July 11, 2025, 4:59 am
স্টাফ রিপোর্টার, গোপালগঞ্জ : গোপালগঞ্জে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক নিয়োগের দাবীতে তৃতীয় দিনের মতো অবস্থান কর্মসূচী পালন করছে ফাইন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা। এসময় তারা প্রশাসনিক ভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দেয়।
শিক্ষার্থীদের দাবি পাঁচ কর্মদিবসের মধ্যে ওই বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ দিতে হবে। তাদের দেওয়া নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে শিক্ষক নিয়োগের দাবি বাস্তবায়ন না হলে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমি এবং প্রশাসনিক কার্যক্রম বন্ধসহ কঠোর কর্মসূচি দিবে বলে জানায় শিক্ষার্থীরা।
আজ বুধবার (০৯ আগষ্ট) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের নীচে অবস্থায় নেয় ফাইন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের শিক্ষার্থীরা। পরে প্রশাসনিক ভবনের প্রধান ফটকে তালা ঝুলিয়ে দিয়ে সেখানে অবস্থান কর্মসূচী শুরু করে শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীরা শিক্ষক নিয়োগের দাবীতে শিক্ষা তাদের মনে প্রানে তারা কেন আন্দোলনে, ক্ষক চাই শিক্ষক চাই ফাইন্যান্সের শিক্ষক, শ্বাস আশ্বাস আর নয় বিশ্বাস, জবাব চাই জবাব চাই প্রশাসনের জবাব চাই, এক দফা এক দাবি ফাইন্যান্সে শিক্ষক দিবি, হয় মোদের শিক্ষক দিবি না হয় মোদের প্রাণ নিবি” বিভিন্ন ধরনের শ্লোগান দেয়।
এর আগে, বৃষ্টি উপেক্ষা করে গত সোমবার বেলা ১১টা থেকে উপাচার্যে কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। ওই দিন শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধি দলকে ডেকে নেন উপাচার্য এবং শিক্ষক দেওয়ার আশ্বাস দিয়ে বলেন, “ইউজিসি থেকে শিক্ষক নিয়োগের একটা প্রক্রিয়ায় আছে সেগুলা মেইনটেইন করে শিক্ষক পেতে অন্তত দেড় মাস সময় প্রয়োজন। এই সময়টা আমাকে দিতে হবে।” কিন্তু শিক্ষার্থীরা তা না মেনে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। পুনরায় বেলা চারটায় উপাচার্য আন্দোলনস্থলে আসেন এবং শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলেন। এসময় উপাচার্য আজ (বুধবার) ইউজিসিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি যাবেন বলে আশ্বস্ত করলেও শিক্ষার্থীরা শিক্ষক নিয়োগের চুড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাবে বলে জানায়।
ফাইন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী মো: সরোয়ার হোসেন সেতু বলেন, আমাদের বিভাগ ছয়টি ব্যাচের ৩৫১ জন শিক্ষার্থী রয়েছে। যেখানে ১৭ শিক্ষক থাকার কথা সেখানে আছে মাত্র ২ জন শিক্ষক। কর্তৃপক্ষ কেন এত উদাসিনী? আমরা এখানে পাড়ালেখা করতে আসছি সেই সুযোগ কেন করে দিচ্ছেনা?
তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী কামরুন্নাহার মিম বলেন, ভর্তি পরিক্ষায় আমরা প্রথম দিকে সিরিয়ালে ছিলাম। বিবিএ ফ্যাকাল্টির সব থেকে ভালো বিভাগ হচ্ছে ফাইন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগ আমরা সেখানে ভর্তি হয়েছি। ভালো ফলাফল করবো কিন্তু শিক্ষক সংকটের কারনে আমাদের তৃতীয় বর্ষের পাঁচটি বিষয়ের মধ্যে রিয়েলস্টেট ফাইন্যন্সিং এন্ড ইনভেস্টমেন্ট ও ইন্সুইরেন্স এন্ড ব্যাংকিং দুটি বিষয়ের এখন পর্যন্ত কোন ক্লাস হয়নি। এছাড়া ক্যাপিটাল ইনভেস্টমেন্ট এন্ড ডিসিশন ও লিগ্যাল ইনভারমেন্ট ইন বিজনেস দুটি বিষয়ে অর্ধেক কোর্সও শেষ হয়নি। শুধু মাত্র মানি এন্ড ব্যাংকি কোর্সের ক্লাস হয়েছে।
চতুর্থ বর্ষের মোহাম্মাদ আলি তোহা বলেন, আমাদের বিভাগে শিক্ষক নিয়োগ না দেওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে। আজ সন্ধ্যা ৬ টার মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) বা শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের স্বাক্ষরিত পর্যাপ্ত শিক্ষক নিয়োগের চিঠি বা বিজ্ঞপ্তি না পেলে আগামীকাল থেকে প্রশাসনিক ও একাডেমি সকল ধরনের কার্যক্রম বন্ধ করে আমরন অনশন ও উপাচার্যের পদত্যাগে জন্য কঠোর আন্দোলনে যাবে শিক্ষার্থীরা।
এ বিষয়ে বশেমুরবিপ্রবির রেজিস্ট্রার মো. দলিলুর রহমান বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের ফাইন্যান্স এন্ড ব্যাংকিং বিভাগের ৩৫১ জন শিক্ষার্থীর বিপরীতে মাত্র দুইজন শিক্ষক রয়েছে। শিক্ষার্থীরা শিক্ষক চাচ্ছে এটা তাদের মৌলিক অধিকার। শিক্ষকের জন্য আমরা বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন (ইউজিসি) ও শিক্ষামন্ত্রীকে জানিয়েছি। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধি দলের নিয়ে গোপালগঞ্জ থেকে ঢাকায় রওনা হয়েছি বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুর কমিশন (ইউজিসি) যাওয়ার উদ্দেশ্য। #