July 18, 2025, 8:15 pm
স্টাফ রিপোর্টার, গোপালগঞ্জ : অ্যাক্রোবেটিকে মোহচ্ছনের মত দু’ঘন্টা সময় কেটে গেল। সমাপ্তি ঘোষণার পর তন্ময় দর্শক মুহুর্মুহু করতালি দিয়ে এমন প্রদর্শনী নিয়মিত দেখার আগ্রহ প্রকাশ করেন। নির্মল চিত্ত বিনোদনের এই শৈল্পিক মাধ্যম আরো প্রচার প্রসার হওয়া প্রয়োজন বলেও দর্শকরা অভিমত ব্যক্ত করেছেন।
গোপালগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমি বৃহস্পতিবার (১৫ জুন) রাতে শহরের শেখ ফজলুল হক মণি স্মৃতি অডিটোরিয়ামে দেশব্যাপী আক্রোবেটিক প্রদর্শনীর অংশ হিসেবে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করে। প্রধান অতিথি গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুবুল আলম এই প্রদার্শনীর শুভ উদ্বোধন করেন। প্রদর্শনীর শুরুতে সুস্থ্য বিনোদনের জন্য বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির অ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনীর ওপর ধারা বর্ণনা প্রদান করা হয়।
অ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনীতে নানা কসরত প্রদর্শন করেন বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির অ্যাক্রোবেটিক বিভাগের শিশু ও প্রবীণ সদস্যরা। চীন থেকে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অ্যাক্রোবেটিক শিল্পীর চোখ ধাঁধানো নৈপুন্য শেখ ফজলুল হক মণি স্মৃতি অডিটোরিয়ামের বিভিন্ন বয়সের দর্শকের হৃদয় কেড়ে নেয়। মঞ্চের উজ্জ্বল আলোয় মুখে গাঢ় মেকআপ আর যন্ত্র সংগীতের সুরের মুর্ছনায় শিল্পীরা কঠিন পরিশ্রম আর অধ্যবসায়ের ফসল দিয়ে মানুষের মুখে হাসি ফুঁটিয়ে তুলেছিলেন। সেই সাথে মুগ্ধ দর্শক মুহুমুহু করতালি দিয়ে শিল্পীদের উৎসাহ ও প্রেরণা যোগান।
দর্শক সঞ্জয় বিশ্বাস বলেন, অ্যাক্রোবেটিকে চমৎকার সময় কেটেছে সবার। আমি আমার ২য় শ্রেণি পড়–য়া মেয়েকে নিয়ে এই প্রদর্শনী উপভোগ করেছি। এটি মানসম্পন্ন ও পরিবারের সদস্যদের নিয়ে একসাথে বিনোদন পাওয়ার মতো একটি মাধ্যম। নির্মল চিত্ত বিনোদনের এই শৈল্পিক মাধ্যম আরো প্রচার প্রসার হওয়া প্রয়োজন। এমন নান্দনিক প্রদর্শনীর জন্য অ্যাক্রোবেটিক দলের সদস্যদের শুভেচ্ছা ও ধন্যবাদ জানাই।
জেলা শিল্পকলা একাডেমির জেলা কালচারাল অফিসার ফারহান কবীর সিফাত বলেন, শিল্পকলার প্রতিটি বিষয়ই মানুষকে উদ্বেলিত করে। বিশেষ করে অ্যাক্রোবেটিকের এই ধরণের আয়োজন শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ পর্যন্ত সকল শ্রেণির দর্শককে নির্মল আনন্দ দিয়েছে। তাই বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির এই ধরণের আয়োজন দর্শকরা স্বানন্দে গ্রহন করেছে। আর নিয়মিত এ ধরণের প্রদর্শনীর আয়োজন সমাজকে সংস্কৃতি মুখি করবে এটাই প্রত্যাশা।
গোপালগঞ্জ জেলা শিল্পকলা একাডেমির সাধারণ সম্পাদক খোন্দকার এহিয়া খালেদ সাদী বলেন, শিল্পকলার মহা-পরিচালক লিয়াকত আলী লাকির ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় অ্যাক্রোবেটিক প্রদর্শনীসহ বিভিন্নভাবে সংস্কৃতির চর্চার মাধ্যমে যুব সমাজ আরো বেশি সংস্কৃতিমুখি হচ্ছে। তিনি এই প্রদর্শনীতে গোপালগঞ্জবাসীর এই সহযোগিতার জন্য সাধুবাদ ব্যক্ত করেন।
গোপালগঞ্জের জেলা প্রশাসক কাজী মাহবুববুল আলম বলেন, এ্যাক্রোবেটিক (সার্কাস) শিল্প এদেশের মানুষকে দীর্ঘকাল ধরে সুস্থ্য ও শৈল্পিক বিনোদন দিয়ে আসছে। সম্প্রতি সময়ে এই শিল্প বিলুপ্ত হতে চলেছে। এই শিল্প ও শিল্পীদের রক্ষায় শিল্পকলা একাডেমি বিশেষ প্রকল্প হাতে নিয়ে ২টি অ্যাক্রোবেটিক দল গঠন করেছে। শিল্পীরা কাজের নিশ্চয়তা পেয়েছেন। তারাই সারাদেশে বছর ব্যাপী সুস্থ্য ও শৈল্পিক বিনোদন প্রদর্শন করে দেশবাসীর প্রশংসা কুড়াচ্ছেন। এ্যাক্রোবেটিক দল ২টির সদস্যদের এই মনোমুগ্ধকর প্রদর্শনী আমাদের হৃদয় কেড়েছে। এই জন্য প্রদর্শনী টিমের সদস্যদের গোপালগঞ্জবাসীর পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাচ্ছি।