মাগুরার শালিখায় জমি দখলে ব্যার্থ হয়ে জমির মালিকের বিরুদ্ধেই আদালতে মামলা

রক্সি খান।
মাগুরা প্রতিনিধি:-মাগুরার শালিখা উপজেলার কাতলী গ্রামে অন্যের জমি জোর পূর্বক দখলে ব্যার্থ হয়ে জমির মুল মালিকের বিরুদ্ধেই আদালতে দ্রুত বিচার আইনে মিথ্যা মামলা দায়ের করছে মনিরুজ্জামান (মনু) মিয়া নামের এক ভুমি দস্যু বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
লিখিত অভিযোগে অবসরপ্রাপ্ত স্কুল শিক্ষক আমীর আলী জানান, মনিরুজ্জামান মনু মিয়া গংদের অত্যাচার ও জুলুম নির্যাতনের শিকার হয়ে দীর্ঘ ২৫ বছর পূর্বে গ্রাম ছেড়ে মাগুরা শহরে চলে আসতে বাধ্য হন। গ্রামে পৈত্রিক ও ক্রয়সুত্রে কিছু জমি থাকায় বিভিন্ন সময়ে সেই সকল জমি দখলের পায়তারা করছে। বাধা দিলে বা আইনের আশ্রয় নিলে খুন জখম করার হুমকি দেয়। ইতি পূর্বে গ্রামের জমিজমা দেখতে গেলে আক্রমনের চেষ্টাও করেছে তারা। এ বিষয়ে শালিখা থানায় বেশ কয়েকটি সাধারন ডায়রি করা আছে।
কাতলী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় সংলগ্ন রাস্তার সাথে পুকুর পাড়ের ১২ শতকসহ পুকুরের দাগে প্রায় দুই একর জমি রয়েছে, যা আমি দীর্ঘ ৪০ বছর ধরে শান্তিপূর্ণভাবে ভোগ দখল করে আসছি। আমার জমির দক্ষীন পার্শ্বে মনু মিয়ার ৯ শতক জমি থাকলেও জমিতে প্রবেশের কোন রাস্তা না থাকায় রাস্তার জন্য আমার নিকট থেকে কিছু জমি দাবি করে। আমি সরল বিশ্বাসে আমার ভোগ দখলীয় ১২ শতক জমির পূর্ব পার্শ্ব হইতে ৪ শতক জমি পাশ উল্লেখ করে দলিল করে দিই। বাজার মুল্যে জমির দাম দেয়ার কথা থাকলেও জমি দলিল হওয়ার পর মনু মিয়া সমুদয় টাকা পরিশোধ না করায় পাওনা টাকা চাইতে গেলে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি ও হুমকি প্রদান করে।
আমি স্বপরিবারে মাগুরায় বসবাস করায় বিভিন্ন সময় আমার বর্গাদারদের ভয়ভীতি দেখিয়ে জমি দখলের চেষ্টা করে। গত ৮ জানুয়ারী সকালে মনিরুজ্জামান মনু মিয়াসহ সবুর, মহিন, জাকির ও কামরুল মিলে আমার বাকী ৮ শতক জমি দখল করার চেষ্টা করে। বর্গাদারদের মাধ্যমে সংবাদ পেয়ে মাগুরা থেকে গ্রামে এসে স্থানীয় গন্যমান্য ব্যাক্তিদের ও বর্গাদারদের সহযোগিতায় ও সংবাদ পেয়ে শালিখা থানা পুলিশ ঘটনা স্থলে পৌছালে জমি দখল করতে আসা ব্যক্তিরা পালিয়ে যায়। পরে কয়েক জন দিন মজুর কে নিয়ে আমি আমার জমি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন করে রেখে মাগুরায় ফিরে এসে আমার ছেলে মাসুম বিল্লাহ কে বাদি করে ১৪৪/১৪৫ ধারায় আদালতে মামলা করি। ২০২১ সালেও একই জমি দখলের চেষ্টা করলে নিজে বাদি হয়ে ১৪৪/১৪৫ ধারায় মামলা করি। এ মামলায় আদালত শালিখার সহকারী কমিশনার ভ’মিকে সরোজমিন তদন্ত করে প্রতিবেদন দাখিলের জন্য নির্দেশ দেন। তদন্তে প্রতিবেদনে শতখালী ইউনিয়ন ভুমি কর্মকর্তা দাউদ হোসেন প্রতিবেদন প্রদান করেন।
১০ ফেব্রæয়ারী শালিখা থানার সাব ইন্সেপেক্টর ইমরান হোসেন তদন্তে করতে আসলে জানতে পারি ভুমি দস্যূ মনিরুজ্জামান মনু মিয়া বাদি হয়ে দ্রæত বিচার আইনে আমি ও আমার জমি বর্গাচাষীদেরসহ ও ৮ জানুয়ারী যাদের কে শ্রমিক হিসাবে কাজে নিয়েছিলাম তাদেরকেও আসামী করে আদালতে মিথ্যা মামলা করেছে। আদালত মামলাটি তদন্তের জন্য শালিখা থানাকে দায়িত্ব দিয়েছেন।
এ ব্যাপারে সরেজমিনে গিয়ে মনিরুজ্জামানের বড় ভাই আবু সাইদ ঠান্ডুর সাথে কথা হলে তিনি জানান, আমীর আলী কাকার জমির দক্ষীনে আমার ছোট ভাই মনু মিয়ার অল্প কিছু জমি থাকলেও জমিতে প্রবেশের কোন পথ ছিল না। জমিতে যাতায়তের জন্য আমাদের সকলের অনুরোধে আমীর আলী কাকা আমার ছোট ভাই মনু মিয়াকে ৪ শতক জমি দলিল করে দেন। আমীর আলী কাকার দেয়া ৪ শতক জমিতে আমার ছোট ভাই বাড়ি নির্মান করে পশ্চিম পাশের বাকী ৮ শতক জমি এখন জোর পূর্বক দখল করার ষড়যন্ত্র করছে যা অন্যায়।
আনোয়ার মজুমদার জানান, আমীর আলী মাষ্টার ২৫/২৬ বছর গ্রাম ছেড়ে মাগুরায় চেলে গেছেন। তার কিছু জমি আমি ৫ বছর ধরে বর্গা চাষ করি। এর আগে আমার মামাতো ভাই লাভলু ও রাজ্জাক ঢালী প্রায় ১৫ বছর চাষাবাদ করতো। গ্রামে না থাকার জন্য মনু মিয়া ও কামরুলরা প্রায়ই আমীর আলী কাকার জমি দখল করার চেষ্টা করে। আমরা যাতে জমি চাষ না করি সেই জন্য বর্গাদারদের নামেও মামলা করেছে বলে শুনছি।
তবে এ ব্যাপারে মনিরুজ্জামানের মুঠোফোনে আদালতে দ্রæত বিচার আইনে মামলা করেছেন কি না জানতে চাইলে তিনি পিলাউড মিলে ডিউটিতে রয়েছেন এখন কথা বলতে পারবো না বলে সংযোগ বিছিন্ন করে মোবাইল সেট বন্ধ করে দেন।

রক্সী খান
মাগুরা প্রতিনিধি।।

Comments

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *