September 27, 2023, 8:51 am
হায়দার আলী,
নিজস্ব প্রতিবেদকঃ রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার রাজাবাড়ী ডিগ্রি কলেজের ১৩ জন শিক্ষকের জাল সনদ, অবৈধ তথ্য, অবৈধ নিয়োগ, সম্বলিত কাগজ দিয়ে শিক্ষাভবনে প্রচুর অর্থের বিনিময়ে সম্পূর্ণ জালিয়াতির মাধ্যমে এমপিও ভুক্ত হয়ে সরকারি বেতনভাতা ও অন্যান সুযোগ সুবিধা ভোগ করার অভিযোগে শিক্ষা সচিব, শিক্ষা মন্ত্রণালয়, পরিচালক দুদক, মহাপরিচালকসহ বিভন্ন দপ্তরে লিখিত অভিযোগ করেছেন স্থায়ীভাবে বরখাস্ত হওয়ার প্রক্রিয়ায় থাকা পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মোঃ সিরাজুল ইসলাম ও
উৎপাদন ব্যবস্থাপনা ও বিপণন বিভাগের প্রভাষক আহাদুজ্জামান নাজিম।
পৃথক পৃথক লিখিত অভিযোগ পত্রে জানা গেছে কলেজের পৌরনীতি বিভাগের প্রভাষক মোঃ শামীম হোসেন ইনডেক্স নং৩০৮৬৫৮৪ ডিগ্রি পর্যায়ে ২০০২ ইং সালে রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগে নিয়োগ নেন। কিন্তু ডিগ্রি পর্যায়ে রাষ্টবিজ্ঞান বিষয়ে কোন অনুমোদন নেই, তথাপি পরবর্তীতে সে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে পৌরনীতি বিষয়ে জালিয়াতির মাধ্যমে এমপিও ভুক্ত হন। নিয়োগ, যোগদানের ও সার্টিফিকেটের বাঁনানও সঠিক নেই। এক এক স্থানে বাঁনান ভিন্ন রুপ। যোগদান পত্রের যোগদানের স্বাক্ষরও মিল নেই। সহকারি লাইব্রেরীয়ান মোঃ গোলাম হোসনাইন ইনডেক্স নং ৬১৩৫৫২ তার লাইব্রেরীর সার্টিফিকেট জাল। এই জাল সার্টিফিকেট মাধ্যমে নিয়োগ পান।
পরে লাইব্রেরিয়ানের প্রশিক্ষন গ্রহন করেন। নিয়োগের তারিখ ২০/০৭/১৯৯৫, যোগদানের তারিখ ২৬/০৭/১৯৯৫ ইং সার্টিফিকেট অর্জনের তারিখ ২৭/০৭/১৯৯৯ ইং। জেষ্ঠ প্রভাষক রবিউল ইসলাম কম্পিউটার ইনডেক্স নং ৮৩২২৩৭ কম্পিউটার প্রশিক্ষনের জাল সনদ নিয়ে এমপিও ভুক্ত হয়েছেন। ওই কলেজের অর্থনীতি বিভাগের সহকারি অধ্যাপক মোঃ মোজাম্মেল হক ইনডেক্স নং ৬১৩৫৪১ তিনি ১৯৯৫ ইং সালে অর্থনীতির প্রভাষক হিসেবে নিয়োগ নেয়ার পর ব্যাক ব্যাংকে চাকুরী করেন। ২০০০ ইং সালে জালিয়াতির মাধ্যমে এমপিও ভুক্ত হন এবং অবৈধভাবে সিনিয়র দেখিয়ে সহকারি অধ্যাপক পদ গ্রহন করেন।
বাংলা বিভাগের প্রভাষক গোলাম কিবরিয়া ইনডেক্স নং ৮৩২২৪১ তিনি বাংলায় দ্বিতীয় শিক্ষক হিসেবে উচ্চ মাধ্যমিক স্তরে একজন শিক্ষক থাকবেন কিন্তু তিনি জালিয়াতির মাধ্যমে এমপিও ভুক্ত হন। বাংলা বিভাগের সহকারি অধ্যাপক মোঃ ইসমোত আরা ৬১৩৫৪২ নিয়োগ যোগদানের পর মাস্টার্স এর ফলাফল হয় এবং সার্টিফিকেট প্রাপ্ত হয় এবং পরবর্তীতে অবৈধভাবে সহকারি অধ্যাপক পদ গ্রহর করেন। হিসাব বিজ্ঞানের সহকারী অধ্যাপক মোঃ আব্দুস সবুর ইনডেক্স নং ৬১৩৫৪৩। সে নিয়োগ যোগদানের পরে মাস্টাস এর ফলাফল হয় এবং সার্টিফিকেট প্রাপ্ত হন এবং পরবর্তীতে অবৈধভাবে সহকারি অধ্যাপক পদ গ্রহন করেন। ভূগোল বিভাগের প্রভাষক মোসাঃ শাহিনুর পারভীন ইনডেক্স নং ৩০৯৮৭২৬ ডিগ্রি পর্যায়ে ২০০২ ইং নিয়োগ পান। কিন্তু ডিগ্রি পর্যায়ে ভূগোল বিষয়ে কোন অনুমোদন না থাকায় সভাপতির মেয়ে হওয়ায় জালিয়াতির মাধ্যমে উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে এমপিও ভুক্ত হন।
সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক মোঃ ওমর কোরাইশী ইনডেক্স নং ৬১৩৫৪৫ নিয়োগ যোগদানের পরে এমএ পাস পরবর্তীতে অবৈধভাবে সহকারি অধ্যাপক হন। কম্পিউটার প্রদর্শক মোসাঃ শামসুন নাহার ইনডেক্স নং ৮৪৩০৬৩ কম্পিউটার বিষয়ে জাল সনদপত্র দেখিয়ে দেখিয়ে এমপিও ভুক্ত হন। রাজাবাড়ী ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ, মোঃ সেলীম রেজা রেজা বক্তব্য বলেন, গত ২৪/০৮/২০১৭ ইং তারিখে ৭০ হাজার টাকা লোন বোঝা মাথায় নিয়ে অধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহন করি। সাধারণ তহবিল ও এফডিআর শূন্য ছিল। প্রভাষক শাহীন কামাল এর নিকট হতে ১ লাখ টাকা ও প্রভাষক আলমগীর নিকট হতে ২ লাখ টাকা লোন করে কলেজ বাঁচাতে ৩ লাখ টাকার এফডিয়ার করতে হয়েছে। ওই প্রভাষকদের নিয়োগ দিয়েছেন, সাবেক অধ্যক্ষ মো: রেজাউল করিম তাদের এমপিও করেছে উনি,। বিষয় গুলি আমার জানা নেই। তবে লিখিত অভিযোগকারী প্রভাষক আহাদুজ্জামান নাজিম একজন নারী লোভী, লম্পট, চরিত্রহীন, কোচিংবাজ শিক্ষক গত ২০২১ ইং সালের ২৬ ডিসেম্বর রাজশাহীতে ২ ছাত্রীকে শীলতাহানির অভিযোগে নাজিম কোচিং সেন্টার ঘেরাও করে স্থানীয়রা। ওই প্রতারক, নারী লোভী শিক্ষককে আটক করে থানায় নিয়ে যান এবং জেল হাজতে প্রেরন করেন। দীর্ঘদিন জেলে থাকার কারনে গত ২৮/১২/২০২১ ইং তারিখে তাকে কলেজ গভর্নিং বডির সিদ্ধান্ত মোতাবেক সাময়িক বরখাস্ত করা হয়। কিন্তু কিছু দিন না যেতেই কলেজের ছাত্রীদের সঙ্গে অনৈতিক কাজ, যৌন হয়রানির মূলক আচারন করায় তার চরম নৈতিক স্খলন ও কন্যাসম ছাত্রীদের যৌন হয়রানির অভিযোগে তাকে পুনঃরায় ২৩/০৫/২০২২ ইং তারিখে সাময়িক বরখাস্ত করা হয় যা অব্যাহত আছে। চাকুরী বাঁচাতে মরিয়া হয়ে গত ৮/১১/২০২২ ইং জেলা রাজশাহীর গোদাগাড়ী থানা আমলি আদালতে মিথ্যা মামলা দায়ের করেন যার নং ৫৬৯ সি/ ২২ ( গোদাগাড়ী)। গত ০৩/১১/২২ ইং তারিখে জেলা রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে আরও একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করেন যার নং ১১৯৯পি / ২০২২ ( গোদাগাড়ী)। মামলায় যে তিন টি ষ্ট্যাম্প উদ্ধারের কথা বাদী উল্লেখ করেছেন তার নং ঘট – ৭০৬৫৫৪৬, ঘট – ৭০৬৫৫৪৭, ঘট – ৭০৬৫৫৪৮। কিন্তু বাদী নিজেই ৩০/০৮/২০২২ ইং তারিখে আতাউর রহমান ( আক্তার) ষ্ট্যাম্প ভেন্ডার,রেঃঅঃসদর, রাজশাহী লাইঃ নং ২/২০০০-০১ এর নিকট হতে নিজ নামে ক্রয় করেন। গত ২৬/০৯/২২ ইং তারিখে জেলা রাজশাহীর বিজ্ঞ নোটারী পাবলিকের মাধ্যমে এফিডেভিট করে পুনঃরায় অপকর্ম স্বীকার করে এবং গভর্নিং বডির শাস্তি মেনে নিয়ে প্রতিজ্ঞা পূর্বক অঙ্গিকার জমা দেন। ওই চরিত্রহীন, লম্পট, লারীলোভী, শিক্ষককে অনৈতিক, অপকর্ম থেকে কোনভাবেই সংশোধন করা যাচ্ছেনা বিধায় তাকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা প্রক্রিয়া চলমান।
লিখিত অভিযোগকারী অন্য পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের প্রভাষক সেরাজুল ইসলামের বিরুদ্ধে অনৈতিক কাজ, প্রতারনা করে লাখ লাখ টাকা লোন নেয়ায় তার বেতনের বেশী টাকার কিস্তি পরিশোধ না করা। চাকুরী দেয়ার নাম করে মোটা অংকের চাঁদাবাজি, তাকে স্থানীয় লোকজন ৫ ঘন্টা আটকিয়ে রেখে ৫০ হাজার টাকা আদায়সহ নানা অপকর্মের সাথে জড়িত, থাকার প্রমান পাওয়ায় গভর্নিং বডি তাকে সাময়িক বরখাস্ত করছেন। স্থায়ী বরখাস্তের বিষয়টি প্রক্রিয়াধীন। এছাড়া সঙ্গীত বিভাগের প্রভাষক শাহিন আক্তার, আরবি বিভাগের প্রভাষক সাদিকুল ইসলাম এবং প্রকৌশল অংকন ও ওয়ার্কশপ প্র্যাকটিস বিভাগের ইন্সট্রাক্টর আবু সালেহ মোঃ নাজমুস সাদাত। এ তিন জন শিক্ষকের রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের স্বীকৃতি ও নবায়ন নেই । সঙ্গীত বিভাগের প্রভাষক শাহিন আক্তার এর সঙ্গীত সনদ জাল। ওই তিন জন শিক্ষককে অবৈধভাবে নিয়োগ প্রদান করেন সাবেক অধ্যক্ষ নেজাউল করিম। দুর্নীতির আশ্রয় নিয়ে এমপিও ভুক্তি করেন। গত ২০১৭ ইং সালে তাদের অবৈধ কাজ ও জালিয়াতির বিষয়টি ধরা পড়লে গভর্নিং বডির রেজুলেশন নং ২৫/১৮ তারিখ ২৯/০১/২০১৮ ইং মোতাবেক বহিস্কারসহ বেতনভাতা স্থগিত করে রাখা হয়। যা উদ্ধোর্তনকতৃপক্ষ তদন্ত করছেন। তারা তাদের অপকর্মের, জাল সনদের জন্য চাকুরী হারিয়ে কলেজের সুনাম নষ্ট করেতে মরিয়া হয়ে উঠেছে। সম্পূর্ন মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন মনগড়া অভিযোগ দাঁড় করিয়ে লিখিত অভিযোগ, মিথ্যা মামলা করছেন। বিজ্ঞ আদালত একটি মিথ্যা মামলা খারিজ দিয়েছেন। অন্য মিথ্যা মামলার ব্যপারে বিজ্ঞ আদালতে তা প্রমান হবে ইনশাল্লাহ।
নিজস্ব প্রতিবেদক,
রাজশাহী।