পাইকগাছায় প্রবল জোয়ারের চাপে ঝুঁকিপূর্ণ ভেড়িবাঁধ ভেঙ্গে বিস্তৃর্ণ এলাকা প্লাবিত

ইমদাদুল হক,পাইকগাছা,খুলনা।।
পাইকগাছায় ভেড়িবাঁধ ভেঙ্গে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে।রবিবার দুপুরে প্রবল জোয়ারে উপজেলার সোলাদানা ইউনিয়নের পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২৩নং পোল্ডারের বয়ারঝাঁপা এলাকায় ভাঙ্গাহাড়িয়া নামক স্থানে ওয়াপদার প্রায় ৩০ ফুট ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করেছে।ফলে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়ে কয়েক শত ছোট বড় মৎস্য ঘের তলিয়ে গিয়ে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।ভেসে গেছে কয়েকশত ছোটবড় মৎস্য ঘের। অনেক বাড়ির উঠানে পানি ঢুকে পড়েছে। বঙ্গোপসাগরে লঘুচাপ এর প্রভাবে পাইকগাছায় মাঝারি থেকে ভারী বৃষ্টিপাত অব্যাহত রয়েছে। অতিরিক্ত জোয়ারের পানিতে উপকূল সংলগ্ন বেশ কিছু এলাকা তলিয়ে গেছে। গত কয়েকদিনের জোয়ারের পানির চাইতে শনিবারের ও রবিবারের জোয়ারের পানির উচ্চতা ছিল অনেক বেশি।
সোলাদানা ইউনিয়ন পরিষদের ৮নং ওয়ার্ডের সদস্য আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, দুপুরে জোয়ারে শিবসা নদীর পানি স্বাভাবিকের চেয়ে বৃদ্ধি পেয়ে বাধঁ ভেঙে লোকালয়ে পানি প্রবেশ করছে। পানিতে ভেসে গেছে কয়েকশত ছোটবড় মৎস্য ঘের। আমরা এলাকাবাসী বাঁধের পাশে অপেক্ষা করছি, ভাঁটার সময়ে বাঁধ নির্মানের কাজে নেমে পড়বো। তিনি আরো বলেন, বাঁধ নির্মাণ সম্ভব না হলে রাতের জোয়ারে এ ইউনিয়নের প্রায় ৫ গ্রাম পানিতে তলিয়ে যাওয়ার আশংকা রয়েছে। ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল মান্নান গাজী জানান, আমার ইউনিয়নের শিবসা নদীর তীরবর্তী বয়ারঝাঁপা এলাকায় ভাঙ্গাহাড়িয়া নামক স্থানে ওয়াপদার ভেড়িবাধটি ভেঙে গিয়ে প্লাবিত হয়েছে। আমি তাৎক্ষণিক ঘটনাস্থলে গিয়ে প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করেছি।ভাটার সময় উপজেলা প্রশাসনের তত্বাবধায়নে আমি সহ স্হানীয় এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত ভেড়িবাধটির মেরামতে নেমে পড়বো বলে আশা করছি। অপরদিকে কপোতাক্ষের জোয়ারের পানিতে প্লাবিত হয়েছে উপজেলার মাহমুদকাটি,রাড়ুলী জেলেপাড়া, কাটিপাড়া জেলে পল্লী,বোয়ালিয়া জেলেপাড়া,সোলাদানা,বাইশারাবাদ গুচ্ছগ্রাম।তাছাড়া পাইকগাছা শহর রক্ষা বাধ উফছে পানিতে প্লাবিত হয়েছে পৌর বাজার। কপোতাক্ষ নদের তীরবর্তী গ্রামগুলি ভাঙনের মুখে পড়েছে। ৭ নং ওয়ার্ড ইউপি সদস্য শংকর বিশ্বাস জানান, রবিবার জোয়ারের পানিতে মাহমুদ কাটির জেলে পল্লী সহ রামনাথপুর এলাকার ঘরবাড়ি তলিয়ে যাওয়ার অবস্থা। বসতবাড়ির উঠানে হাটু পানি। স্বাভাবিকের চেয়ে অন্তত তিন ফুটের বেশি পানি বাড়েছে,বেড়ীবাধ উপছে পানি ঢুকে ডুকছে। তলিয়ে গেছে বসতবাড়ি, রাস্তাঘাট, মাছের ঘের, পুকুর, ফসলি জমি। ফলে ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ভুক্তভোগীরা। আর নদীতে তীব্র ঢেউয়ের ধাক্কায় বেড়ীবাধে ভাঙন দেখা দিয়েছে।
পাইকগাছাপানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-সহকারী প্রকৌশলী মোঃ রাজু হাওলাদার জানান,বাঁধ ভেঙ্গে যাওয়ার খবর পেয়ে আমি সহ পাওবো’র প্রতিনিধিরা প্লাবিত এলাকায় যাই এবং উপজেলা প্রশাসনের তত্বাবধায়নে এলাকাবাসী স্বেচ্ছাশ্রমের ভিত্তিতে সরবরাহকৃত প্রয়োজনীয় সরঞ্জামাদির মাধ্যমে কাজ করে ক্ষতিগ্রস্থ বাঁধটি প্রাথমিকভাবে মেরামত করলেও আবার জোয়ারে বাধ ভেঙ্গে গেছে।রাতে বাশ,বস্তা, চাটাইসহ প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র ক্রয় করে সকালে বাধ বাধার কাজ করা হবে। , প্রতি অমাবস্যা এবং পূর্ণিমার জোয়ারে নদীতে স্বাভাবিকের চেয়ে দুই থেকে আড়াই ফুট পানি বৃদ্ধি পায়। এখন পূর্ণিমা এবং বঙ্গোপসাগরে নিম্নচাপ থাকায় জোয়ারের অতিরিক্ত পানি উপকূলে উঠে পড়েছে। পাইকগাছায় প্রায় ৩০ কি:মি: বেড়ীবাধ ঝুকিপুর্ণ রয়েছে। পাইকগাছা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম বলেন, প্রবাল জোয়ারে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ঝুঁকিপূর্ণ ওয়াপদার ভেড়িবাঁধ ভেঙ্গে পানি প্রবেশ করেছে, ভাঁটার সময় বাঁধের কাজ শুরু করা হবে। বাঁধ নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিস পাঠানো হয়েছে।

ইমদাদুল হক,
পাইকগাছা,খুলনা

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *