July 12, 2025, 7:44 am
বি এম মনির হোসেনঃ-
বরিশাল জেলার আগৈঝাড়া উপজেলার চেংঙ্গুটিয়া গ্রামের পরিচ্ছন্নতা কর্মী শ্রবণ প্রতিবন্ধী হতদরিদ্র মান্নান ঘরামী দীর্ঘদিন যাবত একটি ঘরের অভাবে চার সন্তান নিয়ে মানবেতর জীবন যাপন করছিলেন। বিষয়টি স্থানীয় যুবকদের নজরে এলে তাঁরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে একটি নতুন ঘর করে দেবার ব্যাপারে প্রচারণা চালাতে থাকে। এই প্রচারণায় বিভিন্ন সহৃদয় ব্যক্তি, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি এবং বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের কাছ থেকে অভূতপূর্ব সাড়া মিলে। অবশেষে সকলের অনুদান ও স্বেচ্ছাসেবীদের শ্রমে প্রায় ২ লক্ষ টাকা ব্যয়ে নির্মাণ হয় একটি নতুন ঘর। বুধবার( ৮ই মার্চ) সকাল ১০টায় দোয়া ও মোনাজাতের মধ্য দিয়ে নবনির্মিত ঘরের শুভ উদ্বোধন ও নতুন ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয় করা। এ সময় উপস্থিত ছিলেন আগৈলঝাড়া উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মোঃ রফিকুল ইসলাম, ১ নং রাজিহার ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মোঃ ইলিয়াস তালুকদার, ধানডোবা মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এইচ. এম মানিক হাচান, আওয়ামী লীগ নেতা মোঃ জাকির তালুকদার, অনুদান সংগ্রহ ও ঘর নির্মাণ কাজের সমন্বয়ক লেখক ও সাংবাদিক সৈয়দ মাজারুল ইসলাম রুবেল, সহ-সমন্বয়ক সাংবাদিক আহাদ তালুকদার, টেলিকম ব্যবসায়ী সাইদুল ইসলাম, মোঃ রুহুল আমিন তালুকদার, ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম, মোঃ সুজন তালুকদার, মোঃ আনিস তালুকদার, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ইউনিটি ইয়ুথ অ্যাসোসিয়েশন এর প্রতিনিধি,গৌরনদী-আগৈলড়াঝা ওয়েলফেয়ার ট্রাস্ট এর প্রতিনিধি, ঢাকাবাসী চেংঙ্গুটিয়া কল্যাণ সমিতি এর প্রতিনিধি, নির্মাণ কাজে অংশগ্রহণকারী সকল স্বেচ্ছাসেবী, প্রতিবেশীসহ স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। উপস্থিত সকলেই অভিব্যক্তি ব্যক্ত করেন যে, হতদরিদ্র মান্নান ঘরামীর ঘরের জন্য যেভাবে সকলেই মানবিক সহায়তা নিয়ে এগিয়ে এসেছেন এটা একটা অনন্য দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। এভাবেই যদি মানুষ মানুষের পাশে এগিয়ে আসে তাহলে সমাজে ধনী-দরিদ্রদের বৈষম্য কমে আসবে। স্বেচ্ছাসেবীরাও যারা অনুদান পাঠিয়েছেন তাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে আগামী দিনগুলোতে এভাবে মানবিক কাজে নিজেদের আত্মনিয়োগ করার অঙ্গীকার করেন। উল্লেখ্য, হতদরিদ্র মান্নান ঘরামীর পুরনো ঘরে একটি ভাঙ্গা চৌকি, ৩টি পাতিল, ৫ থালা ছাড়া আসবাবপত্র বলতে কিছুই ছিল না। স্বেচ্ছাসেবীরা নতুন ঘরের পাশাপাশি একটি স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট নির্মাণ, আসবাবপত্র হিসেবে দুটি খাট, তোষক, বালিশ বিছানার চাদর, ফ্যান, সেলফ, চেয়ার টেবিলসহ প্রয়োজনীয় ক্রোকারিজ আইটেম, পরিবারের ৫ সদস্যদের জন্য নতুন জামা, কাপড়, প্যান্ট, পাঞ্জাবি, লুঙ্গি জুতো কিনে দেয়। ঘরের নামকরণ করা হয় পরিবারের সবচাইতে কনিষ্ঠ সদস্য জান্নাত এর নামানুসারে ‘জান্নাত ভিলা’। ৩রা ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ঘরের নির্মাণ কাজের শুরু হয়, ৮ ই মার্চ ২০২৩ আনুষ্ঠানিকভাবে ঘরের চাবি হস্তান্তর করা হয়।