September 18, 2024, 7:37 am

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
সেনবাগে উপজেলা জাতীয় পার্টির প্রয়াত নেতাদের স্মরণে শোকসভা অনুষ্ঠিত এতোদিন শেখ হাসিনার ষড়যন্ত্রের প্রতিহত করেছি এখন অদৃশ্য ষড়যন্ত্রকারীদের মোকাবিলা করতে হবে- গয়েশ্বর চন্দ্র রায় ঝিনাইদহে পুলিশ অফিসারের গাড়িতে মিলল ১২০১ বোতল ফেনসিডিল কোন বে-নামাজি লোক মসজিদের সভাপতি থাকতে পারবেন না। জামায়াতের নায়েবে আমীর মুজিবুর রহমান ধামইরহাটে জেসি বান্ধব গ্রীন স্কুল ঘোষণা ও অগ্রগতি উদযাপন সংস্কার শেষে নির্বাচন দিয়ে ক্ষমতা হস্তান্তর করা হবে: উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সাভারে বহুল আলোচিত শিক্ষার্থী রোহান হত্যা মামলা ৩ বছর পর সিআইডিতে হস্তান্তর যশোরের ঝিকরগাছায় সড়ক দু*র্ঘটনায় যুবক নিহ*ত খাগড়াছড়িতে ছাত্র জনতার উদ্যোগে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত মোরেলগঞ্জে ঘের বিরোধে একই পরিবারের গৃহিনীসহ ৩ জনকে পি*টিয়ে জ*খম
কুকুরের কামড়ে শুধু আহত নয়, আছে নিহত হওয়ার ঘটনাও

কুকুরের কামড়ে শুধু আহত নয়, আছে নিহত হওয়ার ঘটনাও

মোঃ রাসেল সরকার: ঢাকার সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে জলাতঙ্কের টিকা নিতে আসা মানুষের সংখ্যা বছরে প্রায় দেড় লাখ ছুঁই ছুঁই। এর মধ্যে সিংহভাগই আসছেন কুকুরের কামড় খেয়ে। পাশাপাশি বাড়ছে বিড়ালের আঁচড়ের শিকার মানুষের সংখ্যাও। ফলে ২০৩০ সালের মধ্যে সরকারের জলাতঙ্কে মৃত্যু শূন্যে নামানোর যে লক্ষ্য, সেটি পূরণ হবে কি না তা নিয়ে তৈরি হয়েছে সংশয়।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার (সিডিসি) জুনোটিক ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের তথ্যমতে, বাংলাদেশে বছরে গড়ে ৪০-৫০ জন রোগীর মৃত্যু হয় জলাতঙ্কে। শুধু মানুষই নয়, প্রতি বছর প্রায় ২৫ হাজার গবাদিপশুও জলাতঙ্কে আক্রান্ত হয়। গত দশ বছরের মধ্যে ২০১৪ সালে সর্বোচ্চ ১০৬ জন মানুষ জলাতঙ্কে মারা যান বলে জানায় সিডিসি।

কুকুর-বিড়ালের কামড়ের শিকার হচ্ছেন মূলত দুইভাবে। রাস্তা-ঘাটে বেওয়ারিশ কুকুর-বিড়ালের মাধ্যমে এবং ঘরে পোষা প্রাণীর মাধ্যমে। তবে বেওয়ারিশ কুকুরের আক্রমণের শিকার হওয়া মানুষের সংখ্যাই বেশি।

মহাখালী জাতীয় সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালে গিয়ে দেখা যায়, রাজধানীর উত্তর বাড্ডা থেকে সাড়ে তিন বছরের শিশুসন্তান শিহাবকে কোলে নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন শহিদুল ইসলাম শহীদ। শিশু শিহাব বাসার সামনে কুকুরের বাচ্চা নিয়ে খেলা করছিল। মা কুকুর এসে শিহাবের হাতে কামড় দেয়। তিনি বলেন, ছেলেকে নিয়ে তিনদিন টিকা দিতে আসছি। প্রথম দিন দুই হাতে দুটি ও পায়ে একটি, দ্বিতীয় দিনেও তিনটি টিকা দেয়। তৃতীয় দিন দিয়েছে দুটি টিকা।

কুকুরের কামড়ে শুধু আহত নয়, আছে নিহত হওয়ার ঘটনাও। গত বছরের ১৪ ডিসেম্বর দুপুরের দিকে রাজধানীর মুগদা থানাধীন মান্ডা প্রথম গলি এলাকায় কুকুরের কামড়ে আলামিন (৩) নামে তিন বছর বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়। বাসার সামনে খেলার সময় কুকুর কামড়ায় তাকে।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার (সিডিসি) জুনোটিক ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের কর্মকর্তারা জানান, ২০১৮ সালে সারাদেশে জলাতঙ্কের টিকা নেন ২ লাখ ৫৩ হাজার ৪০৯ জন। একই সঙ্গে ৪ লাখ ৬৮ হাজার ৯৩৭টি কুকুরকে টিকার আওতায় আনা হয়। আর একই বছর জলাতঙ্কে মারা যান ৫৭ জন।

২০১৯ সালে টিকা নেন দুই লাখ ৫৩ হাজার ৮৬১ জন। একই সঙ্গে ৫ লাখ ৬৫ হাজার ১৫৯টি কুকুরকে টিকার আওতায় আনা হয়। একই বছর জলাতঙ্কে মারা যান ৫৭ জন। ২০২০ সালে টিকা নেন এক লাখ ৫২ হাজার ১৪ জন। একই সঙ্গে তিন লাখ ৬৯ হাজার ৪০৮টি কুকুরকে টিকার আওতায় আনা হয়। একই বছর জলাতঙ্কে মারা যান ২৬ জন।

২০২১ সালে টিকা নেন দুই লাখ ৭৮ হাজার ৬২৩ জন। একই সঙ্গে চার লাখ ১৩ হাজার ৮২৭টি কুকুরকে টিকার আওতায় আনা হয়। জলাতঙ্কে মারা যান ৪০ জন। সবশেষ ২০২২ সালের জুলাই পর্যন্ত টিকা নেন ৪ লাখ ১০ হাজার ৫৬ জন। একই সঙ্গে এক লাখের বেশি কুকুরকে টিকার আওতায় আনা হয়। মারা যান ২৪ জন। গত ১০ বছরে ২৭ লাখ ৯২ হাজার ৮২১ জন মানুষকে জলাতঙ্কের টিকা দেওয়া হয়েছে। টিকার আওতায় আনা হয়েছে ২৪ লাখ কুকুর।

কুকুরের টিকাদান : স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখার (সিডিসি) জুনোটিক ডিজিজ কন্ট্রোল প্রোগ্রামের তথ্যমতে, জলাতঙ্ক রোগের প্রধান বাহক কুকুর। কুকুরের জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধ করে মানুষ ও অন্য প্রাণীকে নিরাপদ করা সম্ভব। বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত যে কোনো দেশ বা এলাকায় শতকরা ৭০ শতাংশ কুকুরকে ব্যাপকহারে জলাতঙ্ক টিকা দেওয়া হলে তাদের হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হয়। তিন বছরে সঠিকভাবে পরপর তিন রাউন্ড জলাতঙ্ক টিকা দেওয়া হলে ওই এলাকা বা দেশ জলাতঙ্ক মুক্ত করা সম্ভব। এ ধারণার আলোকে বাংলাদেশের জলাতঙ্ক রোগ নির্মূল কার্যক্রমের প্রাথমিক সময় (২০১২-১৩ সাল) থেকে ব্যাপকহারে কুকুরের টিকাদান কার্যক্রম শুরু করা হয়, তা এখনো চালু আছে।

দেশের সব জেলায় প্রথম রাউন্ড, ২৫টি জেলায় দ্বিতীয় রাউন্ড এবং সিরাজগঞ্জ, গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, মাদারীপুর, নীলফামারী, পাবনা, গাইবান্ধা ও ঢাকা জেলায় তৃতীয় রাউন্ড টিকাদান কার্যক্রমের আওতায় প্রায় ২৫ লাখ ৩৩ হাজার ডোজ জলাতঙ্ক রোগ প্রতিরোধী টিকা দেওয়া হয়েছে।

কুকুরের বন্ধ্যত্বকরণ কর্মসূচি : গত ২৫ জানুয়ারি ‘কুকুর বন্ধ্যত্বকরণ কর্মসূচির’ উদ্বোধন করেন ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। এদিন ১০টি কুকুর বন্ধ্যত্বকরণ কার্যক্রমের আওতায় আনা হয়। ঢাকা দক্ষিণ সিটির আওতাধীন বিভিন্ন এলাকায় প্রতিদিন ১০টি করে কুকুর বন্ধ্যত্বকরণ করা হবে। বন্ধ্যা কুকুরগুলো চিহ্নিত করার সুবিধার্থে সেগুলোর কান ফুটো এবং ঘাড়ে নীল (স্থায়ী রং) স্প্রে করে দেওয়া হবে।

দীর্ঘদিন ধরে নজর না দেওয়ায় বেওয়ারিশ কুকুরের সংখ্যা ক্রমেই বেড়েছে বলে জানান মেয়র তাপস। তিনি তথ্য দেন, দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় ৫০ হাজারের বেশি বেওয়ারিশ কুকুর রয়েছে।

কোথায় কীভাবে পাবেন টিকা : বিনামূল্যে জলাতঙ্কের টিকা দেয় সরকার। হাসপাতালে যাওয়ার পর চিকিৎসক ক্ষতস্থান দেখে টিকা দেন। টিকা নিতে হাসপাতালে যাওয়া লাগে সপ্তাহখানেক। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মাধ্যমে সারাদেশের জেলা হাসপাতাল ও কিছু উপজেলা হাসপাতাল পর্যায়ে জলাতঙ্ক নিয়ন্ত্রণ ও প্রতিরোধ কেন্দ্র পরিচালিত হচ্ছে। এছাড়া রাজধানীর মহাখালীতে সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতাল, কামরাঙ্গীরচর ৩১ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালসহ পাঁচটি সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে জলাতঙ্কের আধুনিক চিকিৎসা কার্যক্রম পরিচালিত হয়।

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মো. জোবায়দুর রহমান বলেন, উত্তর সিটি করপোরেশনে প্রায় ৩০ হাজার বেওরারিশ কুকুর রয়েছে। এর মধ্যে প্রায় ২২ হাজার কুকুরকে জলাতঙ্ক প্রতিরোধক টিকা দেওয়া হয়েছে। বাকি আট হাজার কুকুরকেও পর্যায়ক্রমে টিকার আওতায় আনা হবে।

জাতীয় সংক্রামক ব্যাধি হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক ডা. মোহাম্মদ মিজানুর রহমান বলেন, প্রতিদিন তিন থেকে চারশ রোগীকে টিকা দেওয়া হয় শুধু এই হাসপাতাল থেকে। সরকারি ছুটির দিনসহ সপ্তাহে সাতদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত প্রতিদিন বিনামূল্যে সেবা দেওয়া হয়। অন্য প্রাণীর তুলনায় কুকুরে কামড়ানো রোগী বেশি আসে।

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD