেন অনুপস্থিত এবং প্রতিষ্ঠানের এই অবস্থা হওয়ায় তার (সুপারের) প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেয়া হবে।

মুুহম্মদ তরিকুল ইসলাম।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *