October 5, 2024, 2:52 am
লিটন মাহমুদ,
মুন্সিগঞ্জ প্রতিনিধি::
মুন্সিগঞ্জের সিরাজদিখান উপজেলায় পান ফকিরের আশ্রমে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনা ঘটেছে। এ সময় হামলাকারীরা আশ্রমে থাকা মূল্যমান জিসিপত্র এবং বাদ্যযন্ত্র ভাংচুর ও২ টি দান বাক্স থেকে প্রায় তিন লক্ষ টাকা নিয়ে যায়। এসময় তারা অনেকগুলো কিতাবের বই ও পবিত্র কোরআন শরীফ মাটিতে ছুড়ে ফেলে দেয়।
এই ঘটনায় আতংকে রয়েছেন পান ফকিরের পরিবার ও তার ভক্তরা।
গত বৃহস্পতিবার (১৪ সেপ্টেম্বর) বেলা ১১টায় উপজেলার রশুনিয়া ইউনিয়নের পূর্ব রশুনিয়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। এ ঘটনার ছবি ও ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়লে তুমুল নিন্দা জানাচ্ছেন বিশিষ্টজনরা।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ২০১০ সালে রশুনিয়া গ্রামে মোঃ শাহজালাল ফকির (পান ফকির) নিজ বাড়ির আশ্রম প্রতিষ্ঠা করেন আল্লাহ প্রেমী শাহজালাল। তার সঙ্গে পূর্ব শত্রুতা ছিলো হামলাকারীদের সাথে। তারা সম্পর্কে এলাকার চাচাতো মামাতো ভাই।
আশ্রমের পরিচালক শাহজালাল (পান ফকির) জানায়, বৃহস্পতিবার আশ্রমে সাধুসঙ্গের দিন ধার্য ছিলো। সে উপলক্ষে সারা দেশের বিভিন্ন জায়গা থেকে সাধু-ফকির, রোগী শিল্পীরা আগে থেকেই আশ্রমের উপস্থিত ছিলেন। বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় রুহুল আমিনের ও জাকির মেম্বারের নেতৃত্বে ১০ থেকে ১২ জন সন্ত্রাসী দেশীয় অস্ত্রসহ আমাকে খুঁজতে আশ্রমে আসেন।
এসময় আমাকে না পেয়ে সন্ত্রাসীরা আশ্রমে হামলা শুরু করলে তাদের বাঁধা দেন আমার স্ত্রী আম্বিয়া বেগম। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে আগত রোগী ও ভক্তদের উপর হামলা চালায় তারা। এ সময় আশ্রমে থাকা আমাদের বাড়ির লোকজন আহত হয়েছেন। তাদের আশ্রম দরবারের ভিতরে থাকা তনপোড়া, হারমোনিয়াম,পবিত্র কোরানসহ সব বাদ্যযন্ত্র ভেঙ্গে ছিড়ে পায়ে মারিয়ে দেওয়া হয়েছে।
এদিকে বিনা পয়সায় কবিরাজী চিকিৎসা দেওয়ায় ধ্বংস করার উদ্দেশ্যই এ হামলা চালানো হয়েছে বলে দাবী করছেন সিরাজদিখানসহ দেশের বিভিন্ন এলাকা থেকে আসা পান ফকিরের ভক্তরা। তারা বলেন, হামলাকারী কাউকে আমরা চিনি না। আমরা এখানে সেবা নিতে এসছিলাম । হঠাৎ তারা এসে আমাদের মারধর করেন এবং আমাদের সামনেই লোহার রড দিয়ে সব কিছু ভেঙ্গে দেয়। আমরা এর বিচার চাই।
সিরাজদিখান বয়রাগাদী থেকে আশ্রমে আসা ফার্ম ব্যাবসায়ী রফিকুল ইসলাম বলেন, আমি এখানে আমার মেয়েকে নিয়ে এসে সুস্থ্য করে নিয়েছি। আমার কাছ থেকে পান ফকির শাহজালাল কোন টাকা পয়সা নেয় নাই। আমি আমার মেয়ের সুস্থ্যতার খবর জানাতে এসছিলাম হঠাৎ করেই কয়েজন লোক এসে আমাদের সব নোংরা ভাষায় গালাগালি শুরু করে। আমাদের এখান থেকে বের হয়ে যেতে বলে। এক পর্যায়ে লাঠিসোটা নিয়ে এলোপাথাড়ি মারতে থাকে জিনিস পত্র ভাংচুর করতে থাকে। আমাদের দোষটা কোথায় ? ফ্রি কবিরাজী চিকিৎসা নেওয়া কি অপরাধ!
সিরাজদিখান থানা অফিসার্স ইনচার্জ (ওসি) মুহাম্মদ মুজাহিদুল ইসলাম সুমন বলেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন আমাদের থানা অফিসার। এই ঘটনাটি উস্কানিমূলক কোনো বিষয় কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এখনও কেউ থানায় কোন অভিযোগ করেনি। তবে আমরা বিষয়টি তদন্ত করছি। আমরা লিখিত অভিযোগ পেলে আইনী ব্যবস্থা নিবো।
এ সম্পর্কে শাহজালাল পান কবিরাজ বলেন আমি নিজ অর্থায়নে ১৪১ টি কল এবং ৪৬ টি মেয়েদের বিবাহ দিয়েছি , আমি অসংখ্য মানুষকে বিনা পয়সা চিকিৎসা দিয়েছি এটি কি আমার অপরাধ । তাই আমি আমার বাড়িতে নিজ হামলার প্রতিবাদ জানাই ।