December 27, 2024, 1:31 am
হেলাল শেখ।
বিশেষ প্রতিনিধিঃ ঢাকার আশুলিয়া “ডেথ জোন ও আতঙ্কের জনপদ” কিশোর গ্যাং মাদক সন্ত্রাসী অপরাধীদের নির্বিঘœ জীবনযাপন। জুয়া ও মাদক ব্যবসা অবাধে চলছে। এসব জুয়া ও মাদকের টাকা জোগাড় করতে চুরি, ডাকাতি, ছিনতাই, অপহরণ, চাঁদাবাজি, ফিটিংবাজি, খুনসহ বিভিন্ন অপরাধমূলক কর্মকা- বেড়েই চলেছে। সেই সাথে নারী ও শিশু নির্যাতন-ধর্ষণ ও গণধর্ষণের ঘটনাও ঘটছে।
জানা গেছে, শনিবার (১৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ইং) তারিখে “ডেথ জোন আশুলিয়ার ধামসোনা ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার সাদেক হোসেন ভুঁইয়ার বড় ছেলে মোঃ দেলোয়ার হোসেন ভুঁইয়ার ভাদাইলের নতুন ৪র্থ তলা ভবনের ২য় তলায় গাড়ি চালক রাকিব হোসেনের স্ত্রী মোছাঃ রিপা আক্তার (১৮) এর রহস্যজনক মৃত্যু। স্থানীয় সরকার মার্কেট নারী ও শিশু স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে নিহত রিপা আক্তারের লাশ উদ্ধার করেছেন আশুলিয়া থানার এসআই সুব্রত রায়।এর আগে শুক্রবার (১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ইং) সকাল ১০টার দিকে আশুলিয়ার জামগড়া রূপায়ন আবাসন-১ এর ১নং গেটের পাশে কফিল উদ্দিনের ৪র্থ তলার ছাদের সিঁড়ির উপর ঝুলন্ত এক নারীর লাশ উদ্ধার করেছে আশুলিয়া থানার এসআই রাজু মন্ডল।
জানা গেছে, বাড়ির মালিক কফিল উদ্দিনের দ্বিতীয় স্ত্রী ঘটনার দিন তার বাবার বাড়ি লালমনিরহাট ছিলেন। এদিকে কফিল উদ্দিন তার বাসায় ২য় তলায় রাতে একা ছিলেন, ৪র্থ তলার ১নং রুমের ভাড়াটিয়া ওই নারীর সাথে ওই বাসার কার সাথে কি হয়েছে? তার কারণে ভিকটিম ছাদের সিঁড়ির উপরে ফাঁসি দিয়েছেন। এর আগে ওই নারীর স্বামীসহ একই বাড়ির টিনসেট ঘরের পকেট রুমে ভাড়া ছিলেন। হঠাৎ করে ৪র্থ তলার ১নং রুমে তাদেরকে আশ্রয় দেন বাড়ির মালিক কফিল উদ্দিন। স্থানীয়রা জানান, মেয়েটি কেন ফাঁসি নিবে? কেন তাকে পকেট রুম থেকে ৪র্থ তলায় স্থান পরিবর্তন করা হলো?। পুলিশ ও র্যাব উক্ত ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন, ওই রুমে সেক্সের ওষুধের আলামত পাওয়া গেছে, বিষয়টি রহস্যজনক বলে মনে করছেন অনেকেই। পুলিশ ও বাড়ির মালিক জানায়, এ ঘটনার পর থেকে ওই নিহত নারীর স্বামী মোঃ জসিম (২৬) পলাতক রয়েছে। পুলিশ ও র্যাব জানায়, নিহতের কোনো প্রকার পরিচয়পত্র দেননি বাড়ির মালিক কফিল উদ্দিন।
গত ১৪ আগস্ট ২০২২ইং সকাল ৯ টার দিকে ঢাকার আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের নিশ্চিন্তপুরের মৃত ওয়াজ উদ্দিনের ছেলে মোঃ দিলু মন্ডল তার চাচাতো ভাই হাজী জমত আলী মন্ডল (৬৫) এর সাথে সরকারি রাস্তা ও এক ফিট জমি নিয়ে দুই ভাইয়ের মধ্যে কথা কাটাকাটি হয়, এক পর্যায়ে হাতাহাতি হলে এসময় দিলু জমত আলীকে কিলঘুসি মারেন এবং ইট দিয়ে নাকে ও বুকে আঘাত করলে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়। পুলিশ ও স্থানীয়রা জানায়, নিহতের ছোট ভাই জয়নাল ও দিলু হোসেনের ছোট ভাই নজরুল ইসলাম মন্ডলের সাথে সরকারি রাস্তা ও জমি নিয়ে আগে থেকেই বিরোধ চলছিলো, এর এক পর্যায়ে তাদের এই বিরোধের জের ধরেই এই হত্যাকান্ডের ঘটনা ঘটেছে। অন্যদিকে ঘোষবাগ ৪ বছরের শিশু কন্যার ধর্ষণের চেষ্টা মামলা করে এক নারী নিরাপত্তাহীনতায় রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।
আশুলিয়া থানার (ওসি-ইন্টেলিজেন্স) মোঃ জামাল সিকদার ও র্যাব ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এ বিষয়ে পুলিশ ও র্যাব জানায়, এই ঘটনার সাথে জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে। এদিকে অনেকেই অভিমত প্রকাশ করেন যে, আশুলিয়ায় নিরাপদ “ক্রাইম জোন”-এ পরিণত হয়েছে, রাজধানীর নিকটবর্তী শিল্পা ল আশুলিয়া থানা। এখানে খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি-সন্ত্রাস আর মাদক ব্যবসা যেন অনেকটাই স্বাভাবিক ঘটনা আশুলিয়াবাসীর কাছে। এ এলাকায় প্রায় প্রতিদিনই লাশ উদ্ধার হয়। অনেক দিন আগে ৯ জানুয়ারি ২০১৭ ইং একটি অনুসন্ধানী রিপোর্টে পাওয়া যায়, আশুলিয়া থেকে ১১ মাসে ১২৩টি লাশ উদ্ধার হয়। তাই উক্ত আশুলিয়াকে ডেথ জোন ও আতঙ্কের জনপদ বলা হয়, বর্তমানে কিশোর গ্যাং মাদক সন্ত্রাসীরা আশুলিয়ায় আর এক আতঙ্কের নাম। উক্ত বিষয়ে ধারাবাহিক সংবাদ প্রকাশ করা হবে।