গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া ইউনিয়ন মেম্বারদের সাথে মতবিনিময়

বি এম মনির হোসেনঃ-

“শেখ হাসিনার মূলনীতি, গ্রাম শহরের উন্নতি”
বরিশালের আগৈলঝাড়ায় বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ মেম্বার এসোসিয়েশনের গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলার মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন ও পরিবীক্ষন কমিটির আহবায়ক (মন্ত্রী), আওয়ামী লীগ কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির সিনিয়র সদস্য আলহাজ্ব আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এমপি।
বুধবার সকাল এগারোটায় উপজেলার সেরাল গ্রামস্থ মন্ত্রীর বাস ভবন চত্তরে এই মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী আবুল হাসানাত আবদুল্লাহ এমপি বলেন-“ শেখ হাসিনার মূলনীতি, গ্রাম শহরের উন্নতি”-এ দর্শনকে ধারণ করে বর্তমান সরকার শহর ও গ্রামীণ অবকাঠামো এবং যোগাযোগ ও পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে দেশের অর্থনীতি বিকাশে বহুমুখী কার্যক্রম বাস্তবায়ন করছে। সে লক্ষ্যে শহর-নগর ও গ্রামীণ জনপদের ভাবনাকে আবর্তিত করে সরকারের বিভিন্ন কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। মন্ত্রী আরও বলেন, বর্তমান সরকারের গত ১৪ বছরে স্থানীয় সরকার বিভাগে শুধুমাত্র পল্লী উন্নয়ন খাতে ৬৯,০০২ কিলোমিটার পাকা সড়ক, ৪,০৫,০৯৯ মিটার নতুন ব্রীজ, ১,০৯,০৭৮ কিলোমিটার পাকা পল্লী সড়ক রক্ষণাবেক্ষণ, ১,৭৬৭ ইউনিয়ন পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ, ৩৫৪টি উপজেলা পরিষদ কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ করেছে।
এছাড়া ২,৬৮৯টি গ্রোথ সেন্টার ও হাটবাজার উন্নয়ন এবং ১,০৭৫টি সাইকোন সেল্টার নির্মাণ ও পুন:নির্মাণ করেছে। নাগরিক জীবনমান উন্নয়নে ৯,০৮৮ কিলোমিটার সড়ক ও ফুটপাত, ৪,১০৭ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণ, ১৫,০৪১ মিটার ব্রীজ ও কালভার্ট নির্মাণ, ৪১টি বাস ও ট্রাক টার্মিনাল নির্মাণ এবং ৫৩টি কমিউনিটি সেন্টার নির্মাণ করা হয়েছে।
মন্ত্রী আবুল হাসানাত তার বক্তব্যে আরো বলেন- ইউনিয়ন পরিষদ সদস্যবৃন্দ হচ্ছে তৃণমূল পর্যায়ের জনপ্রতিনিধি। আজ গৌরনদী উপজেলা থেকে ৮৪ এবং আগৈলঝাড়া উপজেলা থেকে ৬০ জন ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য সভায় উপস্থিত হয়েছেন। সরকারের উন্নয়ন তৃণমূল পর্যায়ে পৌছানোর দায়িত্ব কিন্তু আপনাদের।
আপনারা সরকারের উন্নয়ন চিত্র এবং সেবা সমূহ জনগণের নিকট উপস্থাপন করলেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বের বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ সরকারের উন্নয়নের সুফল জনগণ ভোগ করবে।
বতর্মান সরকারের নির্বাচনী ইশতেহার ২০১৮ এর অঙ্গীকার অনুযায়ী পল্লী অঞ্চলে উন্নত রাস্তাঘাট এবং আধুনিক নগর সুবিধাদি প্রদানের জন্য আমার গ্রাম আমার শহর কর্মসূচি বাস্তবায়ন করা হচ্ছে।
এ কর্মসূচির মাধ্যমে গ্রামীণ সড়ক, গ্রোথ সেন্টার এবং হাট-বাজার, গ্রামীণ পানি সরবরাহ, গ্রামীণ বর্জ ব্যবস্থাপনা, উপজেলা মাষ্টার প্লান, কমিউনিটি স্পেস, স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানসমূহের সক্ষমতা বৃদ্ধিকরণ, কম্পিউটার ভিলেজ নির্মাণ ইত্যাদির জন্য মোট ৩০টি গাইডলাইন প্রণয়ন করা হয়েছে।
দেশব্যাপী সুপেয় পানি সরবরাহ, শতভাগ স্যানিটেশন নিশ্চিতকরণ, ভূ-উপরিস্থ পানি সংরক্ষণ ও ব্যবহার নিশ্চিতকরনে বিভিন্ন কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। গ্রামাঞ্চলে ৮,২২,৭০০ টি আর্সেনিকমুক্ত নিরাপদ পানির উৎস এবং পৌর এলাকায় ১,৩৭৩ টি উৎপাদক নলকূপ, ১৫৯টি পানি শোধনাগার, ১৬,২০৩ কিলোমিটার পাইপ লাইন স্থাপন করা হয়েছে।
এছাড়া চলতি ২০২২-২৩ অর্থ বছরে পল্লী সেক্টরে ৫,০০০ কিলোমিটার নতুন সড়ক নির্মাণ, ৭,০০০ কিলোমিটার পাকাসড়ক রক্ষণাবেক্ষণ, ১,৯০০ মিটার ব্রীজ ও কালভার্ট নির্মাণ, ৫,৫০০ মিটার ব্রীজ ও কালভার্ট রক্ষণাবেক্ষণ, ১৪০টি গ্রোথ সেন্টার ও হাট-বাজার উন্নয়ন,
৬০টি উপজেলা ও ইউনিয়ন কমপ্লেক্স ভবন নির্মাণ ও সম্প্রসারণ, ১৩০টি সাইকোন সেন্টারসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কার্যক্রম বাস্তবায়নের লক্ষ্য স্থির করা হয়েছে। ফলে দেশের সড়ক নেটওয়ার্ক কভারেজ ৩৮.০২ শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে ৩৯.৪৩ শতাংশে উন্নীত হবে।
এছাড়া নগর অঞ্চলে ১,৭৬০ কিলোমিটার রাস্তা ও ফুটপাত নির্মাণ, ১৭০ কিলোমিটার ড্রেন নির্মাণের লক্ষমাত্রাও নির্ধারণ করা হয়েছে। এ সকল অবকাঠামো তৈরির ফলে বিপুল সংখ্যক মানুষের কর্মসংস্থান তৈরির সুযোগ সৃষ্টি হবে যা সামগ্রিকভাবে গ্রামীণ দারিদ্র বিমোচনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
মতবিনিময় সভার মন্ত্রী পুত্র এফবিসিসি আইয়ের পরিচালক সেরনিয়াবাত মঈন আবদুল্লাহ, জেলা আওয়ামী লীগ সদস্য সেরনিয়াবাত আশিক আবদুল্লাহ, গৌরনদী আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর মেয়র মোঃ হারিছুর রহমান হারিছ, গৌরনদী ও আগৈলঝাড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, ভাইস- চেয়ারম্যান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক, উপজেলা নির্বাহী অফিসারগন, প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাগন উপস্থিত ছিলেন।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *