July 12, 2025, 6:37 am
হায়দার আলী,
নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহীঃ মাধ্যমিক স্কুলের গ্রীষ্মকালীন ছুটি বাতিল নিয়ে দেশের বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের মধ্যেও বিভ্রান্তি সৃষ্টি হয়েছে। রাজশাহীতে এর ব্যতিক্রম হয় নি।
গত বুধবার থেকে আগামী ২ আগস্ট পর্যন্ত ছুটি থাকার কথা ছিল। সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে প্রধানগণ নোটিশের মাধ্য ছুটি ঘোষনা করেছেন, ওই দিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে অনেক শিক্ষার্থী প্রতিষ্ঠানে উপস্থিত হন নি। পূর্বে থেকে ছুটিটির কথা জানা থাকায় বেশীরভাগ অভিভাবকগন অবকাশ, গ্রামের বাড়ী, দাদা, দাদি, নানা নানিসহ নিকট আত্নীয়ের বাড়ী বেড়াতে চলে গেছেন এছাড়া পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী চিকিসার জন্য ঢাকা, সিরাজগজ্ঞ, ভারতসহ বিভিন্ন দেশে গমন করেছেন। অনেক শিক্ষক শিক্ষিকা চিকিৎসার জন্য ভারতের ভিসা করেছেন হঠাৎ ছুটি বাতিলে বেকায়দায় পড়েছেন তারা। গতকাল বৃহস্পতিবার ছিল হিজরি নববর্ষের নির্ধারিত ছুটি। কিন্তু গত বুধবার হঠাৎ করেই শিক্ষামন্ত্রী শিক্ষকদের সাথে আলোচনায়ী এই ছুটি বাতিল করার ঘোষণা দেন।
ফলে অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানই তাদের শিক্ষাবর্ষের নির্ধারিত ছুটির রুটিন অনুযায়ী শিক্ষার্থীদের ছুটির নোটিশও দিয়ে দেন। কিন্তু পরবর্তীতে এই ছুটি বাতিল নিয়ে শিক্ষক শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরাও বিভ্রান্তিতে পড়েছেন।
রাজশাহীর বিভিন্ন স্কুলের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, গ্রীষ্মের এই তীব্র গরমে অনেক শিক্ষার্থীই ক্লাসরুমে অসুস্থ হয়ে পড়ছেন। আবার শিক্ষকদের মধ্যেও অনেকে পূর্বনির্ধারিত ছুটিতে তাদের অবকাশ পালনের জন্যও নিজস্ব পরিকল্পনা করে রেখেছেন। কিন্তু আগে থেকে না জানিয়ে গত বুধবার হঠাৎ করেই ছুটি বাতিল করায় তারাও এখন বিপাকে পড়েছেন।
অন্যদিকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জাতীয়করণের দাবি নিয়ে রাজশাহীর সদর, গোদাগাড়ী, তানোর, বাঘা, চারঘাট, বাঘমারা, দূর্গাপুর, পুঠিয়াসহ প্রত্যন্ত অঞ্চলের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাসরুমে তালা ঝুলিয়ে রেখেছেন। কোন কোন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান শিক্ষক কর্মচারীগণ অফিসের সামনে চিয়ারে বসে অলস সময় পার করেছেন, শিক্ষপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষককর্মচারিগণ প্রতিষ্ঠানে তালাঝুলিয়ে রেখে গ্রুপকরে জাতীয়করণের দাবীতে ধারাবাহিকভাবে ঢাকার জাতীয় প্রেসক্লাবে যাচ্ছেন। রাজধানী ঢাকায় শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচির আন্দোলন গত ১০ দিন ধরে চলমান রয়েছে। গত বুধবার শিক্ষামন্ত্রীর সাথে আলোচনা করেও শিক্ষকরা তাদের দাবি আদায়ের কোনো সুসংবাদ পাননি। ফলে রাজপথে আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন আন্দোলনরত শিক্ষকরা। তারা শিক্ষামন্ত্রীর বক্তব্যকে গ্রহন করেন নি।
অনেক শিক্ষক নেতা মনে করছেন, শিক্ষকদের আন্দোলন স্থগিত করতে শিক্ষকদের ক্লাসরুমে ফেরত পাঠানোর কৌশল হিসেবেই গ্রীষ্মকালীন এই নির্ধারিত ছুটি বাতিল করা হয়েছে। অনেক শিক্ষক নেতাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, শিক্ষকদের যৌক্তিক দাবির প্রতি সবাই যখন একাত্মতা ঘোষণা করে গ্রীষ্মের এই ছুটিতে আন্দোলনে শরিক হওয়ার জন্য ঢাকায় আসছেন, ঠিক তখনি ছুটি বাতিল করে শিক্ষকদের আন্দোলনকে বন্ধ করার অপচেষ্টা করা হচ্ছে। এতে কোন লাভ হবে না। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষনা ছাড়া শিক্ষকগণ প্রেসক্লাব চত্তর ছাড়বেন বলে সাফ সাফ জানিয়ে দিয়েছেন।
এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার মাউশি থেকে জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, হিজরি নববর্ষে বৃহস্পতিবার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় আগামী ২৩ জুলাই রোববার থেকে শ্রেণিকক্ষে পাঠদান কার্যক্রম যথারীতি চালু থাকবে। বাতিল করা গ্রীষ্মকালীন ছুটি আগামী শীতকালীন ছুটির সাথে সমন্বয় করা হবে।। এ অবস্থায় ক্লাস করা হলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে উল্লেখযোগ্য পরিমান শিক্ষার্থী শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে অনুউপস্থিত থাকবেন কেন না তারা আগেই নিজ নিজ গন্তব্যস্থলে চলে গেছেন। শিক্ষকগণ তো ঢাকাতে আন্দোলন করছেন ক্লাস হবে কি করে তালা তো ঝুলছে।
এতদসঙ্গে আরো জানানো হয়েছে, আগামী ৩০ নভেম্বরের মধ্যে নতুন শিক্ষাক্রমে ষষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির পাঠদান ও মূল্যায়নসহ অন্যান্য শ্রেণির পাঠদান ও পরীক্ষা কার্যক্রম সমাপ্ত করতে হবে।
নিজস্ব প্রতিবেদক,
রাজশাহী।