মোংলায় স্কুলের নির্মাণাধীন সেফটিক ট্যাংকে পড়ে ২১ মাসের শিশুর মৃত্যু

মোংলা (বাগেরহাট) প্রতিনিধি
মোংলায় একটি স্কুলের নির্মাণাধীন সেফটিক ট্যাংকের জন্য খনন করা ডোবায় পড়ে ২১ মাসের শিশুর মৃত্যু হয়েছে।
শনিবার (৩০ জুলাই) সকালে এ দুর্ঘটনা ঘটে। নিহত শিশুর মামা মানিক খান জানান, পৌর শহরের কবরস্থান এলাকায় বসবাস করেন তার বোন খাদিজা বেগম (৪০)। শনিবার সকাল ৯টার দিকে খাদিজা বেগম তার ছোট শিশু সন্তান ইয়ামিন হোসেন (২১ মাস)কে নিয়ে দিগন্ত কলোনী এলাকায় বাবার বাড়িতে বেড়াতে আসেন। শিশু ইয়ামিন নানা বাড়ি আসার পর সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কলোনীর দিগন্ত প্রকল্প সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্মাণাধীন সেফটিক ট্যাংকির ডোবায় পড়ে যায়। এরপর খোঁজাখুজির এক পর্যায়ে ডোবার মধ্যে শিশুটির মরদেহ ভাসতে দেখে আত্মীয়স্বজনেরা উদ্ধার করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে চিকিৎসক তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। ইয়ামিনের বাবা বাবুল হোসেন পেশায় একজন টমটম চালক। তার তিন ছেলের মধ্যে ইয়ামিন সবার ছোট। নিহত শিশুর মামা মানিক আরও বলেন, “সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার বিদ্যালয়ের সেফটিক ট্যাংকি নির্মাণের জন্য দুই বছর আগে ৭-৮ ফুটের গভীরতার একটি ডোবা করে রাখে। সেই ডোবায় পড়ে তার ভাগিনা মারা গেছে। পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জিএম আল-আমিন বলেন, দিগন্ত স্কুলের তিনতলা বিশিষ্ট টয়লেট নির্মাণের কাজ করছেন ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান বিসমিল্লাহ এন্টারপ্রাইজ। তারা দুইতলা পিলার ও ছাদ দিয়ে রেখেছেন এবং সেফটিক ট্যাংকির জন্য বড় ডোবা করে ফেলে রাখেন।
ঠিকাদারের গাফিলতিতে সেই ডোবায় পড়ে এই শিশুটির মৃত্যু হয়েছে বলে বলে জানান তিনি। উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশলী সোহান আহমেদ বলেন, সংশ্লিষ্ট টিকাদারকে বার বার দ্রুত কাজ শেষ করার জন্য বলা হলেও তা করেননি। এই ঠিকাদারের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া যায় সেটা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সাথে এনিয়ে আলোচনা করছি। ঠিকাদার প্রতিনিধি তুহিন আহমেদ বলেন, এটা নিছক দুর্ঘটনা, তারপরও শিশুটির পরিবারকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে।
এ বিষয়ে মোংলা থানার ওসি (তদন্ত) বিকাশ চন্দ্র রায় ঘোষ বলেন, দিগন্ত সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের টয়লেট নির্মাণের জন্য বড় ডোবা খুড়ে রাখে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদার। এ ঘটনায় তদন্ত করে ঠিকাদারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলেও জানান তিনি। নিহতের সুরতহাল রিপোর্ট করার পর দাফনের জন্য তার পরিবারকে অনুমতি দেয়া হয়েছে বলেও জানান ওসি।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *