April 16, 2024, 4:02 am

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
মুন্সীগঞ্জে বাংলাদেশ সমাচার মু্ন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি ছেলে না ফেরার দেশে চলে গেলেন সুজানগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে ২ জন ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৮ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল সুজানগর উপজেলা আ.লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাব এর পিতার দাফন সম্পন্ন নড়াইলের সুলতান মঞ্চ চত্বরে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে ১৫ দিনব্যাপী সুলতান মেলার উদ্বোধন গোদাগাড়ীতে ট্রাকে টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজি, আটক ২ চড়ক পুঁজা নিয়ে গোলযোগ প্রতিপক্ষের লাঠির আঘাতে যুবক নিহত পাইকগাছায় মটরসাইকেলের ধাক্কায় বৃদ্ধ নিহত ; চালক আহত একজন কিডনি রোগীকে বাঁচানোর জন্য সাহায্যের আবেদন পাইকগাছায় চড়ক পূজা, চৈত্র সংক্রান্তি মেলা ও বৈশাখী উৎসব অনুষ্ঠিত পাইকগাছায় ঈদে বোয়ালিয়া ব্রীজে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়
এলএসডি’র সংক্রমণে প্রায় অর্ধশত গরুর মৃত্যু, লাভবান হচ্ছে অদক্ষ পল্লী চিকিৎসকরা

এলএসডি’র সংক্রমণে প্রায় অর্ধশত গরুর মৃত্যু, লাভবান হচ্ছে অদক্ষ পল্লী চিকিৎসকরা

মোঃ বাবুল হোসেন পঞ্চগড় :
পঞ্চগড়ের আটোয়ারীতে লাম্পি স্কিন ডিজিজ (এলএসডি) ছোঁয়াছুঁয়ি ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে প্রায় অর্ধশত গরু ও বাছুরের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। তবে এরমধ্যে বাছুরের মৃত্যুর সংখ্যা বেশি। এতে ঈদকে সামনে রেখে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন উপজেলার গবাদিপশু খামারিসহ সাধারণ মানুষ।

রোগটি সাধারণত বর্ষা মৌসুমের শেষে, শরৎ বা বসন্তের শুরুতে আক্রান্তের হার বৃদ্ধি পেয়ে থাকে। তবে এবারে অনেকটা আগেভাগেই এর সংক্রমণের প্রকোপ দেখা দেওয়ায় কপালে দুশ্চিন্তার ভাজ পড়েছে খামারিসহ সাধারণ মানুষের।

উপজেলার তোড়িয়া, আলোয়াখোয়াসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে সরেজমিনে দেখা যাচ্ছে যে, গরুর লাম্পি স্কিন ডিজিজের সংক্রমণের সংখ্যা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। এমনকি এ রোগে গরুর মৃত্যুও হচ্ছে। যার সংখ্যা ইতিমধ্যে প্রায় অর্ধশত ছাড়িয়েছে বলে জানা যায়। যেমন, গত দুই দিনে উপজেলা তোড়িয়া ইউনিয়নের প্রেমগজ গ্রামে মৃত্যু হয়েছে ৫ টি বাছুরের। পার্শ্ববর্তী আলোয়াখোয়া ইউনিয়নের পাইকপাড়া ও গুঞ্জরবাড়ি এলাকায়ও মৃত্যু হয়েছে ১০ থেকে ১২ টি বাছুরের। এভাবে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় এ রোগের সংক্রমণ বৃদ্ধি পেতে শুরু করেছে এবং মৃত্যুও হচ্ছে অস্বাভাবিকভাবে।

প্রেমগজ গ্রামের উসমান গণী জানান, তার বাছুরের প্রথম দিকে জ্বর ছিল প্রায় ১০৪°-১০৬° তাপমাত্রা। অতিরিক্ত জ্বরের জন্য মুখ ও নাখ দিকে লালা পরে, পা ফুলে যায় এবং দুই পায়ের মাঝখানে পানি জমে। ধীরে ধীরে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় পিন্ড আকৃতি ধারণ করে। পরে পিণ্ডাকৃতির স্থানে লোম উঠে গিয়ে ক্ষত হওয়া শুরু করে বিভিন্ন স্থানে তা ছড়িয়ে পরে। এক পর্যায়ে বাছুরটি মারা যায়।

পাইকপাড়া গ্রামের ইসমাইল হোসেন বলেন, কারিয়াল (পল্লী পশু চিকিৎসক) আসার সাথে সাথে ৩/৪ টা ইনজেকশন দিয়ে দেন। তাতেই ভিজিট দিতে হয় ৪/৫ শত টাকা। কি ঔষুধ দেন না দেয় আর কিছু ঔষুধের নাম লিখে দিয়ে চলে যান। তাঁরা বর্তমানে টাকার পিছনে ছুটছেন। আমাদের এলাকার অনেক গরু এ রোগে আক্রান্ত হয়েছে তবে এ-র মধ্যে বাছুরের সংখ্যা ৯০ ভাগ।

চলতি মাসেই পবিত্র ঈদ ঊল আযাহা। গরুর এমন ভাইরাসের জন্য চিন্তিত খামারিরা। ঈদের বাজারে গরুর ভালো দাম পাওয়ার আশা থাকলেও তা নিরাশার পথে হাঁটতে শুরু করেছে। কেননা, লাম্পি স্কিন ডিজিজের ফলে গরুর গায়ের চমরায় ক্ষত বা ঘাঁ’র সৃষ্টি হচ্ছে। ফলে চামরার বানিজ্যিক ভাবে চাহিদা কমে যাচ্ছে। তাই গরুর দামও কমে যেতে শুরু করেছে। এমন অবস্থা চলতে থাকলে ঈদকে সামনে রেখে ভালো ও সুস্থ গরু হাটে উঠা নিয়ে শঙ্কিত খামারিরা। তাই এ সমস্যা সমাধানে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সদয় হস্তক্ষেপ চান তাঁরা।

এদিকে, উক্ত ভাইরাসকে পুঁজি করে বড় ধরনের ফায়দা হাসিলের উদ্দেশ্যে দিনে রাতে উঠেপড়ে লেগেছে পল্লী পশু চিকিৎসকসহ ফার্মেসীগুলো। উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর সূত্র জানায়, উপজেলায় কোন লাইসেন্সধারী পল্লী চিকিৎসক নেই। তাঁরা কেউ পরিবার সূত্রে কেউবা কোন ফার্মেসীর দোকান থেকে এবং কেউবা ৩/৬ মাসের কোর্স সম্পূর্ণ করে ডাক্তারি করে আসছে। কেউ আবার যুব উন্নয়ন থেকেও প্রশিক্ষণ গ্রহন করেছেন যদিও তা নিজস্ব খামারের জন্য প্রযোজ্য থাকার কথা ছিল। কিন্তু নিজের খামারে জন্য প্রশিক্ষণ নিয়ে ডাক্তারি পরিচয় বহন করে বেশ বহাল তবিয়তে চলছেন অনেকেই। যা বর্তমান সময়ের জন্য হুমকিস্বরূপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কেউ না জেনে এ রোগের জন্য এ্যান্টিবায়েটি ও ভেজাল ঔষুধ লিখে দিচ্ছেন যা পশুর জন্য হুমকিস্বরূপ এবং মৃত্যুও ঘটছে। এমনকি ভুল চিকিৎসার ফলে পশুকে মেরেও ফেলছেন। অথবা চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠিয়ে দিচ্ছেন কিন্তু ততক্ষণে পশুর অবস্থা হয়ে যায় আশঙ্কাজনক।

এনিয়ে উপজেলা ভারপ্রাপ্ত প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা: মো: সোহাগ রানা ‘ জানান, লাম্পি স্কিন ডিজিজিজ ১ থেকে ৬ মাস বসয়ী বাছুরের আক্রান্তের সংখ্যা বেশি। এটি ভাইরাসঘটিত হওয়ায় এ রোগের সুনির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা নেই। শুধু সচেতনতার মাধ্যমে এ রোগ নিয়ন্ত্রণ বা প্রতিরোধ করা সম্ভব। তবে এর পরেও যদি কোন প্রাণী আক্রান্ত হয়ে থাকে তবে প্রাথমিকভাবে অ্যান্টিপাইরেটিক বা অ্যান্টিহিস্টামিন দিয়ে চিকিৎসা করা যেতে পারে। আর আক্রান্ত প্রাণীর নডিউল বা গুটি ফেটে গেলে সিস্টেমিক এ্যান্টিবায়েটিক প্রয়োগ করা যেতে পারে। আক্রান্ত প্রাণীর ক্ষত স্থানে টিংচার আয়োডিন বা পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট দিয়ে সকাল বিকাল ধৌত করতে হবে। তাছাড়া প্রাণী খাওয়া বন্ধ করে দিলে নিয়মিত স্যালাইন খাওয়াতে হবে। আর এ রোগ নিয়ন্ত্রণে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে বিশেষ কয়েকটি টিম কাজ করছে বলে তিনি জানান। প্রয়োজনে উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর ও ভেটেরিনারি হাসপাতালে নিয়ে আসার এবং পশুকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন পরিবেশে রেখে সচেতন ও যত্নশীল হওয়ার পরামর্শ দেন তিনি।

এছাড়াও ওই সব একাডেমিক লাইসেন্সহীন, অদক্ষ, পল্লী পশু চিকিৎসক ও ফার্মেসীর বিরুদ্ধে আটোয়ারী উপজেলা প্রশাসনের সহযোগিতায় যৌথ অভিযান পরিচালনা করার আশ্বাস দেন তিনি।

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD