রাজশাহীতে মাদক সম্রাট জিয়ারুল ৪ কেজি ৪০০ গ্রাম হিরোইনসহ গ্রেফতার করেছে র‍্যাব-৫

মোঃ হায়দার আলী, রাজশাহী থেকেঃ মাদকের ব্যবসা মানে চাঁপাই নবাবগঞ্জ, আর রাজশাহীর গোদাগাড়ী। মূল হোতাদের ধরতে মরিয়া আইন শৃঙ্খলা বাহনী। তারই ধারাবাহিকতায় আনুমানিক মূল্য ৪ কোটি ৫০ লাখ হেরোইনসহ আটক হলেন কথিত কৃষক জিয়ারুল ইসলাম।
চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্তে অবস্থিত এক কৃষকের বাড়িতে গত শুক্রবার দিবাগত রাতে অভিযান চালিয়ে প্রায় সাড়ে ৪ কেজি হেরোইন উদ্ধার করেছে র‍্যাব-৫ ‌ রাজশাহীর একটি দল। উদ্ধার হওয়া এই হিরোইনের বাজার মূল্য প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা। এ সময় ওই বাড়ির মালিক কৃষক মো: জিয়ারুল ইসলামকে ( ৩৫ ) আটক করে র‍্যাব তবে কৌশলে পালিয়ে যায় তার সাথে থাকা অপর সহযোগী।

জিয়ারুল চাঁপাইনবাবগঞ্জ থানাধীন চর কোদালকাটি জেলেপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুর রহমানের ছেলে। শনিবার একপেস বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য নিশ্চিত করে র‍্যাব-৫ ।‌ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, দীর্ঘদিন যাবত মাদক চোরাচালান চক্র আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চোখ ফাঁকি দিয়ে বর্ডার এলাকা হতে কৌশলে মাদকদ্রব্য চোরাচালান করে চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও রাজশাহী সীমান্ত হতে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে মাদক সরবরাহ করে আসছিল। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায় সীমান্ত দিয়ে মাদক পাচার হয়ে এসে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে পৌঁছানোর আগে চক্রটির অন্যতম মূল হোতা জিয়ারুল বর্ডার হতে মাদক সংগ্রহ করে রাতে কিছু সময়ের জন্য তা মজুদ করে রাখে।
এ তথ্যের তথ্যের ভিত্তিতে দূর্গম চর এলাকায় ৩ টি গ্রুপে বিভক্ত হয়ে র‍্যাবের অপারেশন দল দীর্ঘ ৮ থেকে ৯ ঘন্টা এ্যাম্বুশ করে বসে থাকে। অভিযানের এক পর্যায়ে রাত সাড়ে ৩ টায় জিয়ারুল ইসলামের বাড়ি ঘেরাও করে তল্লাশী কার্যক্রম পরিচালনা করা হয়। এসময় ওই বাড়ি থেকে একজন ব্যক্তি কৌশলে পালিয়ে যায়। তবে জিয়ারুলকে আটক করতে সক্ষম হয় র‍্যাব।
আটকের পর জিয়ারুলকে জিজ্ঞাসাবাদে সে হেরোইন মজুদের কথা স্বীকার করে এবং তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে তার ঘরে প্লেন সিটের বাক্সের নিচে অভিনব কায়দায় লুকানো অবস্থায় ৪ কেজি ৪০০ গ্রাম হেরোইন উদ্ধার করা হয়। আসামী জিয়ারুলকে আরো জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায় যে, সে এবং পলাতক আসামী সংঘবদ্ধ মাদক চক্রের সাথে জড়িত। এই চক্রটির সদস্যরা বর্ডার এলাকায় কৃষিকাজের আড়ালে সীমান্তের ওপার হতে কৃষকের ছদ্মবেশে হেরোইন চোরাচালান করে আসছিলেন। এর আগেও বেশ কয়েকবার তারা এ পন্থায় মাদক সরবরাহ করেছে বলে স্বীকার করে।

র‍্যাব-৫ ‌ এর অধিনায়ক রিয়াজ শাহরিয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেন, সীমান্তবর্তী এলাকায় তার বাড়ি হওয়ায় কৃষি কাজের আড়ালে সীমান্তবর্তী ভারতে প্রবেশ করে সেখান থেকে একটি সিন্ডিকেটের মাধ্যমে হিরোইন নিয়ে আসতো। উদ্ধার হও হিরোইনের বাজার মূল্য প্রায় সাড়ে চার কোটি টাকা। এই বিপুল অর্থের হেরোইন জিয়ারুলের মত কৃষকের একার পক্ষে আনা সম্ভব কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। জিয়ারুল স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের লিস্টে থাকা চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী নয়। জিয়ারুলের পেছনে অন্য কেউ আছে কিনা তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে।

মোঃ হায়দার আলী
রাজশাহী।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *