April 23, 2024, 7:04 pm

বিজ্ঞপ্তি :
বিশেষ সতর্কীকরন - "নতুন বাজার পত্রিকায়" প্রকাশিত সকল সংবাদের দ্বায়ভার সম্পুর্ন প্রতিনিধি ও লেখকের। আমরা আমাদের প্রতিনিধি ও লেখকের চিন্তা মতামতের প্রতি সম্পুর্ন শ্রদ্ধাশীল। অনেক সময় প্রকাশিত সংবাদের সাথে মাধ্যমটির সম্পাদকীয় নীতির মিল নাও থাকতে পারে। তাই যেকোনো প্রকাশিত সংবাদের জন্য অত্র পত্রিকা দায়ী নহে। নতুন বাজার পত্রিকা- বাংলাদেশের সমস্ত জেলা, উপজেলা, ক্যাম্পাস ও প্রবাসে প্রতিনিধি নিয়োগ চলছে! বিস্তারিত: ০১৭১২৯০৪৫২৬/০১৯১১১৬১৩৯৩
শিরোনাম :
কেশবপুরে বিএনপি নেতা পৌর কাউন্সিলর ব্যক্তিগত উদ্যোগে ৪ হাজার পিচ স্যালাইন বিতরণ কেশবপুর উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে প্রতীক বরাদ্ধ,কে কোন প্রতীক পেল তানোরে ময়নার স্মরণকালের সর্ববৃহত শোডাউন গোদাগাড়ীতে সাড়ে ৬ কেজি হেরোইনসহ মাদক সম্রাট ঝাবু গ্রেফতার পাইকগাছায় ৬ কিলোমিটার সড়ক বদলে দিয়েছে লতা ইউনিয়নের যোগাযোগ ব্যবস্থা তীব্র তাপদাহে স্বরূপকাঠির জন জীবন অতীষ্ট বেড়েছে ডায়রিয়ার প্রকোপ শয্যা সংকটে মেজেতে বসে চিকিৎসা নিচ্ছেন রোগিরা সাভারের রানা প্লাজা ট্রাজেডির সেই ভয়াবহ দিবসটি হাজারো মানুষের মৃত্যুর ইতিহাস হাতীবান্ধায় ইস্তিসকার নামাজ আদায় বৃষ্টির আশায়  ভাবখালী আউলিয়ার বাজারের জলাবদ্ধতা নিরসনে আরসিসি ড্রেন নির্মাণ কাজের উদ্বোধন মুন্সীগঞ্জে টঙ্গীবাড়ী উপজেলায় দুই চেয়ারম্যান এবং দুই ভাইস চেয়ারম্যান প্রার্থীর মনোনয়ন পত্র অবৈধ
পাইকগাছা থেকে ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে জেলেদের সমুদ্রযাত্রা

পাইকগাছা থেকে ঋণের বোঝা মাথায় নিয়ে জেলেদের সমুদ্রযাত্রা

ইমদাদুল হক,পাইকগাছা,খুলনা।।
আগামী ১লা নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে দুবলার চরের শুঁটকি মৌসুম ।জীবনের ঝুঁকি ও ঋণের বোঝা নিয়ে মৎস্য আহরণে সমুদ্রে যাত্রা করছে জেলারা। করোনায় মানবেতর জীবন যাপন করতে থাকা জেলেরা সমুদ্রে মৎস্য আহরণকে ঘিরে নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখছে । ঘুরে দাঁড়ানোর আশায় জীবনের ঝুকি নিয়ে চলেছে উপকূলের জেলে-মহাজনেরা। সাগরে যেতে যে যার মত প্রস্তুত করছেন জাল, দড়ি, নৌকা-ট্রলার। কেউ কেউ গড়ছেন নতুন ট্রলার, আবার কেউ পুরাতন নৌকা মেরামত করে নিয়েছেন। প্রস্তুতি অনুযায়ী অনেকেই আগেভাগে রওনা দিচ্ছেন।
খুলনা জেলার মধ্যে পাইকগাছা উপজেলা থেকে সব সবচেয়ে বেশি সংখ্যক জেলেরা দুবলার চরে মাছ আহরণ করতে যান। মৌসুমের শুরুতে দাদনদারদের কাছ থেকে চড়া সুদে ঋণ নিয়ে জেলারা তৈরী করেন মাছ ধরার বহর। এবছর উপজেলার বোয়ালিয়া, হিতামপুর, মাহমুদকাটী, নোয়াকাটি, কপিলমুনি, কাটিপাড়া, রাড়ুলী, শাহাপাড়া, বাঁকাসহ বিভিন্ন গ্রামের জেলে পল্লী থেকে অন্তত আড়াই’শ ট্রলার সমুদ্রে মাছ ধরার জন্য যাত্রা করেছে।দুবলার চর বাংলাদেশ অংশের সুন্দরবনের দক্ষিণে, কটকার দক্ষিণ-পশ্চিমে এবং হিরণ পয়েন্টের দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত একটি দ্বীপ যা চর নামে হিন্দুধর্মের পূণ্যস্নান, রাসমেলা এবং হরিণের জন্য বহুল পরিচিত। কুঙ্গা ও মরা পশুর নদের মাঝে এটি একটি বিচ্ছিন্ন চর। এই চরের মোট আয়তন প্রায় ৮১ বর্গমাইল। আলোরকোল, হলদিখালি, কবরখালি, মাঝেরকিল্লা, অফিসকিল্লা, নারকেলবাড়িয়া, ছোট আমবাড়িয় এবং মেহের আলির চর নিয়ে দুবলার চর গঠিত।
দুবলার চরে তৈরি হয় জেলে গ্রাম। মাছ ধরার সঙ্গে চলে শুঁটকি শোকানোর কাজ। বর্ষা মৌসুমের ইলিশ শিকারের পর বহু জেলে চার মাসের জন্য সুদূর কক্সবাজার, চট্টগ্রামসহ, বাগেরহাট, পিরোজপুর, খুলনা, সাতক্ষীরা থেকে ডেরা বেঁধে সাময়িক বসতি গড়ে সেখানে। মেহেরআলীর খাল, আলোরকোল, মাঝেরচর, অফিসকেল্লা, নারিকেলবাড়িয়া, মানিকখালী, ছাফরাখালী ও শ্যালারচর ইত্যাদি এলাকায় জেলে পল্লী স্থাপিত হয়। এই চার মাস তারা মাছকে শুঁটকি বানাতে ব্যস্ত থাকেন। এখান থেকে শুঁটকি চট্টগ্রামের আসাদগঞ্জের পাইকারী বাজারে মজুদ ও বিক্রয় করা হয়।
সুন্দরবনের পূর্ব বিভাগ থেকে মাছ সংগ্রহের অনুমতি সাপেক্ষে বহরদার ও জেলেরা দুবলার চরে প্রবেশ করে থাকেন। দুবলার চর থেকে সরকার নিয়মিত হারে রাজস্ব পেয়ে থাকে। প্রতি বছর বিএলসি বা বোট লাইসেন্স সার্টিফিকেট, ডিএফসি বা ডেইলি ফুয়েল (জ্বালানি কাঠ) কন্‌যাম্পশন ইত্যাদি প্রক্রিয়ায় বন বিভাগকে রাজস্ব প্রদান করে মৎস্য ব্যবসায়ীগণ সুন্দরবনে ঢোকার অনুমতি পান, এছাড়া আহরিত শুঁটকি মাছ পরিমাপ করে নিয়ে ফিরে আসার সময় মাছভেদে প্রদান করেন নির্ধারিত রাজস্ব।খুলনা জেলার বিভিন্ন নদ-নদীতে পলি জমে ভরাট হওয়ায় শুধুমাত্র সুন্দরবনের উপর নির্ভরশীল হওয়ার কারণে ও নানা প্রতিকূলতায় ভাগ্যের চাকা ঘুরাতে পারেনি জেলে পরিবারগুলো। বরং দিন দিন তাদের অবস্থার অবনতি ঘটেছে। ক্রমবর্ধমান ক্ষতির মুখে ইতোমধ্যে পূঁজি ও জাল-নৌকা হারিয়ে পেশা হারিয়েছেন অনেকে। আবার অনেকে চড়াহারে মহাজনদের সুদের মাশুল গুণে এ পেশায় টিকে থাকার জন্য কঠোর সংগ্রাম চালিয়ে যাচ্ছেন। অথচ তফশীলি ব্যাংক থেকে জেলেদের সহজ শর্তে ঋণ প্রদান করার কথা থাকলেও বিভিন্ন শর্ত জুড়ে দেওয়ায় তা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়ে শেষ পর্যন্ত চড়া সুদে ঋণ নিতে হয়।পাইকগাছার বোয়ালিয়া জেলে পল্লীর বাসিন্দা শিতেনাথ বলেন, প্রতি বছর আমরা বিভিন্নভাবে ঋণ করে সমুদ্রে যাই। সরকারিভাবে আমরা তেমন কোন সাহায্য সহযোগীতা পাই না। সুন্দরবনে জলদস্যু-বনদস্যুর উৎপাত ও মুক্তিপণ আদায়সহ আসাধু বনরক্ষীদের দৌরাত্ম্য কিছুটা বন্ধ হলেও এখনও সীমাহীন সমস্যায় মধ্যে থাকতে হয় আমাদের।
ক্ষোভ প্রকাশ করে জেলেরা বলেন, আমরা প্রতিবছর জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সমুদ্র থেকে মাছ ধরে কোটি কোটি টাকা রাজস্ব সরকারকে দেই। কিন্তু আমরা সহজ শর্তে কোন ঋণ পাই না।তারা জেলেদের সকল সমস্যা সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণসহ ব্যবস্থা গ্রহণের জোর দাবি জানান।

Please Share This Post in Your Social Media






© প্রকাশক কর্তৃক সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত
Design & Developed BY AMS IT BD