May 9, 2025, 4:05 pm

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
সুজানগরের সাতবাড়ীয়ায় পদ্মা নদীর ভাঙ্গন প্রতিরোধের দাবিতে মানববন্ধন ধামইরহাটে যুবদল কর্তৃক তারুণ্যের রাজনৈতিক অধিকার প্রতিষ্ঠার সমাবেশ সফল করতে প্রস্তুতি সভা ধামইরহাটে ইএসডিও এর কার্যক্রম উপজেলা সমন্বয় সভায় উপস্থাপন পাইকগাছায় ইট বোঝাই ট্রাকের ভারে কালভার্ট ভেঙ্গে খালে ;দু-র্ভোগে এলাকাবাসী পাইকগাছা উপজেলায় উন্নত ওয়াশ সেবা বিষয়ক অগ্রগতি পর্যালোচনা ও পরিকল্পনা সভা অনুষ্ঠিত পাইকগাছায় ঘুড়ি উৎসব অনুষ্ঠিত বিশ্ব ঐতিহ্য সুন্দরবনে বিপন্ন রয়েল বেঙ্গল টাইগার: ২০৭৫ সালের মধ্যে হারিয়ে যাওয়ার শ-ঙ্কা সলঙ্গার দাদপুর জি.আর কলেজের একাডেমিক ভবন উদ্বোধন উজিরপুরে রাস্তা নির্মান কাজের উদ্বোধন করেন ইউএনও আলী সুজা সেনাপ্রধানের সাথে সৌদি দূতাবাসের নবনিযুক্ত মিলিটারি অ্যাটাশে এর সৌজন্য সাক্ষাৎ
নড়াইলের কালনা সেতুর টোল হার নির্ধারণ প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দ্রুত দিনক্ষণ ঘোষণার প্রত্যাশায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল বাসী

নড়াইলের কালনা সেতুর টোল হার নির্ধারণ প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দ্রুত দিনক্ষণ ঘোষণার প্রত্যাশায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল বাসী

উজ্জ্বল রায়, নড়াইল জেলা প্রতিনিধি:
নড়াইলের কালনা সেতুর টোল হার নির্ধারণ
প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে দ্রুত দিনক্ষণ ঘোষণার প্রত্যাশায় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলবাসী। দেশের প্রথম ছয় লেনের কালনা সেতুর টোল হার নির্ধারণ করা হয়েছে। ইতোমধ্যে যানবাহন চলাচলের জন্য সেতু সম্পূর্ণরূপে প্রস্তুত করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কালনা সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক আশরাফুজ্জামান। তিনি বলেন, ৩০ আগস্টের মধ্যে সেতুর মূল কাজ শেষ হয়েছে। এখন শুধুমাত্র সেতুতে লাইটিংয়ের কাজ চলছে। প্রধানমন্ত্রীর পক্ষ থেকে তারিখ ঘোষণা হলেই চূড়ান্ত হবে উদ্বোধনের দিনক্ষণ। সেই অপেক্ষায় আছেন সেতু কর্তৃপক্ষসহ গোপালগঞ্জ, ফরিদপুর, নড়াইল, যশোর, বেনাপোল, সাতক্ষীরাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বেশ কয়েকটি জেলার কোটি কোটি মানুষ। মুখিয়ে আছেন যাত্রীবাহী বাসসহ অন্যান্য যানবাহন সংশ্লিষ্টরা। সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তরের ক্রস বর্ডার রোড নেটওয়ার্ক ইম্প্রুভমেন্ট প্রজেক্টের আওতায় জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) অর্থায়নে কালনা সেতু নির্মিত হয়েছে। উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে জানান, এদিকে, প্রধানমন্ত্রীর কাছ থেকে সম্মতি পেলে অক্টোবরের যে কোনো দিন সেতুটি উদ্বোধন হবে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। গত ৭ সেপ্টেম্বর সচিবালয়ের গণমাধ্যম কেন্দ্রে বাংলাদেশ সেক্রেটারিয়েট রিপোর্টার্স ফোরাম (বিএসআরএফ) আয়োজিত ‘বিএসআরএফ সংলাপ’-এ অংশ নিয়ে এ কথা বলেন মন্ত্রী।
অপরদিকে, কালনা সেতুর টোল হার নির্ধারণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে বড় ট্রেইলার ৫৬৫টাকা, তিন বা ততোধিক এক্সসেল বিশিষ্ট ট্রাক ৪৫০টাকা, দুই এক্সসেল বিশিষ্ট মিডিয়াম ট্রাক ২২৫, ছোট ট্রাক ১৭০টাকা, কৃষি কাজে ব্যবহৃত পাওয়ার ট্রিলার ও ট্রাক্টর ১৩৫ টাকা, বড় বাসের ক্ষেত্রে ২০৫ টাকা, মিনিবাস বা কোস্টার ১১৫ টাকা, মাইক্রোবাস, পিকাপ, কনভারশনকৃত জিপ ও রে-কার ৯০ টাকা, প্রাইভেটকার ৫৫ টাকা, অটোটেম্পু, সিএনজি অটোরিক্সা, অটোভ্যান ও ব্যাটারিচালিত তিনচাকার যান ২৫ টাকা, মোটরসাইকেল ১০ টাকা এবং রিক্সা, ভ্যান ও বাইসাইকেল পাঁচ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে।
উদ্বোধনের পর প্রথমে ম্যানুয়্যাল পদ্ধতিতে টোল আদায় করা হবে। পরবর্তীতে ডিজিটাল পদ্ধতিতে টোল আদায় হবে। এক্ষেত্রে প্রায় একমাস সময় লাগবে। অপারেটরের মাধ্যমে টোল আদায় হবে।
সেতু কর্তৃপক্ষসহ স্থানীয়রা জানান, এপারে নড়াইলের কালনাঘাট। ওপারে গোপালগঞ্জের শংকরপাশা। মাঝ দিয়ে প্রবাহিত মধুমতি নদী। এ নদীর ওপরই নির্মিত হয়েছে দেশের প্রথম ছয় লেনের কালনা সেতু।
কালনা সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক এবং সড়ক ও জনপথ অধিদপ্তর (সওজ) নড়াইলের নির্বাহী প্রকৌশলী আশরাফুজ্জামান বলেন, কালনা দেশের প্রথম ছয় লেনের সেতু। নেলসন লোস আর্চ টাইপের (ধনুকের মতো বাঁকা) সেতু এটি। সেতুটির দৈর্ঘ্য ৬৯০ মিটার এবং প্রস্থ ২৭ দশমিক ১ মিটার। উভয় পাশে ছয় লেনের সংযোগ সড়ক প্রায় সাড়ে ৪ কিলোমিটার। সেতু নির্মাণে মোট ব্যয় প্রায় ৯৬০ কোটি টাকা। এশিয়ান হাইওয়ের ওপর অবস্থিত এটি। সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে সিলেটের তামাবিল হয়ে ঢাকা, ভাঙ্গা, নড়াইল, যশোর, বেনাপোল, কোলকাতা পর্যন্ত সরাসরি ভূমিকা রাখবে। তবে এতোদিন কালনা পয়েন্টে মধুমতি নদী ধারা বিছিন্ন ছিল। সেতু নির্মাণের ফলে সেই বিছিন্নতা আর রইল না। কালনা সেতু চালু হলে শুধু জাতীয় ক্ষেত্রেই নয়, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখবে। ভারত, কোলকাতা, আসামসহ দেশের মধ্যে সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দর, বেনাপোল ও নোয়াপাড়া নদীবন্দরের মধ্যে যোগাযোগের মাইলফলক রচিত হবে। নড়াইলের লোহাগড়ায় ইপিজেড (রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ অঞ্চল) চালুসহ ব্যবসা-বাণিজ্যের সম্প্রসারণ ও ব্যাপক কর্মসংস্থান সৃষ্টি হবে।
কালনাঘাটে স্থাপিত নামফলক থেকে জানা যায়, ২০১৫ সালের ২৪ জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ‘কালনা সেতু’র ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। কালনাঘাট থেকে ঢাকার দুরত্ব মাত্র ১০৮ কিলোমিটার। ফলে ঢাকার সঙ্গে নড়াইল, বেনাপোল, যশোর, খুলনাসহ আশেপাশের সড়ক যোগাযোগ কোথাও ১০০ কিলোমিটার, কোথাও আবার ২০০ কিলোমিটার কমে যাবে। তবে ঢাকা থেকে ফরিদপুরের ভাঙ্গা পর্যন্ত ‘এক্সপ্রেস ওয়ে’ নির্মাণ করা হলেও ভাঙ্গা থেকে বেনাপোল পর্যন্ত এ ধরণের সড়ক নির্মিত হয়নি। ফলে ‘এক্সপ্রেস ওয়ে’র সুফল পাচ্ছে না দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের বড় একটি অংশ। ভাঙ্গা থেকে নড়াইল-যশোর-বেনাপোল পর্যন্ত বর্তমানে দুই লেন সড়ক চালু আছে। এই অংশে ‘এক্সপ্রেস ওয়ে’ সড়ক নির্মাণের বিষয়টি প্রকল্পাধীন বলে জানিয়েছেন কালনা সেতুর প্রকল্প ব্যবস্থাপক আশরাফুজ্জামান। তিনি বলেন, কালনা সেতু চালু হলে যানবাহনের চাপ বেড়ে যাবে। তাই আপাতত যশোরের মনিহার সিনেমা হল চত্বর থেকে নড়াইলের কালনাঘাট পর্যন্ত ৫২ কিলোমিটার সড়ক প্রশস্ত করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। বর্তমানে সড়কটি ১৮ফুট প্রশস্ত থাকলেও তা বাড়িয়ে ২৪ ফুট করা হবে। দরপত্রের কাজ শেষ পর্যায়ে রয়েছে। দরপত্র অনুমোদন হলে দুই সপ্তাহের মধ্যে ওয়ার্কঅডার দিব। নড়াইল অংশে প্রায় ৪৭ কোটি এবং যশোর অংশে ৩২ কোটি টাকা ব্যয়ে সড়ক প্রশস্তকরণ করা হবে। এক বছরের মধ্যে কাজ শেষ করা হবে। এ লক্ষ্যে সড়কের দুই পাশে গাছকাটার কাজ শুরু হয়েছে।
যশোর জেলা পরিবহন সংস্থা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক ও বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের খুলনা বিভাগীয় আঞ্চলিক কমিটির যুগ্মসাধারণ সম্পাদক সেলিম রেজা মিঠু বলেন, কালনা সেতু চালু হলে যশোর, বেনাপোল, সাতক্ষীরা, মেহেরপুর, মাগুরাসহ পাশের জেলাগুলোর সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা বদলে যাবে। খুব সহজেই রাজধানী ঢাকার সঙ্গে যাতায়াত করা যাবে। আমরা কালনা সেতু উদ্বোধনের অপেক্ষায় আছি।
এদিকে কালনা সেতু চালু না হওয়ায় নড়াইল, যশোর, বেনাপোল, নোয়াপাড়া শিল্পনগর, সাতক্ষীরার ভোমরা স্থলবন্দরসহ আশেপাশের কয়েকটি জেলার লোকজন পদ্মা সেতুর সরাসরি সুফলও পাচ্ছেন না। কারণ, কালনাঘাটে এসে ফেরি পারাপারের বিড়ম্বনায় পড়তে হচ্ছে সব ধরণের যানবাহনকে। তাই এ অঞ্চলের সবাই তাকিয়ে আছেন কালনা সেতু উদ্বোধনের অপেক্ষায়। প্রধানমন্ত্রী দ্রুত উদ্বোধনের দিনক্ষণ ঘোষণা করবেন-এমন প্রত্যাশা সবার।

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD