Category: কৃষি

  • পাইকগাছার বোয়ালিয়া বীজ উৎপাদন খামারে রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে রোপন করা হচ্ছে বোরো ধান

    পাইকগাছার বোয়ালিয়া বীজ উৎপাদন খামারে রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে রোপন করা হচ্ছে বোরো ধান

    ইমদাদুল হক, পাইকগাছা (খুলনা)।।
    কৃষি ফলন বাড়াতে পাইকগাছার বোয়ালিয়া বীজ উৎপাদন খামারে সমলয় পদ্ধতিতে রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে জমিতে বোরো ধান রোপন কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে। রোপন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন, পাইকগাছা বোয়ালিয়া বীজ উৎপাদন খামারের সিনিয়র সহকারি পরিচালক নাহিদুল ইসলাম।কৃষির সর্বাধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারে উচ্চ ফলনশীল জাত ব্যবহার, ট্রেতে বীজ বপন, কম বয়সের চারা রোপন, চারা রোপনে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার ব্যবহার, সুষম সার ব্যবহার, ধান কর্তনে কম্বাইন হারভেস্টার ব্যবহার করে উৎপাদন বাড়ানো, উৎপাদন খরচ সাশ্রয় করা, কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে ভরা মৌসুমে কৃষি শ্রমিকের সংকটের সমাধান সম্ভব হবে এই সমলয় চাষাবাদে।জানা গেছে, ২০২৪-২৫ বোরো মৌসুমে বোয়ালিয়া বীজ উৎপাদন খামারে বোরো আবাদী লক্ষ্যমাত্রা ৫০ একর। এর মধ্যে ব্রিধান ৬৭ জাত ১৩ একর, ব্রিধান ৯৭ জাত ৭ একর এবং ব্রিধান ৮৮ জাত ৩০ একর জমিতে আবাদ করা হবে। বোরো আবাদী লক্ষ্যমাত্রা ৫০ একরের মধ্যে ২৫ একর ধান রোপন মেশিন বা রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে রোপন করা হবে। আর ২৫ একর জমি হাতে রোপন করা হবে। আগামী মৌসুম হতে সম্পূর্ণটাই রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে রোপন করা হবে।

    এ বিষয় বোয়ালিয়া বীজ উৎপাদন খামারে সিনিয়র সহকারি পরিচালক নাহিদুল ইসলাম বলেন, বোরো মৌসুমে পাইকগাছায় কূষি শ্রমিক সংকট দেখা দেয়। এসময় ঐলাকার শ্রমিকরা ইটভাটা ও সমুদ্রে মাছ ধরার কাজে যায়। শ্রমিকের অভাবে সময়মত ধান রোপন করা যায় না। রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে বোরো মৌসুমে ২০-২৫ দিনের চারা রোপন করা সম্ভব হয়। মেশিন বা রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে এক দিনে ১০-১২ বিঘা জমিতে ধান রোপন করা যায়। রাইস ট্রান্সপ্লান্টার দিয়ে ধান রোপন করলে ধানের কুশি বেশি হয়, ফলনও বৃদ্ধি পায়, শ্রমিক কম লাগে এবং সময়মত ক্ষেতে ধান রোপন করা সম্ভব হয়।

    ইমদাদুল হক,
    পাইকগাছা, খুলনা।

  • পাইকগাছায় মাঠে মাঠে হলুদ ফুলের সমারহ

    পাইকগাছায় মাঠে মাঠে হলুদ ফুলের সমারহ

    ইমদাদুল হক, পাইকগাছা (খুলনা)।।
    পাইকগাছায় সরিষার ক্ষেত হলুদ ফুলে ভরে গেছে। সরিষার আবাদ ভালো হয়েছে। ক্ষেতের পর ক্ষেত হলুদের সমারোহ। সরিষার ফুলে ফুলে মৌমাছির গুঞ্জনে কৃষকের মন আলোড়িত হচ্ছে। মধু আহরনে মৌমাছিরা মেতে উঠেছে। বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে হলুদের সমারোহ দেখে চোখ জুড়ে যায়। ক্ষেতের পর ক্ষেতে তরতাজা সবুজ সরিষা গাছাগুলোতে হলুদ ফুলে ফুলে ভরে উঠায় কৃষককের মুখে হাসি ফুটেছে।

    বৃস্টি ও ঘন কুয়াশা না পড়ায় সরিষা চাষের জন্য অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করছে। পাইকগাছা উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৩২০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে কৃষকদের সরিষার বীজ ও সার দেওয়ায় সরিষার আবাদ বেড়েছে। তবে সময় মত মাটিতে জো না আসায় সরিষার আবাদ কিছুটা দেরি শুরু হয়েছে। উপকূলের লবনাক্ত এলাকা চাষাবাদ অনেকটা প্রকৃতি ও আবহাওয়ার উপর নির্ভর করে। অন্য এলাকায় আগাম মাটিতে জো আসলেও উপকূল এলাকার নিঁচু মাটিতে জো আসতে দেরি হয়। উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে সরিষার চাষের উপযোগী ৪টি ইউনিয়ন গদাইপুর, হরিঢালী,কপিলমুনি ও রাড়ুলি সরিষার আবাদ হয়। আর চাঁদখালী, গড়ইখালী ও দেলুটিতে উচু এলাকার সামান্য জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। কৃষকরা বারি সরিষা ১৪,১৮ বিনা-৯ ও স্থানিয় জাতের সরিষা আবাদ করেছে। উপকূলীয় উর্বর জমিতে এ বছর আশানারুপ সরিষা উৎপাদন হবে বলে কৃষকরা আশা করছে।
    উপজেলার গোপালপুর গ্রামে সরিষা চাষী আনছার আলী, আব্দুস সামাদ,হিতামপুর ব্লকের জিয়া সরদার ও সলুয়ার শহিদ জানান, তাদের ক্ষেতের আবাদকৃত সরিষা ভালো হয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ একরামুল ইসলাম জানান, ধান কাটতে দেরি হওয়ায় সরিষা আবাদ করতে কিছুটা দেরি হয়েছে। কৃষকরা যদি আগাম জাতের ধান চাষ করে তাহলে ধান কাঁটার পর সময়মত সরিষা চাষে পূরা সময় পাবে। এ ব্যাপারে কৃষকদের আগাম জাতের ধান চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। তাছাড়া উপকূল এলাকার নিচু জমিতে জো আসে দেরিতে সে জন্য ফসল লাগাতেও দেরি হয়। এবছর উপজেলায় সরিষার আবাদ ভালো হয়েছে। প্রাকৃতিক কোন বিপর্যয়ের সৃষ্টি না হলে সরিষার আশানুরুপ ফলন পাওয়া যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

    ইমদাদুল হক,
    পাইকগাছা খুলনা।

  • চারঘাটে তুলা চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের

    চারঘাটে তুলা চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের

    মোজাম্মেল হক, চারঘাট (রাজশাহী) থেকেঃ

    খরচ যেমন কম, তেমনি আছে লাভ। রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় কৃষকদের তুলা চাষে দিন দিন বাড়ছে আগ্রহ। খরচের তুলনায় বেশি বেশি লাভ পাচ্ছেন এই তুলা চাষে। তুলার যেন নেই কোনো তুলনা।

    তুলা চাষে সংসারে সচ্ছলতা আসায় চাষিরাও আগ্রহী হচ্ছেন। অনুর্বর জমিতে কম পুঁজিতে নামে মাত্র শ্রমে ও সরকারি সহযোগিতা পাওয়ায় উপজেলায় তুলা চাষের পরিমাণ ও চাষির সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। তাদের উৎপাদিত তুলা সরাসরি তুলা উন্নয়ন বোর্ড ন্যায্য দামে কিনে নেয়। ফলে কৃষকরা অন্য ফসলের তুলনায় তুলাতে অধিক লাভবান হচ্ছেন।

    শনিবার দুপুরের সরজমিনে চারঘাট উপজেলার খোর্দ্দগোবিন্দপুর, পাটিয়াকান্দি, মুংলী, অনুপমপুর, কালুহাটি ঘুরে দেখা গেছে কার্পাস তুলা চাষে কৃষকরা বেশি আগ্রহী হয়ে উঠেছে। এখন কৃষকরা তুলা ক্ষেতের পরিচর্যার কাজ নিয়ে ব্যস্ততা সময় পার করছে।

    উপজেলার খোর্দ্দগোবিন্দপুর গ্রামের জবদুল সরদারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি গত বছর ৪ বিঘা জমিতে তুলা চাষ করেছিলাম। তাতে আমার মনে হলো খরচের চেয়ে লাভ বেশি হয়েছে তাই এ বছর ১০ বিঘা জমিতে তুলা চাষ করেছি। আশা করি এ বছর ভালো ফলন পাবো বলে আমি মনে করি। এর কারণ আবহাওয়া অনুকুলে আছে।

    কৃষক খলিল বলেন, এবার আমি ২ বিঘা তুলা চাষ করেছি। দেশি তুলা বিঘাপ্রতি ১২ এবং হাইব্রিড ১৫ মণ ফলন পাওয়া যায়।তুলায় সেচের তেমন একটা প্রয়োজন হয় না। সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি করে বীজ-সারের দামও পরিশোধ করা যায়। তাই এ ফসলে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের মধ্যে।

    এ ব্যাপারে চারঘাট উপজেলার কটন ইউনিট অফিসার হোসেন আলী বলেন, গত বছর চারঘাট উপজেলায় ৪০০ হেক্টর জমিতে তুলা চাষ করা হয়েছিলো। চলতি মৌসুমে ৪৩৫ হেক্টর জমিতে তুলা চাষ করা হয়েছে। গত বছর তুলার মূল্য ছিলো ৩৯০০ টাকা মণ। চলতি মৌসুমে মূল্য এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। কারণ তুলার মূল্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে নির্ধারণ করে দেয়। তবে উপজেলায় কার্পাস তুলা চাষে ব্যাপক ফলন হয়েছে।তিনি বলেন, তুলা চাষিদের সাথে আমার সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে বলে তিনি জানান।

    মোঃ মোজাম্মেল হক
    চারঘাট, রাজশাহী।

  • পাইকগাছায় আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে

    পাইকগাছায় আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে

    ইমদাদুল হক, পাইকগাছা, (খুলনা)।।
    পাইকগাছায় আমন ধানের বাম্পার ফলন হয়েছে। আমন ধান কর্তন শুরু হয়েছে। উঁচু ক্ষেতের আমন ধান কর্তন ও ঝাড়াই চলছে। তবে নিচু ও মৎস্য লিজ ঘেরের কোন আমন ক্ষেতের ধানে ফুল ফুটছে, দুধ এসেছে ও কোন ক্ষেতের ধান সবুজ রং ধারণ করেছে মাত্রে। ২০ থেকে ২৫ দিন পরে এসব ক্ষেতের ধান কাটার উপযোগী হবে। তবে উচু ক্ষেতের ধান আগামী ১০/১২ দিনের মধ্যে কাটা সম্পন্ন হবে বলে কৃষকরা জানিয়েছে।
    বৈরি আবহাওয়ার জন্য কৃষকরা সময় মত আমনের আবাদ করতে পারেনি। কৃষকরা আগাম কিছু ক্ষেতে সেচ দিয়ে চারা রোপন করেছে আবার দেরিতে প্রচুর বৃস্টি হওয়ায় নাবি আবাদ করতে হয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে অন্য এলাকা থেকে উপকূল এলাকায় এক মাস পরে কৃষি কাজের পরিবেশ তৈরি হয়। আবহাওয়া জনিত কারণ ও মৎস্য লিজ ঘের গুলোতে দেরিতে আমনের আবাদ করা হয়। সে জন্য আমন ধান কাটাও দেরিতে শুরু হয়। নতুন আমন ধান আশানারূপ দামে বিক্রি হচ্ছে। নতুন আমন ধান মন প্রতি সাড়ে ১৪শ থেকে সাড়ে ১৫শ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। তবে ধানের থেকে বিচুলীর চাহিদা থাকায় কৃষকরা বেশী লাভবান হচ্ছে।উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, এ মৌসুমে উপজেলার ১০টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ১৫ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমিতে আমন আবাদ হয়েছে। এর মধ্যে উপজেলায় উঁচু ক্ষেত্রের প্রায় ৫ হাজার ৩শত হেক্টর জমির ধান কাটা সম্পন্ন হয়েছে। কর্তনকৃত ধানের হেক্টর প্রতি ফলন হাইব্রীড ৫.৯ মেট্রিকটন ও উফশী ৫.৬ মেট্রিকটন হারে ফলন পাওয়া যাচ্ছে। আর নাবিতে লাগানো ক্ষেতের ১০ ভাগ ধানে ফুল ধরেছে, ২০ ভাগ ক্ষেতের ধানে দুধ হয়েছে ও ৭০ ভাগ ক্ষেতের ধান কাচা ধারণ করেছে।

    উপজেলার গদাইপুর ইউনিয়নের হিতামপুর ব্লকের কৃষক আলাউদ্দিন, পুরাইকাটী ব্লকের কৃষক ফারুক হোসেন ও তোকিয়া ব্লকের কৃষক শফিকুল জানান, বৈরি আবহাওয়ার পরও তাদের ক্ষেতের আমনের ফলন ভালো হয়েছে। মটবাটি গ্রামের কৃষক আলাউদ্দিন বলেন, তার মৎস্য ঘেরে আবাদকৃত ক্ষেতের ধান সবে ফুল ধরেছে। তাছাড়া মাজড়া পোকা লাগায় অতিরিক্ত পরিচর্যা ও কীটনাশক ব্যবহার করতে হয়েছে। কিছু কিছু ক্ষেতের ধানে চিটার পরিমানও বেশী হচ্ছে। এতে কৃষকরা ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো: একরামুল ইসলাম জানান, আমনের ফলন ভাল হয়েছে। আবহাওয়ার কারণে কৃষকদের আমন আবাদ শুরু করতে কিছুটা দেরি হলেও পরে প্রচুর বৃষ্টিতে লবণাক্ত মাটি পরিশোধিত হওয়ায় আমনের ফলন ভাল হয়েছে।

    ইমদাদুল হক,
    পাইকগাছা,খুলনা।

  • তানোরে আটক আলুবীজ  ইঁদুর-বিড়াল খেলা ?

    তানোরে আটক আলুবীজ ইঁদুর-বিড়াল খেলা ?

    আলিফ হোসেন,

    তানোর(রাজশাহী)প্রতিনিধিঃ
    রাজশাহীর তানোরে ব্র্যাকের আলু বীজ দিগুণ দমে কালোবাজারে বিক্রির সময়
    আটক করে বিক্ষুব্ধ কৃষকরা।কিন্ত্ত অভিযুক্ত ব্যবসায়ীর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক
    কোনো ব্যবস্থা গ্রহণ না করায় কৃষকদের মাঝে ক্ষোভের মাত্রা আরো বেড়েছে, দেখা দিয়েছে মিশ্রপ্রতিক্রিয়া বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছে।
    প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান,গত ১৫ নভেম্বর সন্ধ্যার দিকে উপজেলার চান্দুড়িয়া ইউনিয়নের (ইউপি) গাগরন্দ মোড়ে
    ব্র্যাকের আলু বীজ কালোবাজারে দিগুণ দামে বিক্রির সময় বিক্ষুব্ধ কৃষকেরা প্রায় ১৫০ বস্তা আলু বীজ আটক করে রনির বাড়িতে জমা রাখেন। পরবর্তীতে এসব বীজ নায্যে মুল্য কৃষকের কাছে বিক্রির দাবিতে কৃষকের পক্ষে সোহেল বাদী হয়ে সার বীজ ব্যবসায়ী লালুকে বিবাদী করে গত রবিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)এবং কৃষি কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ করেছেন।কিন্ত্ত আটক বীজ কৃষকের কাছে নায্যে মূল্যে বিক্রি না করে উপজেলা প্রশাসন ইঁদুর-বিড়াল খেলা শুরু করেছে কৃষকদের অভিযোগ।
    এদিকে ১৫ জন কৃষকের স্বাক্ষরিত লিখিত অভিযোগে বলা হয়েছে,গত ১৫ নভেম্বর তানোর পৌর এলাকার কালীগঞ্জহাটের সার ব্যবসায়ী লালু সন্ধ্যার দিকে ব্র্যাকের এগ্রেড ও বিগ্রেড আলুর বীজ চকদমদমা গ্রামের রনির বাড়িতে রেখে মজুদ করেন । এসব বীজ এগ্রেড ৩ হাজার ১৬০ টাকা ও বিগ্রেড ৩ হাজার ৪০ টাকার বিপরীতে গোপণে কালোবাজারে ৭ হাজার ও ৫ হাজার টাকায় বিক্রি করছেন। এদিকে খবর পেয়ে বাদীসহ স্থানীয় কৃষকরা আলুর বীজগুলো আটক করেন। বীজ আটকের পর ব্যবসায়ী লালুসহ তার লোকজন নানা ভাবে হুমকি দিচ্ছেন কৃষকদের। বাদী সোহেলসহ কৃষকরা জানান, গত ১৫ নভেম্বর বীজগুলো আটক করা হয়। আটকের পর থেকে গোপণে এসব বীজ ভাগবাটোয়ারা করছেন প্রভাবশালীরা। বাড়তি দামে বীজ বিক্রি করলেও প্রশাসন কোন কিছুই করছে না। অবস্থা এমন কৃষকরা বীজ আটক করে উল্টো বেকায়দায় পড়েছেন। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত বীজ নিতে কৃষকরা দোকানে ভীড় করলেও পাচ্ছে না। লালু কালীগঞ্জ হাটে তার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে বাড়তি দামে মেমো কাটেন আর রনির বাড়ি থেকে পাচার হয়। সে কোন আলুর চাষাবাদ করবে না। কৃষকেরা আরো বলেন, সার-বীজ বিক্রির কোনো লাইসেন্স তার নাই। অথচ অবৈধ ব্যবসায়ী প্রকাশ্যে অবৈধ পন্থায় সার-বীজ বিক্রি করলেও প্রশাসন অজ্ঞাত কারণে নিরব ভুমিকা পালন করছে। রহিদুল জানান, গত সোমবার উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে বিষয়টি সম্পর্কে বলা হলে তিনি বলেন, আমি লোক পাঠাচ্ছি। কিন্তু কোন লোক আসেনি। এবিষয়ে অভিযুক্ত ব্যবসায়ী লালুর সঙ্গে (০১৭৩৩-১৩৪৪৯৭) মোবাইলে যোগাযোগ করে বিষয়টি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি জানান, আমি অফিসে আছি পরে কথা বলছি। পরে ফোন দেয়া হলে তিনি বলেন, বুধবার এসব বীজ কৃষকের কাছে বিক্রি করা হয়েছে। গত সোমবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে(ইউএনও) মোবাইলে কথা বলা হলে তিনি এই প্রতিবেদকেও একই ধরনের কথা বলেন। এদিকে বীজের কোন সমাধান না হওয়ায় গত মঙ্গলবার সকালে আবারো উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খায়রুল ইসলামকে অবহিত করা হলে তিনি জানান আমি কৃষি অফিসারের সাথে কথা বলেছি তিনি জানান, বীজের মালিক এসব বীজ আলু নাকি রোপণ করবেন।
    এবিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদের সঙ্গে মোবাইলে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ব্যবসায়ী লালু নাকি প্রজেক্ট করবে এজন্য বীজ এনেছে। কৃষকরা বলছে বাড়তি দামে বিক্রি করার কারনে বীজ আটক করেছে জানতে চাইলে তিনি জানান, ১১৭ বস্তা আলুর বীজ রয়েছে, সেখান থেকে এক বস্তা বীজ বিক্রি হলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।#

  • কালীগঞ্জে আগাম আমন ধান কাটা শুরু

    কালীগঞ্জে আগাম আমন ধান কাটা শুরু

    মো.হাসমত উল্লাহ,লালমনিরহাট।।

    লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলায় চলতি মৌসুমে আমন ধানের বাম্পার ফলনের স্বপ্ন দেখছেন কৃষকেরা। এখন আমন মৌসুম চলছে। বিস্তীর্ণ মাঠ জুড়ে হলুুুদ লালচে সোনালী ধান খেত। যতো দূর চোখ যায়, কেবল হলুুুদ লালচে সোনালী আর হলুুুদ লালচে সোনালী। এমন অপরুপ দৃশ্য দেখে সবাই মুগ্ধ। আর কেয়েক দিনের মধ্যে পুরো পুরি ভাবে পাকা ধান কাটা শুরু হবে। গোলায় উঠাবে নতুন ফসল। এবার আমনের ধান রোপণে কিছুটা দেরি হলেও ফসল তোলা নিয়ে আশাবাদী কৃষকরা। সব কিছু ঠিক থাকলে আমনের বাম্পার ফলনে দেরির ক্ষতিটা পুষিয়ে যাবে বলে আশা করছেন কৃষকরা।

    গত(৯ই নভেম্বর)২০২৪ইং কালীগঞ্জ উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় সরেজমিনে ঘুরে এমনই চিত্র দেখা গেছে,কয়েকদিনের মধ্যেই কৃষক ধান কাটা নিয়ে ব্যস্থ হয়ে যাবে মাঠের পর মাঠ এখন হলুুুদ লালচে সোনালী রংঙ্গে যা দেখে কৃষকের মন আনন্দে ভরে যাচ্ছে। এতোদিনের পরিশ্রমের ফসল তারা ঘরে তোলার জন্য প্রস্তুত হচ্ছেন। অপেক্ষার দিন শেষে তারা সোনালী ধানে গোলা ভরবেন এমনই স্বপ্নে বিভোর উপজেলার কৃষকদের।

    কালীগঞ্জ উপজেলা কৃষি বিভাগের কর্মকর্তা তুষার কান্তি রায়, জানান, উপজেলায় ১৭হাজার ২৮০ হেক্টর জমিতে আমন ধান রোপন হয়চ্ছে। অনুকূল আবহাওয়া থাকায় এবং নিবিড় পরিচর্যাসহ যথা সময়ে জমিতে সার ও কীটনাশক দেওয়ায় এবার আমনের ধানের লক্ষ মাত্রা পূরন হবে বলে আশা করছেন।

    হাসমত উল্লাহ ।।

  • মাল্টার চাষ করে সফল নাচোলের আপেল, সবাইকে ফরমালিনমুক্ত দেশী মাল্টা কেনার অনুরোধ

    মাল্টার চাষ করে সফল নাচোলের আপেল, সবাইকে ফরমালিনমুক্ত দেশী মাল্টা কেনার অনুরোধ

    মোঃ হায়দার আলী চাঁপাই নবাবগঞ্জ থেকে ফিরে : মানুষ যাই তা ঠিকই পায় শুধু চেষ্টা আর পরিশ্রম, আল্লাহর প্রতি বিশ্বাস রাখা। ছোটবেলা থেকেই স্বপ্ন ছিল সফল উদ্যোক্তা হওয়ার। তাই এসএসসির গোন্ডি পেরিয়ে নেমে পড়েন কৃষি উদ্যোক্তা হওয়ার লড়াইয়ে। প্রথমদিকে আম ও পেয়ারার ব্যাবসা দিয়ে শুরু করলেও পরবর্তীতে মাল্টা চাষে সফল হয়েছেন আতিউজ্জামান আপেল।

    তিনি ২০ বিঘা জমিতে গড়ে তুলেছেন মাল্টার বাগান। এ ছাড়া মাল্টা গাছের সঙ্গে মিশ্র ফলন হিসেবে লাগানো হয়েছে কমলা, বানানা ম্যাংগো, বারি-৪ ও কাজি পেয়ারা। সারি সারি মাল্টা গাছে থোকায় থোকায় ঝুলছে সবুজ ও হলুদ রঙের মাল্টা। মাল্টার ভারে গাছগুলো মাটিতে নুয়ে পড়েছে।

    দেখা যায়, চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোল উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নে উঁচু জমিতে এই মাল্টা বাগান করা হয়েছে। প্রতিটি গাছে থোকায় থোকায় সবুজ ও হলুদ রঙের মাল্টা ঝুলে আছে। এলাকার লোকজন মাল্টা বাগান দেখে মুগ্ধ হচ্ছেন। বাগানে আসা লোকজন বলছেন, মাল্টা খেতে অনেক সুস্বাদু ও মিষ্টি।

    মাল্টা চাষি আতিউজ্জামান আপেল বলেন, আমি ২০০৬ সালে এসএসসি পরীক্ষা দিই। তারপরে সর্বপ্রথম পেয়ার ও বারি-৪ বাগান নিয়ে কাজ শুরু করি। ২০১২-১৩ সালের দিকে বারি-৪ এ আমি সফলতা পাই। তারপর ২০২০ সালে আমি ৩৫ বিঘা জমি লিজ নিই। এই প্রজেক্ট নিয়ে কাজ শুরু করি এবং ২০ বিঘা জমিতে মাল্টার গাছ রোপণ করি। তারপর ২০২১ সালে অল্প পরিমাণে ২৫ থেকে ৩০ ক্যারেটের মতো মাল্টা পাই।

    তিনি আরও বলেন, এখন পর্যন্ত এই প্রজেক্টে ৪০ লাখ টাকার মতো খরচ হয়েছে এবং আশা করছি ৬০ থেকে ৬৫ লাখ টাকা পাবো। অর্থাৎ এ বছরে ২০ থেকে ২৫ লাখ টাকার মতো আয় হবে। এ ছাড়া গত ২০২২ সালেও ২০ লাখ টাকা মতো লাভ হয়েছিল।

    যারা মাল্টা চাষ করতে চায় তাদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, যারা মাল্টা চাষ করতে চান তাদেরকে সর্বপ্রথম জমি নির্বাচন করতে হবে। জমিটা যেন ভালো হয় এবং মাটিটি যেন বেলে-দোঁআশ হয়। দ্বিতীয়ত চারা ভালো হওয়া লাগবে। এছাড়া নিয়মিত পরিচর্যা করা লাগবে। সার-বিষ নিয়মিত দিতে হবে।

    ক্রেতাদের দেশি জাতীয় ফল মাল্টা কেনার প্রতি অনুরোধ জানিয়ে তিনি আরও বলেন, দেশি মাল্টা বাইরের মাল্টার চেয়ে অনেক সুস্বাদু। আমরা এই মালটাকে গুরুত্ব দিচ্ছি না, বাইরের মাল্টার প্রতি ঝুঁকে পড়েছি। আমাদের এই মাল্টায় কোনো ফরমালিন জাতীয় কিছু নাই। আপনারা নিশ্চিন্তভাবে এই ফল খেতে পারবেন। তাছাড়া আমরা এই ফলের ঠিকভাবে বাজার মূল্য পাচ্ছি না অথচ বাইরের মাল্টা ৩০০ থেকে ৪০০ টাকা কেজি। তাই আপনারা দেশি ফল খান এবং আমাদের পাশে থাকুন।

    বাগানে মাল্টা কিনতে আসা ব্যাপারী ইব্রাহিম আলী বলেন, আমি এই বাগান থেকে মাল্টা কিনে ঢাকা-লক্ষিপুর-সিলেট-চট্রগ্রামে পাঠাই। প্রতি দিন ৪০ থেকে ৫০ ক্যারেটের মতো মাল্টা কিনি। এই বাগানের মাল্টা রঙে ভালো ও সুস্বাদু এবং মিষ্টি।

    মাল্টার বাগানে কাজ করা শ্রমিক আজিজুর রহমান বলেন, আমরা ২০ থেকে ২৫ জন শ্রমিক মাল্টার বাগানে কাজ করি। বিষ, প্যাকেটিং ও কাটিংসহ বিভিন্ন কাজ করি। দেশি মাল্টা খেতে অনেক সুস্বাদু।

    নাচোল উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সলেহ আকরাম বলেন, বরেন্দ্র অঞ্চল তথা নাচোল উপজেলায় প্রায় ৫০ হেক্টর মাল্টার বাগান রয়েছে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই এই বাগানগুলো বারি-১ জাতের মাল্টার বাগান। কিছু ভিয়েতনামি ও হলুদ মাল্টা চাষ হয়। চাষীদের সঙ্গে আমরা নিয়মিত যোগাযোগ রাখছি। তারা মাল্টার বাগান করে বেশ লাভবান হচ্ছেন। এছাড়া মাল্টা ফলটি আগে বিদেশ থেকে ব্যাপক পরিমাণে আমদানি করতে হতো। এখন এই দেশীয় মাল্টা চাষ করায় আমদানির চাহিদা পূরণ করছে।

    তিনি আরও বলেন, নাচোল উপজেলার চাষিদেরকে বিভিন্ন প্রদর্শনীর মাধ্যমে উন্নত জাতের চারা, রাসায়নিক সার, জৈব সার ও বিভিন্ন প্রকার যন্ত্রপাতি সরবরাহ করছি। এছাড়া চাষিদেরকে পরামর্শ দিচ্ছি, বারি-১ মাল্টা যেটি রয়েছে সেটি যেন অক্টোবর মাসে হারভেস্ট করে। অনেক চাষি জুলাই ও আগস্ট মাসে হারভেস্ট করে তখন কিন্তু পূর্ণ মিষ্টতা আসে না। তাই চাষিদেরকে নিয়মিত পরামর্শ দেওয়ার ফলে অনেকেই এখন অক্টোবর মাসে মাল্টা হারভেস্ট করছে।

    আশার কথা হচ্ছে, আমাদের নাচোলে একটি ফল বাজার গড়ে উঠেছে যার ফলে সারা দেশেই সহজে ফলগুলো পাঠানো সহজ হচ্ছে এবং দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে ব্যাপারীরা বাগান পরিদর্শন করে ফল কিনতেও পারছেন। এতে এই উপজেলার অর্থনীতিতে ব্যাপকহারে ভূমিকা রাখছে।

    মোঃ হায়দার আলী
    গোদাগাড়ী,
    রাজশাহী।

  • রাজশাহীতে খরচ বেড়েছে আলু চাষে লক্ষ্যমাত্রা পুরুণে শঙ্কা

    রাজশাহীতে খরচ বেড়েছে আলু চাষে লক্ষ্যমাত্রা পুরুণে শঙ্কা

    আলিফ হোসেন,তানোরঃ
    রাজশাহীতে চলতি মৌসুমে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলে শুধু আলু বীজে খরচ বাড়বে প্রায় ১৪১ কোটি টাকা। অন্যদিকে জমি ভাড়া বাড়বে প্রায় ২৬০ কোটি ৫০ লাখ টাকা। ফলে সার, শ্রমিক ও কীটনাশক খরচ ছাড়াই বীজ এবং জমি ভাড়ায় চাষিদের বাড়তি গুনতে হবে প্রায় সাড়ে ৪০০ কোটি টাকা। এ নিয়েই দুশ্চিন্তায় রয়েছেন রাজশাহীর আলু চাষিরা। ফলে এবার রাজশাহীতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন নিয়ে শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
    সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, রাজশাহী জেলায় চলতি মৌসুমে আলু আবাদের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রায় ৩৫ হাজার হেক্টর। এই পরিমাণ জমির জন্য বীজ আলুর প্রয়োজন প্রায় ৯৪ হাজার টন। এবার আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে এক কোটি ৫৬ লাখ ৪ হাজার বস্তা। এবার প্রতি কেজি বীজ আলুর দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা ও প্রতি বিঘা জমির আবাদ খরচ বেড়েছে প্রায় ১০ থেকে ১৫ হাজার টাকা। গত বছরের চেয়ে এবার প্রতি বিঘা জমিতে আলু চাষে কৃষকদের বাড়তি গুনতে হবে ২৫ থেকে ৩৫ হাজার টাকা। সবমিলিয়ে এবার প্রতি বিঘা আলু চাষে খরচ হবে ৭০ থেকে ৭৫ হাজার টাকা। আর প্রতি বিঘা জমিতে আলু উৎপাদন হবে গড়ে (প্রতি বস্তা ৫৫ কেজি) প্রায় ৫৫ থেকে ৬০ বস্তা।
    জানা গেছে, রাজশাহীর প্রধান অর্থকরি ফসল আলু। ইতোমধ্যে জেলার বিভিন্ন এলাকায় শুরু হয়েছে বীজ রোপণ। তবে আলু বীজের দাম বাড়ায় সৃষ্টি হয়েছে নানা সংকট। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশন (বিএডিসি) আলু বীজের দাম বাড়িয়েছে। গত বছরের চেয়ে এবারে প্রতি কেজি আলু বীজে ১০ থেকে ১২ টাকা বাড়িয়েছে বিএডিসি।আলু চাষিরা বলছেন, এবার বাজারে খাওয়ার আলুর দামই বেশি। তার ওপর আলু বীজের দাম বেড়েছে কেজিতে ১০ থেকে ১৫ টাকা করে। প্রতি বিঘা জমিতে আলু বীজ লাগে ৩০০ কেজি। প্রতি কেজিতে গড়ে ১৫ টাকা বেশি হওয়ায় এবার শুধু এক বিঘা জমিতে বীজ বাবদ চাষিদের বাড়তি গুনতে হবে প্রায় ৫ হাজার টাকা। চাষিরা বলছেন, আলু আবাদের খরচ যেভাবে বেড়েছে তাতে এবার তারা লাভের মুখ দেখবেন কিনা তা নিয়ে সংশয়ে আছেন।
    জানা গেছে, রাজশাহীর হিমাগারগুলোয় এখন বীজ আলু ৭০ টাকা কেজি করে বিক্রি হচ্ছে। বীজ কোম্পানিগুলো বীজ প্রতি কেজিতে দাম নিচ্ছে ৮০ টাকা করে। যদিও বিএডিসির বীজ আলু প্রতি কেজি ৬০ টাকা। কিন্তু রাজশাহীতে বিএডিসি চাষিদের জন্য মাত্র দেড় হাজার টন বীজ আলু বরাদ্দ পেয়েছে।
    রাজশাহীর তানোরের তালন্দ ইউপির নারায়নপুর গ্রামের আলু চাষি মইফুল ইসলাম বলেন, গত কয়েক বছরে রাজশাহীতে আলু চাষ করে অনেকেই ভালো পরিমাণ মুনাফা করেছেন। কিন্তু এবার পরিস্থিতি ও বাস্তবতা ভিন্ন।
    আলু চাষি গোলাম রাব্বানী বলেন, সার, বীজ, জমি ভাড়া ও কীটনাশক এবং বিশেষ করে শ্রমিকের দাম বেড়ে যাওয়ায় এবারে প্রতি বিঘা আলু চাষে প্রায় ২৫ থেকে ৩০ হাজার টাকা বাড়তি গুনতে হবে। আলু চাষিরা অভিযোগ করে বলেন, আলু চাষের ভরা মৌসুমে বিভিন্ন বাণিজ্যিক কোম্পানি, ডিলার, বীজ বিক্রেতা ও হিমাগার মালিকরা কৃত্রিম সংকট তৈরি করেন। তখন বাড়তি টাকা গুনতে হয় চাষিকেই।
    রাজশাহী জেলা বিএডিসি বীজ ডিলার অ্যাসোসিয়েশনের সম্পাদক সাইফুল ইসলাম বলেন, এবারে বিএডিসির প্রতি কেজি আলু বীজের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১২ টাকা। বিএডিসির বীজের কেজি ধরা হয়েছে ৬০ টাকা। অথচ সরকারি বীজের উৎপাদন খরচ ছিল মাত্র ৩৫ টাকা। সংরক্ষণ খরচ আরও ১০ টাকা বৃদ্ধি পেলে ৪৫ টাকা হয়। এবার বিএডিসিও বীজ আলুর দাম বাড়িয়েছে। বিএডিসি চাইলে কেজিপ্রতি ৫০ টাকা করে বীজ বিক্রি করতে পারে।
    রাজশাহীর বিএডিসির উপ-পরিচালক আব্দুল কাদের বলেন, বাজারে খাবার আলুর দাম বেড়ে যাওয়ায় বেড়েছে বীজ আলুর দাম। কারণ বাজারে খাবার আলু যে দামে বিক্রি হচ্ছে তার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এই দাম নির্ধারণ করা হয়। তা না হলে মানুষ বীজ আলু নিয়ে গিয়ে অনেকেই খাবার হিসাবে বিক্রি করবে।
    রাজশাহী কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মোছা. উম্মে সালমা জানান, আমরা চাষিদের পরামর্শ দিচ্ছি তারা যেন উচ্চফলনশীল জাতের আলু আবাদ করেন। এতে আলুর ফলনটা ভালো পাবেন।#

  • তানোরে ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে আমণখেতে ব্যাপক ক্ষতি

    তানোরে ঘুর্ণিঝড়ের প্রভাবে আমণখেতে ব্যাপক ক্ষতি

    আলিফ হোসেন,তানোরঃ
    দেশে ঘূর্ণিঝড় দানার প্রভাবে সৃষ্ট বৃষ্টি ও ঝড়ো বাতাসে রাজশাহীর তানোরে আমনের পাকা ধানগাছ নুয়ে পড়েছে। পাশাপাশি ক্ষতির মুখে পড়েছে শীতকালীন আগাম শাক-সবজিসহ বিভিন্ন ধরনের রবিশস্য। ঘরে তোলার সময় ধানগাছ নুয়ে পড়ায় কৃষকেরা ব্যাপক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছেন। সকালে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় গিয়ে দেখা গেছে বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাসের কারণে অনেক আমণখেতের পাকা ও আধা পাকা ধানগাছ মাটিতে নুয়ে পড়েছে। খেত থেকে পানি সরে না গেলে যেসব ধান কেটে রাখা আছে তা নষ্ট হয়ে যেতে পারে। এছাড়াও শীতকালীন আগাম শাক-সবজির খেতও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এদিকে ঝড়ো-বৃষ্টির পর অনেক এলাকায় আমণখেতে পচন ও পোকার আক্রমণ দেখা দিয়েছে। তবে বৃষ্টি-ঝড়ো হাওয়ায় কি পরিমাণ আমণখেত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেই তথ্য কৃষি বিভাগ দিতে পারেনি।উপজেলার কামারগাঁ ইউপির কৃষক সুমন আলী বলেন, আকাশ ভালো থাকায় দুবিঘা জমির পাকা ধান কেটে রেখেছিলাম শুকানোর জন্য। কিন্তু গত দুই দিন ঝড় হাওয়া ও বৃষ্টি হওয়ায় এখন দুশ্চিন্তায় পড়েছি। অন্যদিকে কৃষক রবিউল ইসলাম জানান, “গত বছর ধানের ভালো দাম পাননি। এ নিয়ে হতাশায় ছিলেন। আগামি
    সপ্তাহ থেকে তার ১০ বিঘা জমির ধান কাটা শুরু হবে। কিন্তু হঠাৎ ঝড়-বৃষ্টিতে বেশিরভাগ ধান গাছ মাটিতে শুয়ে পড়েছে।
    এতে ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। এ যেন ‘মড়ার উপর খাঁড়ার ঘা’।” কৃষক আয়ুব আলী ও আব্দুল আলী বলেন, “বৃষ্টি ও ঝোড়ো বাতাসের কারণে ইতিমধ্যে চরম ক্ষতি হয়ে গেছে। এক একর জমিতে আগে প্রায় ৫০ মণ ধান পাওয়া যেত, এখন সেখানে ৩০ মণ আসতে পারে। এছাড়াও শিব নদীর পাড় ও নিচু এলাকায় আমণখেতে পানি জমে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে।
    সংশ্লিষ্ট সুত্রে জানা গেছে, উপজেলায় চলতি মৌসুমে আমণের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২২ হাজার ৬৩৫ হেক্টর। এর মধ্য হাইব্রিড ২৮ হেক্টর, উফশী জাত ২২ হাজার ১১৭ হেক্টর এবং স্থানীয় জাতের চাষ হয়েছে ৫৫০ হেক্টর। চাল উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৬০ হাজার ২৯৮ মেট্রিক টন। উপজেলার স্বর্ণপদক প্রাপ্ত স্বশিক্ষিত কৃষি বিজ্ঞানী নুর মোহাম্মাদ জানান, রোপা-আমণ রোপণের শুরুর দিকে কৃষকদের প্রচুর বেগ পেতে হয়েছে। বৃষ্টির পানি সময় মত পায়নি। সার নিয়ে ছিল অসহীয় সিন্ডিকেট। আর শেষ মুহুর্তে বৃষ্টি-ঝড়ো হাওয়ায় নুয়ে পড়া আমণের উৎপাদন কিছু হ্রাস পাবে। উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুল্লাহ আহম্মেদের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দেয়া হলেও তিনি কল গ্রহণ না করায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

  • দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এক হাজার কোটি টাকার সুপারি যাচ্ছে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় বাড়ছে বাণিজ্যিক চাষাবাদ

    দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের এক হাজার কোটি টাকার সুপারি যাচ্ছে উত্তরাঞ্চলের ১৬ জেলায় বাড়ছে বাণিজ্যিক চাষাবাদ

    শেখ সাইফুল ইসলাম কবির বিশেষ প্রতিনিধি:বিশ্ব ঐতিহ্য বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ বন সুন্দরবনের উপকূলীয় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের শস্যভাণ্ডার নামে খ্যাত উর্বর ভূমি বাগেরহাটের দিন দিন বাণিজ্যিকভাবে বাড়ছে সুপারির চাষ। ইতোমধ্যে নয় উপজেলার মধ্যে তিনটি উপজেলার বিভিন্ন এলাকার সুপারির হাট জমে উঠেছে। মোরেলগঞ্জের স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে সুপারি যাচ্ছে উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় আড়ৎ সৈয়দপুরে। ওখান থেকেই স্থানীয় পাইকাররা সুপারি কিনে সরবরাহ করছে উত্তরের ১৬ জেলায়। জানিয়েছেন স্থানীয় সুপারি ব্যবসায়ীরা।

    বাগেরহাটের নয় উপজেলার মধ্যে তিনটি উপজেলায় সুপারির ফলন ভাল হয়। তার মধ্যে মোরেলগঞ্জ উপজেলা অন্যতম। তাই এ উপজেলার ছোট বড় বিভিন্ন হাটকে সামনে রেখে উপজেলার প্রায় ১ হাজার মৌসুম ব্যবসায়ীরা ব্যস্তসময় পার করছেন। গত বছরের তুলনায় এ বছরে সুপারির দাম বেশি তাই বেশ খুশি স্থানীয় সুপারি চাষিরা। সুপারির ফলন ভালো হওয়ায় ও বাজাওে সুপারির দাম ভালো থাকায় জেলার চাষিরা দিনে দিনে সুপারি চাষে আগ্রহী হচ্ছে।বাগেরহাট নারকেল, সুপারি ও চিংড়ি উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত। এবার এ জেলায় সুপারির ফলনও হয়েছে ভালো। গেল কয়েক বছরের মধ্যে এবারই সব থেকে বেশি সুপারি হয়েছে। তবে সুপারির বাম্পার ফলন হলেও, হাসি নেই কৃষকের মুখে।

    গেল বছরের তুলনায় অর্ধেকে নেমে এসেছে সুপারির দাম। যার কারণে লোকসানে পড়তে হচ্ছে ইজারা নেওয়া বাগান মালিকদের। কাঙ্ক্ষিত দাম না পাওয়ায় গৃহস্থ কৃষকেরাও পড়েছেন বিপাকে। ব্যবসায়ীদের দাবি, শুকনো সুপারি আমদানি, হরতাল-অবরোধ ও নিম্নমুখী অর্থনীতির কারণে খুচরো বাজারে সুপারির দাম কমেছে।

    জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, বাগেরহাট জেলায় ৩ হাজার ৯৬০ হেক্টর জমিতে সুপারির চাষ হয়েছে। এতে প্রায় ২৬ হাজার ১২৩ টন সুপারি উৎপাদন হয়েছে। যার বাজার মূল্য এক হাজার কোটি টাকার বেশি। দিনদিন সুপারির চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে। জেলায় উৎপাদিত এসব সুপারি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্থানীয় বড় বাজারে বিক্রি হয়।

    ব্যবসায়ীরা এই সুপারি ক্রয় করে পাঠান দেশের বিভিন্ন বড় শহরে। রপ্তানিও হয়ে থাকে সামান্য কিছু। অবশিষ্ট সুপারি পানিতে ভিজিয়ে এবং শুকিয়ে অফসিজনে চড়া দামে বিক্রি করেন ব্যবসায়ীরা।

    যে-সব বাজারে সব থেকে বেশি সুপারি বিক্রি হয়, তার মধ্যে কচুয়া উপজেলার বাধাল বাজার অন্যতম। বাধাল বাজারে হাটের দিনে কয়েক কোটি টাকার সুপারি বিক্রি হয়। সপ্তাহে রবি ও বৃহস্পতিবার দুই দিন বসে এই হাট। ভোর ৬টা থেকে শুরু করে রাত ৮টা পর্যন্ত চলে বেচাকেনা। এই হাটে সুপারি বিক্রি হয় কুড়িতে। এক কুড়ি সমান ২৩১টি সুপারি।

    বাধাল বাজারের সুপারির হাটে দেখা যায়, বড় সুপারি প্রতি কুড়ি বিক্রি হচ্ছে ৪০০ থেকে ৫৫০ টাকা, যা গেল বছর ছিল ৭৫০ থেকে সাড়ে ৮০০ টাকা। মাঝারি সুপারি কুড়ি ২৫০ থেকে ৩৫০ টাকা, ছোট ও কাঁচা সুপারি আকার ভেদে ১৫০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হচ্ছে। যা গেল বছরের থেকে ৫০ থেকে ১০০ টাকা পর্যন্ত কম।

    মোরেলগঞ্জ সদর ইউনিয়নের ভাইজোরা গ্রামের চাষি দেলোয়ার হোসেন বলেন, বছরের ছয় মাসের সংসার খরচ চলে সুপারি বিক্রির টাকায়। কিন্তু এবার দাম এত কম যে তিন মাসের খরচও উঠবে না।

    সুপারি বিক্রেতা আনিছ শেখ বলেন, এবার সুপারির দাম অনেক কম। তিন কুড়ি সুপারি নিয়ে এসেছিলাম। ১২০০ টাকায় বিক্রি করেছি। আগের বছরের মতো দাম হলে অন্তত ১৬০০ টাকা বিক্রি করতে পারতাম।

    মোরেলগঞ্জের গ্রামের জাহিদুল ইসলাম বলেন, প্রতিটি গাছের সুপারি পাড়াতে ১০ টাকা দিতে হয়। এর পরে ভ্যান ভাড়া-বাজারের খাজনা রয়েছে। এত দাম কম হলে আমাদের কি থাকে।

    সুপারি ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর মোল্লা বলেন, গেল বছরের যে সুপারির কুড়ি ৮০০ টাকা কিনেছি, এবার তার দাম ৪০০ টাকা। যার কারণে সুপারির ফলন বেশি হলেও, কৃষকরা কাঙ্ক্ষিত দাম না পেয়ে অনেকটা হতাশ।

    মোরেলগঞ্জের কালিকাবাড়ি, দৈবজ্ঞহাটি, পোলেরহাট,বাধাল ছাড়াও, কচুয়া, বৈলপুর, মাজারমোড়, সিএন্ডবি বাজারসহ বেশ কিছু হাটে সুপারি বিক্রি হয়। সুপারির কেনাবেচার সঙ্গে বাগেরহাটের ৫ শতাধিক ব্যবসায়ীসহ দশ হাজারের বেশি শ্রমিক জড়িত। সুপারির নতুন বাজার সৃষ্টি হলে, সুপারি চাষি ও ব্যবসায়ীরা উপকৃত হবে বলে মনে করেন সংশ্লিষ্টরা।

    কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, বাগেরহাটের উপ-পরিচালক শঙ্কর কুমার মজুমদার বলেন, বাগেরহাট সুপারি চাষের প্রধান জেলা। এবার সুপারির ফলন অনেক ভালো হয়েছে। সুপারির ফল বৃদ্ধির জন্য চাষিদের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। ফলনের সঙ্গে সঙ্গে যাতে কৃষকরা ভালো দাম পেতে পারে এজন্য নতুন বাজার সৃষ্টির চেষ্টা চলছে। জরুরি না হলে ও মৌসুমের সময় সুপারির আমদানি বন্ধ রাখলে কৃষকরা ভাল দাম পাবেন বলে মন্তব্য করেন এই কর্মকর্তা।