October 9, 2024, 8:06 pm

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
জীবননগর হাসাদাহ প্রেসক্লাবের সাথে নবাগত অফিসার ইনচার্জ মামুন হোসেন বিশ্বাসের মতবিনিময় দিন রাত কাজ করে প্রশংসায় ভাসছেন ইউএনও,লুটপাটে বাধা পড়ায় ষড়যন্ত্রে একটি চক্র ইলিশ ধরা ও ক্রয়-বিক্রয় বন্ধে সুজানগরে লিফলেট বিতরণ রাজশাহীতে ষষ্ঠীর আনুষ্ঠানিকতায় শারদীয় দুর্গোৎসব শুরু গোদাগাড়ীতে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহ*ত ১ পার্চিং পদ্ধতি ব্যবহারে সুফল পাচ্ছেন গোদাগাড়ীর কৃষকরা পঞ্চগড়ে পরিবেশ অধিদপ্তরের মোবাইল কোর্ট পরিচালনা তানোরে শহীদি কাফেলার কমিটি গঠন গোদাগাড়ীতে গবাদিপশুর পিপিআর এবং ক্ষুরারোগ নির্মুলে বিনামূল্যে নলছিটিতে চরকয়া প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ
উপকূলীয় পানগুছি বলেশ্বরের ইলিশের স্বাদ-গন্ধে জুড়ি নেই নিম্ন আয়ের মানুষ ইলিশের স্বাদ নিতে পারছে না

উপকূলীয় পানগুছি বলেশ্বরের ইলিশের স্বাদ-গন্ধে জুড়ি নেই নিম্ন আয়ের মানুষ ইলিশের স্বাদ নিতে পারছে না

এস এম সাইফুলইসলাম কবির.বাগেরহাট :বিশ্ব ঐতিহ্য পৃথিবীর বৃহত্তম ম্যানগ্রোভ পূর্ব সুন্দরবনের উপকূলীয় বাগেরহাটের পানগুছি বলেশ্বর নদের ইলিশ। যেমন তার রূপ, তেমন তার স্বাদ-গন্ধ। একটি ঐতিহ্যও বলা চলে এই বলেশ্বরের ইলিশকে। দক্ষিণাঞ্চলের নদ-নদী, সাগরের মধ্যে পানগুছি বলেশ্বর নদের ইলিশই সেরা।বাজারে ইলিশের দামও বেশি। ইলিশ ধরাকে কেন্দ্র করে উপকূলের কয়েক হাজার জেলের কর্মসংস্থানও হয়েছে। তবে দাম বেশি হওয়ায় নিম্ন আয়ের মানুষগুলো ইলিশের স্বাদ নিতে পারছে না বলে জানা যায়।

ইলিশের আসল স্বাদ-গন্ধ পেতে চাইলে জুড়ি নেই বলেশ্বরের ইলিশের। এই রূপালি ইলিশের নাম শুনলেই জিভে জল চলে আসে ভোজন রসিকদের। পদ্মার ইলিশের মতোই পানগুছি -বলেশ্বর নদের ইলিশেরও রয়েছে ব্যাপক চাহিদা ও নামডাক।
স্থানীয় ক্রেতা ছাড়াও বিভিন্ন এলাকা থেকে মানুষ শরণখোলায় ছুটে আসেন এই বলেশ্বরের ইলিশের টানে।

কিনে নেন কোনোরকম বরফের স্পর্শ ছাড়া তাজা ইলিশ। আবার অনেকে ঢাকা, খুলনাসহ বিভিন্ন অঞ্চলে বসবাসরত তাদের আত্মীয়-স্বজনদের জন্যও কিনে পাঠান সুস্বাদু এই ইলিশ। বলেশ্বরের ইলিশের নাম শুনলেই দামের দিকে তাকান না ইলিশপ্রেমীরা।

পানগুছি বলেশ্বর নদে এখন প্রতিদিনই জেলের জালে ধরা পড়ছে মণকে মণ তরতাজা ইলিশ।

দুপুরের পর থেকেই জেলেরা ভেজা কাপড়ে ইলিশ ভর্তি ঝুড়ি নিয়ে ফেরেন আড়ৎগুলোতে। আর বিকেল হলেই আড়ৎ থেকে সেই ইলিশগুলো চলে যায় উপজেলা শহর রায়েন্দা বাজার, পাঁচরাস্তা প্রশাসন মার্কেট মাছ বাজারসহ বিভিন্ন হাটে-বাজারে। এসব ইলিশ আকার ভেদে দাম হাকিয়ে বিক্রি করে থাকেন মাছ ব্যবসায়ীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত তিন-চারদিন ধরে প্রচুর বড় ইলিশ ধরা পড়ছে বলেশ্বরে। রূপালি ইলিশের ঝিলিকে হাসি ফুটেছে জেলেদের মুখেও।

৮-৯শ’ গ্রাম থেকে শুরু করে দেড়-দুই কেজি ওজনের ইলিশ অহরহ উঠছে জেলের জালে। এর মধ্যে বেশিরভাগই মা’ ইলিশ। তবে, প্রচুর ইলিশ ধরা পড়লেও এর দাম সাধারণ ক্রেতার নাগালের বাইরে। যে কারণে বড় ইলিশের স্বাদ নিতে পারছেন না নিম্নআয়ের মানুষ।

বলেশ্বর নদে জেলের জালে হঠাৎ ইলিশ ধরা পড়ার কারণ হিসেবে মৎস্য বিভাগ জানায়, এখন ইলিশের ভরা মৌসুম চলছে। আবহাওয়াও অনুকূলে। তাই বঙ্গোপসাগর থেকে উঠে আসছে ইলিশের ঝাঁক। তাছাড়া, কিছুদিন বাদেই ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসম শুরু হবে। এজন্য মা ইলিশগুলো সাগর থেকে ঝাঁক বেধে মিঠা পানির শাখা নদ-নদীতে চলে আসছে। যা ধরা পড়ছে জেলের জালে।

বুধবারসন্ধ্যা ও বৃহস্পতিবার ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ সকালে উপজেলা মোরেলগঞ্জে শহরের মাছ বাজার ঘুরে দেখা গেছে, মাছ ব্যবসায়ীরা রূপালি ইলিশের পসরা সাজিয়ে বসেছেন। একেক জনের ডালায় ২০-৩০ কেজি করে বড় সাইজের ইলিশ। প্রত্যেকটি ইলিশের পেটেই ডিম বোঝাই। ক্রেতারাও হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন। দাম যাচাই-বাছাই করে বনিবনা হলে কিনে নিয়ে যাচ্ছেন তাদের পছন্দসই ইলিশ।

মোরেলগঞ্জে মাছ বাজারের ব্যবসায়ী কমিশনার ইউনুস সরদার.আব্দুল আউয়াল মাতুব্বর. লাভলু শেখ সোহাগ হাওলাদার, খোকন হাওলাদার, আউয়াল , রাসেল হাওলাদার জানান, গত তিন-চারদিন ধরে পানগুছি বলেশ্বরে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে। সাইজও বেশ বড়। এর আগে ছোট ইলিশ (জাটকা) ধরা পড়তো। তাও পরিমানে কম। বর্তমানে ৮-৯শ’ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি ১ হাজার থেকে ১হাজার ২০০টাকা, এক কেজি ওজনের ইলিশ ১হাজার ৪০০ থেকে দেড় হাজার টাকা, দেড় কেজি ওজনের ইলিশ ১ হাজার ৬০০টাকা এবং দুই কেজি ওজনের ইলিশ ১ হাজার ৮০০টাকা থেকে দুই হাজার টাকা দরে কেজি বিক্রি হচ্ছে।

এসব ব্যবসায়ীরা জানান, দাম যতোই হোক না কেন কোনো ইলিশই অবিক্রিত থাকে না। স্থানীয়দের পাশাপাশি তাদের আত্মীয়-স্বজনদের জন্যও ইলিশ কিনে নেন তারা। ককসিট ভরে বলেশ্বরের ইলিশ পাঠান দূর-দূরান্তের স্বজনদের কাছে।

বলেশ্বর নদের জেলে সোহেল শাহ, রাসেল হাওলাদারসহ অনেকেই জানান, কয়েকদিন আগেও সারাদিন জাল ফেলে দেড়-দুই কেজি জাটকা উঠতো। এখন বড় ইলিশ উঠছে। প্রতিদিন একেকজন জেলে ৮-১০ কেজি করে বড় ইলিশ পাচ্ছেন। এসব ইলিশ তাদের নির্ধারিত আড়তে বিক্রি করেন। এখন জেলে-মহাজন-ব্যবসায়ী সবাই লাভে আছেন।

বুধবারসন্ধ্যা (৬ সেপ্টম্বর) সন্ধ্যায় মোরেলগঞ্জ মাছ বাজারে ইলিশ কিনতে এসেছিলেন জাহিদুল ইসলাম । তিনি দেড় কেজি ওজনের দুটি ইলিশ কিনেছেন। ১৬শ’ টাকা কেজি দরে দুটি ইলিশের দাম পড়েছে চার হাজার ৮০০ টাকা। ওই ক্রেতার কাছে জানতে চাইলে বলেন, দাম কোনো বিষয় না। বলেশ্বরের ইলিশ আমার খুব পছন্দ। তাই কিনে নিলাম।

মোরেলগঞ্জ উপজেলা জ্যেষ্ঠ মৎস্য কর্মকর্তা বিনয় কুমার রায় বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের অন্যান্য নদ-নদীর চেয়ে বলেশ্বর নদের ইলিশের স্বাদ-গন্ধ একটু আলাদা। ইলিশের চেহারা-আকারও ভিন্ন। বেঙ্গাপসাগরের ইলিশের তুলনায় পেটি খুব চওড়া। প্রচুর তেলও এই ইলিশে। যে কারণে দাম ও চাহিদা বেশি।এখন সময় এসেছে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহারের। আমরা আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে ইলিশ ধরার জন্য জেলেদের বিভিন্ন সভা-সেমিনারের মাধ্যমে উদ্বুদ্ধ করছি।

মৎস্য কর্মকর্তা বিনয় কুমার রায় আরো বলেন, এখন ইলিশের ভরা মৌসুম। পর্যাপ্ত বৃষ্টি হওয়ায় ইলিশের জন্য একটা অনুকূল পরিবেশ বিরাজ করছে। যে কারণে সাগর থেকে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ শাখা নদ-নদীতে উঠে আসছে। তাই জাল ফেললেই ধরা পড়ছে বড় ইলিশ।

তাছাড়া, অক্টোবর মাসে শুরু হচ্ছে ইলিশের প্রধান প্রজনন মৌসুম। এ সময় ২২ দিন দেশের সকল নদ-নদী ও সাগরে ইলিশসহ সকল প্রকার মৎস্য আহরণ বন্ধ থাকবে। প্রজনন মৌসুম আসন্ন হওয়ায় এখন সব ইলিশের পেটে ডিম থাকাটাই স্বাভাবিক। ডিমছাড়া ও ডিমওয়ালা ইলিশ চিনবেন যেভাবে

এ ধরনের ইলিশ চেনার জন্য কিছুটা অভিজ্ঞ হতে হবে। আগস্টের মাসের দিকে ইলিশ ডিম ছাড়তে শুরু করে। এই মৌসুম চলে সেপ্টেম্বর কিংবা অক্টোবর পর্যন্ত। সাধারণত ডিমওয়ালা ইলিশ চ্যাপ্টা আকৃতির হয়। এ ধরনের ইলিশের পেট টিপলে পায়ুপথের ছিদ্র দিয়ে ডিম বের হয়ে আসে। অপরদিকে ডিম ছাড়া ইলিশের পেট অনেকটা ঢিলে হয়।কোন ধরনের ইলিশ কিনবেন না?

ইলিশ মূলত এর স্বাদের জন্য বিখ্যাত। ইলিশের স্বাদ পুরোপুরি পেতে চাইলে বড় ইলিশ কিনতে হবে। তাই ছোট ইলিশ কিনবেন না। এ ধরনের ইলিশে স্বাদ কম হয়। আবার যেসব ইলিশ দীর্ঘদিন ফ্রিজে থাকে সেগুলোরও স্বাদ কমে যায় বা নষ্ট হয়ে যায়। যে ইলিশ কম চকচকে থাকে, সেগুলোই বেশিদিন ফ্রিজে রাখা। এভাবে দেখেও চিনে নিতে পারেন।

(এস.এম.সাইফুল ইসলাম কবির)
বাগেরহাট জেলা সংবাদদাতা:

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD