অনার্স পড়ুয়া ছাত্রীর নগ্ন ভিডিও ধারণ ও ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি

মো;বাবুল হোসেন পঞ্চগড় :

প্রথমে অবিবাহিত পরিচয় দিয়ে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তোলা। এরপর বিয়ের কথা বলে কোর্টে অ্যাফিডেভিট করে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলা ও তা মুঠোফোনে ধারণ করে ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি। ভুক্তভোগীর অভিযোগের প্রেক্ষিতে ঘটনাটি সামনে আসে। গুরুতর এই অভিযোগ উঠেছে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলার চিলাহাটি ইউনিয়ন যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মনোয়ার হোসেন মিন্টুর বিরুদ্ধে। পার্শ্ববর্তী বোদা উপজেলার বগদুলঝুলা এলাকার অনার্স পড়ুয়া এক মেয়েকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে অভিযুক্ত মিন্টু।

এই ঘটনায় ভুক্তভোগী মেয়েটি শুক্রবার (০৯ সেপ্টেম্বর) বোদা থানায় এজাহার দায়ের করেন।

মিন্টু চিলাহাটি ইউনিয়নের পশ্চিম তিস্তাপাড়া এলাকার গোলাম রব্বানীর ছেলে। ওই এলাকায় খোঁজ নিয়ে নিশ্চিত হওয়া গেছে সে বিবাহিত এবং দুই সন্তানের পিতা।

ভুক্তভোগী জানায়, মনোয়ার হোসেন মিন্টুর সাথে তার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেইসবুকে পরিচয় হয়। এরপর আলাপচারিতার এক পর্যায়ে মিন্টু নিজেকে অবিবাহিত বলে প্রেমের প্রস্তাব দেন ভুক্তভোগীকে। প্রথম দিকে রাজি না থাকলেও এক পর্যায়ে দুইজনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠে। এরপর বিভিন্ন সময় মিন্টু ওই মেয়েকে বিয়ে করবে বলে আশ্বাস দেন। গত বছর ১৭ এপ্রিল মিন্টু ভুক্তভোগীর বাসায় দেখা করার জন্য যায়। এরপর ওই বাসাতেই মেয়ের অনিচ্ছা সত্বেও মিন্টু তার সাথে শারীরিক সম্পর্ক স্থাপন করে এবং তার ভিডিও মুঠোফোনে ধারণ করে রাখে। সেই দিনের পর ভুক্তভোগী মেয়েটি অভিযুক্ত মিন্টুকে একাধিক বার বিয়ের জন্য চাপ দিলে মিন্টু তার সাথে যোগাযোগ প্রায় বন্ধ করে দেয়।

এরপর পড়াশুনার জন্য মেয়েটি ঢাকায় অবস্থান করলে গত জুন মাসে মিন্টু পুনরায় ঢাকা গিয়ে বিয়ের জন্য কাজী অফিসে যাবেন বলে মেয়েটিকে ফোনে জানায়। মেয়েটি বিয়ের কথা শুনে মিন্টুর সাথে দেখা করলে তাকে অপরিচিত একটি বাসায় নিয়ে যায় মিন্টু। সেখানেও সামজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকি দিয়ে পুনরায় ধর্ষণ করে এবং মেয়েটিকে তার মেসে নামিয়ে দিয়ে যায়। এরপর ভুক্তভোগী মেয়েটি বিয়ের জন্য চাপ দিতে থাকলে মিন্টু গোপন ভিডিওর কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তার সাথে যোগাযোগ না করার জন্য বলে দেয়।

শুধু তাই নয়, বিষয়টি কাউকে বললে মেয়েটির মা’র চাকরি থাকবে না এবং তার পরিবারের সদস্যদের ক্ষতি হবে বলে হুমকি দেয় মিন্টু। পরে মেয়েটি নিরুপায় হয়ে পরিবারের সদস্যদের বিষয়টি জানায়।

এই বিষয়ে অভিযুক্ত মিন্টু বলেন, তার সাথে আমার গোপনে কোর্টে অ্যাফিডেভিটের মাধ্যমে বিয়ে হয়। তাদের কাছে পাওনা টাকা চেয়েছি জন্যই তারা এমনটা করছেন।

পঞ্চগড় আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আমিনুর রহমান বলেন, আইনে কোর্ট ম্যারেজ বলতে কোন বিধান নেই। অধিকাংশ সময়ই দেখা যায় কোর্ট ম্যারেজের নামে নোটারি পাবলিকের মাধ্যমে অ্যাফিডেভিট করে প্রতারণার আশ্রয় নেওয়া হয়। বিয়েকে বৈধতা দিতে হলে অবশ্যই কাবিননামা সম্পন্ন করতে হবে। নতুবা অ্যাফিডেভিট করে বিয়ের আইনগত কোন ভিত্তি কখনই স্থাপন হয়না।

বোদা থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) সুজন কুমার রায় বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে তদন্তের কাজে বাইরে থাকায় অভিযোগের বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *