April 16, 2024, 10:54 am

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
মুন্সীগঞ্জে বাংলাদেশ সমাচার মু্ন্সীগঞ্জ প্রতিনিধি ছেলে না ফেরার দেশে চলে গেলেন সুজানগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান পদে ২ জন ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৮ প্রার্থীর মনোনয়নপত্র দাখিল সুজানগর উপজেলা আ.লীগের সভাপতি আব্দুল ওহাব এর পিতার দাফন সম্পন্ন নড়াইলের সুলতান মঞ্চ চত্বরে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে ১৫ দিনব্যাপী সুলতান মেলার উদ্বোধন গোদাগাড়ীতে ট্রাকে টোল আদায়ের নামে চাঁদাবাজি, আটক ২ চড়ক পুঁজা নিয়ে গোলযোগ প্রতিপক্ষের লাঠির আঘাতে যুবক নিহত পাইকগাছায় মটরসাইকেলের ধাক্কায় বৃদ্ধ নিহত ; চালক আহত একজন কিডনি রোগীকে বাঁচানোর জন্য সাহায্যের আবেদন পাইকগাছায় চড়ক পূজা, চৈত্র সংক্রান্তি মেলা ও বৈশাখী উৎসব অনুষ্ঠিত পাইকগাছায় ঈদে বোয়ালিয়া ব্রীজে দর্শনার্থীদের উপচে পড়া ভিড়
বেপরোয়া বাস-বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা: নামে বে-নামে কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজি

বেপরোয়া বাস-বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা: নামে বে-নামে কোটি কোটি টাকা চাঁদাবাজি

হেলাল শেখঃ মানিকগঞ্জের আরিচা, পাটুরিয়া-ঢাকার নবীনগর, আশুলিয়ার বাইপাইল-টঙ্গী সড়কে বেপরোয়া বাস চলাচল করায় বাড়ছে সড়ক দুর্ঘটনা। একদিকে রাস্তার দুইপাশে যানজট সৃষ্টি করে গাড়ি থামিয়ে চাঁদা আদায় করা হয়। অন্যদিকে ফুটপাতসহ বিভিন্ন সরকারি জমি ও রাস্তা দখল করে কোটি টাকা চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে সন্ত্রাসী চাঁদাবাজদের বিরুদ্ধে। সেই সাথে বিভিন্ন রোডে অবাধে চলছে অবৈধ গাড়ি-সিএনজি, মাহিন্দ্রা, তিন চাকা ও লাইসেন্সবিহীন, ফিটনেসবিহীন অবৈধ যানবাহন। সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের উদাসীনতায় প্রতি মাসে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার।
গত শুক্রবার ও শনিবার সরেজমিনে গিয়ে জানা গেছে, ঢাকার টঙ্গী থেকে পুরাতন আশুলিয়া, জিরাবো ও সরকার মার্কেট, জামগড়ার ছয়তলা, ইউনিক, পল্লীবিদ্যুৎ, নবীনগর থেকে জিরানী পর্যন্ত মহাসড়কে এবং নবীনগর থেকে পাটুরিয়া, আরিচাসহ বিভিন্ন রোডের বাসগুলো বেপরোয়া ভাবে চালায়, কার আগে কে যাবে আর স্টাফদের সাথে বিবাদ ও মারামারি লেগেই থাকে, সেই সাথে ফুটপাত হকারদের দখলে এবং লাইসেন্সবিহীন যানবাহন থেকে কিছু দালাল ও কিছু পুলিশ সদস্যরা মোটা অংকের চাঁদাবাজি করে। মহাসড়ক ও হাইওয়ে সড়কের পাশে ফুটপাত দখল করে গাড়ি পার্কিং দোকানপাট বসিয়ে পুলিশ ও পাটুরিয়া-ঢাকা মালিক সমিতি কর্তৃক দালাল চাঁদাবাজদের প্রতিটি সেলফি পরিবহণের গাড়ি ২৫০০/ টাকা দিতে হয় বলে এক চালক জানান।
বাংলাদেশ পুলিশের ট্রাফিক বিভাগের একজন (টিআই) ফরিদুল ইসলাম অভিমত প্রকাশ করে বলেন, বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ যানবাহনের ডকুমেন্ট হাল নাগাদ সঠিক ভাবে করতে দায়িত্ব কর্তব্য পালন করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা কিন্তু প্রতি বছর লক্ষ লক্ষ যানবাহনের ডকুমেন্ট হাল নাগাদ না করে অবৈধভাবে বিশৃঙ্খলার মধ্যে অবৈধ যানবাহন চলছে সড়ক, মহাসড়কের সর্বত্র। ফলশ্রুতিতে জনগণ নানাবিধ সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন আর সরকার হাজার হাজার কোটি টাকা রাজস্ব থেকে বি ত হচ্ছে বিষটি অতি গুরুত্বপূর্ণ হিসাবে বিবেচনায় আনতে বিশেষভাবে সবিনয় বিনীত অনুরোধ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদেরকে। ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা ফরিদুল ইসলাম আরও বলেন, ঢাকা মহানগরসহ সারাদেশে ট্রাফিক ব্যবস্থা সুশৃঙ্খল করতে সক্ষম হলে বাংলাদেশের জনগণ তথা বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত লোকের মধ্যে বাংলাদেশ সম্পর্কে পজিটিভ ধারণা আসবে। ফলশ্রুতিতে দেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ অনেক বেশি আসবে। ফলশ্রুতিতে দেশে বৈদেশিক বিনিয়োগ আসলে অর্থনৈতিক উন্নতি টেকসই উন্নয়ন নিশ্চিত হবে এবং বেকার সমস্যা দূর করতে সক্ষম হবে সরকার। মানুষের চলাচলে নিরাপত্তা খুঁজে পাবে এবং নিরাপদ সড়ক বিনির্মাণে এক ধাপ এগিয়ে যেতে সক্ষম হবে। সেই সাথে সড়কের ফুটপাত দখলমুক্ত করা জরুরি।
সরেজমিনে গিয়ে জানা যায়, আশুলিয়ার নবীনগর পল্লী বিদ্যুৎ ও বাইপাইল, ইউনিক, জামগড়ার ছয়তলা ও সরকার মার্কেটসহ বিভিন্ন সড়কের পাশে ফুটপাত দখলমুক্ত করতে পারেনি সংশ্লিষ্ট প্রশাসন। অন্যদিকে ট্রাফিক পুলিশ ক: জহির ও মেহেদী, গোলাপ, শাহিন, বাবুলসহ কয়েকজন দালাল কর্তৃক তিন চাকা গাড়ি প্রতি ১ হাজার টাকা থেকে শুরু করে ৩ হাজার টাকা মাসিক চুক্তিতে চাঁদা আদায় করছে, পুরাতন আশুলিয়ায় ট্রাফিক পুলিশ সদস্য জহির সিএনজিসহ বিভিন্ন গাড়ি থেকে মাসিক চাঁদা উঠায়, তা মোটা অংকের বলে অনেকেই জানায়। সেই সাথে রাজনৈতিক নেতার পরিচয় ব্যবহার করে সন্ত্রাসী চাঁদাবাজরা বিভিন্ন ফুটপাতে চাঁদা আদায় করে। কিছু ফুটপাতের দোকানদার ব্যবসার আড়ালে চাঁদা উঠায় এমন অভিযোগও রয়েছে। সূত্র জানায়, দেশের অন্যদিকে সিলেট সদরের আম্বরখানাসহ বিভিন্ন এলাকার সড়ক থেকে প্রতি বছরে প্রায় ২ কোটি টাকার চাঁদা আদায় করে সন্ত্রাসী চাঁদাবাজরা। এদিকে ভৈররের বিভিন্ন এলাকায় সাড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার সিএনজি চালকদের কাছ থেকে প্রতি বছর ১ কোটি টাকার বেশি চাঁদা আদায় করে চাঁদাবাজরা। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জসহ বিভিন্ন এলাকায় সন্ত্রাসী চাঁদাবাজরা একদিকে যানবাহন থেকে চাঁদা নিয়ে থাকে, অন্যদিকে ফুটপাত থেকে লাখ লাখ টাকা চাঁদা আদায় করে বলে অভিযোগ উঠেছে।আশুলিয়ার বিভিন্ন স্পট ও ফুটপাত দখল করে রেখেছে প্রভাবশালীদের ছত্রছায়ায় চাঁদাবাজরা। পল্লীবিদ্যুৎ রোড থেকে জিরানী বাজার পর্যন্ত এবং বাইপাইল থেকে আব্দুল্লাহপুর পর্যন্ত এবং বিভিন্ন রাস্তার দুপাশের ফুটপাত দখল করে নামে বে-নামে ব্যাপক চাঁদাবাজির অভিযোগ উঠেছে। পরিবহন থেকেও প্রতিদিন ও মাসিক চাঁদা আদায় করার অভিযোগও রয়েছে অনেকের বিরুদ্ধে। সেই সাথে রাজধানীর মিরপুরের দারুসসালাম এলাকার ছোট দিয়াবাড়ী বেড়িবাঁধে অবৈধভাবে ঘাট বসিয়ে প্রতিদিন লাখ লাখ টাকার চাঁদাবাজি করা হচ্ছে। এসব এলাকার রাস্তার দুইপাশে বাজার বসিয়েও মোটা অংকের টাকা চাঁদাবাজি করছে স্থানীয় প্রভাবশালী সন্ত্রাসীরা। জানা গেছে, সরকারি কোনো প্রকার ইজারা ছাড়াই বছরের পর বছর ধরে স্থানীয় একাধিক চক্র ও কিছু অসাধু পুলিশ সদস্য কর্তৃক চাঁদাবাজি করে আসছে। শুধু বেড়িবাঁধ থেকেই চাঁদা নিয়ে ক্ষ্যন্ত হয়নি তারা, কার্গো জাহাজ ভেড়ানোর জন্য তৈরি করেছে ল্যান্ড ষ্টেশনও। সেখানে মালবাহী ট্রাক লোড-আনলোডের ক্ষেত্রেও ইচ্ছেমতো চাঁদা নেয়া হচ্ছে। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) ল্যান্ড ষ্টেশন থাকলেও অদৃশ্য কারণে তৈরি ল্যান্ড ষ্টেশনই ব্যবহার করা হচ্ছে।
এদিকে ঢাকা জেলার আশুলিয়া থানাধীন নবীনগর, পল্লীবিদ্যুৎ, বাইপাইল থেকে জিরানী বাজার পর্যন্ত এবং ভাদাইল, ইউনিক বাজার, শিমুলতলা, ইয়ারপুর ইউনিয়নের জামগড়া চৌরাস্তা-ছয়তলা, নরসিংহপুর, জিরাবো, পুরাতন আশুলিয়া পর্যন্ত সড়কের রাস্তার দুইপাশে ফুটপাত দখল করে স্থাপনা তৈরি করে দোকান ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে প্রভাবশালী মহল। সেই সাথে উক্ত এলাকায় গাড়ি থেকে চাঁদাবাজি করেন জহির নামের এক পুলিশ সদস্য। জানা যায়, বিভিন্ন ক্রাইম স্পট থেকে পুলিশকে প্রতি মাসে মোটা অংকের টাকা চাঁদা উঠিয়ে দেয় এড়িয়াভিত্তিক মার্কেটের মালিক পক্ষের লোকজন। সচেতন মহল ও স্থানীয়দের অভিযোগ, সাভার, আশুলিয়ার সড়ক ও মহাসড়কে এবং তুরাগপাড়ের বেড়িবাঁধের রাস্তার উপরের দুপাশে বিভিন্ন দোকান, লেগুনা ষ্ট্যান্ড বসিয়েও চাঁদাবাজি করে আসছে প্রভাবশালী এই চক্রগুলো। বছরের পর বছর উল্লেখ্য এলাকার মানুষজনকে একপ্রকার জিম্মি করেই অবৈধ কর্মকান্ড করে আসছে প্রভাবশালীরা। চাঁদাবাজ চক্রের সাথে কিছু জনপ্রতিনিধি রাজনৈতিক নেতা জড়িত রয়েছে বলেও অনেকেই জানান। জানা গেছে, রাজধানীর গাবতলী মাজার রোড হয়ে দারুসসালাম থানা রোড ও থানার সামনে দিয়ে ছোট সরু রাস্তা থেকে কিছু দূর গেলেই তুরাগ নদীর পাড় এলাকাটির নাম ছোটদিয়াবাড়ী । তুরাগ নদীর এ পাড়ের অংশ ছোট দিয়াবাড়ী, উপরের অংশ কাউন্দিয়া। এই পারের অংশের বাম দিকে গাবতলী আর ডান দিকে বেড়িবাঁধ রাস্তা। যা আশুলিয়া ও উত্তরার দিকে চলে গেছে। তুরাগের বাঁধঘেষা ছোট দিয়াবাড়ী মোড়টিকে পুঁজি করেই চক্রটি মূলত বিশাল চাঁদাবাজির ক্ষেত্র গড়ে তুলেছে। দেখা যায়, বাঁধ সংলগ্ন রাস্তাটি বেশ চওড়াই কিন্তু দুপাশে দখলের কারণে এটি ছোট হয়ে এসেছে। দুপাশের অবৈধভাবে গড়ে তোলা হয়েছে ছোট বড় শত শত দোকান। দারুসসালাম রোড থেকে বাঁধে উঠার সংযোগ সড়কের দুপাশের রাস্তা দখল করে বাঁশের আড়ৎ দেওয়া হয়েছে। এককালীন লাখ টাকা, পরে ১৫-২০ হাজার টাকার বিনিময়ে এটি ভাড়া দেওয়া হয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দোকানিরা বলেন, তারা জায়গাটি ভাড়া নিয়েছেন হাজি জহিরের কাছ থেকে। তারা বলেন, এককালীন হিসেবে প্রায় লাখ খানেকের মতো টাকা দিয়েছেন আর প্রতি মাসে ১০হাজারের মতো টাকা ভাড়া দেন। হাজী জহির মোবাইল ফোনে বলেন, তিনি অসুস্থ বলে বিষয়টি এড়িয়ে যান, এ বিষয়ে কথা বলতে পারবেন না বলে জানান। নৌপরিবহন মন্ত্রী খালেদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, এ বিষয়টি নজরে আসেনি আমাদের। এখন তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
এ ব্যাপারে মানিকগঞ্জ জেলা ডিবি পুলিশের সাব-ইন্সপেক্টর মোঃ আসাদ মিয়া বলেন, এর আগে সড়কে ও গাড়িতে চাঁদাবাজির সময় কয়েকজনকে আটক করা হলেও আদালত থেকে তারা জামিনে এসে আবারও চাঁদাবাজি করছে। এদিকে সিএনজি ও অবৈধ গাড়ির চালকরা অনেকেই বলেন, জহির পুলিশ প্রতি একটা সিএনজি’র মালিকের ১ হাজার টাকা দিতে হয় আর বড় গাড়ি থেকে ২ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা প্রতি মাসে দিতে হয় জহির পুলিশকে। যিনি আশুলিয়ায় ডিউটি করেন, চাঁদাবাজি অভিযোগের বিষয়ে পুলিশ সদস্য কঃ জহিরের কাছে মোবাইল ফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কিছুই জানিনা। ঢাকা জেলার সাভার ট্রাফিক জোন পুলিশের আমিনবাজার পুলিশ বক্সের অফিসার ইনচার্জ (টিআই) সোহেল এর কাছে সড়কে যানজটের কারণ ও চাঁদাবাজির বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সাভার ও আমিনবাজার ফুটপাত দখলমুক্ত করেছেন সংশ্লিষ্ট প্রশাসন, অবৈধ গাড়ি রোডে বেশি চলাচল করায় যানজটের সৃষ্টি হয়, তবে মাঝে মধ্যে অভিযান চালিয়ে অটো রিক্সা, মাহিন্দ্রাসহ অবৈধ তিন চাকা গাড়ি আটক করে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে বলেও তিনি জানান। নবীনগরের (টিআই) আতিকুর রহমান বলেন, আমি বাহিরে আছি।

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD