November 6, 2024, 10:39 am
মোঃ বাবুল হোসেন পঞ্চগড় : পঞ্চগড় সদর উপজেলায় জীনের বাদশা চক্রের খপ্পরে পড়ে শামিমা আকতার সোনিয়া (২৫) নামে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।
গভীর রাতে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তার মৃত্যু হয়।
খবর পেয়ে পঞ্চগড় সদর থানা পুলিশ হাসপাতালে গিয়ে প্রাথমিক সুরত হাল করার পরে ময়না তদন্ত করা হয় ওই নারীর।
জানা যায় সে পঞ্চগড় রেজিস্ট্রি অফিস সংলগ্ন ধাক্কামাড়া এলাকার মৃত সোলেমান আলীর মেয়ে।
সোনিয়ার পরিবার ও স্থানীয় সুত্রে জানায়,সোনিয়াকে প্রতিবেশী সোহেল ও আফরোজা দম্পত্তি বেশ কিছুদিন থেকে জীনের মাধ্যমে লাখ লাখ টাকা এবং সোনা গহনা দিবেন বলে আশ্বাস দিয়েছেন সোনিয়াকে।
সর্বশেষে গত শনিবার বিকেল তিনাটার দিকে সোহেল ও তার স্ত্রী আফরোজা বেগম মসজিদে বিভিন্ন ধরনের আমলের মাধ্যমে জীন টাকা দিবেন বলে সোনিয়াকে জানালে এক পর্যায়ে সোনিয়াকে বাড়ি থেকে বের করে নিয়ে যায়।
এ সময় সোনিয়াকে আমল শিখিয়ে দেওয়ার নামে জেলা শহরের উপকন্ঠে হিমালয় বিনোদন পার্কে নিয়ে যায়। সেখানেই কথিত ঔষধের গুলি খাওয়ানো হয় তাকে।
পরে সন্ধ্যার সময় পঞ্চগড় বাজারে সোনিয়ার বমি শুরু হলে সেখানে রেখে পালিয়ে যায় আফরোজা বেগম। খবর পেয়ে সোনিয়ার পরিবারের লোকজন সোনিয়াকে উদ্ধার করে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে রাতে ভর্তি করেন।চিকিৎসা অবস্থায় রাত আড়াইটার দিকে হাসপাতালে সোনিয়ার মৃত্যু হয়।
মৃতের ভাই মনিরুজ্জামান মুন্না হাসপাতালে জানান, আমার বোন সোনিয়ার মৃত্যুর জন্য দায়ী সোহেল ও তার স্ত্রী আফরোজা।
মুন্না আরো জানায় আমাকে চাকরি দেওয়ার নামে সোহেল এবং আফরোজা কয়েক লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়।
গতকাল জীনের কাছ থেকে টাকা পাইয়ে দেওয়ার নাম করে আমার বোনকে বাসা থেকে বের করে নিয়ে যায় আফরোজা।
পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার (আরএমও) ডা. তৌফিক আহমেদ জানান, অপরিচিত বিষক্রিয়া নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয় ওই নারী। ময়নাতদন্তের মাধ্যমে ক্যামিকেল রিপোর্ট পাওয়ার পর পুরো বিষয়টি জানা যাবে।
এদিকে অভিযুক্ত সোহেল পঞ্চগড় পৌরসভার লাইসেন্স পরিদর্শকের সহকারী। ঘটনার বিষয়ে জানতে গেলে প্রথমে তিনি কথা বলতে রাজী হয়নি। পরে সোহেল সাংবাদিকদের সামনে ঘটনার বিষয়ে সব অস্বীকার করে বলেন আমার স্ত্রী এমন কোন কাজের সাথে জড়িত নয়। এ সময় সোহেল নিউজ না করার জন্য সাংবাদিকদের অনুরোধ জানায়।
পঞ্চগড় পৌরসভার ৮ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জানান আসলে সোহেল আফরোজা দম্পতির বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ রয়েছে।
আমার এলাকায় জীনের বাদশার কোন কর্মকান্ড আমি সমর্থন করবোনা। আমি চাই জীনের বাদশা কর্মকান্ডে যে জড়িত থাকবে তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
পঞ্চগড় সদর থানার ওসি আব্দুল লতিফ মিঞা জানান এই ঘটনায় অপমৃত্যু মামলা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এবং পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে স্থানীয়দের মধ্যে বিষয়টি নিয়ে চাপা খোপ বিরাজ করছে।