October 5, 2024, 4:26 am
খাইরুল ইসলাম মুন্না বেতাগী (বরগুনা) প্রতিনিধি
বরগুনার বেতাগীতে জমি-জমা বিরোধের জের ধরে বসত ঘরের শয়নকক্ষে প্রতিপক্ষের তালাবদ্ধ করে রাখা হয়েছে ১০ দিন ধরে। সহায় সম্বল আটকা পরায় জনপ্রতিনিধিদের কাছে গিয়েও কোন সূরহা করতে না পারায় চরম অসহায়াত্বে কাটছে গৃহবধূ লাবনী বেগমের জীবন।
জানা গেছে, উপজেলার বুড়ামজুমদার ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের মৃত: আজীজ মুছল্লীর ছেলে মো: দুলাল মুছল্লী এবং মৃত: রফেজ উদ্দীনের ছেলে মো: খবির মুছল্লী দীর্ঘদিন ধরে যৌথ পরিবার হিসেবে বসবাস করে আসছিলো। তারা সম্পর্কে চাচাতো ভাই। গৃহবধূ লাবনী বেগমের স্বামী দুলাল মুসল্লী জীবিকার তাগিদে ঢাকায় কাজ করেন। প্রতিপক্ষ খবির মুছল্লীর বসতঘর ও তাঁদের বসত ঘর যৌথ বিধায় তাঁর দুই সন্তান নিয়ে একত্রে ঐ ঘরে বসবাস করে আসছিল। মাঝে মধ্যে লাবনী বেগম স্বামীর সাথে ঢাকায় থাকে। ২০ বছর পর লাবনী বেগম স্থায়ীভাবে বাড়িতে এসে যৌথঘরে বসবাস শুরু করেন।
গৃহবধূ লাবনী বেগম জানান, এক বছর পূর্বে গালিগালাজ করে বসত ঘর থেকে তাঁরা নামিয়ে দেয়। আর তাঁদের খাট, আলমীরাসহ যাবতীয় আসবাবপত্র ও মালামাল যৌথ ঘরের পেছনের বারান্দার লাবনী বেগমের শয়ন কক্ষে তালা লাগিয়ে দেয় প্রতিপক্ষ খবির মুছল্লী। সেই থেকে বসত ঘরের পাশে ছাপড়া দিয়ে ২ শিশু সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করে আসছেন। স্থানীয় ইউপি সদস্য ও সাংবাদিকরাও গেলেও তালা দেওয়া কক্ষটি দেখাতে অপারগতা প্রকাশ করেন। পরবর্তীতে স্থানীয়ভাবে কতিপয় ব্যক্তিদের মাধ্যমে তাঁদের জমিজমা ও বসত ঘরের ভাগ দাবি করলে প্রতিপক্ষ নানা অপকৌশল শুরু করেন। লাবনী বেগমের স্বামীর দুলাল মুসল্লীর ভাগের সম্পত্তি বুজিয়ে দিচ্ছে না।
লাবনী বেগম অভিযোগ করেন, ২২ এপ্রিল ২০৩ অহেতুক তর্কাতর্কিতে লিপ্ত হয়ে এক পর্যায় প্রতিপক্ষ খবির মুছল্লী (৫৫), তাঁর ছেলে আবু সালেহ (৩০), ইমাম হোসেন (৩২), তাঁর স্ত্রী সারিজা বেগম (৫০), ছেলে বউ সুবর্ণা বেগম (২৫), বোন জবেদা বেগম (৪০) ও ভাই হাবীবুর রহমান মুছল্লী (৫০) একত্রিত হয়ে গৃহবধু লাবনী বেগমকে (৩০) লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে এবং শ্বাসরোধ করে খুনের চেষ্টা চালায়। স্থানীয়রা আশঙ্কাজনক অবস্থায় বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। মারধরের সময় ৯২ হাজর টাকা মূল্যের স্বর্ণের ঝুমকা ও চেইন এবং বসত ঘরের কক্ষের ভেতরে ট্যাঙ্ক ভেঙে জমাকৃত নগদ ৪৫ হাজার টাকা ও মওজুদকৃত সারে ৩ মন চাল চুরি করে নিয়ে যায় তাঁরা।
এ ঘটনায় আপোস মীমাংসার চেষ্টায় ব্যর্থ হলে ঐ ৭ জনকে আসামী করে লাবনী বেগম বরগুনার বেতাগী ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে (সিআর নং-১১৯, তারিখ: ২৫-০৪-২০২৩ খ্রি:) একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি চলমান রয়েছে। এদিকে প্রতিপক্ষ খবির মুছল্লীর ছেলে ইমাম হোসেন বাদী হয়ে লাবনী বেগম ও স্বামী দুলাল মুছল্লী ঢাকায় অবস্থান করা সত্বেও সম্প্রতি ৫জনের বিরুদ্ধে সাজানো একটি চুরির মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। মামলাটি তদন্ত প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।
উপজেলার বুড়ামজুমদার ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য খোকন খান বলেন, খবর শুনে আমি সেখানে গিয়েছিলাম। গিয়ে ঘরের ভেতরে তালাবদ্ধ কক্ষটি খুলে দেওয়ার জন্য অনুরোধ করে ছিলাম, কিন্ত ঘরে উপস্থিত লোকজন খুলতে রাজি হয়নি। অবশেষে চলে আসি।
প্রতিপক্ষ মো: খবির মুসরøী এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, তাঁরা কখনোই ঐ ঘরে বসবাস করেনি। তাদের জায়গা জমি আগেই সালিশের মাধ্যমে ভাগভাটোয়ারা করে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে, কিন্ত তারা মানেনি বরং মিথ্যা মামলা দিয়ে আমাদের অতিষ্ট করে তুলছে।