Category: কৃষি

  • যশোরের বাগআঁচড়া বেলতলা কুল বাজার বেশ জমজমাট, ভালো দাম পাচ্ছেন চাষিরা

    যশোরের বাগআঁচড়া বেলতলা কুল বাজার বেশ জমজমাট, ভালো দাম পাচ্ছেন চাষিরা

    আজিজুল ইসলাম, যশোরঃ যশোরের শার্শা উপজেলার বাগআঁচড়া বেলতলা কুল বাজার এখন জমজমাট। মৌসুমী ফল কুলে ভরে উঠেছে এখানকার কুল বাজার। কুলের মৌসুমে আড়তে কুল বেচাকেনার হিড়িক পড়ে যায। পৌষ,মাঘ ও ফাল্গুন মাস ব্যাপি বাজারে কুলের বেচাকেনা চলে।

    বেলতলা কুল বাজার থেকে প্রতিদিন ৫ থেকে ১০ ট্রাক কুল রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন বিভাগীয় শহরে রপ্তানি হয়। বর্তমানে কুল এই অঞ্চলের অর্থকারী ফসল হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে । দেশের কোথাও কোথাও এই ফলটি বরই নামে পরিচিত।

    যশোর ও সাতক্ষীরার সীমান্তবর্তী শার্শা ও কলারোয়া উপজেলার বিস্তীর্ণ মাঠজুড়ে কৃষকরা বিভিন্ন জাতের কুলের চাষ করছেন। কুল চাষ এলাকার কৃষকদের কাছে খবই জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে।

    কৃষকরা টক কুলের পাশাপাশি থাই, আপেল ও নারকেল কুলের চাষ করছেন। এছাড়াও বল কুল, বেরি কুল, গাজি পুরি ও বল সুন্দরী কুলেরও বেশ জনপ্রিয়তা রয়েছে। কৃষকরা এমৌসুমে থাই ও আপেল কুল প্রতি কেজি ৬০ থেকে ১৫০ টাকা,বল কুল-৭০ থেকে ১২০ টাকা, টক লাল সাদা ৪৫ থেকে ৯০টাকা,গাজীপুরী টক কুল,৪০ থেকে ৭০ টাকা,বেবি কুল ৬০ থেকে ৮০ টাকা,বল সুন্দরী ৭০ থেকে ১০০ টাকা দরে পাইকারী বিক্রি করছেন।

    কুল চাষি হাসানুজ্জামান ও তরিকুল ইসলাম জানান,তারা গত পাঁচ বছর ধরে কুলচাষ করছেন। এ বছর তিনি সাড়ে ৪ বিঘা জমিতে থাই আপেল কুল চাষ করেছেন। গত বছরও ৩ বিঘা কুল চাষ করেছিলেন। গত বছরের থেকে এ বছর গাছে অনেক কুল ধরেছে এবং অনেক বেশী দামে কুল বিক্রি করছেন। এভাবে যদি শেষ পর্যন্ত বিক্রি করতে পারেন তাহলে এ বছর অনেক লাভবান হতে পারবেন বলে জানান।

    সিলেট থেকে আসা কুল ব্যাবসায়ী রায়হানুজ্জান ও আকরাম আলী জানান, তারা ১৫ বছর যাবত আম,কুল, তরমুজ,আনারস সহ বিভিন্ন মৌসুমি ফলের ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। সেই কারণে প্রতিবছরই বেলতলার মোকামে আসেন। এ বছর এ এলাকায় কুলের ফলন অনেক বেশি। তারপরও কুলের দাম গত বছরের চেয়ে একটু বেশি। তারা যেমন বেশি দামে কিনছেন ঠিক তেমন বেশি দামে দেশের বিভিন্ন এলাকায় বিক্রিও করছেন। চাহিদা বেশি থাকায় তারা কুল কিনে ভালো দামে বিক্রি করতে পারছেন।

    শার্শা উপজেলা কৃষি অফিসার দীপক কুমার সাহা জানান,এ বছর শার্শা উপজেলায় মোট ১৩৫ হেক্টর জমিতে কুল চাষ হয়েছে। তিনি বেলতলা বাজার পরিদর্শন করেছেন। এ বছর বল সুন্দরী, থাই আপেল, চায়না ও বিভিন্ন জাতের টক কুলগুলোই চাষিরা বেশি চাষ করেছেন এবং তারা গত বছরের চেয়ে বেশী দাম পাচ্ছেন লাভবানও হচ্ছেন।নিয়মিত উপজেলা কৃষি অফিস বেলতলা বাজার মনিটরিং করছে বলে তিনি জানান।

  • পঞ্চগড়ের বুড়াবুড়ি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের পরিত্যক্ত জমিতে সবজি চাষ

    পঞ্চগড়ের বুড়াবুড়ি ইউনিয়ন ভূমি অফিসের পরিত্যক্ত জমিতে সবজি চাষ

    মুহম্মদ তরিকুল ইসলাম, তেতুলিয়া প্রতিনিধিঃ পঞ্চগড়ের তেঁতুলিয়া উপজেলার বুড়াবুড়ি ইউনিয়ন ভুমি অফিসের পরিত্যক্ত জমিতে বিভিন্ন ধরনের শাক-সবজির আবাদ করছেন ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান। পেশাগত দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি বিষমুক্ত সবজির বাগান করে সর্ব মহলের কাছে প্রশংসিত হচ্ছেন তিনি। এই উদ্যোগের ফলে ইউনিয়ন ভূমি অফিসের সদস্যসহ আশপাশের গরিব অসহায় ব্যক্তিদের খাবারের চাহিদা অনেকাংশে পূরণ হচ্ছে।

    মঙ্গলবার (৭ জানুয়ারি) ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পরিত্যক্ত জায়গায় সহকারি কমিশনার (ভুমি) এর নির্দেশনায় ইউনিয়ন ভুমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান, অফিস সহায়ক আব্দুল লতিফ ও ইসরাইল আলী এই সবজি বাগান গড়ে তুলেছেন। এদিকে বড় পরিসরে না হলেও সীমিত পরিসরে গড়ে তোলা এই সবজি বাগানে রয়েছে লাউ, শালগম, স্কোয়াশ, নাপা শাক, শিম, পুইশাক, গাজর, মুলা, মিষ্টিকুমড়া, মরিচ, আলুসহ নানা জাতের সবজি রয়েছে এই বাগানে। ভূমি অফিসের এই উদ্যোগে বদলে যাচ্ছে দৃশ্যপট।

    ইউনিয়ন ভূমি অফিসে সেবা নিতে আসা কালদাসপাড়া গ্রামের মকলেছার রহমান ও চৌধুরীপাড়া গ্রামের আমিরুল ইসলাম বলেন, এটি একটি ভালো উদ্যোগ। অফিসের পরিত্যক্ত জমিতে বিভিন্ন প্রকার শাক সবজি দেখে খুব ভালো লাগলো। এই সবজির বাগানে ভূমি অফিসটির সৌন্দর্য বৃদ্ধি পেয়েছে। আগে এই জমিটি পরিত্যক্ত অবস্থায় ছিল।

    ইউনিয়ন ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক আব্দুল লতিফ বলেন, আমাদের সকলের একটু উদ্যোগী হওয়া উচিত। অন্যান্য অফিসের আশপাশের পরিত্যক্ত জমিতে বিভিন্ন জাতের সবজি চাষ করা প্রয়োজন। এতে করে অফিসের সকল সদস্যদের চাহিদা মিটিয়ে গরিব অসহায় ব্যক্তিদের সহযোগিতা করা যাবে।

    এ বিষয়ে ইউনিয়ন ভূমি উপ-সহকারী কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান বলেন, জায়গাটা অনেকটা পরিত্যক্ত ও গর্ত ছিল। আমরা এখানে মাটি দিয়ে সমান করে বিভিন্ন সবজি চাষ করেছি। আগামীতেও আমরা এভাবে সবজি চাষ করবো যেন আমাদের নিজের খাওয়ার চাহিদা পূরণসহ আশপাশের যারা গরিব লোক আছে তাদেরকে এই শাক সবজি দিতে পারি তারা যেন উপকৃত হয় এজন্যই মূলত এখানে চাষ করা।

    মুহম্মদ তরিকুল ইসলাম।।

  • নড়াইলে আধুনিকতার ছোঁয়ায় গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ি বিলুপ্তপ্রায়

    নড়াইলে আধুনিকতার ছোঁয়ায় গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ি বিলুপ্তপ্রায়

    উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে:
    নড়াইলে আধুনিকতার যান্ত্রিক ছোঁয়ায় ও ডিজিটাল পদ্ধতির কাছে গ্রামবাংলার ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ি বিলুপ্তপ্রায়। আমাদের গ্রামগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী বাহন ছিল গরুর গাড়ি ও গাড়িয়াল পেশা। বিশেষ করে নড়াইলের জনপদে কৃষি ফসল বহন ও মানুষ বহনের প্রিয় বাহন ছিল দু-চাকার গরুর গাড়ি। উজ্জ্বল রায়, জেলা প্রতিনিধি নড়াইল থেকে জানান, আধুনিকতার যান্ত্রিক ছোঁয়ায় ও ডিজিটাল পদ্ধতির কাছে হার মেনে গ্রাম বাংলার চিরচেনা ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ি ও গাড়িয়াল পেশা বিলুপ্তপ্রায়। আর গরুর গাড়ির সাথে সংপৃক্ততায় হারিয়ে যেতে বসেছে গাড়িয়াল পেশা। গ্রামগঞ্জের একা বেকা মেঠো পথে এখন আর তেমন চোঁখে পড়ে না পূর্বেও সময়কালের অতি প্রয়োজনীয় গরুর গাড়ি। দেশের গ্রামীন জনপদের মধ্যে বিভিন্ন উপজেলায় ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ি বাহনের সরগরম অস্তিত্ব ছিল এবং ছিল সর্বত্র এই গরুর গাড়ির কদর। বর্তমানে দেশে ডিজিটাল পদ্ধতির ছোঁয়া লাগাতেই গ্রামগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ি ও গাড়িয়াল পেশা বিলুপ্তপ্রায়। গরুর গাড়ি নিয়ে কবি লেখকরা লিখেছেন তাদের কবিতার ভাষায় কতনা কবিতা, শিল্পীরা গেয়েছেন কতই না ভাওয়াইয়া গান। ভাওয়াইয়া গানের মধ্যে অন্যতম গান হল ওকি গাড়িয়াল ভাই, কত রবো আমি পন্থের দিকে চাইয়ারে…….। বর্তমানে গরুর গাড়ি ও গাড়িয়াল পেশা এখন এসব বাহন করে শুধুমাত্র রূপকথার গল্পমাত্র এবং বিলুপ্ত হয়ে স্থান পেয়েছে সংবাদপত্র ও বইয়ের পাতায়। মাঝেমধ্যে প্রত্যন্ত এলাকায় দু-একটি গরুর গাড়ি চোখে পড়লেও শহরাঞ্চলে একেবারেই দেখা যায় না। আধুনিক সভ্যতায় ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ি হারিয়ে যেতে বসেছে। সে কারণে শহরের ছেলেমেয়েরা দূরের কথা, বর্তমানে গ্রামের ছেলেমেয়েরাও গরুর গাড়ির শব্দটির সঙ্গে পরিচিত নয়।
    আবার অনেক শহরে শিশু গরুর গাড়ি দেখলে বাবা-মাকে জিজ্ঞেস করে গরুর গাড়ি সম্পর্কে। যুগ যুগ ধরে কৃষকের কৃষি ফসল বপন ও বহনের গুরুত্বপূর্ণ বাহন হিসেবে পরিচিত ছিল গরুর গাড়ি। গরু গাড়ি দুই চাকাবিশিষ্ট গরু বা বলদে টানা এক প্রকার বিশেষ যান। এ যানে সাধারণত একটি মাত্র অক্ষের সাথে চাকা দুটি যুক্ত থাকে। গাড়ির সামনের দিকে একটি জোয়ালের সাথে দুটি গরু বা বলদ জুটি মিলে গাড়ি টেনে নিয়ে চলে। দুই যুগ আগে গরুর গাড়িতে চড়ে বর-বধূ যেত। গরুর গাড়ি ছাড়া বিয়ে হতো না। বিয়ে বাড়ি বা মাল পরিবহনে গরুর গাড়ি ছিল একমাত্র পরিবহন বাহন। বরপক্ষের লোকজন বরযাত্রী ও ডুলিবিবিরা বিয়ের জন্য ১০-১২টি গরুর গাড়ির ছাওনি (টাপর) সাজিয়ে শ্বশুরবাড়ি ও বাবার বাড়ি আসা-যাওয়া করত। রাস্তাঘাটে গরুর গাড়ি থেকে পটকাও ফুটাত। বিয়ে এবং অন্য কোন উৎসবে গরুর গাড়ি ছাড়া পূর্ণতা পেতো না। হাতে গোনা দু’একটা গাড়ি দেখা যায় গ্রামের মেঠে পথে তাও জরাজীর্ন অবস্থায়। তাছাড়া যেন চোঁখেই পড়ে না এই গরুর গাড়িগুলো। কিন্তুশহরের ছেলে মেয়েরাতো দুরে থাক গ্রামের ছেলে মেয়েরাও গরুর গাড়ির এই বাহনের সাথে পরিচিত না খুব একটা। আগে অনেকেরি এই গাড়ি গুলো ছিল উপার্জনের একমাত্র অবলম্বন ছিল কিন্তু এখন গরুর গাড়ি চলে না। যে সব পরিবারে গরুগাড়ি ছিল, তাদের কদরের সীমা ছিল না। কৃষকরা প্রতিদিন ফজরের আজানের আগে গরুর গাড়িতে কখনো জৈব সার তথা গোবরের সার, কখনো গরুর খাবার ও লাঙ্গল-মই-জোয়াল নিয়ে যেত মাঠে। বর্তমান যুগ হচ্ছে যান্ত্রিক যুগ। মানুষ বিভিন্ন ধরনের প্রয়োজনীয় মালামাল বহনের জন্য বাহন হিসেবে ব্যবহার করছে ট্রাক, পাওয়ার টিলার, লরি, নসিমন-করিমনসহ বিভিন্ন মালগাড়ি। মানুষের যাতায়াতের জন্য রয়েছে মোটরগাড়ি, রেলগাড়ি, বেবিট্যাক্সি, অটোরিকশা ইত্যাদি। ফলে গ্রামাঞ্চলেও আর চোখে পড়ে না গরুর গাড়ি। অথচ গরুর গাড়ির একটি সুবিধা হলো, এতে কোনো জ্বালানি লাগে না। ফলে ধোঁয়া হয় না। পরিবেশের কোনো ক্ষতিও করে না। এটি পরিবেশবান্ধব একটি যানবাহন। রিকশা বা ঠেলাগাড়ির মতো গরুর গাড়িও একটি পরিবেশবান্ধব যান। এতে কোনো জ্বালানি খরচ নেই। শব্দ দূষণ নেই। তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ এসব কিছুই এই যানে ব্যবহার হয় না। এই গরুর গাড়ি ধীর গতিতে চলে বলে তেমন কোনো দুর্ঘটনাও নেই। কিন্তু যুগের পরিবর্তনে আমাদের প্রিয় এই গরুরগাড়ি প্রচলন আজ হারিয়ে যাচ্ছে।
    গ্রামের বয়স্ক গাড়িয়াল জাহাঙ্গীর আলম ও এমামুল হক জুয়েল বলেন, আগে আমাদের বাপ-দাদারা গরুর গাড়ি চালিয়ে আমাদের সংসার চালাতো। কিন্তু এখন গরুর গাড়িতে আর কেউ চলতে চাইনা। তাই অটো ভ্যান ও ইজিবাইক চালিয়ে গাড়িয়ালরা তাদের জীবন জিবীকা নির্বাহ করছে। যান্ত্রিক সভ্যতার যুগে এখন গরুর গাড়ি বিলীন হয়ে যাচ্ছে। বাংলা এবং বাঙালির ঐতিহ্যগুলোকে আমাদের মাঝে ধরে রাখতে আবারও গ্রামগঞ্জের ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ি ও গাড়িয়াল পেশাকে টিকেয়ে রাখতে সরকারের কার্যকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করাটাই উত্তম। বেতবাড়িয়া গ্রমের সুবোল মন্ডল বলেন, এখনো গ্রামবাংলার জনপদে কৃষি ফসল ও মানুষ পরিবহনের প্রিয় বাহন দুই-চাকার গরুর গাড়ি থাকলেও আধুনিকতার যান্ত্রিক ছোঁয়া আর ডিজিটাল পদ্ধতির কাছে হার মেনে বিলুপ্তপ্রায় এ পেশাটি। মাঝেমধ্যে প্রত্যন্ত এলাকায় দু-একটি গরুর গাড়ি চোখে পড়লেও শহরাঞ্চলে একেবারেই দেখা যায় না। আধুনিক সভ্যতায় ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ি হারিয়ে যেতে বসেছে। অথচ গরুর গাড়ির একটি সুবিধা হলো, এতে কোনো জ্বালানি লাগে না, ধোঁয়া হয় না। পরিবেশের কোনো ক্ষতিও করে না। গরুর গাড়ি একটি পরিবেশবান্ধব যানবহন। এতে কোনো জ্বালানি খরচ নেই। শব্দ দূষণ নেই। তেল, গ্যাস, বিদ্যুৎ এসব কিছুই এই যানে ব্যবহার হয় না। এই গরুর গাড়ি ধীর গতিতে চলে বলে তেমন কোনো দুর্ঘটনাও নেই। কিন্তু যুগের পরিবর্তনে আমাদের প্রিয় এই গরুর গাড়ি ও গাড়িয়াল পেশা প্রচলন আজ হারিয়ে যাচ্ছে।
    অনিল লস্কর বলেন, গ্রামবাংলার এক সময়ের যোগাযোগের অন্যতম মাধ্যম গরুর গাড়ি। নতুন নতুন প্রযুক্তির ফলে মানুষের জীবনযাত্রার উন্নয়ন ঘটছে, হারিয়ে যাচ্ছে অতীতের এই ঐতিহ্যবাহী গরুর গাড়ি, যা আজ বিলুপ্তির পথে। গরুর গাড়ি হলো দুই চাকাবিশিষ্ট যান বিশেষ, যা গরু বা বলদ টেনে নিয়ে যায়। একসময় কৃষি ফসল ও মানুষ বহনের জনপ্রিয় বাহন ছিল এই গরুর গাড়ি। মালপত্র পরিবহনে গরুর গাড়ি ছিল একমাত্র পরিবহন। দেশের উন্নয়নের ছোঁয়া পাওয়ার টিলার আসার পর গরুর গাড়ী ও গাড়িয়াল পেশা আমাদের হারিয়ে যাচ্ছে। এটা পরিবেশ বান্ধব। তবে গ্রামবাংলার এই ঐতিহ্য আমাদের টিকিয়ে রাখতে হবে এবং এই বিষয়ে আমাদের এলাকার ধনী কৃষকদের এগিয়ে আসতে হবে।

  • লাভজনক হওয়া সত্বেও শার্শায় খেজুরের রস ও গুড় সংগ্রহে আগ্রহ নেই গাছিদের

    লাভজনক হওয়া সত্বেও শার্শায় খেজুরের রস ও গুড় সংগ্রহে আগ্রহ নেই গাছিদের

    আজিজুল ইসলাম,যশোঃ যশোরের শার্শা উপজেলায় খেজুরের রস ও গুড়ের প্রচুর চাহিদা থাকা সত্বেও রস ও খেজুর গুড় সংগ্রহে আগ্রহ নেই সাধারণ চাষীদের। যে কারনে বিলুপ্ত হতে চলেছে খেজুর গাছ। অথচ এককালে শার্শা উপজেলার উৎপাদিত খেজুর গুড় বিভিন্ন এলাকায় সরবরাহ করা হতো। প্রচুর চাহিদা ছিলো। বর্তমানে খেজুরের রস ও খেজুরের গুড় লাভজনক হলেও সরকারি পৃষ্ঠপোষকতা সত্বেও চাষীরা খেজুর গুড় উৎপাদনে আগ্রহ প্রকাশ করছে না। তারা খেজুর গাছ রক্ষনা বেক্ষনেও উদাসীন।

    সত্তুর আশির দশকেও উপজেলায় বাড়ি বাড়ি খেজুরের রস সংগ্রহ ও গুড় উৎপাদন করা হতো। প্রতিটি বাড়িতে খেজুরের রস জালানো হাড়ি ও বড়ো বড়ো চুলা থাকতো গুড় তৈরির জন্য। এক সময় ইটভাটায় খেজুর গাছের ব্যাপক চাহিদা থাকায় সে সময় অনেকেই খেজুর গাছ বিক্রী করে দেয়। নতুন করে খেজুরের চারা না লাগানোর ফলে খেজুর গাছের সংকট দেখা দেয়। একারনে অনেকেই গাছির পেশা ছেড়ে দিয়ে অন্য পেশায় চলে যায়।

    শার্শা উপজেলার ভারত সীমান্ত লাগোয়া রুদ্রপুর গ্রামের গাছি খলিলুর রহমান জানান, রুদ্রপুর গ্রামে আগে প্রত্যেক বাড়িতে খেজুরের গুড় বানানো হতো। তখন সকলেই গাছ কাটতো। এখন রুদ্রপুর গ্রামে মাত্র ৮ জন গাছি রয়েছেন। আগে প্রায় ৩শ’র মতো গাছি ছিলো। এখন গাছিরা অন্যের খেজুর গাছ ভাগে নিয়ে রস ও গুড় তৈরী করেন। আগেকার দিনে সকলেই নিজেদের গাছ নিজেরাই করতেন। এখনকার দিনে এক ভাড় রসের দাম ২৫০/ ৩০০ টাকা এবং এক কেজি নলেন গুড়ের পাটালির দাম ৫/৭ শ টাকা। তবুও তারা চাহিদা অনুযায়ী সরবরাহ করতে পারেন না। তিনি আরো জানান, একটা খেজুর গাছ তোলা খরচ পড়ে ৭০ টাকা, এবং প্রতিটি গাছ কাটতে পারিশ্রমিক দিতে হয় ২০ টাকা। রস নিজেরা পেড়ে নিতে হয়। এসব কারনে অনেকের খেজুর গাছ থাকলেও তারা নিজেরা গাছ না করে প্রয়োজনে রস ও গুড় কিনে খান। তবে বৈরী আবহাওয়ার কারণে কয়েক বছর ধরে রসের উৎপাদন অনেক কম হচ্ছে। শীত বেশী পড়লে রসও বেশী হয় বলে তিনি জানান।

    অপর গাছি জুলফিকার আলি বলেন, খেজুর গাছে এখন অনেক লাভ। আগে ১০ টাকায় ১ভাড় রস বিক্রী হতো, এখন বিক্রি হচ্ছে ২৫০ থেকে ৩শ টাকায়। ১ কেজি গুড়ের দাম ছিলো ৩০ টাকা, এখন তা বিক্রি হচ্ছে ৫ /৭ শ টাকা। বর্তমানে একটা গাছে এক মৌসুমে ৩ হাজার টাকার রস ও গুড় পাওয়া যায়। একশ’টা খেজুর গাছ থাকলে ৩ লাখ টাকারও বেশী আয় হয় তা থেকে। খেজুর গাছে জমির অন্য ফসলের কোনো ক্ষতি হয় না, জমিরও ক্ষতি হয় না । ফসলী জমির চারি পাশে খেজুর গাছ লাগিয়ে বাড়তি উপার্জন করা সম্ভব। তিনি বলেন, আগের মতো সবাই আগ্রহী হলে এলাকায় রস ও গুড়ের চাহিদা মিটিয়েও বাইরে রপ্তানি করা সহজ হবে। এবং জেলার ঐতিহ্য ফিরে আসবে।

    এব্যাপারে শার্শা উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা দীপক কুমার সাহা বলেন, গ্রাম-বাংলা তথা যশোরের ঐতিহ্য রক্ষা করতে উপজেলার বিভিন্ন সড়ক ও জমির আইলে খেজুর গাছের চারা রোপণ করা হয়েছে। এ পেশার সঙ্গে জড়িত গাছিদের নিয়ে সমাবেশ করে তাদের রস সংগ্রহ ও গুড় উৎপাদনের পাশাপাশি বিপননের উৎসাহ দেয়া হচ্ছে।

  • রাজশাহীতে হিমাগার মালিকদের দৌরাত্ম্যে আলু চাষিরা অসহায়

    রাজশাহীতে হিমাগার মালিকদের দৌরাত্ম্যে আলু চাষিরা অসহায়

    আলিফ হোসেন,তানোরঃ
    রাজশাহী অঞ্চলে হিমাগার(কোল্ডস্টোর) মালিকদের দৌরাত্ম্যে আলু চাষিরা চরম অসহায় হয়ে পড়েছে। চলতি মৌসুমে হিমাগারে আলু সংরক্ষণের ভাড়া বাড়ানোর আকর্ষিক সিদ্ধান্তে ক্ষোভে ফুঁসছেন চাষিরা। রাজশাহীর বিভিন্ন উপজেলায় আলু চাষিরা সমবেত হয়ে একাধিকবার প্রতিবাদ সমাবেশ করেছেন। আগামী ১০ জানুয়ারির মধ্যে রাজশাহী হিমাগার মালিক সমিতি বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার না করলে হিমাগার ঘেরাও করা ছাড়াও বড় ধরনের আন্দোলন কর্মসূচি ঘোষণার হুমকি দিয়েছেন আলু চাষিরা। এবার আলু সংরক্ষণ নিয়ে চাষিরা শঙ্কিত হয়ে পড়েছে। আলু চাষিরা অভিযোগ করে বলেন, লাভজনক হয়ে ওঠায় রাজশাহী জেলাজুড়ে ব্যাপকভাবে আলুর চাষ হচ্ছে গত কয়েক বছর ধরে। আবাদ মৌসুমে উৎপন্ন আলুর বাজার চাহিদা ও দাম কম থাকায় সারা বছর হিমাগারে সংরক্ষণ করেন রাজশাহীর কয়েক হাজার বাণিজ্যিক চাষি ও মৌসুমি ব্যবসায়ী। হিমাগার থেকে বের করে এসব আলু বছরের বারো মাস বিক্রি ও বিভিন্ন স্থানে চালান করা হয়। আলু সংরক্ষণের পর্যাপ্ত ব্যবস্থা থাকায় গত কয়েক বছরে রাজশাহীজুড়ে আলু চাষ ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। ভুক্তভোগী চাষিদের অভিযোগ, গত বছর রাজশাহীর হিমাগারগুলোতে মৌসুমে আলু সংরক্ষণের ভাড়া ছিল প্রতি কেজিতে ৪ টাকা। তবে এবার আলুর আবাদ শুরুর পর হিমাগার মালিকরা সংরক্ষণ ভাড়া বাড়িয়ে দ্বিগুন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে একতরফাভাবে।
    ফলে আলু সংরক্ষণ নিয়ে শঙ্কিত হয়ে পড়েছেন চাষিরা। কারণ সংরক্ষণ খরচ বাড়ার ফলে তাদের মুনাফার পরিমাণ কমে যাবে। রাজশাহী জেলা আলু চাষি ও ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি নুরুল ইসলাম বলেন, গত বছর রাজশাহীর হিমাগারগুলোতে এক মৌসুমের জন্য আলু সংরক্ষণের ভাড়া ছিল প্রতি কেজি ৪ টাকা। কিন্তু আবাদ শুরুর পর বাণিজ্যিক আলু চাষি ও ব্যবসায়ীরা অগ্রিম বুকিং দিতে গেলে তাদেরকে জানানো হয়েছে এবার প্রতি কেজি আলুর সংরক্ষণ ভাড়া ৮ টাকা নির্ধারণ করা হয়েছে। সাধারণ চাষিরাও হিমাগারে বুকিং দিতে গিয়ে সংরক্ষণ ভাড়া দ্বিগুণ হওয়ার কথা জানতে পারেন। এরপর থেকেই আলু চাষিদের মাঝে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। ভাড়া না কমালে আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন চাষিরা।
    রাজশাহীর তানোর উপজেলার আলু চাষি গোলাম রাব্বানী বলেন, চাষিরা কাছাকাছি থাকা হিমাগারগুলোতে আলু সংরক্ষণ করেন। এতে পরিবহণ খরচ কিছুটা কম হয়। গত মৌসুমে আমরা ৫০ কেজির এক বস্তা আলু সংরক্ষণে হিমাগার ভাড়া দিয়েছি ২১০ টাকা। এটাকে পেইড বুকিং বলা হয়। অন্যদিকে খোলা আলু সংরক্ষণ ভাড়া কিছুটা বেশি হয়ে থাকে। সাধারণভাবে ৬০ থেকে ৬৫ কেজি খোলা আলুর সংরক্ষণ ভাড়া গত বছর ছিল ২৭০ থেকে ২৮০ টাকা। এটাকে লুজ বুকিং বলা হয়। গত বছর আমরা দুই ধরনের বুকিং ব্যবস্থায় কেজিপ্রতি আলু সংরক্ষণে গড়পড়তা ৫ টাকা করে ভাড়া দিয়েছি। এবার সেই ভাড়া বাড়িয়ে দ্বিগুণ করে দেওয়া হয়েছে। তানোর উপজেলার গাগরন্দ এলাকার আলু চাষি মসলেম উদ্দিন বলেন, হিমাগারে আলু সংরক্ষণে বিদ্যুৎ খরচ ছাড়া অন্য কোনো বাড়তি খরচ নেই। বিদ্যুতের দাম বাড়েনি। হিমাগারের শ্রমিকরা চাষিদের ভাড়ায় আলু ওঠা-নামার কাজ করেন। ঠিক কী কারণে এবার সংরক্ষণ ভাড়া দ্বিগুণ হবে-সেটা আমাদের বোধগম্য নয়। হিমাগার মালিকরা ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্ত গ্রহণের আগে চাষিদের সঙ্গে কোনো আলোচনাও করার দরকার মনে করেননি। তানোরের আলু চাষি আব্দুল মান্নান সমাবেশে বলেন, আমরা আগামী ১০ জানুয়ারি পর্যন্ত হিমাগার মালিকদের সময় বেঁধে দিলাম। মালিকরা বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার না করলে আমরা চাষিরা হিমাগার ঘেরাও করব। প্রয়োজনে সব হিমাগারের দরজা বন্ধ করে দেওয়া হবে।
    এদিকে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২৬ ডিসেম্বর তানোরের গোল্লাপাড়া বাজার ফুটবল মাঠে হিমাগার ভাড়া বাড়ানোর সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে কয়েক হাজার আলু চাষি বিক্ষোভ সমাবেশ করেন। সমাবেশ থেকে আলু চাষিরা আন্দোলনের ঘোষণা দেন। তারা বলেন, হিমাগার মালিকরা বর্ধিত ভাড়া প্রত্যাহার না করলে হিমাগারগুলোর সামনের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হবে। যাতে হিমাগারে আলু যেতে না পারে। সমাবেশ শেষে আলু চাষিরা তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাকে (ইউএনও) চার দফা সংবলিত একটি দাবিনামা জমা দেন। এবিষয়ে জানতে চাইলে তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) খাইরুল ইসলাম বলেন, আলু চাষিদের একটি স্মারকলিপি পেয়েছি। আমরা হিমাগার মালিকদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করব। আলু সংরক্ষণ করতে গিয়ে চাষিরা যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হন সে বিষয়ে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এবিষয়ে জানতে চাইলে রাজশাহী হিমাগার মালিক সমিতি বা কোল্ড স্টোরেজ ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবু বাক্কার বলেন, জ্বালানি খরচসহ হিমাগারের ব্যবস্থাপনা ব্যয় বেড়েছে। শ্রমিক ভাড়াও বেড়েছে। বর্ধিত সংরক্ষণ ভাড়া আদায় না করলে হিমাগার পরিচালনা করাই কঠিন হয়ে যাবে। কোল্ড স্টোরেজ সমিতির সভাপতি আরও বলেন, প্রতি বস্তায় ৫০ কেজি আলু রাখার কথা। কিন্তু চাষিদের সুবিধার্থে আমরা ৬০ থেকে ৬৫ কেজিও গ্রহণ করি। কিন্তু গত কয়েক বছরে আমরা দেখেছি চাষিরা ৫০ কেজির কথা বলে বস্তায় ৭৫ থেকে ৮০ কেজিও আলু রাখেন। এতে আমরা হিমাগার মালিকরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। বস্তায় বেশি আলু থাকলে লোড- আনলোডের ক্ষেত্রে শ্রমিকদের বেশি ভাড়া দিতে হয়। অনেক সময় শ্রমিকরা অতিরিক্ত লোডের বস্তা ওঠানামা করতে চায় না। চাষিদেরও বিষয়গুলো বুঝতে হবে। আমরা চাই চাষিরাও আমাদের সমস্যাগুলো বুঝবে। উল্লেখ্য, রাজশাহীতে সর্বাধিক ৩৮টি হিমাগার রয়েছে যেগুলোর মোট ধারণক্ষমতা ৮০ লাখ বস্তা। ওজনের পরিমাপে হয় সাড়ে ৫ লাখ টন। হিমাগারগুলোর অধিকাংশই জেলার পবা, তানোর, মোহনপুর, বাগমারা ও দুর্গাপুর এলাকায় অবস্থিত। চলতি মৌসুমে রাজশাহীতে ৩৭ হাজার ৬৬৭ হেক্টর জমিতে আলুর আবাদ হয়েছে। এই পরিমাণ জমি থেকে প্রায় ১০ লাখ টন আলু উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।#

  • তানোরে হিমাগার ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে কৃষক সমাবেশ ও স্বারকলিপি প্রদান

    তানোরে হিমাগার ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে কৃষক সমাবেশ ও স্বারকলিপি প্রদান

    আলিফ হোসেন,তানোরঃ
    রাজশাহীর তানোরের (কোল্ড স্টোর) হিমাগারগুলোতে অযৌক্তিকভাবে আলুর ভাড়া বৃদ্ধির প্রতিবাদে কৃষক সমাবেশ করা হয়েছে।
    জানা গেছে, গত ২৬ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার তানোর উপজেলা আলু চাষী কল্যান সমিতির উদ্যোগে এবং সমিতির সভাপতি আলহাজ নুরুল ইসলামের সভাপতিত্বে ও সাংবাদিক এম রায়হান আলীর সঞ্চালনায় গোল্লাপাড়া বাজার ফুটবল মাঠে আয়োজিত কৃষক সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তানোর পৌর বিএনপির আহবায়ক একরাম আলী মোল্লা এবং বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সমিতির সম্পাদক আব্দুল মতিন ও কোষাধ্যক্ষ রাশিদুল ইসলাম কারী।অন্যান্যদের মধ্যে আরো উপস্থিত ছিলেন তানোর পৌরসভার সাবেক কাউন্সিলর ও আলু চাষী আবু সাইদ বাবু, তানোর পৌর সভার সাবেক কাউন্সিলর আব্দুল মান্নান, আজাহার আলী, তানোর পৌর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক তোফাজ্জুল হোসেন তোফা,আব্দুল মালেক মন্ডল,গোলাম মোর্তুজা, ব্যবসায়ী ও আলু চাষি লিমন,আলহাজ্ব সালাউদ্দিন শাহ্, গোলাম রাব্বানী, হাবিবুর রহমান হাবিব,আফজাল হোসেন ও আহসান হাবিব প্রমুখ। এছাড়াও কৃষক সমাবেশে কয়েকশ’ ব্যবসায়ী ও আলু চাষিগণ উপস্থিত ছিলেন।
    এদিন কৃষক সমাবেশে বক্তাগণ বলেন, হিমাগার কর্তৃপক্ষ সিন্ডিকেট ও আলু চাষীদের জিম্মি করে অযৌক্তিকভাবে ভাড়া বৃদ্ধি করেছে। গত বছর হিমাগার গুলোতে প্রতি বস্তা আলুর ভাড়া ছিলো ২৫৫ টাকা। অথচ কোনো পুর্ব ঘোষণা ছাড়াই এবছর অগ্রিম বুকিং স্লিপ কাটার সময় প্রতি বস্তার রেট ধরা হয়েছে ২৮৫ টাকা। তারপরও কৃষকরা কোন প্রতিবাদ করেননি। কিন্তু এখন হিমাগার কর্তৃপক্ষ বলছে আলুর ভাড়া দিতে হবে প্রতি কেজি ৮ টাকা। যা চাষি ও ব্যবসায়ীদের প্রতি জুলুম-নির্যাতন-অবিচার। এসময় আলু চাষি কৃষক ও ব্যবসায়ীরা বলেন, স্রিপ কাটার সময় যে রেট ধরা হয়েছে তার বেশী হলে তারা আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন।তারা বলেন,ছাত্ররা আন্দোলন করে যদি শেখ হাসিনাকে তাড়াতে পারে,তাহলে আমরা কৃষকেরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে হিমাগার মালিকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারবো ইনশাল্লাহ্।
    প্রয়োজনে হিমাগার অবরোধ করা হবে।তারা বলেন,আগামী ১৫ জানুয়ারীর মধ্যে হিমাগার মালিকগণ দাবি না মানলে তারা বৃহত্তর আন্দোলন গড়ে তুলবেন। তারা কৃষক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে আলোচনা করে আলু ভাড়া নির্ধারণের দাবি জানান।এদিকে সমাবেশ শেষে তারা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার(ইউএনও)কাছে স্মারকলিপি প্রদান করেন।
    স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে, গত বছর হিমাগারগুলোতে ৭০ কেজির প্রতি বস্তা আলুর ভাড়া ছিলো ২৫৫ টাকা। সে হিসেবে প্রতি কেজি আলুর ভাড়া পড়ে ৩ টাকা ৬৫ পয়সা। এবছর বুকিং শ্লীপ কাটার সময় রেট ধরা হয়েছে ২৮৫ টাকা। সে হিসেবে প্রতি কেজি আলুর ভাড়া পড়বে ৪ টাকা। কিন্তু এখন হঠাৎ করেই হিমাগার কর্তৃপক্ষ বুকিং শ্লীপ কাটা ব্যবসায়ী ও চাষীদের জানিয়েছেন এবছর আলুর ভাড়া দিতে হবে প্রতি কেজি ৮ টাকা। যা গত বছরের চেয়ে দ্বিগুন। এটাতো ইংরেজদের নীল চাষের গল্পকেও হার মানায়। তারা এবিষয়ে বৈষম্যেবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সমন্বয়কদের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন।
    এদিকে হিমাগার কর্তৃপক্ষের এমন ঘোষনার পর পরই আলু চাষী ও ব্যবসায়ীদের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে,বিরাজ করছে উত্তেজনা। এবিষয়ে জানতে চাইলে তানোরের আমান (কোল্ড স্টোর) হিমাগারের ম্যানেজার জালাল উদ্দীন বলেন, গত বছর প্রতি ৫০ কেজির বস্তার ভাড়া ছিলো ৩০০ টাকা এবং লেবার খবচ ১৫ টাকা। কিন্তু আলু চাষী ও ব্যবসায়ীরা ৫০ কেজি আলুর পরিবর্তে ৭০ কেজি থেকে ৮০ কেজি করে আলু রেখেছিল। যা সরকারী নিয়ম বহির্ভূত। এবছর সরকার কর্তৃক এবং বাংলাদেশ কোল্ড স্টোর এ্যাসোসিয়েশন কর্তৃক আলুর ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে (৫০কেজির বস্তা) প্রতি কেজি ৮ টাকা। এখানে আমাদের কিছুই করার নেই।#

  • আগাম তরমুজ চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন রাঙ্গাবালীর কৃষকরা

    আগাম তরমুজ চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন রাঙ্গাবালীর কৃষকরা

    রফিকুল ইসলাম, রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী)

    আগাম তরমুজ চাষে ব্যস্ত সময় পার করছেন রাঙ্গাবালীর কৃষকরা। এবার আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় অধিক লাভের আশায় আগাম তরমুজ চাষ করছেন এ অঞ্চলের চাষিরা। গত বছর রাঙ্গাবালীতে ৩ হাজার হেক্টর জমিতে আগাম তরমুজ চাষ করেছিলেন এ অঞ্চলের কৃষকরা। সেই তুলনায় এবছর রাঙ্গাবালীরতে প্রায় ২০০০ হেক্টর বেশি জমিতে আগাম তরমুজ চাষ হয়েছে।

    চাষীরা জানান, এ বছর হারভেস্টার মেশিন দিয়ে ধান কেটেছেন তারা। যার কারণে আগাম তরমুজ চাষ করতে তাদের সহজ হচ্ছে। শ্রমিক সংকটের ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে না তাদেরকে। এক দিকে ধান কাটছে মেশিন দিয়ে। অপর দিকে পাওয়ার ট্রিলার অথবা ট্রলি দিয়ে তরমুজের বীজ রোপনের জন্য জমি প্রস্তুত করছেন কৃষকরা। আমন ধান ঘরে তোলার সাথে সাথেই তরমুজ চাষ শুরু করেছেন তারা। তবে সার সংকট এবং সার ও বীজের দাম বেশি থাকায় ক্ষোব প্রকাশ করেছেন অনেকেই।

    রাঙ্গাবালী উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা গেছে, এ বছর রাঙ্গাবালীর চরমোন্তাজ, কাউখালীর চর, কলাগাছিয়ার চর, চর ইমার সোন, ছোটবাইশদিয়া, মৌডুবীর জাহাজমারার বালুর চরসহ প্রায় ৫০০০ হেক্টর জমিতে আগাম তরমুজ চাষ করা হচ্ছে। উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নের তরমুজ চাষিরা জমিচাষ, মাটি কেটে ঘের করা, বেড তৈরি, ম্যাদা তৈরি ও মাটির সঙ্গে সার মিশিয়ে বীজ বপনে ব্যস্ত সময় পার করছেন কৃষকরা।

    উপজেলার চরমোন্তাজ এলাকার তরমুজ চাষি শহিদুল ইসলাম জানায়, গত বছর আগাম তরমুজ দিয়ে তিনি লাভবান হওয়ায় এ বছরও তিনি আগাম তরমুজ চাষের প্রস্তুতি নিচ্ছেন। তিনি আরো জানান, এ বছর তিনি ২০ একরেরও বেশি জমিতে তরমুজ চাষ করবেন। তিনি শুরুতেই দশ একর জমিতে বীজ বপন করেছেন।

    উপজেলার মৌডুবী ইউনিয়নের তরমুজ চাষিরা জানায়, প্রতিবছরের ন্যয় এ বছরেও সৈকতের পুরো বালুচরে তারা আগাম তরমুজ চাষ করেছেন। আবহাওয়া ভালো থাকলে আগাম তরমুজ বিক্রি করে লাভমান হবেন এই আশা তাদের।

    সরেজমিনে বিভিন্ন দিপে গিয়ে দেখা গেছে, প্রখর রৌদ্র আর উত্তপ্ত গরম বালুতে মাথার ঘাম পায়ে ফেলে অধিক ফলনের আশায় তরমুজ খেতের পরিচর্যার কাজে ব্যস্ত রয়েছেন চরাঞ্চলের তরমুজ চাষিরা।

    তরমুজ চাষি ইমন হাওলাদার বলেন, আড়াই কানি জমিতে তরমুজ চাষ শুরু করেছি। বীজ, সার ও কিটনাশকের দাম বেশি থাকায় এ বছর তরমুজ চাষে বেশি খরচ হচ্ছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে, ইনশাআল্লাহ, ভাল ফলন হবে আশা করছি।

    এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্র্তা আসাদুজ্জামান বলেন, তরমুজ চাষ আগাম করার কারণে আমাদের কৃষকরা বেশি লাভবান হন। তাছাড়া আগাম চাষের কারণে তারা বৃষ্টি ও প্রাকৃতিক দুর্যোগ থেকে মুক্ত থাকতে পারেন। এ বছর রাঙ্গাবালীতে ৮/৯ হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ হতে পারে। আগাম চাষের জন্য প্রায় ৫ হাজার হেক্টর জমিতে তরমুজ চাষ শুরু করেছেন কৃষকরা। ইতিমধ্যে সারের ডিলার, বালাইনাশক ঔষধ কোম্পানী প্রতিনিধি ও কৃষকদের সঙ্গে সতার্কতামূলক একাধিকার প্রচার-প্রচারণা করেছি। আমাদের উপ-সহকারী কৃষিকর্মকর্তারা আগাম তরমুজ চাষীদের মাঠপর্যায়ে পরামর্শ ও তাদের সার্বোক্ষনিক খোজঁ খবর নিচ্ছেন।

    রফিকুল ইসলাম
    রাঙ্গাবালী পটুয়াখালী সংবাদদাতা ।।

  • পাইকগাছার বোয়ালিয়া বীজ উৎপাদন খামারে রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে রোপন করা হচ্ছে বোরো ধান

    পাইকগাছার বোয়ালিয়া বীজ উৎপাদন খামারে রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে রোপন করা হচ্ছে বোরো ধান

    ইমদাদুল হক, পাইকগাছা (খুলনা)।।
    কৃষি ফলন বাড়াতে পাইকগাছার বোয়ালিয়া বীজ উৎপাদন খামারে সমলয় পদ্ধতিতে রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে জমিতে বোরো ধান রোপন কার্যক্রম উদ্বোধন করা হয়েছে। রোপন কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন, পাইকগাছা বোয়ালিয়া বীজ উৎপাদন খামারের সিনিয়র সহকারি পরিচালক নাহিদুল ইসলাম।কৃষির সর্বাধুনিক কৃষি প্রযুক্তি ব্যবহারে উচ্চ ফলনশীল জাত ব্যবহার, ট্রেতে বীজ বপন, কম বয়সের চারা রোপন, চারা রোপনে রাইস ট্রান্সপ্লান্টার ব্যবহার, সুষম সার ব্যবহার, ধান কর্তনে কম্বাইন হারভেস্টার ব্যবহার করে উৎপাদন বাড়ানো, উৎপাদন খরচ সাশ্রয় করা, কৃষি যান্ত্রিকীকরণের মাধ্যমে ভরা মৌসুমে কৃষি শ্রমিকের সংকটের সমাধান সম্ভব হবে এই সমলয় চাষাবাদে।জানা গেছে, ২০২৪-২৫ বোরো মৌসুমে বোয়ালিয়া বীজ উৎপাদন খামারে বোরো আবাদী লক্ষ্যমাত্রা ৫০ একর। এর মধ্যে ব্রিধান ৬৭ জাত ১৩ একর, ব্রিধান ৯৭ জাত ৭ একর এবং ব্রিধান ৮৮ জাত ৩০ একর জমিতে আবাদ করা হবে। বোরো আবাদী লক্ষ্যমাত্রা ৫০ একরের মধ্যে ২৫ একর ধান রোপন মেশিন বা রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে রোপন করা হবে। আর ২৫ একর জমি হাতে রোপন করা হবে। আগামী মৌসুম হতে সম্পূর্ণটাই রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে রোপন করা হবে।

    এ বিষয় বোয়ালিয়া বীজ উৎপাদন খামারে সিনিয়র সহকারি পরিচালক নাহিদুল ইসলাম বলেন, বোরো মৌসুমে পাইকগাছায় কূষি শ্রমিক সংকট দেখা দেয়। এসময় ঐলাকার শ্রমিকরা ইটভাটা ও সমুদ্রে মাছ ধরার কাজে যায়। শ্রমিকের অভাবে সময়মত ধান রোপন করা যায় না। রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে বোরো মৌসুমে ২০-২৫ দিনের চারা রোপন করা সম্ভব হয়। মেশিন বা রাইস ট্রান্সপ্লান্টারের মাধ্যমে এক দিনে ১০-১২ বিঘা জমিতে ধান রোপন করা যায়। রাইস ট্রান্সপ্লান্টার দিয়ে ধান রোপন করলে ধানের কুশি বেশি হয়, ফলনও বৃদ্ধি পায়, শ্রমিক কম লাগে এবং সময়মত ক্ষেতে ধান রোপন করা সম্ভব হয়।

    ইমদাদুল হক,
    পাইকগাছা, খুলনা।

  • পাইকগাছায় মাঠে মাঠে হলুদ ফুলের সমারহ

    পাইকগাছায় মাঠে মাঠে হলুদ ফুলের সমারহ

    ইমদাদুল হক, পাইকগাছা (খুলনা)।।
    পাইকগাছায় সরিষার ক্ষেত হলুদ ফুলে ভরে গেছে। সরিষার আবাদ ভালো হয়েছে। ক্ষেতের পর ক্ষেত হলুদের সমারোহ। সরিষার ফুলে ফুলে মৌমাছির গুঞ্জনে কৃষকের মন আলোড়িত হচ্ছে। মধু আহরনে মৌমাছিরা মেতে উঠেছে। বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে হলুদের সমারোহ দেখে চোখ জুড়ে যায়। ক্ষেতের পর ক্ষেতে তরতাজা সবুজ সরিষা গাছাগুলোতে হলুদ ফুলে ফুলে ভরে উঠায় কৃষককের মুখে হাসি ফুটেছে।

    বৃস্টি ও ঘন কুয়াশা না পড়ায় সরিষা চাষের জন্য অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করছে। পাইকগাছা উপজেলা কৃষি অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, চলতি মৌসুমে উপজেলায় ৩২০ হেক্টর জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। কৃষি অফিস থেকে বিনামূল্যে কৃষকদের সরিষার বীজ ও সার দেওয়ায় সরিষার আবাদ বেড়েছে। তবে সময় মত মাটিতে জো না আসায় সরিষার আবাদ কিছুটা দেরি শুরু হয়েছে। উপকূলের লবনাক্ত এলাকা চাষাবাদ অনেকটা প্রকৃতি ও আবহাওয়ার উপর নির্ভর করে। অন্য এলাকায় আগাম মাটিতে জো আসলেও উপকূল এলাকার নিঁচু মাটিতে জো আসতে দেরি হয়। উপজেলার ১০টি ইউনিয়নের মধ্যে সরিষার চাষের উপযোগী ৪টি ইউনিয়ন গদাইপুর, হরিঢালী,কপিলমুনি ও রাড়ুলি সরিষার আবাদ হয়। আর চাঁদখালী, গড়ইখালী ও দেলুটিতে উচু এলাকার সামান্য জমিতে সরিষার আবাদ হয়েছে। কৃষকরা বারি সরিষা ১৪,১৮ বিনা-৯ ও স্থানিয় জাতের সরিষা আবাদ করেছে। উপকূলীয় উর্বর জমিতে এ বছর আশানারুপ সরিষা উৎপাদন হবে বলে কৃষকরা আশা করছে।
    উপজেলার গোপালপুর গ্রামে সরিষা চাষী আনছার আলী, আব্দুস সামাদ,হিতামপুর ব্লকের জিয়া সরদার ও সলুয়ার শহিদ জানান, তাদের ক্ষেতের আবাদকৃত সরিষা ভালো হয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মোঃ একরামুল ইসলাম জানান, ধান কাটতে দেরি হওয়ায় সরিষা আবাদ করতে কিছুটা দেরি হয়েছে। কৃষকরা যদি আগাম জাতের ধান চাষ করে তাহলে ধান কাঁটার পর সময়মত সরিষা চাষে পূরা সময় পাবে। এ ব্যাপারে কৃষকদের আগাম জাতের ধান চাষে উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। তাছাড়া উপকূল এলাকার নিচু জমিতে জো আসে দেরিতে সে জন্য ফসল লাগাতেও দেরি হয়। এবছর উপজেলায় সরিষার আবাদ ভালো হয়েছে। প্রাকৃতিক কোন বিপর্যয়ের সৃষ্টি না হলে সরিষার আশানুরুপ ফলন পাওয়া যাবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।

    ইমদাদুল হক,
    পাইকগাছা খুলনা।

  • চারঘাটে তুলা চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের

    চারঘাটে তুলা চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের

    মোজাম্মেল হক, চারঘাট (রাজশাহী) থেকেঃ

    খরচ যেমন কম, তেমনি আছে লাভ। রাজশাহীর চারঘাট উপজেলায় কৃষকদের তুলা চাষে দিন দিন বাড়ছে আগ্রহ। খরচের তুলনায় বেশি বেশি লাভ পাচ্ছেন এই তুলা চাষে। তুলার যেন নেই কোনো তুলনা।

    তুলা চাষে সংসারে সচ্ছলতা আসায় চাষিরাও আগ্রহী হচ্ছেন। অনুর্বর জমিতে কম পুঁজিতে নামে মাত্র শ্রমে ও সরকারি সহযোগিতা পাওয়ায় উপজেলায় তুলা চাষের পরিমাণ ও চাষির সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে। তাদের উৎপাদিত তুলা সরাসরি তুলা উন্নয়ন বোর্ড ন্যায্য দামে কিনে নেয়। ফলে কৃষকরা অন্য ফসলের তুলনায় তুলাতে অধিক লাভবান হচ্ছেন।

    শনিবার দুপুরের সরজমিনে চারঘাট উপজেলার খোর্দ্দগোবিন্দপুর, পাটিয়াকান্দি, মুংলী, অনুপমপুর, কালুহাটি ঘুরে দেখা গেছে কার্পাস তুলা চাষে কৃষকরা বেশি আগ্রহী হয়ে উঠেছে। এখন কৃষকরা তুলা ক্ষেতের পরিচর্যার কাজ নিয়ে ব্যস্ততা সময় পার করছে।

    উপজেলার খোর্দ্দগোবিন্দপুর গ্রামের জবদুল সরদারের সাথে কথা হলে তিনি বলেন, আমি গত বছর ৪ বিঘা জমিতে তুলা চাষ করেছিলাম। তাতে আমার মনে হলো খরচের চেয়ে লাভ বেশি হয়েছে তাই এ বছর ১০ বিঘা জমিতে তুলা চাষ করেছি। আশা করি এ বছর ভালো ফলন পাবো বলে আমি মনে করি। এর কারণ আবহাওয়া অনুকুলে আছে।

    কৃষক খলিল বলেন, এবার আমি ২ বিঘা তুলা চাষ করেছি। দেশি তুলা বিঘাপ্রতি ১২ এবং হাইব্রিড ১৫ মণ ফলন পাওয়া যায়।তুলায় সেচের তেমন একটা প্রয়োজন হয় না। সরকার নির্ধারিত দামে বিক্রি করে বীজ-সারের দামও পরিশোধ করা যায়। তাই এ ফসলে আগ্রহ বাড়ছে কৃষকদের মধ্যে।

    এ ব্যাপারে চারঘাট উপজেলার কটন ইউনিট অফিসার হোসেন আলী বলেন, গত বছর চারঘাট উপজেলায় ৪০০ হেক্টর জমিতে তুলা চাষ করা হয়েছিলো। চলতি মৌসুমে ৪৩৫ হেক্টর জমিতে তুলা চাষ করা হয়েছে। গত বছর তুলার মূল্য ছিলো ৩৯০০ টাকা মণ। চলতি মৌসুমে মূল্য এখনো নির্ধারণ করা হয়নি। কারণ তুলার মূল্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় থেকে নির্ধারণ করে দেয়। তবে উপজেলায় কার্পাস তুলা চাষে ব্যাপক ফলন হয়েছে।তিনি বলেন, তুলা চাষিদের সাথে আমার সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রয়েছে বলে তিনি জানান।

    মোঃ মোজাম্মেল হক
    চারঘাট, রাজশাহী।