October 14, 2024, 8:24 pm

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
গোদাগাড়ীতে ড্রাগন বাগানে শিয়াল মারার ফাঁদে   বিদ্যুৎ স্পষ্ট হয়ে ১ কৃষকের মৃত্যু সুজানগরে বজ্রপাতে নিহতের পরিবারের মাঝে আর্থিক অনুদান প্রদান রংপুরে বিএসটিআই’র উদ্যোগে পালিত হয়েছে বিশ্ব মান দিবস শ্লোগানে পালিত হল বিশ্ব দৃষ্টি দিবস ২০২৪ গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে বেতাগী প্রেসক্লাবের ভবন প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন যশোরের বাগআঁচড়ায় বিএনপি’র সহযোগিতায় ভি,ডব্লিউবির চাল পেলো ৩০৮ পরিবার নড়াইলে বর্ষা মৌশুমে কয়েক দফা ভারী বর্ষনে মৎস্য ও কৃষি খাতে ক্ষতি শত কোটি টাকা প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে নানা অনিয়ম ও ক্ষমতার অপব্যবহারের অভিযোগ নারায়ণগঞ্জের জেলার মামুনুর রশিদ যেন ঝিনাইদহের জমিদার পুঠিয়ায় ফেস বুকে পোষ্ট দেওয়াকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষে গুরুতর আহত ৩
আশুলিয়ায় নয়নজুলি খালসহ ৮টি খাল দখলদার জলাবদ্ধতা সৃষ্টিকারীদের কি হবে

আশুলিয়ায় নয়নজুলি খালসহ ৮টি খাল দখলদার জলাবদ্ধতা সৃষ্টিকারীদের কি হবে

হেলাল শেখঃ ঢাকার আশুলিয়ায় সরকারি নয়নজুলি খালসহ সরকারি ৮টি খাল দখল করে যারা এলাকাজুড়ে জলাবদ্ধতা সৃষ্টিকারীদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেয়া হবে জাতি জানতে চায়? সরকারি রাস্তা-ঘাট ও খাল বিল যারা দখল করে রেখে জনগণের সমস্যা তৈরি করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানান সচেতন মহল। সরকারি নয়নজুলি খালসহ ৮টি খাল প্রভাবশালীদের দখলে থাকলেও তা ৫০ বছরেও উদ্ধার করা হয়নি, সংশ্লিষ্ট প্রশাসন নিরব ভুমিকায় থাকার কারণে এই খালগুলো উদ্ধার করতে পারেনি বলে এলাকাবাসী দাবি করে মানববন্ধন করেছেন।
গত দুইদিন সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, আশুলিয়ার বাইপাইল থেকে জামগড়া বেরুন এলাকায় জলাবদ্ধতায় জনগণের চরম ভোগান্তি, এর প্রতিবাদে গতকাল শনিবার আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ঢাকা-১৯ আসনের (স্বতন্ত্র) প্রার্থী মোঃ সারোয়ার হোসেনসহ শ্রমিক নেতারা পানির মধ্যে রাস্তায় দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করেছেন। বিশেষ করে নয়নজুলি খালটি প্রভাবশালীদের দখলে থাকা ও অপরিকল্পিত বাড়ি ঘর নির্মাণ করার কারণে এই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়েছে বলে তাদের দাবি। এ বিষয়ে মাননীয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী, ঢাকা-১৯ আসনের এমপি ডাঃ এনামুর রহমানের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন এলাকাবাসী।
তথ্যমতে, ১। নয়নজুলি খাল আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নের ১নং ওয়ার্ড জামগড়া হইতে আশুলিয়া তুরাগ নদী পর্যন্ত ৭ কিলোমিটার, ২। নলীর খাল, ক্যান্টনমেন্ট হইতে বংশাই নদী পর্যন্ত ৬ কিঃ মিঃ, ৩। ডগরতলী খাল, ডগরতলী হইতে বারল খাল পর্যন্ত ৪ কিঃ মিঃ, ৪। বারল খাল, চক্রবর্তী হইতে বংশাইনদী পর্যন্ত ৬ কিঃ মিঃ, ৫। কন্ডার খাল, কন্ডা হইতে সুবন্দী পর্যন্ত ৩ কিঃ মিঃ, ৬। গাজীবাড়ী খাল, নন্দনপার্ক হইতে সুবন্দী পর্যন্ত ৫ কিঃ মিঃ, ৭। ভারারিয়ার খাল, শিমুলিয়া হইতে নলাম পর্যন্ত ৪ কিঃ মিঃ, ৮। গাজারিয়ার খাল, ইয়ারপুর হইতে মনসন্তোষ তুরাগ পর্যন্ত ৫ কিঃ মিঃ। মোট প্রায় ৪০ কিলোমিটার ৮টি খাল প্রভাবশালীদের দখলে থাকলেও রহস্যজনক কারণে সংশ্লিষ্ট প্রশাসন নিরব ভুমিকায় রয়েছেন।
জানা গেছে, শুধু আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়নে সামান্য বৃষ্টি হলে প্রায় পাঁচ শতাধিক বাসা বাড়ির ঘরের ভেতরে দূষিত পানি প্রবেশ করে, জামগড়াসহ বিভিন্ন রাস্তার বেহাল অবস্থা। একদিকে ড্রেন ভেঙে পড়েছে, অন্যদিকে অপরিকল্পিত বাড়ি ঘর ও কল কারখানা নির্মাণ করা হয়েছে। প্রায় প্রতিদিন বাসা বাড়ির ময়লা পানি রাস্তায় ছেড়ে দেওয়ায় সেই পানিতে রাস্তার বেহাল অবস্থা সৃষ্টি হয়, এর কারণে প্রতিদিন হাজার হাজার শ্রমিকসহ জনগণের চরম ভোগান্তি হচ্ছে বলে ভুক্তভোগীরা জানায়। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে একাধিকবার মানববন্ধন করেন স্থানীয়রা তবুও কোনো ফায়দা হয়নি বলে অনেকেই অভিযোগ করেন। সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, ঢাকার আশুলিয়ার নরসিংহপুর ও ঘোষবাগ এলাকার স্থানীয় মানুষজন একাধিকবার মানববন্ধন করেন, মানববন্ধনে নরসিংহপুর ঢাকা থাই লিমিটেডের দূষিত পানি বন্ধের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করেন স্থানীয়রা। অন্যদিকে আশুলিয়ার জামগড়া, ইউনিকসহ আশপাশের বিভিন্ন সড়কের দুইপাশে ড্রেনের কোনো স্থায়ী ব্যবস্থা নেই, অন্যদিকে ফুটপাত হকারদের দখলে রয়েছে আর খোলা ড্রেন ভেঙ্গে পড়েছে, পাশে শত বছরের সরকারি নয়নজুলি খালটি প্রায় ৫০ বছরে ধরে প্রভাবশালিদের দখলে রয়েছে বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী। বিশেষ করে নয়নজুলি খালটি উদ্ধারের চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রশাসন ও এলাকার জনপ্রতিনিধিগণ। অন্যদিকে চোরে চোরে খালাতো ভাই, নয়নজুলি খালটির দুই পাশের জায়গা দখলের নতুন নতুন কৌশল করছে একটি মহল। খালের সরকারি জমিতে অবৈধ স্থাপনা তৈরি করে রেখেছে কোন খুঁটির জোরে তা জাতি জানতে চায়।
দেখা যায়, আশুলিয়ার জামগড়াসহ বেশিরভাগ রাস্তার পাশে বাঁশের মাচাল দিয়ে রেখেছে ড্রেনের উপর। মহাসড়ক ও শাখা রোডগুলোর বেশ কয়েকটি রাস্তায় মানুষের চলাচলের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। প্রায় বেশিরভাগ রাস্তার বেহাল অবস্থা। অন্যদিকে সরকারি আইনের তোয়াক্কা না করে অপরিকল্পিত ভাবে বাড়ি ঘর নির্মাণ করাসহ সরকারি রাস্তা ও ফুটপাত দখল করে রেখেছে প্রভাবশালীরা, কিছু মার্কেটের মালিকরাও হকারদের কাছ থেকে মোটা অংকের অর্থ নিয়ে থাকেন দালাল চক্রের মাধ্যমে, সূত্র জানায়, জামগড়া পল্লীবিদ্যুৎ জোনাল অফিসের আওতায় অবৈধ স্থাপনায় অবৈধ ভাবে বিদ্যুৎ লাইন দেয়া হয়েছে। এ বিষয়ে বিদ্যুৎ অফিসের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের কাছে জানতে চাইলে তারা বিষয়টি এড়িয়ে যান, সংশ্লিষ্ট প্রশাসন নিরব ভুমিকায় থাকার কারণে এলাকাবাসী নাগরিক সুবিধা থেকে বি ত হচ্ছেন বলে অনেকেই অভিমত প্রকাশ করেছেন। আশুলিয়ার ইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার যুবলীগ নেতা আব্দুল জলিল (রাজন ভুঁইয়া) বলেন, আমি সরেজমিনে গিয়ে দেখছি, এলাকায় অপরিকল্পিত বাসা বাড়ি নির্মাণ করা হয়েছে, ড্রেনেজ ব্যবস্থা নেই, সেই সাথে পানি যাওয়ার যায়গা না থাকায় সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, নয়নজুলি খালটি উদ্ধার করা না হলে আশুলিয়ার নরসিংহপুরসহ পুরো আশুলিয়ার বাড়ি ঘর ও রাস্তায় পানি জমে থাকবে সবসময়। ঢাকা থাই লিমিটেডের এডমিন জিএম ফিরোজ সাহেব বলেন, আমাদের কোনো সমস্যা নেই, একাধিক পোশাক কারখানার দূষিত পানি গিয়ে এলাকার বাসা বাড়িতে ডুকে পড়ে এই অবস্থা হয়েছে, তিনি বলেন, রাজন মেম্বার এই এলাকায় এসে পরিদর্শন করেছেন, আমাদের করার কিছু নেই।
ইয়ারপুর ইউনিয়ন পরিষদের ১নং ওয়ার্ডের মেম্বার হাজী হালিম মৃধা বলেন, আশুলিয়ার বাইপাইল থেকে জিরাবো সড়ক, জামগড়া-বাগবাড়ি রোড, জামগড়া-মধ্যপাড়া থেকে শাহজাহান মার্কেট পর্যন্ত এবং জামগড়া হেয়ন মোড় থেকে মনির মার্কেটের রাস্তার মুখ পর্যন্ত, জামগড়া-সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রোড ও মোল্লাবাড়ি রোডসহ বিভিন্ন রোডের পাশে অনেকেই অপরিকল্পিত ভাবে বাড়ি ঘর উঁচু করে নির্মাণ করায় রাস্তা নিচু হয়েছে, বিশিষ্ট ব্যবসায়ী তানভীর আহমেদ রোমান ভুঁইয়ার বাসা পর্যন্ত পাকা রাস্তায় সবসময় পানি জমে থাকে। সেই সাথে এলাকার কিছু বাড়ি ও পোশাক কারখানার ময়লা পানি রাস্তায় ছাড়ার কারণে প্রায় সময় নিচু রাস্তায় সেই পানি জমে থাকে। রাস্তা দেখে মনে হয় ড্রেনের মতো, জমে থাকা ময়লা পানি গাড়ির চাকায় ঢেউ খেলে রাস্তায়। বৃষ্টি না হলেও রাস্তায় পানি জমে থাকে আর বৃষ্টি হলেতো ভিন্ন চিত্র, রাস্তায় হাটু পানি হয়।
আশুলিয়া প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জহিরুল ইসলাম খাঁন (লিটন) বলেন, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডাঃ এনামুর রহমান ও উপজেলা প্রশাসনকে এলাকার সমস্যার বিষয়ে জানানো হয়েছে, তারা নয়নজুলি খাল ও রাস্তা পরিদর্শন করলেও কোনো কাজ হয়নি। তিনি আরও বলেন, রাস্তার বেহাল অবস্থার কারণে যারা নামাজের সময় মসজিদে আসা যাওয়া করেন তাদের নানারকম সমস্যা হয়। তিনি আরও বলেন, এলাকার মসজিদের সাথে সংযুক্ত রাস্তা নির্মাণ কাজ করাসহ ড্রেনেজ ব্যবস্থা করা হোক এবং নয়নজুলি খালটি উদ্ধার করা হলে এই সমস্যার সমাধান হবে।
আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সাংবাদিক সংস্থা’র চেয়ারম্যান এস. এম নজরুল ইসলাম বলেন, আমি নিজে আশুলিয়া এলাকায় পরিদর্শন করেছি, বর্তমান সরকার পদ্মা সেতুসহ বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজ করেছেন এর জন্য বর্তমান সরকারকে ধন্যবাদ কিন্তু আশুলিয়া ইয়ারপুর ইউনিয়নের জামগড়াসহ বিভিন্ন রাস্তার বেহাল অবস্থা, ড্রেনেজ ব্যবস্থাও ভেঙ্গে পড়েছে। শত বছরের সরকারি নয়নজুলি খালটি প্রায় ৫০ বছরেও উদ্ধার হয়নি। বিশেষ করে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডাঃ এনামুর রহমান, ঢাকা-১৯ আসনের এমপি’র এলাকা এটি, এই এলাকায় রাস্তার বেহাল অবস্থা ও ড্রেনেজ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছে। বৃষ্টি না থাকলেও রাস্তায় নোংরা পানি জমে থাকে সবসময়, এই সমস্যা দেখবে কে? এ ব্যাপারে এলাকার কয়েক লক্ষ শ্রমিক ও এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে প্রতিমন্ত্রী’র হস্তক্ষেপ কামনা করছি, দ্রুত যেন এই নাগরিক সমস্যার সমাধান করেন প্রতিমন্ত্রী সাহেব।

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD